চট্টগ্রামের চান্দগাঁও এলাকায় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সালাহ উদ্দিনকে চাপা দেয়া মাদকবাহী মাইক্রোবাসের চালককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঘটনার এক সপ্তাহ পর শুক্রবার রাতে মো. বেলাল নামের ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চান্দগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমির হোসেন। তিনি জানান, শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেয়া হবে।
নিউজবাংলাকে আমির হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশের কিছু সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে মাইক্রোবাসচালককে শনাক্ত করা হয়। এরপর সম্ভাব্য বেশ কিছু এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাইক্রোবাসচালক বেলালকে গ্রেপ্তার করা হয়।
চান্দগাঁও থানার কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় ১১ জুন ভোর ৪টার দিকে মাইক্রোবাসের চাপায় নিহত হন এএসআই সালাহ উদ্দিন। এ সময় আহত হন কনস্টেবল মো. মাসুম। পুলিশ বলছে, মাইক্রোবাসটিতে মাদক পরিবহন করা হচ্ছিল।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পার্বত্য এলাকা থেকে চোলাই মদবাহী একটি কালো মাইক্রোবাস চট্টগ্রাম শহরের দিকে আসছে বলে জানতে পারেন এসআই সালাহ উদ্দিন।
কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকার মেহেরাজখানঘাটা পেট্রলপাম্পের সামনে মাইক্রোবাসটিকে থামার সংকেত দিলে গাড়িটি গতি কমিয়ে আনে।
এ সময় গাড়িটি থেমেছে ভেবে এএসআই সালাহ উদ্দিন ও চালক মাসুম মাইক্রোবাসটির কাছে গেলে গাড়িটি গতি বাড়িয়ে দুইজনকে চাপা দেয়। আহত দুইজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সালাহ উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি জানান, বিষয়টি জানতে পেরে ওই মোবাইল টিমের অফিসার এসআই রফিকুল ইসলাম ফোর্সসহ গাড়িটিকে তাড়া করেন।
নগরীর এক কিলোমিটার এলাকায় গাড়িটি থামিয়ে চালকসহ অন্যরা পালিয়ে যান৷ পরে পুলিশ গাড়িটি জব্দ করে। ওই গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৭০০ লিটার চোলাই মদ উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনায় ওই দিন বিকেলে চান্দগাঁও থানার এসআই আমির হোসেন বাদী হয়ে দুটি মামলা করেন।
মামলার বিষয়ে ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শুক্রবার বিকেলে এসআই আমির হোসেন একটি হত্যা ও আরেকটি মাদক মামলা করেছেন। দুই মামলাতেই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর উত্তরায় বাস র্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি প্রকল্পের নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের গার্ডার পড়ে পাঁচজন নিহতের ঘটনায় রুবেল হোসেনের দাফন নিজ বাড়ি মেহেরপুরে হয়েছে।
সদর উপজেলার রাজনগর গ্রামের রাজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজা শেষে গ্রামের কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
ভোরে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে তার মরদেহ বাড়িতে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের ভায়াডাক্ট ছিটকে প্রাইভেট কারে পড়ে দুই শিশুসহ পাঁচ আরোহী নিহত হন। দুজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
তারা হলেন ২৬ বছর বয়সী হৃদয় ও ২১ বছর বয়সী রিয়ামনি, যাদের বিয়ে হয়েছে গত শনিবার। সোমবার ছিল বউভাত।
হৃদয়ের বাড়ি রাজধানীর কাওলায়। বউভাত শেষে কনের বাড়ি আশুলিয়ায় যাচ্ছিলেন তারা। ছেলের বাবা রুবেল গাড়িটি চালাচ্ছিলেন।
রুবেল ছাড়াও যারা মারা গেছেন তারা হলেন কনের মা ফাহিমা বেগম, তার বোন ঝরনা বেগম, ৬ বছর বয়সী জান্নাত ও দুই বছর বয়সী জাকারিয়া।
নিহত এই চারজনের দাফন মঙ্গলবার রাতে জামালপুরে সম্পন্ন হয়েছে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর উত্তরায় বাস র্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি প্রকল্পের নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের গার্ডার পড়ে পাঁচজন নিহতের ঘটনায় চারজনের দাফন হয়েছে নিজ বাড়ি জামালপুরে।
মেলান্দহ উপজেলার আগ পয়লা গ্রামে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঝরনা বেগম এবং তার দুই শিশুসন্তান জাকারিয়া ও জান্নাতের দাফন সম্পন্ন হয়।
ইসলামপুর উপজেলার লাউদত্ত গ্রামে রাত সাড়ে ১১টার দিকে জানাজা শেষে কনের মা ফাহিমা বেগমকে নিজ বাড়ির আঙিনায় দাফন করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, লাল নীল বাতির সঙ্গে সাইরেন বাজিয়ে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি এগিয়ে এলে ভিড় জমায় শত শত উৎসুক জনতা। আর অ্যাম্বুলেন্সের দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় স্বজনদের চিৎকার। তাদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠে পরিবেশ। হঠাৎ এমন মৃত্যুতে হতবাক নিহতদের স্বজনসহ এলাকাবাসীও।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের ভায়াডাক্ট ছিটকে প্রাইভেট কারে পড়ে দুই শিশুসহ পাঁচ আরোহী নিহত হন। দুজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তারা ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তারা হলেন ২৬ বছর বয়সী হৃদয় ও ২১ বছর বয়সী রিয়ামনি, যাদের বিয়ে হয়েছে গত শনিবার। সোমবার ছিল বউভাত।
হৃদয়ের বাড়ি রাজধানীর কাওলায়। বউভাত শেষে কনের বাড়ি আশুলিয়ায় যাচ্ছিলেন তারা। ছেলের বাবা রুবেল গাড়িটি চালাচ্ছিলেন।
রুবেল ছাড়াও যারা মারা গেছেন তারা হলেন কনের মা ফাহিমা বেগম, তার বোন ঝরনা বেগম, ৬ বছর বয়সী জান্নাত ও দুই বছর বয়সী জাকারিয়া।
আরও পড়ুন:প্রশাসনের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাসে মধ্যরাতে হলে ফিরে গেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
হল থেকে রাইস কুকার ও রান্নার অন্যান্য সরঞ্জাম সরানোর নির্দেশনা বাতিলসহ ১১ দফা দাবিতে মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে বিক্ষোভ শুরু করেন অপরাজিতা হলের ছাত্রীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদি চত্বরে অবস্থান নেন তারা। সেখানে তাদের সঙ্গে যোগ দেন অন্যান্য হলের শিক্ষার্থীরাও।
রাত দেড়টার দিকে শিক্ষর্থীদের সব দাবি মেনে নিয়ে লিখিত দেন অপরাজিতা হলের প্রভোস্ট রহিমা নুসরাত রিম্মি। পরে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হলে ফিরে যান।
শিক্ষার্থীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে অপরাজিতা হলের টয়লেটে গিয়ে এক ছাত্রী আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে গলায় বঁটি চালান। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় অপরাজিতা হলে দা, বঁটি, চাকু এমনকি রাইস কুকারও নিষিদ্ধ করে হল কর্তৃপক্ষ। ছাত্রীদের রুমে রুমে গিয়ে সরঞ্জামগুলো জব্দ করা হয়। সবাইকে ডাইনিংয়ের খাবার খেতে নির্দেশ দেয়া হয়।
অপরাজিতা হলের ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘আমাদের ডাইনিংয়ের খাবারের মান খুবই খারাপ। তার মধ্যে রাইস কুকার নিষিদ্ধ করা হলো। রান্নার সব সরঞ্জামও হলে রাখতে নিষেধ করা হয়েছে।’
লীমা নামের আরেক ছাত্রী বলেন, ‘আন্দোলনে আসতে আমাদের বাধা দেয়া হয়েছিল। আমরা হলের দুটি তালা ভেঙে নেমেছিলাম।’
আন্দোলনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক মো. শরীফ হাসান লিমন এসেছিলেন। তবে তিনি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিবৃত্ত করতে ব্যর্থ হয়ে একপর্যায়ে ফিরে যান।
পরে রাত দেড়টায় প্রভোস্ট শিক্ষার্থীদের ১১ দফা দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাসে লিখিত দেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো-
১. রাইস কুকার ও হলের রান্নার সরঞ্জামাদি ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে।
২. সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্টের প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলার কারণে ব্যক্তিগত আক্রমণ ও পারিবারিক শিক্ষা তুলে কথা বলায় ক্ষমা চাইতে হবে।
৩. হলে প্রয়োজনে অভিভাবক ও মহিলা আত্মীয়দের থাকার অনুমতি প্রদান করতে হবে।
৪. পানির পোকা ও খাবারের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে।
৫. প্রভোস্ট তার নিজ ডিসিপ্লিনের স্টুডেন্টদের ডেকে নিয়ে ব্যক্তিগত এবং অ্যাকাডেমিক বিষয়ে হয়রানি বন্ধ করতে হবে ও ক্ষমা চাইতে হবে।
৬. হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
৭. যেকোনো পরিস্থিতিতে সিট বাতিলের হুমকি দেয়া বন্ধ করতে হবে।
৮. যেকোনো পরিস্থিতিতে হলের ছাত্রীদের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে।
৯. হলের মিল খাওয়া বাধ্যতামূলক করা যাবে না।
১০. আন্দোলনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোনো শিক্ষার্থীকে ব্যক্তিগতভাবে হুমকি দেয়া যাবে না।
১১. এ দাবিগুলো না মানলে প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগ করতে হবে।
আরও পড়ুন:শোক দিবসে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে কর্মীদের পুলিশের লাঠিপেটার ঘটনায় জেলা পুলিশের আরও ৫ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নিউজবাংলাকে।
তিনি জানান, বরগুনা সদর থানার এএসআই মো. সাগর, পুলিশ লাইন্সের কনস্টেবল মো. রবিউল ও ডিবি পুলিশের কনস্টেবল কেএম সানিকে প্রত্যাহার করে ভোলা জেলা পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে। আর ডিবি পুলিশের এএসআই মো. ইসমাইল এবং ডিবি পুলিশের কনস্টেবল রুহুল আমিনকে প্রত্যাহার করে পিরোজপুর জেলা পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদি হাচান। একাধিকবার কল করা হলেও সাড়া দেননি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম তারেক রহমানের (প্রশাসন ও অর্থ)।
এর আগে দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলীকে প্রত্যাহার করে প্রথমে বরিশাল রেঞ্চে এবং পরে চট্টগ্রাম রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়।
বরগুনা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনের সামনে সোমবার দুপুরে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পর সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের বেধড়ক পেটায় পুলিশ।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজা জানান, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শিল্পকলায় প্রবেশের সময় হামলাকারীরা ছাদ থেকে তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ কারণে পুলিশের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে।
এ সময় সেখানে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু উপস্থিত ছিলেন।
বলেন, ‘পুলিশ বলেছিল, গাড়ি ভাঙচুরকারীকে তারা চিনতে পেরেছে। আমি বলেছি, যে ভাঙচুর করেছে, তাকে দেখিয়ে দিন। আমি তাকে আপনাদের হাতে সোপর্দ করব। আসলে তাদের (পুলিশের) উদ্দেশ্যই ছিল ছাত্রলীগের ছেলেদের মারবে। আমি তাদের মার ফেরানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেখানে এত পুলিশ আসছে যে কমান্ড শোনার মতো কেউ ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সোমবার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্বিচারে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। পুলিশ কর্মকর্তা মহররম ছিলেন সেখানে। তিনি অনেক ভুল করেছেন।
‘যেখানে আমি উপস্থিত, সেখানে তিনি এমন কাজ করতে পারেন না। আমি তাকে মারপিট করতে নিষেধ করেছিলাম। তারা (পুলিশরা) আমার কথা শোনেননি।’
মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি কে এম এহসান উল্লাহ জানান, সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে উপস্থিত পুলিশের ভূমিকার বিষয়টি তদন্তে জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ তিন কর্মকর্তাকে নিয়ে সোমবার রাতে কমিটি গঠন করা হয়।
চকবাজারে চারতলা ভবনে আগুনের ঘটনায় বরিশাল হোটেলের মালিক ফখরুদ্দিনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে ১৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছে আদালত।
মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম মামলার এজাহার গ্রহণ করেন। তিনি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করে দেন।
এর আগে মামলার আসামি বরিশাল হোটেলের মালিক মো. ফখরুদ্দিনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। তদন্তকারী কর্মকর্তা চকবাজার থানার এসআই রাজীব কুমার সরকার এ মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন জানান।
বিচারক আবেদন বিবেচনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিনের রিমান্ড দেন।
সোমবার দুপুরে চকবাজার দেবীদাস লেনে একটি প্লাস্টিক কারখানায় আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে বরিশাল হোটেলের ছয় কর্মচারীর মৃত্যু হয়। তারা সবাই হোটেলটিতে নাইট শিফটে কাজ করে সকালে ঘুমিয়েছিলেন। তাদের থাকার ব্যবস্থা ছিল ভবনের দ্বিতীয় তলায়। নিচতলায় ছিল বরিশাল হোটেল।
এ ঘটনায় চকবাজার থানায় মামলা করেন আগুনে মারা যাওয়া রুবেলের বড় ভাই মোহাম্মদ আলী। মঙ্গলবার ভোরে বরিশাল হোটেলের মালিক ফখরুদ্দিনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন:চকবাজারে চারতলা ভবনের আগুনে মৃত ব্যক্তিদের দাফনকাজে সহায়তায় ২৫ হাজার টাকা করে দিয়েছেন ঢাকার জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম।
মঙ্গলবার বিকেলে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান জেলা প্রশাসক। এ সময় তিনি মৃত ছয় হোটেল কর্মচারীর পরিবারের কাছে দাফন ও সৎকারের জন্য ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান তুলে দেন।
ডিসি শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘এটা খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। স্বজন হারিয়ে পরিবারের সদস্যরা দিশেহারা। সরকারের তহবিল থেকে তাই তাৎক্ষণিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।
‘তাদের পরিবার সদস্যদের নাম-ঠিকানা ও ফোন নম্বর আমরা রাখছি। যদি আরও সহযোগিতা লাগে, আমরা সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।’ আগুনে মারা যাওয়া কর্মচারী স্বপন সরকারের বড় ভাই সজল সরকার লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চাইলে ডিসি সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এদিকে আগুনের ঘটনা তদন্তে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। একজন এডিসির নেতৃত্বে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করবে।
ভবনের নিচতলায় হোটেলের গ্যাসের লাইন, বিদ্যুতের লাইনসহ সম্ভাব্য যেসব ত্রুটি থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে তদন্ত কমিটি তার সবকিছু খতিয়ে দেখবে। আজকালের মধ্যেই তদন্তকাজ শুরু হবে বলে জানান ডিসি।
আরও পড়ুন:শোক দিবসে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ কর্মীদের সংঘর্ষ ও পুলিশের লাঠিপেটার ঘটনা তদন্তে এবার কমিটি করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এর আগে সোমবার রাতে ঘটনাটি তদন্তে কমিটি করে জেলা পুলিশ।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি জানানো হয়েছে।
তাতে বলা হয়েছে, সোমবার বরগুনা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অনাকাঙ্ক্ষিত হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌশিকুর রহমান ইমরান এসব নিশ্চিত করেছেন।
বরগুনা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনের সামনে সোমবার দুপুরে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পর সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের বেধড়ক পেটায় পুলিশ।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজা জানান, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শিল্পকলায় প্রবেশের সময় হামলাকারীরা ছাদ থেকে তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ কারণে পুলিশের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে।
এ সময় সেখানে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু উপস্থিত ছিলেন।
বলেন, ‘পুলিশ বলেছিল, গাড়ি ভাঙচুরকারীকে তারা চিনতে পেরেছে। আমি বলেছি, যে ভাঙচুর করেছে, তাকে দেখিয়ে দিন। আমি তাকে আপনাদের হাতে সোপর্দ করব। আসলে তাদের (পুলিশের) উদ্দেশ্যই ছিল ছাত্রলীগের ছেলেদের মারবে। আমি তাদের মার ফেরানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেখানে এত পুলিশ আসছে যে কমান্ড শোনার মতো কেউ ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সোমবার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্বিচারে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। পুলিশ কর্মকর্তা মহররম ছিলেন সেখানে। তিনি অনেক ভুল করেছেন।
‘যেখানে আমি উপস্থিত, সেখানে তিনি এমন কাজ করতে পারেন না। আমি তাকে মারপিট করতে নিষেধ করেছিলাম। তারা (পুলিশরা) আমার কথা শোনেননি।’
মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি কে এম এহসান উল্লাহ জানান, সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে উপস্থিত পুলিশের ভূমিকার বিষয়টি তদন্তে জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ তিন কর্মকর্তাকে নিয়ে সোমবার রাতে কমিটি গঠন করা হয়।
বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান দুপুরে জানান, এ ঘটনায় আলোচিত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মহররম আলীকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে যুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য