জীবনের কোনো এক পর্যায়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভোগেননি, এমন মানুষ কম আছে। আমাদের দেশে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসার রয়েছে। এ রোগটির ধরন, লক্ষণ ও চিকিৎসা নিয়ে এক ভিডিওতে বিস্তারিত কথা বলেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হেপাটোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হোসাইন মোহাম্মদ শাহেদ। তথ্যগুলো তার ভাষায় উপস্থাপন করা হলো পাঠকদের সামনে।
গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসার কী
আমাদের সমাজে অনেক মানুষ বা অনেক রোগী এখন আমাদের কাছে এ রোগটা নিয়ে আসে; গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসার ডিজিজ। এটা আসলে ব্রড হেডিংয়ে বলা হয় পেপটিক আলসার ডিজিজ, কিন্তু গ্যাস্ট্রিক আলসার ডিজিজ নামেই সবচেয়ে বেশি পরিচিত। এটা হলো আমাদের পাকস্থলী বা ডিউডেনাম বা খাদ্যনালিতে যখন আলসার হয়, এটাকে বলা হয় গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসার।
আমাদের খাদ্যনালির ওপেনিং থেকে পায়খানার রাস্তা পর্যন্ত খাদ্যনালি বা এলিমেন্টারি ট্র্যাক্ট বলা হয়। আর গ্যাস্ট্রিক আলসারটা বা পেপটিক আলসারটা হয় সাধারণত খাদ্যনালি, পাকস্থলী এবং ডিউডেনাম, এই তিনটা অংশে। সাধারণত অতিরিক্ত অ্যাসিড সিক্রেশনের (নিঃসরণ) কারণে ধারণা করা হয় যে, গ্যাস্ট্রিক আলসারটা হয়।
গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসারের ধরন
পেপটিক আলসারকে ব্রড হেডিংয়ে দুইটা ভাগে ভাগ করা হয়। একটা হলো পেপটিক আলসার ডিজিজ, আরেকটা হলো ডিওডেনাল আলসার ডিজিজ। গ্যাস্ট্রিক আলসারটা পাকস্থলীতে হয়। ডিওডেনাল আলসারটা হয় ডিওডেনামে।
গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসারের কারণ
সাধারণত দুইটা ওয়েল নোন (সুপরিচিত) কারণ আছে, যে দুইটা কারণে গ্যাস্ট্রিক আলসার হয়। একটা হলো ব্যাকটেরিয়া, আরেকটা হলো এনএসআইডি বা পেইন কিলার বা ডাইকোফ্লেন, নেপ্রোক্সেন, এ ধরনের পেইন কিলারগুলো দীর্ঘমেয়াদি খেলে, ওভারডোজ খেলে বা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী না খেলে তখন গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসার হয়ে থাকে। এ দুইটা কারণ ছাড়াও আরও কিছু কারণ আছে, যেগুলো ডাইরেক্ট গ্যাস্ট্রিক আলসার করে না, কিন্তু এগুলোর সাথে গ্যাস্ট্রিক আলসারের অ্যাসোসিয়েশন (সম্পর্ক) রয়েছে। যেমন: ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া না করা বা টাইমলি খাওয়া-দাওয়া না করা, অতিরিক্ত টেনশন বা দুশ্চিন্তায় থাকা। এ ছাড়া আরও কিছু ওষুধ আছে, যেমন: অ্যান্টিবায়োটিক ডক্সিক্যাপ, এটাও অনেক সময় গ্যাস্ট্রিক আলসার করে। টেট্রাসাইক্লিনও করে। অ্যাস্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ যেগুলো আছে, এগুলোও অনেক সময় গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসার করে।
গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসারের উপসর্গ বা লক্ষণ
অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় পেটব্যথা। পেটের উপরিভাগে ব্যথা করে এবং এ ব্যথাটা অনেক সময় বুকের দিকে বা পেটের নিচের দিকে ছড়িয়ে যায়। এর পরে দেখা যায় যে, জ্বালাপোড়া। পেটের উপরিভাগে জ্বালাপোড়া করে। এ জ্বালাপোড়াটা অনেক সময় বুকেও যায়। অনেক সময় পেটের ভেতরের দিকেও ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর পেটে প্রচুর গ্যাস হয়। অনেক সময় গ্যাসটা মুখের দিকে বের হয়। বেলচিং বলা হয়। এর পরে হলো বাথরুম ক্লিয়ার না হওয়া। অনেকের আবার বমি বমি ভাব হয়। অনেকে বমিও করে।
এ কয়েকটা বিষয় সাধারণত গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসারের রোগী আমাদের কাছে প্রেজেন্টেশন করে।
গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসার রোগীর টেস্ট বা পরীক্ষা
একটা রোগী যখন আমাদের কাছে গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসারের সিম্পটম নিয়ে আসে, তখন আমরা কী কী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এটা কনফার্ম করি, উনার আসলে আলসার আছে কি না। সাধারণত অ্যান্ডোস্কপির মাধ্যমে সাধারণত আলসারটা ক্লিয়ারকাট বা সম্পূর্ণভাবে ধরা পড়ে, তবে অনেকে দেখা যায় যে, অ্যান্ডোস্কপির নাম শুনলে ভয় পায়; অ্যান্ডোস্কপি করতে। বিশেষ করে ওল্ড এজ যখন হয়, অনেক বয়স বা ছোট বয়স, অল্প বয়স বা ১০/১২ বছর বয়স, এ ধরনের রোগীদের অ্যান্ডোস্কপি করা একটু কষ্টকর। সে ক্ষেত্রে অ্যান্ডোস্কপিটা ঘুম পাড়ায়ে করা যায় অথবা যারা বেশি ভয় পায়, ওদেরকে অ্যান্ডোস্কপি করা কোনোভাবে সম্ভব হয় না, তখন আমরা বেরিয়াম মিল এক্সরে অফ দ্য স্টোমাক করি। এ পরীক্ষাটা করলেও গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসারটা ধরা পড়ে। আলসার কী, এটা দেখা যায় এখানে।
এ ছাড়া যেখানে অ্যান্ডোস্কপির সুযোগ-সুবিধা নাই বা বেরিয়াম মিলেরও সুবিধা নাই, ওখানে একটা রক্তপরীক্ষা করে অনেক সময় আমরা চেষ্টা করি ধরার জন্য। যদি এটা খুব সিগনিফিক্যান্ট না। ব্লাড ফর এইচ পাইলোরি। এই পরীক্ষাটা নন স্পেসিফিক। তাও অনেক সময় আমাদের এটি করতে হয় ব্যাকটেরিয়াটা আছে কি না, সেটা দেখার জন্য। সিম্পটম থাকলে, সাথে যদি ব্যাকটেরিয়া থাকে, আমরা ইনডাইরেক্টলি চিন্তা করি আলসার থাকতে পারে। যদিও এটা নন স্পেসিফিক। খুব বেশি সিগনিফিক্যান্ট না।
এ ছাড়া আমরা গ্যাস্ট্রিক আলসার রোগীদের আরও কিছু টেস্ট করি টু এক্সক্লুড আদার ডিজিজ। যেমন: আলট্রাসনোগ্রাম করা হয়। তারপরে ব্লাড টেস্ট করা হয়, সিবিসি করা হয় কোনো অ্যানিমিয়া আছে কি না।
গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসার রোগীর অনেক সময় ব্লিডিং হতে পারে। যদিও খুব রেয়ার কজ কমপ্লিকেশন হিসেবে পাওয়া যায় সেখানে অ্যানিমিয়া থাকতে পারে। কাজেই অ্যান্ডোস্কপি এবং বেরিয়াম মিল এক্সরে উভয়ই গ্যাস্ট্রিক আলসার ধরার জন্য সবচেয়ে ভালো টেস্ট।
গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেপটিক আলসার রোগীর চিকিৎসা
গ্যাস্ট্রিক আলসার রোগীরা যখন আমাদের কাছে আসে, আমরা ওদেরকে কী কী চিকিৎসা দেব? সাধারণত চিকিৎসাটাকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একটা জেনারেল ট্রিটমেন্ট, আরেকটা স্পেসিফিক ট্রিটমেন্ট। জেনারেল ট্রিটমেন্ট হলো সিম্পটম্যাটিক ট্রিটমেন্ট। পেশেন্টের যে সিম্পটমগুলো থাকে, সে সিম্পটম অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়। এর মধ্যে প্রথম আমরা বলে থাকি খাওয়া-দাওয়ার নিয়মটা। ভাজাপোড়া, তৈলাক্ত খাবার, শক্ত খাবার। এগুলো একটু কম খাবে। দুধজাতীয় খাবারটা খাবেন না। ঝাল, ভাজাপোড়া একটু কম খাবেন। দুধজাতীয় খাবারটা না খেতে পারলে ভালো। কারণ দুধের মাধ্যমে অনেক সময় গ্যাস বেশি হতে পারে।
এরপরে যাদের সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস আছে, অ্যালকোহল খাওয়ার অভ্যাস আছে, এগুলো পরিহার করতে হবে। জর্দা, সাদা পাতা যারা খান, ওইগুলোও পরিহার করতে হয়। অল্প অল্প করে খেতে হবে। ঘন ঘন খেতে হবে, পেট যাতে খালি না থাকে। পানি বেশি করে খেতে হবে, পেট যাতে কষা না থাকে। পেট কষা থাকলে গ্যাসটা বেশি হয়, বাথরুম ক্লিয়ার রাখার জন্য আমরা ওষুধ দিয়ে থাকি। আর যারা অতিরিক্ত টেনশনে থাকেন, টেনশন পরিহার করতে হবে। ঘুম নিয়মিত হতে হবে। আর নিয়মিত ব্যায়াম করলে অনেক সময় গ্যাস কম হয়। শরীর প্রফুল্ল থাকে। সে ক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রিক সিম্পটমটা অনেক কম মনে হয়। নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। এগুলো হচ্ছে সাধারণ চিকিৎসা।
স্পেসিফিক চিকিৎসা আছে। যেহেতু গ্যাস্ট্রিক আলসার বা ডিওডেনাল আলসার একটা ব্যাকটেরিয়া দিয়ে হয়, কাজেই আমরা এখানে অ্যান্টিবায়োটিক অ্যাপ্লাই করে থাকি। এইচপাইলোরি ইরাডিকেশন বলা হয়। এখানে একটা ট্রিপল থেরাপি দেয়া হয়। তিনটা ওষুধ একসাথে দেওয়া হয়। দুইটা অ্যান্টিবায়োটিক, একটা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ। এটা সাধারণত সাত থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত দেয়া হয়। অনেকের আরও বেশিও লাগে। সাধারণত আমরা ১৪ দিন পর্যন্ত দিই। এরপর আমরা ওমিপ্রাজল, ইসমিপ্রাজল, এই গ্রুপের ওষুধগুলো দুই বেলা করে দেড় মাস থেকে দুই মাস পর্যন্ত দিয়ে থাকি। এ দুই মাসের কোর্স খেলে সাধারণত এইটি টু নাইন্টি পারসেন্ট রোগী ভালো হয়ে যায়। ফাইভ টু টেন পারসেন্ট মানুষকে এগুলো দেয়ার পরও ভালো হয় না। এ ক্ষেত্রে আমাদের ওষুধ আরও কন্টিনিউ করতে হয়।
গ্যাস্ট্রিক আলসার থেকে সৃষ্ট জটিলতাসমূহ
গ্যাস্ট্রিক আলসার যদি ভালোভাবে চিকিৎসা করা না হয় বা এটা যদি অনেক দিন ধরে থাকে, এখান থেকে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়। এক নম্বর জটিলতা হলো গ্যাস্ট্রিক আলসার চিকিৎসা করার পরও আবার হয়। এটাকে বলে রিকারেন্স। সে ক্ষেত্রে এটাকে আবার চিকিৎসা করতে হয়।
দুই নম্বর হচ্ছে অনেক সময় গ্যাস্ট্রিক আলসার থেকে ব্লিডিং হয়। এটাকে বলে হেমাটেমেসিস মেলেনা। মুখ দিয়ে রক্ত আসে, আবার পায়খানার রাস্তা দিয়েও রক্ত যায়। এই ধরনের ক্ষেত্রে আমাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করে ব্লাড দিতে হয় এবং ব্লিডিং ব্ন্ধ করতে হয়।
এইচপাইলোরির চিকিৎসা, যেটা ট্রিপল থেরাপি, এটা আবার দেয়া হয়। তিন নম্বর হচ্ছে অনেক সময় গ্যাস্ট্রিক আলসার থেকে ছিদ্র হয়ে যায় ডিওডেনাল বা গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পাকস্থলী ছিদ্র হয়। এটাকে বলে পারফোরেশন। সে ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করে এটার চিকিৎসা করতে হয়। প্রয়োজন অনুসারে এটার অপারেশন করা লাগে। অপারেশন করে ছিদ্র বন্ধ করতে হয়।
অনেক সময় ডিওডেনাল আলসারের ভালভটা যখন ভালোভাবে চিকিৎসা ন হয়, তখন ভালভটা ডিফরম হয়, ওখানে গ্যাস্ট্রিক আউটলেট অবস্ট্রাকশনের মতো হয়। এ ধরনের রোগীরা খাবার খেলে পেটে জমে থাকে। পরবর্তী সময়ে বমি হয়ে যায়। এ ধরনের রোগীর অপারেশন লাগে।
সাধারণত যাদের অনেক দিন ধরে গ্যাস্ট্রিক থাকে, ভালোভাবে চিকিৎসা করে না, তাদের গ্যাস্ট্রিক আউটলেট অবস্ট্রাকশগুলো হয়। এ ছাড়া অল্প কিছু রোগীর ক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রিক আলসার ক্যানসারে টার্ন করে। এই জটিলতাগুলো খুবই খারাপ। ব্লিডিং হওয়া, পাকস্থলী ছিদ্র হয়ে যাওয়া বা পাকস্থলীর মধ্যে গ্যাস্ট্রিক আউটলেট অবস্ট্রাকশন হওয়া, ক্যানসার হওয়া, এগুলো খুবই জটিল সমস্যা। এ জন্য গ্যাস্ট্রিক আলসার যদি কারও সন্দেহ হয়, অবশ্যই আপনারা অ্যান্ডোস্কপি করে, ডায়াগনসিস করে এটার একটা ভালো চিকিৎসা নেবেন।
অ্যান্ডোস্কপি অনেক মানুষই ভয় পায়, কিন্তু ভয়ের কোনো কারণ নাই। এটা সিম্পল একটা টেস্ট। এখানে ভয়ের কোনো কারণ নাই। একটা টিউবের মতো, এর মাথায় লাইট লাগানো থাকে। এ মেশিনটা পেটের মধ্যে ঢুকিয়ে আমরা জাস্ট আলসার আছে কি না দেখি। থাকলে আলসারের খুব ভালো চিকিৎসা আছে, যেগুলো করলে আলসার পুরোপুরি ভালো হয়ে যায়। এ জন্য অ্যান্ডোস্কপিকে ভয় করার কোনো কারণ নাই। এটা ওই রকম সিরিয়াস কোনো পরীক্ষা না। এটা সিম্পল একটা টেস্ট। এ জন্য অনেকে আছে অ্যান্ডোস্কপি বললে ডাক্তারের কাছে আর আসে না; ভয়ে চলে যান। এটা ভয় পেলে চলবে না এবং এটা নিয়ে ভয়েরও কোনো কারণ নাই। কারণ এ সামান্য টেস্টের কারণে রোগ ধরা না পড়লে বরং পরবর্তী পর্যায়ে একটা জটিল আকার ধারণ করে রোগটা।
এ জন্য আমি বলব, অবশ্যই আপনারা সাহস রাখুন, ভয় করবেন না অ্যান্ডোস্কপির জন্য। রোগটা সন্দেহ হলে পরীক্ষা করে ওষুধ খাবেন। ইনশাল্লাহ ভালো হয়ে যাবে। আর যদি ঠিকমতো চিকিৎসা না হয়, পরবর্তীকালে জটিলতাগুলো ভোগ করতে হবে। এ জন্য আমি বলব, আপনারা সবসময় খাওয়া-দাওয়ার নিয়মটা মেনে চলবেন, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাবেন। নিয়মিত ব্যায়াম করবেন, প্রচুর পানি খাবেন। আর নিয়মিত ওষুধ সেবন করবেন প্রয়োজন হলে।
গ্যাস্ট্রিক আলসারের চিকিৎসা একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত দেয়া হয়। যেমন: দেড় মাস, দুই মাস। সর্বোচ্চ হয়তো দুই-তিনবার খেতে হয়, কিন্তু নিয়মকানুনগুলো সবসময় মেনে চলতে হবে। আলসারের ওষুধ বেশি দিন না খেলেও চলবে, কিন্তু নিয়মকানুনগুলো সবসময় মেনে চলতে হবে। তাহলে আপনি সুস্থ থাকবেন।
সন্ধ্যায় চা-কফি পান করতে করতে চিন্তা করলেন, আজ রাতে দেরি না করে আগেই ঘুমিয়ে পড়বেন। সেই চিন্তা থেকে রাত ১১টার মধ্যেই বিছানা করে শুয়েও পড়লেন। এর পর হাতে মোবাইলটা নিয়ে ভাবলেন ১০ মিনিট সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করে নেই। এরপর কখন রাত দুইটা বেজে গেল খেয়ালই নেই।
রাত দুইটা-তিনটার সময় ঘুমিয়ে পরের দিন সকাল সকাল উঠে ঠিকই কাজে ছুটতে হচ্ছে অনেককেই। এতে করে ঘুম পরিপূর্ণ হচ্ছে না; সারা দিন ঘুম ঘুম ভাব থেকে যাচ্ছে। থাকছে না কাজে মনোযোগ; বিরক্ত লাগছে সবকিছু।
এর পর দেখা যায়, ক্লান্তিভাব নিয়ে বাসায় ফিরে বিকেলে কিংবা সন্ধ্যায় ঘুম দিচ্ছেন অনেকেই। ঘুম থেকে উঠে আবার সেই চা-কফির অভ্যাস। আবারও ঘুমাতে দেরি হয়ে গেল আজ।
ঘুম না আসার এ ‘অনিদ্রা চক্রে’ আটকে আছি আমরা অনেকেই, যা দিন দিন ক্ষতি করছে আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে।
সুস্থ থাকতে হলে পর্যাপ্ত ঘুমের বিকল্প নেই। বিশেষজ্ঞরা বলেন, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দিনে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন।
কীভাবে এ অনিদ্রা চক্র থেকে বের হওয়া যায়, সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ড. সাফিকা আফরোজ।
তিনি লিখেন, ‘অনেক ক্ষেত্রেই মন খারাপ থাকা, কাজকর্মে অনীহা ও মনোযোগ না থাকার অন্যতম কারণ হলো অনিদ্রা।’
অনিদ্রা কাটানোর কিছু সহজ উপায়
এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো রাত জেগে না করে দিনের বেলা করার চেষ্টা করতে হবে। এতে করে ভালো ঘুমের সুযোগ তৈরি হবে।
আরও পড়ুন:নারীর সাজগোজের অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে গয়না। যেকোনো পোশাকের সঙ্গে নারীদের চাই মানানসই গয়না, তবে পছন্দের গয়নাটি দীর্ঘদিন ব্যবহারের জন্য এবং এর সৌন্দর্য ধরে রাখতে নিতে হবে সঠিক যত্ন।
গয়নার যত্ন সম্পর্কে অনেকেরই তেমন একটা ধারণা নেই। একেক ধরনের গয়নার যত্ন একেক রকম। যদি সঠিকভাবে গয়নার যত্ন নেয়া যায়, তবে পুরানো গয়নাতেও ফিরিয়ে আনা যায় চমক।
ইউএনবি বাংলার এক প্রতিবেদনের দীর্ঘদিন গয়নার চাকচিক্য ধরে রাখার কয়েকটি টিপস তুলে ধরা হলো নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য।
১. গয়নার ওপরে সরাসরি পারফিউম স্প্রে করবেন না।
২. রূপার গয়না সুন্দর রাখতে প্রথমে গয়নাটি ভালোভাবে মুছে তার ওপর ট্যালকম পাউডার লাগান। এরপর শুকনো সুতি কাপড় দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করে নিন। সঠিকভাবে যত্ন নিলে আপনার রূপার গয়নাও ভালো থাকবে দীর্ঘদিন।
৩. মুক্তার গয়না ব্যবহার শেষে নরম, ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলতে হবে, তবে খুব বেশি ময়লা হলে পানিতে সামান্য সাবান মিশিয়ে নিয়ে ব্রাশ দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করতে হবে। মুক্তার গয়না সবসময় মখমলের কাপড়ে মুড়িয়ে রাখবেন। গরমের সময় মুক্তার গয়না না পরাই ভালো, কারণ ঘাম লাগলে মুক্তার দ্যুতি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
৪. কুন্দন বা হীরার গয়না নরম তুলা লাগানো প্লাস্টিকের বাক্সে রাখবেন, যাতে তা ভাঙার কোনো সম্ভাবনা না থাকে।
৫. পান্না খুবই নরম ও ঠুনকো পাথর, পান্নার গয়না সবসময় বসে পরিধান করবেন, যেন হাত থেকে পড়লেও তা ভেঙে না যায়।
৬. সব গয়না এক সাথে রাখবেন না, তা আলাদা বাক্সে রাখুন বা একই বাক্সের বিভিন্ন প্রকোষ্ঠে রাখুন। কারণ একই বাক্সে রাখলে তা জড়িয়ে গিয়ে ছিঁড়ে যেতে পারে বা ঘষা লেগে চমক নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
৭. হীরার গয়না ছাড়া আর কোনো গয়নায় পানি বা সাবান লাগাবেন না।
আরও পড়ুন:সাজ সামগ্রীর মধ্যে মেয়েদের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ও জনপ্রিয় প্রসাধনী হচ্ছে লিপস্টিক। ঠোঁট রাঙাতে এই প্রসাধনীর জুড়ি মেলা ভার। লিপস্টিক কেনার সময় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রংকেই গুরুত্ব দেয়া হয়, তবে লিপস্টিকের টেক্সচার কেমন সেটা দেখাও খুব জরুরি।
ইউএনবি বাংলার এক প্রতিবেদনের কার কোন টেক্সচারের লিপস্টিক সবচেয়ে বেশি মানাবে তা তুলে ধরা হলো নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য।
ক্রিমি লিপস্টিক
যাদের ঠোঁট ছোট ও পাতলা তারা এই ধরনের লিপস্টিক লাগাতে পারেন। ক্রিম থাকায় এই লিপস্টিকে ঠোঁট অনেক ভরাট দেখায়। এই লিপস্টিক ঠোঁটের শুষ্কভাবও কাটিয়ে দেয়। যেকোনো সাজে যেকোনো সময়ই মানাবে এই ক্রিমি লিপস্টিক।
স্যাটিন ফিনিশ বা শিয়ার লিপস্টিক
এই লিপস্টিকে আবার অয়েল কনটেন্ট অনেক বেশি। তাই ঝলমলে গ্লসি লুক পাওয়ার জন্য এই লিপস্টিক ব্যবহার করা যেতেই পারে, তবে এই লিপস্টিক যা রং দেখায় ঠোঁটে কিন্তু তার থেকে অনেক বেশি গাঢ় হয়ে যায়। এই লিপস্টিকও ঠোঁটের শুষ্কভাব কাটিয়ে দেয়, তবে এই লিপস্টিক দিনের বেলায় এড়িয়ে যাওয়ায় ভাল।
ম্যাট লিপস্টিক
এই লিপস্টিক যার ঠোঁট যেমন তেমন টেক্সচারই দেখায়, তবে যাদের ঠোঁট খুব শুষ্ক তাদের এই লিপস্টিক এড়িয়ে চলায় ভাল। ম্যাট লিপস্টিক লাগালে ওপরে লিপবামও লাগাতে পারেন, তবে এই লিপস্টিকের স্থায়িত্ব অনেক বেশি তাই সারাদিনের অনুষ্ঠানে এই লিপস্টিক খুবই ভাল।
ট্রান্সফাররেজিস্ট্যান্ট লিপস্টিক
অনেকে অফিস বা ক্লাসের উদ্দেশে সকালে বের হয়ে রাতে বাসায় ফেরেন। আর এই লিপস্টিক তাদের জন্য একেবারে আদর্শ। এই লিপস্টিক সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একইরকম থাকে, এমনকি জলেও উঠে না। এই লিপস্টিক তোলার জন্য সলিউশন পাওয়া যায়। তেল কিংবা ময়েশ্চারাইজার দিয়েও তুলতে পারেন এই লিপস্টিক। এই লিপস্টিকে ময়েশ্চারাইজার কনটেন্টও স্বাভাবিক থাকে, ফলে ঠোঁটও শুষ্ক হয় না।
ফ্রস্টেড লিপস্টিক
এই লিপস্টিক খুব হালকা হয়। এই লিপস্টিক স্পার্কেল করে, তবে এই লিপস্টিক ঠোঁটও শুষ্ক করে না। দিনের যেকোনো সময়ই ব্যবহার করতে পারেন এই লিপস্টিক।
আরও পড়ুন:বর্তমানে বহু মানুষই ঘরের কোণে কোণে সুগন্ধি ব্যবহার করেন। আপনিও কি তাদেরই দলে? উত্তর ‘হ্যাঁ’ হলে কোনো সমস্যা নেই, তবে সারা বছর একই রকম সুগন্ধি ব্যবহারের অভ্যাস থাকলে তা বদলের সময় এসেছে। এ ছাড়াও ঘরে সুগন্ধি ব্যবহারের আগে আপনার জানা প্রয়োজন কী করবেন আর কোন কাজ ভুলেও করবেন না।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের একটি প্রতিবেদনে ঘরে সুগন্ধি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত এবং যে ভুলগুলো একদমই করা উচিত নয় তা তুলে ধরা হলো নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য।
ঘরে সুগন্ধি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যা করবেন
১. বাড়ির প্রত্যেক ঘরে একই ধরনের সুগন্ধীর ব্যবহার কখনও হতে পারে না। তারও কিছু বৈপরীত্যের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। রান্নাঘরে যেহেতু চড়া মশলার গন্ধ অনেক সময় আপনাকে বিব্রত করে তাই সেখানে লেবুর গন্ধওয়ালা সুগন্ধি ব্যবহার করাই ভাল। আবার টয়লেটের ক্ষেত্রে সুগন্ধি ফুলের মতো হলে মন্দ হয় না, তবে আপনার শোবার ঘরের ক্ষেত্রে সুগন্ধি যাতে একেবারে হালকা হয়, সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
২. আমরা কোন জায়গায় যাচ্ছি, তার উপর নির্ভর করেই পোশাক বাচাই করি। ঠিক তেমনই অনুষ্ঠানের ধরন অনুযায়ী বাড়ির সুগন্ধিতেও বদল আনুন। দেখবেন মেজাজটাই হয়ে যাবে একেবারে অন্যরকম।
৩. এসেনশিয়াল অয়েল আপনার ঘরে সুগন্ধির কাজ করতেই পারে, তবে গন্ধকে দীর্ঘস্থায়ী করতে এসেনশিয়াল অয়েলের মাধ্যমে তৈরি মোমবাতি ব্যবহার করতে পারেন।
৪. একেবারে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফুলকে সুগন্ধি হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন, তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন তা যেন বিশেষ উজ্জ্বল না হয়।
ঘরে সুগন্ধি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যা করবেন না
১. ঘরে সুগন্ধের জন্য অনেকেই মোমবাতি ব্যবহার করেন, তবে এই ধরনের মোমবাতি অনেক ক্ষেত্রেই ধুলাবালি শুষে নিয়ে দুর্গন্ধও ছড়ায়। সেক্ষেত্রে খেয়াল রাখুন হিতে বিপরীত প্রতিক্রিয়া যেন না হয়।
২. এসেনশিয়াল অয়েল ঘরকে সুগন্ধে ভরে দেয়ার জন্য অবশ্যই ভাল পদ্ধতি। কিন্তু দীর্ঘদিন একটানা ব্যবহারের ফলে তা আপনার কাছে হয়ে উঠতে পারে একঘেয়ে।
৩. ঘরকে সুগন্ধে ভরিয়ে তুলতে গিয়ে আপনার শারীরিক কোনো ক্ষতি হচ্ছে কি না, সেদিকে খেয়াল রাখুন। এমন জায়গায় সুগন্ধি রাখুন যাতে আপনার চোখের কাছাকাছি না হয় তা লক্ষ্য রাখুন।
আরও পড়ুন:অনেকেই ঘর সাজাতে ইনডোর প্ল্যান্ট ব্যবহার করেন। অনেকেই মনে করেন ইনডোর প্ল্যান্ট মানেই অল্প দেখভাল করলেই হয়ে যায়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমনি গাছের তুলনায় ইনডোর প্ল্যান্টের যত্ন করতে হয় বেশি। তাই ঘরে থাকা গাছের যত্ন নিতে পাঁচটি বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখুন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের একটি প্রতিবেদনে ইনডোর প্ল্যান্ট বাঁচাতে যে পাঁচটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে তা তুলে ধরা হলো নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য।
১) ঘরে আছে বলে নিয়মিত পানি দিবেন না, তা কিন্তু নয়। রোজ অল্প অল্প করে পানি দিন, তবে নজর রাখবেন পাত্রে যেন পানি জমে না থাকে।
২) অল্প আলোয় কখনই গাছ রাখবেন না। আবার বেশি আলোতেও নয়। গাছ এমন জায়গায় রাখুন, যাতে হালকা আলো সবসময় পায় গাছটি।
৩) কখনই এসির নিচে গাছ রাখবেন না। চেষ্টা করুন গাছ রাখার জায়গাটা এসির থেকে দূরে রাখার। এতে গাছ ঠিকঠাক বাড়বে।
৪) পানিতে কাপড় ভিজিয়ে মাঝে মধ্যে পরিষ্কার করুন গাছের পাতা। কিংবা কাঁচা দুধ তুলাতে ভিজিয়ে গাছের পাতা মুছে দিন। এ উপায়ে তরতাজা থাকবে গাছ।
৫) লক্ষ্য রাখুন গাছের টবে যেন পোকামাকড় না আসে। কাঁচা দুধের মধ্যে কিছুটা হলুদ মিশিয়ে গাছের গোড়ায় দিয়ে দিন এতে, পোকামাকড় হবে না।
আরও পড়ুন:গুড়ের কদর শীতকালে বাড়লেও সারা বছর বাঙালির রান্নাঘরে গুড়ের আনাগোনা চলতেই থাকে। অনেকে চিনি খান না। বিকল্প হিসাবে একটু-আধটু গুড় খেয়ে থাকেন, তবে শীতকালে গুড় সংরক্ষণ করার আলাদা করে কোনো প্রয়োজন পড়ে না। ঠান্ডা আবহাওয়ায় গুড় নষ্ট হয় না। কিন্তু গরম পড়লে গুড় নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা, তবে কিছু উপায় জানা থাকলে সারা বছরই গুড় ভালো রাখতে পারেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে সারা বছর গুড় ভালো রাখার তিনটি উপায় তুলে ধরা হলো নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য।
১) বাজার থেকে গুড় কিনে আনার পর তা ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখেন অনেকেই। দীর্ঘ দিন ফ্রিজে গুড় রেখে দিলে অনেক সময় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ফ্রিজে রাখলেও মাঝেমাঝে গুড়ের কৌটো বের করে রোদে দিন। এতে গুড় অনেক দিন পর্যন্ত ভালো থাকবে। গুড়ে ফাঙ্গাস ধরার ভয়ও থাকবে না।
২) রোদে দেয়ার পাশাপাশি, কিছুদিন পরপর গুড় জ্বাল দিয়ে নিতেও পারেন। একটি পাত্রে গুড় ঢেলে নিয়ে গ্যাসে অল্প আঁচে বসিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নামিয়ে নিন। ঠান্ডা হলে কৌটোয় ভরে আবার ডিপ ফ্রিজে তুলে রাখুন।
৩) ঝোলা গুড় ছাড়াও অনেকের বাড়িতে পাটালিও মজুত করে রাখেন। রাতে দুধ-রুটির সঙ্গে এক টুকরো পাটালি মেখে খেতে পছন্দ করেন অনেকেই। বেশি দিন রাখলে বর্ষার আবহাওয়ায় পাটালিও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। পাটালিতে যদি ফাঙ্গাস ধরে যায়, তা হলে ওই অংশটুকু ফেলে দিয়ে গুড়ের বাকি অংশটুকু ধুয়ে শুকিয়ে নিন। কিছুক্ষণ বাতাসে রেখে তুলে দিন। মাঝেমাঝে বের করে বাতাসে রেখে দিতে পারেন। দীর্ঘ দিন ভালো থাকবে আপনার সাধের পাটালি।
'অতিকায় হস্তী লোপ পাইয়াছে, কিন্তু তেলাপোকা টিকিয়া আছে'। বহুল প্রচলিত উক্তিটির সেই তেলাপোকার উপদ্রবে আমরা কম-বেশি সবাই অতিষ্ঠ।
কিন্তু তাই বলে পতঙ্গটির ক্ষতি করতে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জীবনও হুমকির মুখে ফেলছেন কি না তাও ভাবতে হবে।
ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে এক দিনের মধ্যেই ঘরের তেলাপোকার বংশ ধ্বংস করতে অতি মাত্রায় রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করবেন না।
কারণ, বাজারে তেলাপোকা নিধনের যেসব স্প্রে ও পাউডারজাতীয় রাসায়নিক পাওয়া যায়, সেসব মূলত প্রাণনাশের জন্য তৈরি। ওই বিষে তেলাপোকা যেমন মরবে, তেমন সংস্পর্শে এলে আপনার প্রাণও যেতে পারে।
লাইভ স্পেস সাময়িকীর প্রতিবেদনে তেলাপোকা নিধনের কিছু ঘরোয়া উপায় উঠে এসেছে। সেসবে একবার চোখ বুলিয়ে নেয়া যাক-
তেজপাতা
তেলাপোকা তাড়ানোর সবচেয়ে সাশ্রয়ী উপায় হিসেবে বিবেচিত তেজপাতা। তেজপাতার তীব্র ও ঝাঁঝালো ঘ্রাণ তেলাপোকা সহ্য করতে পারে না। তেলাপোকার উপদ্রব বেড়ে গেলে, কিছু তেজপাতা গুঁড়া করে ঘরের কোনাসহ বিভিন্ন জায়গায় ছিটিয়ে দিন। সপ্তাহে দুই-একবার এটি করলে তেলাপোকা উধাও হয়ে যাবে।
চিনি ও বেকিং সোডা
বেকিং সোডা তেলাপোকার বিষ হিসেবে কাজ করে। একটি পাত্রে সমপরিমাণ চিনি ও বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি ঘরের প্রতিটি কোনায় ছিটিয়ে দিন। চিনির গন্ধে তেলাপোকা আকৃষ্ট হবে। ফলে চিনি খেতে এসে বেকিং সোডা খেয়ে সব তেলাপোকা মারা যাবে। সপ্তাহে দুই দিন করে অন্তত তিন সপ্তাহ এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে তেলাপোকা নিধন হয়ে যাবে।
অ্যালুমিনিয়াম ও শসা
কিছু শসার খোসা নিন। খোসাগুলো একটি অ্যালুমিনিয়ামের ক্যানে ঢুকিয়ে যেদিক থেকে তেলাপোকা আসতে পারে, সেসব স্থানে রেখে দিন। শসার খোসা অ্যালুমিনিয়ামের সঙ্গে বিক্রিয়া করে যে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে, তাতে তেলাপোকা মরে যায়।
সাবানপানি
ঘরের যেসব স্থানে তেলাপোকার উপদ্রব বেশি, সেখানে কিছু মিষ্টিজাতীয় খাবার রাখুন। খাবারের টানে আকৃষ্ট হয়ে যখন তেলাপোকা জমবে, তার ওপর সাবানপানি দিয়ে দিন। এতে তেলাপোকাগুলো মরে যাবে।
বোরিক পাউডার
বোরিক পাউডার এক ধরনের অ্যাসিডিক উপাদানে তৈরি। এই উপাদান পোকামাকড় ও পতঙ্গ নিধনে সহায়ক। তাই তেলাপোকা নিধনেও এটি কার্যকর। ১ চামচ বোরিক পাউডারের সঙ্গে ২ চামচ আটা বা ময়দা মিশিয়ে মিশ্রণটি ঘরের চারপাশে ছিটিয়ে দিন। আটা-ময়দার ঘ্রাণে আকৃষ্ট হয়ে তেলাপোকা আসবে এবং বোরিক পাউডার খেয়ে মারা পড়বে।
মসলার স্প্রে
একটি বোতলে পানির সঙ্গে রসুন, পেঁয়াজের পেস্ট এবং গোলমরিচের গুঁড়া মেশান। মিশ্রণটি ঘরের কোনায় এবং চিপা জায়গাগুলোতে স্প্রে করে দিন। এতে তেলাপোকা আসা বন্ধ হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য