বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, দেশে চিনির যে চাহিদা, তার চেয়ে বেশি আমদানি হচ্ছে। তবে বাজারে সংকটের বিষয়টি স্পষ্ট। চাহিদার চেয়ে সরবরাহ কম এই অবস্থায় দাম দিয়েছে লাফ। সরকার যে দর বেঁধে দিয়েছে, সে দরে মিলছে না খাদ্যে মিষ্টিভাব আনা উপকরণটি। তার তাতে ভোক্তাদের মেজাজ হয়েছে তিরিক্ষি।
আমদানি পর্যাপ্ত, অস্বীকার করছেন না উৎপাদক ও পরিবেশকরাও। এমনও বলছেন, কারখানাগুলোতে আগামী তিন মাস চলার মতো মজুত আছে।
তাহলে সংকটটা আসলে কোথায়?
এই প্রশ্নে জবাব এলো, যে চিনি দেশের বাইরে থেকে আসে, তার প্রায় পুরোটাই বাজারে ছাড়ার আগে পরিশোধন করতে হয়। আর এই পরিশোধন প্রক্রিয়ায় সংকট তৈরি হয়েছে গ্যাস-সংকটে। ফলে বাজারে চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে সরবরাহ করা যাচ্ছে না।
সরকারের তরফ থেকে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে চিনির সংকট কেটে যাবে বলে আশ্বাস দিচ্ছেন কারখানা মালিকরা।
সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মতবিনিময় সভায় এই বিষয়গুলো উঠে আসে।
অনুষ্ঠানে ভোক্তা অধিদপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তা, ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন ও পেট্রোবাংলার প্রতিনিধি, চিনির মিলমালিকদের প্রতিনিধি, পরিবেশক, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
সেখানে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ও দেশবন্ধু গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম রহমান বলেন, ‘চিনি নেই এমনটা বলা যাবে না, অপরিশোধিত চিনি আছে। আমরা পরিশোধনের পর প্রয়োজনমতো চিনি সরবরাহের চেষ্টাও করে যাচ্ছি। তবে গ্যাস সংকটের কারণে চিনির কয়েকটি কারখানা পুরোদমে চালানো যাচ্ছে না। এ জন্য বাজারে প্রভাব পড়েছে। তাই নিরবচ্ছিন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে চিনির সংকট কাটবে।’
সেই সঙ্গে চিনির বিদ্যমান শুল্ককাঠামো সংস্কার ও ডলারের স্থিতিশীল দরে ঋণপত্র খোলার বিষয়টিতেও জোর দিলেন তিনি।
চিনি বাজারজাতকারী কোম্পানি সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘আমাকেও যে এক কেজি চিনি কিনতে হচ্ছে, তাতে ৩০ টাকার ওপরে শুল্ক দিতে হচ্ছে। যেহেতু বিশ্ববাজারে এখন পণ্যমূল্য বেশি, সেহেতু সরকারের কাছে আমরা শুল্ক হ্রাসের আবেদন জানাচ্ছি।’
ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, ‘সরকার শুল্ক হ্রাস করলে দাম কমে আসবে, এমন কথা দিতে পারলে অবশ্যই সরকার সেটি বিবেচনা করবে। আমরা সরকারকে সেটা বলব। তার আগে আপনারা যেহেতু বলছেন, চিনির তেমন কোনো সংকট নেই, সেহেতু বাজারে সরবরাহ বাড়ান। আমরা আশা করব, আজ রাত থেকে মিলের ফটকে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকগুলো ভরে বাজারে চিনি পাঠানো শুরু করবেন।’
গ্যাস সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা পেট্রোবাংলার সঙ্গে কথা বলেছি। প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে। তাতে সবাই বিষয়টি অবহিত যে আপনারা গ্যাস কম পাচ্ছেন। গ্যাসের চাপও কম। এতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে ঠিক, কিন্তু সবকিছুর আগে আমাদের ভাবতে হবে যে ভোক্তার কষ্ট হচ্ছে।’
সরকার গত ৬ অক্টোবর খোলা চিনির দাম ৯০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনির দাম ৯৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু এই দরে পণ্যটি পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি সুপারশপগুলোতেও দাম বেশি রাখা হচ্ছে। আর দোকানে দরের কোনো ধরাবাঁধা হিসাব নেই। কেউ ১০০ টাকা, কেউ ১০৫, কেউ বা ১১০ টাকা দর রাখছে।
দোকানে স্বাভাবিকের চেয়ে চিনির সরবরাহ কম এটা খালি চোখেই দেখা যায়। কোনো কোনো দোকানে নাইও।
আরও পড়ুন:আসন্ন রমজান মাসের চাহিদা অনুযায়ী ভোজ্যতেল, চিনি, পেঁয়াজসহ অন্য নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুত ও সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)।
রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনে পণ্য সামগ্রীর মজুত, আমদানি, সরবরাহ ও বাজার পরিস্থিতি বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় বৃহস্পতিবার এ কথা জানানো হয়।সভায় নিত্যপণ্যের উৎপাদক,সরবরাহকারী, ব্যবসায়ী ও ভোক্তা অধিকার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। খবর বাসসের
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ভোজ্যতেল, চিনি, পেঁয়াজ, খেজুরসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের আমদানি, মজুদ ও সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।৩ লাখ মেট্রিক টনের বেশি চিনি রয়েছে, ভোজ্যতেলও চাহিদার তুলনায় বেশি মজুতআছে। নিত্যপণ্যের সরবরাহে ঘাটতির কোনো শঙ্কা নেই।
এমন পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য ব্যবসায়ী ও ভোক্তা সবার প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। বলেন, বৈশ্বিক কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারে পণ্যের মূল্য বাড়লে ব্যবসায়ীদের কিছু করার থাকে না। তবে অবৈধভাবে কেউ যেন দাম বৃদ্ধি না করে-আমরাও সে বিষয়টি মনিটারিং করবো।
তিনি বলেন, কোনো ব্যবসায়ী অবৈধভাবে দাম বাড়ালে সংশ্লিষ্ট বণিক সমিতিকে সেই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সেটা না করলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ওই বণিক সমিতির লাইসেন্স বাতিল করবে। এক্ষেত্রে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে সরকারকে সহযোগিতা করা হবে।
জসিম উদ্দিন আরও বলেন, বাজার স্থিতিশীলা রাখার জন্য ভোক্তাদেরও দায়িত্বশীল আচরণ করা প্রয়োজন। চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত পণ্য কিনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা যাবে না।
ব্রয়লার মুরগি বা মাংসের দাম কমাতে আগামী ২/১ মাসের জন্য মাংস আমদানির অনুমতি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি। তিনি বলেন, ব্রয়লার মুরগির যদি উৎপাদন খরচ বেশি হয়, তাহলে সরকার স্বল্প সময়ের জন্য মাংস আমদানির অনুমতি দিতে পারে। যাতে দাম কমে যায়।
মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফারুক আহমে বলেন, চিনি ও ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য নিত্যেপণ্যের সরবরাহ ঠিক আছে। রোজায় দাম স্থিতিশীল থাকবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
এ সময় কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রতিনিধি কাজী আব্দুল হান্নান অভিযোগ করেন, সরকার বিভিন্ন নিত্যপণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করার কারণে বাজার প্রতিযোগিতামূলক হচ্ছে না। অবৈধ মুনাফা রোধকল্পে বাজারকে প্রতিযোগিতামূলক করা জরুরি। এর জন্য নিত্যপণ্যের উপর শুল্ক কমানোর আহ্বান জানান তিনি।
সভায় অন্যদের মধ্যে এফবিসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহ-সভাপতি আমীন হেলালী, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:বর্ণাঢ্য আয়োজনে সারা দেশে উদযাপিত হলো ‘ওয়ালটন ডে’।
২০ মার্চ দিনটি উপলক্ষে ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্স, কর্পোরেট অফিস, ওয়ালটন কমপ্লেক্স মিরপুর, টাঙ্গাইলের গোসাই জোয়াইরসহ সারা দেশের সব সেলস ও সার্ভিস আউটলেটগুলোতে ছিল নানান বর্ণিল আয়োজন।
কর্মসূচির মধ্যে ছিল জাতীয় পতাকা ও ওয়ালটন পতাকা উত্তোলন, বেলুন উড়ানো, কেক কাটা, শ্বেত কপোত অবমুক্তকরণ, আনন্দ র্যালি ও শোভাযাত্রা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি।
১৯৯৯ সালের ২০ মার্চ শুরু হয় ওয়ালটনের পথচলা। তবে দুই যুগ আগে আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়ালটনের যাত্রা শুরু হলেও এর বীজ রোপিত হয়েছিল আরো অনেক আগেই। টাঙ্গাইলের প্রথিতযশা শিল্পোদ্যোক্তা এস এম নজরুল ইসলামের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৭৭ সালে ওয়ালটনের সূচনা ঘটে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনটিকেই ওয়ালটন পরিবার ‘ওয়ালটন ডে’ হিসেবে প্রতিবছর উদযাপন করে আসছে। প্রতি বছর ২০ মার্চ বিশ্বজুড়ে পালিত হয় আন্তর্জাতিক সুখ দিবস এবং এমন একটি দিনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করতে পেরে ওয়ালটন পরিবার আনন্দে উদ্বেলিত।
২০ মার্চ সকালে করপোরেট অফিসে জাতীয় পতাকা এবং ওয়ালটন পতাকা উত্তোলন করেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম। এরপর তিনি ওয়ালটন ডে’র লোগোসহ বেলুন ওড়ানোর মাধ্যমে সারাদেশব্যাপী উৎসবের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। পরে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে ২০ ফুট লম্বা ও ৪ ফুট চওড়া বিশালাকার কেক কাটেন।
শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ওয়ালটনের উদ্যেক্তা পরিচালক এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সে সময় অনলাইনের মাধ্যমে দেশের বাইরে থেকে শুভেচ্ছা জানান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও গোলাম মুর্শেদ।
এরপর ‘ওয়ালটন ডে’ উপলক্ষে সারা দেশে একযোগে র্যালি ও শোভাযাত্রা বের করা হয়। দেশব্যাপী ওয়ালটনের ২০ সহ¯্রাধিক সেলস ও সার্ভিস আউটলেটগুলো বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ীদের নিয়ে দিনব্যাপী নানা আয়োজনে দিনটি উদযাপন করে ওয়ালটন পরিবার। ওয়ালটন ডে উপলক্ষে ২০ থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত ক্রেতাদের জন্য নির্দিষ্ট মডেলের কিছু পণ্যে ২০ শতাংশ ডিসকাউন্ট দেয়া হচ্ছে।
ওয়ালটন ডে’র উদ্বোধন ঘোষণা করে ওয়ালটন পরিবারের সব সদস্য, ক্রেতা, দেশি-বিদেশি পরিবেশক ও শুভানুধ্যায়ীসহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম।
তিনি বলেন, আজ যে ওয়ালটনকে আমরা দেখতে পাচ্ছি তা একদিনে হয়নি। আমাদের সবার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও পরিশ্রমে ওয়ালটন এই অবস্থানে এসেছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ওয়ালটন। এই সফলতা ধরে রাখাও আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, বর্তমানে বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি টালমাটাল। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। প্রচণ্ড সাহসিকতা আর বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে আমাদের এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি ওয়ালটনের চৌকস টিম এসব বাধা পেরিয়ে দুর্বার গতিতে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে এবং যাবে। প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও আমাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে এগিয়ে চলছে। ওয়ালটনের প্রতি দেশবাসীর প্রচ- আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। তাদের সেই বিশ্বাস ও আস্থার মর্যাদা দিতে আমরা সর্বদা সচেষ্ট।
এমডি ও সিইও গোলাম মুর্শেদ বলেন, ‘ওয়ালটন ডে’ আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের একটি দিন। স্বাধীনতার অগ্নিঝরা মাস মার্চেই ওয়ালটনের জন্ম। প্রতিষ্ঠানটিকে আজকের অবস্থানে নিয়ে আসার জন্য পরিচালনা পর্ষদের সদস্যগণ, স্টেকহোল্ডার, ক্রেতা-শুভানুধ্যায়ীসহ ওয়ালটন পরিবারের সদস্যদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। ওয়ালটন ডে উদযাপনে সবার বাধভাঙ্গা আনন্দের এই ধারা অব্যাহত থাকুক।
করপোরেট অফিসে ওয়ালটন ডে উদযাপন অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন প্লাজার সিইও মোহাম্মদ রায়হান, ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রকৌশলী লিয়াকত আলী, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) ইবনে ফজল সায়েখুজ্জামান, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর নজরুল ইসলাম সরকার, এমদাদুল হক সরকার ও মো. হুমায়ুন কবীর, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. তানভীর রহমান, আমিন খান, ফিরোজ আলম, এস. এম. জাহিদ হাসান, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আজিজুল হাকিম, দিদারুল আলম খান, মোহাম্মদ শাহজাদা সেলিম প্রমুখ।
হেডকোয়ার্টারে ‘ওয়ালটন ডে’ উদযাপন অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আলমগীর আলম সরকার, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর কর্নেল (অব.) শাহাদাত আলম, তাপস কুমার মজুমদার, নিজাম উদ্দীন মজুমদার, ইয়াসির আল ইমরান, শাহীনূর সুলতানা, মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।
ওয়ালটন কমপ্লেক্স মিরপুরের র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এফ এম ইকবাল-বিন আনোয়ার, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. মুজাহিদুল ইসলামসহ মিরপুর সার্ভিস সেন্টার, মার্কেটিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স এবং ওয়ালটন প্লাজার কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন:ক্রেতাদের সুবিধার্থে টুকরা করে তরমুজ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুপারমার্কেট রিটেইল ব্র্যান্ড চেইনশপ ‘স্বপ্ন’।
এখন থেকে চেইনশপটিতে গিয়ে একটি তরমুজের পুরোটা, অর্ধেক কিংবা চার ভাগের এক ভাগ কিনতে পারবেন ক্রেতারা।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির হেড অফ মার্কেটিং মাহাদী ফয়সাল বলেন, ‘সকলের সুবিধার্থে আমরা ব্যাচেলর, কাপল বা ছোট পরিবার এবং বড় পরিবারের কথা চিন্তা করে তিন সাইজে কেটে টুকরা করে তরমুজ বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেহেতু আমরা ডিজিটাল মেশিনে গ্রাম হিসেবে পণ্য বিক্রি করে থাকি, তাই যার যতটুকু প্রয়োজন সেই অনুযায়ী গ্রাম হিসেবে তরমুজ ক্রেতারা কিনতে পারবেন।
‘এর ফলে, ৫০/৬০ টাকাতেও চাইলে কেউ কোয়ার্টার সাইজের তরমুজ এখন স্বপ্ন থেকে কিনতে পারবেন।’
তিনি জানান, এখন থেকে স্বপ্নর সব আউটলেটে গ্রাহকরা এ সেবা পাবেন।
এর আগে ২৫০ গ্রাম বা তারও কম ওজনের গরুর মাংস বিক্রি শুরু করে ‘স্বপ্ন’।
আরও পড়ুন:২০২৬ সালের পর স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার কথা বিবেচনা করে নতুন দীর্ঘমেয়াদি রপ্তানি নীতি প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘২০২৬ সালের পর যখন আমরা এলডিসি থেকে একটি উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হব, আমরা কিছু সুযোগ পাব... আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে এবং দেশের আরও উন্নয়ন করতে আমাদের সেই সুযোগগুলোকে কাজে লাগাতে হবে।’
সরকারি বাসভবন গণভবনে রপ্তানি সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির ১১তম সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সোমবার প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। খবর ইউএনবির
তিনি উল্লেখ করেন, একটি উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পর লক্ষ্য হবে উন্নত দেশে পরিণত হওয়া।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য বাড়ানোর সুযোগ কাজে লাগাতেও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে থাকায় বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্যের নতুন বাজার সৃষ্টির সুযোগ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে অনেক দেশ বাংলাদেশ থেকে খাদ্য সামগ্রী আমদানিতে আগ্রহ দেখিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে আমরা খাদ্য সামগ্রী রপ্তানি করতে পারতাম। আমরা এর জন্য উদ্যোগ নিতে পারি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপন এবং সেসব পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে বিপুল সুযোগ সৃষ্টি করা যেতে পারে। সরকার রপ্তানি খাতকে গুরুত্ব দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ভারত গ্রহণের পর, আমরা এক বছরের ভিত্তিতে নীতির পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদি রপ্তানি নীতি প্রণয়নের পদক্ষেপ নিয়েছি। অর্জনগুলো ধরে রাখতে হলে দীর্ঘমেয়াদি কৌশলের কোনো বিকল্প নেই।’
শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘...কিন্তু এর পর আমরা কী করব? এরই মধ্যে, আমরা একটি উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হচ্ছি। আমি মনে করি আগামী দিনে আমরা কী করব বা আমরা কীভাবে এগিয়ে যাব তা বিবেচনা করার এটাই সঠিক সময়।’
প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাপী বর্তমান অর্থনৈতিক অস্থিরতার কথা মাথায় রেখে অর্থনীতির জন্য পরবর্তী পদক্ষেপগুলো নির্ধারণের ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সারা বিশ্বে নতুন বাজার খুঁজতে হবে। আমাদের পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে হবে, আমাদের রপ্তানি ঝুড়িতে নতুন আইটেম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বেসরকারি খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে এবং প্রতিটি সেক্টরকে উদ্যোক্তাদের জন্য উন্মুক্ত করেছে কারণ সরকারের একার পক্ষে দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, রপ্তানি খাতের উন্নয়নের জন্য একটি কৌশল গ্রহণ করতে হবে এবং পণ্য চিহ্নিত করতে হবে। এ জন্য আমরা একটি সম্ভাব্য পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি-২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করতে।
প্রধানমন্ত্রী আইসিটি এবং ডিজিটাল ডিভাইস, আরএমজি, ফার্মাসিউটিক্যালস, হালকা ও মাঝারি ওজনের শিল্প, মোটর যান এবং ইলেকট্রনিক মোটর গাড়ির কথা উল্লেখ করে পণ্য বৈচিত্র্যের কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, সরকার দেশ-বিদেশের বিনিয়োগ নিয়ে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করছে। বাংলাদেশ বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে।
আরও পড়ুন:চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২৪ মার্চ শুরু হচ্ছে সিয়াম সাধনার মাস রমজান, যার সপ্তাহখানেক আগে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে বাজারে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার আগে থেকে চড়া কিছু পণ্যের পাশাপাশি রোজায় চাহিদা বাড়া দ্রব্য বিক্রি হয় বেশি দামে।
কোনটির দাম কত
পুরান ঢাকার সূত্রাপুর বাজার ঘুরে দেখা যায়, রমজানে বেশি কেনা হয় এমন সব পণ্যের দাম বেড়েছে। ছোলার দাম কেজিপ্রতি বিক্রি হয় ৯০ টাকায়, যা কয়েক দিন আগেও ছিল ৮০ থেকে ৮২ টাকা।
চিনির দামও ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হয় ১১৫ টাকা কেজিতে। ১০ ও ১৫ টাকা বেড়ে বুটের ডাল ও মসুর ডালের কেজি দাঁড়ায় ১৪০ টাকায়।
পাঁচ লিটার তেল কিনতে ভোক্তাকে গুনতে হচ্ছে ৯০০ টাকা। এক কেজি লাল মরিচ কিনতে হচ্ছে ৪৫০ টাকা, যা মাসখানেক আগেও ছিল ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে।
এক কেজি প্যাকেটের পোলাওর চাল ১৭০ টাকায় ঠেকেছে, যা ২০ দিন বা ১ মাস আগেও ছিল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়।
কী বলছেন বিক্রেতারা
সূত্রাপুর বাজারের তুষার স্টোরের জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা কী করব বলেন? দাম তো আমরা বাড়াই না। আমাদের দাম দিয়ে কিনতে হয়। তাই আমরা সেই দাম থেকে কিছুটা লাভ করে বিক্রি করি।
‘আমাদেরও তো লাভ করতে হবে। বেশি দাম হলে মানুষ কেনাকাটা কম করে। এতে তো আমাদের আরও লোকসান হয়। আগে দেখা যেত রোজা এলে মানুষ এক মাসের বাজার একসাথে করত, কিন্তু এখন কোনো রকম এক সপ্তাহ বা দুই-তিন দিনের বাজার করছে। এতে আমাদের বিক্রি আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে।’
একই বাজারে খাসির মাংসের বিক্রেতা মোহাম্মদ আলী জানান, খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ টাকা কেজি। আর বকরির (ছাগলের) মাংস ১ হাজার ৫০ টাকা কেজি। আর গরুর মাংস হাড়ছাড়া ১ হাজার টাকা এবং হাড়সহ ৭৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
ধুপখোলা বাজারের মাছবিক্রেতা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আজকে ২ কেজি ওজনের পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজি। আর রুই ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। আর অন্যান্য মাছ প্রতি কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে।’
মুরগির দাম অপরিবর্তিত
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির সেই চড়া দামই বহাল আছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায়। আর লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা কেজি।
সবজির মধ্যে করলার কেজি ৮০ টাকা, শিমের ৬০ টাকা, পটল ৭০ টাকা, আলুর ৩০ টাকা, টমেটোর ৫০ টাকা। এ ছাড়া বেগুন ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ও ঝিঙা ৭০ টাকা, লাউ প্রকারভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা এবং লেবু ৫০ থেকে ৬০ টাকা হালি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
চলতি বছরের রমজান মাসে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৯৫০ টাকা নির্ধারণ করেছে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি)।
কেসিসি এলাকায় এর চেয়ে বেশি মূল্যে মাংস বিক্রি করা যাবে না। সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জনগণের পণ্য ক্রয়ের সুবিধার্থে বিক্রয় মূল্যের তালিকা টাঙিয়ে রাখতে হবে।
রোজায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে সব ব্যবসায়ীদের প্রতি এ নির্দেশনা দিয়েছে কেসিসি।
খুলনা সিটি করপোরেশনের শহিদ আলতাফ হোসেন মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার রাতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এমন নির্দেশনা দেন মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক।
সিটি মেয়র বলেন, ‘পবিত্র মাহে রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ানো যাবে না। খাদ্যপণ্যে কোনো প্রকার ফরমালিন ব্যবহার করা যাবে না।
‘রমজান মাসে সাধারণ ক্রেতার জন্য দ্রব্যমূল্য যেন অস্থিতিশীল না হয়, সহনশীল পর্যায়ে থাকে, এ বিষয়ে সব পর্যায়ের ব্যবসায়ীকে সহানুভূতিশীল থাকতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রমজান মাসে অতিরিক্ত মুনাফার আশায় পচা, বাসি এবং ভেজাল খাদ্যদ্রব্য যেন বিক্রয় না হয়, সেদিকে ব্যবসায়ীদের নজর দিতে হবে। পবিত্র মাহে রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা জোরদার করা হবে।’
মতবিনিময় সভায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার আশ্বাস দেন ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন:দাম বাড়ায় অনেকেরই নাগালের বাইরে এখন গরুর মাংস। এই খাদ্যদ্রব্য কিনতে হিমশিত খেতে হয় মধ্যবিত্তদেরও। আর অল্প আয়ের মানুষের কাছে গরুর মাংস যেন স্বপ্ন। তবে তাদের এই স্বপ্ন বাস্তব করার সুযোগ করে দিয়েছে রিটেইল চেইনশপ ‘স্বপ্ন’।
সম্প্রতি ক্রেতাদের জন্য স্বপ্ন কর্তৃপক্ষ অল্প পরিমাণেও গরুর মাংস কেনার সুবিধা দেয়া শুরু করেছে। যে কেউ চাইলে এখন ৫০ গ্রাম বা প্রায় একই পরিমাণ গরুর মাংস কিনতে পারবেন স্বপ্নের আউটলেট থেকে।
স্বপ্নর নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গ্রাহকদের কথা সব সময় চিন্তা করে স্বপ্ন। তাই এমন পরিস্থিতিতে সর্বনিম্ন ২৫০ গ্রাম বা তারও কম গ্রাম গরুর মাংস বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘স্বপ্ন’ ।
সাব্বির হাসান বলেন, যেসব আউটলেটে স্বপ্নর গরুর মাংস বিক্রি হয় সেসব আউটলেটে এখন থেকে সর্বনিম্ন ২৫০ গ্রাম বা তারও কম গ্রামের (২৫০, ২০০, ১০০ গ্রাম বা ৫০ গ্রাম) গরুর মাংস যে কোনো ক্রেতা কিনতে পারবেন।
তিনি বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষের মাংস কিনতে এসে ফিরে যেতে হবে না আর । ১০ মার্চ সকাল থেকে স্বপ্নর আউটলেটগুলোতে স্বপ্নর গ্রাহকরা ওই পরিমাণ মাংস কিনতে পারছেন।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে টুকরা হিসেবে মাছ-মাংস বিক্রি হয় অনেক আগে থেকেই। উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু অঞ্চলেও একইভাবে বিক্রি হয় মাংস। তবে এখানে এখনো এর প্রচার নেই। তাই ক্রেতাদের সুবিধার্থে নতুন উদ্যোগ নিল দেশের অন্যতম সুপারশপ ব্র্যান্ড ‘স্বপ্ন’।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য