ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে কোনো মার্চেন্ট ক্রেতাকে আকৃষ্ট করতে অস্বাভাবিক কোনো অফার দিতে পারবে না। ভোক্তার সঙ্গে প্রতারণা সংশ্লিষ্ট সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণ হলে সংশ্লিষ্ট মার্চেন্টের ব্যবসায়িক লাইসেন্স বাতিলসহ আইনি পদক্ষেপ নিতে পারবে। এ ছাড়া ক্রেতা মূল্য পরিশোধের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে ওই পণ্য ডেলিভারিম্যানের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।
এরকম বিধান রেখে ডিজিটাল ই-কমার্স খাতের সুষ্ঠু পরিচালনায় স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) বা ই-কমার্স খাত পরিচালন নির্দেশিকা-২০২১ চূড়ান্ত করা হয়েছে। গত ৪ জুলাই তা সরকারের গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে।
খাত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভার্চুয়াল বৈঠকে দেশে প্রথমবারের মতো ই-কমার্স খাত পরিচালন নির্দেশিকার গেজেট চূড়ান্ত ও গেজেট প্রকাশের কথা জানানো হয়।
এতে মার্কেটপ্লেসে বিক্রয়যোগ্য পণ্য ও সেবার তথ্য প্রদর্শন ও ক্রয়-বিক্রয়, সাধারণ নিয়মাবলী, মার্কেটপ্লেসে পণ্য বা সেবা বিক্রয়ের জন্য উপস্থাপন, পণ্য ডেলিভারী, অগ্রিম পরিশোধিত মূল্য সমন্বয় ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। যা গ্রাহকদের জন্য সহায়ক হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল কমার্সের আওতায় নেশা সামগ্রী, বিস্ফোরক দ্রব্য বা অন্য কোন নিষিদ্ধ সামগ্রী বা সেবা ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না। জুয়া বা অনলাইন বিটিং বা অনলাইন গেমবলিং এর আয়োজন বা অংশগ্রহণ করা যাবে না। ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্টানসমূহ সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতিত কোন ধরণের লটারি’র আয়োজন করতে পারবে না। মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) বা নেটওয়ার্ক ব্যবসায় পরিচালনা করা যাবে না।
বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘ঘোষিত নীতিমালার আলোকে প্রণীত নির্দেশিকা সঠিকভাবে কার্যকরের মাধ্যমে বিকাশমান ই-কমার্স খাতকে টেকসই হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হবে। আমরা একটা শুরু করলাম। সময়ের চাহিদা অনুযায়ী এই নির্দেশিকায় আরও নতুন কিছু সংযোজন করা হবে।’
বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘ই-কমার্স খাত পরিচালন নির্দেশিকা-২০২১ এর গেজেট চূড়ান্তকরণ’ শীর্ষক বৈঠকে অংশ নেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান, প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন মফিজুল ইসলাম, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবুল কুমার সাহা, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সভাপতি শমী কায়সার, সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদ আলম তমাল ও বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির।
নির্দেশিকাটি ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১ নামে অভিহিত হবে। যার প্রয়োগ হবে সারা বাংলাদেশে। লক্ষ্য হলো-ডিজিটাল ক্রয়-বিক্রয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার স্বার্থ সংরক্ষণের মাধ্যমে ‘জাতীয় ই-কমার্স নীতিমালা ২০২০ সংশোধিত) এর সফল বাস্তবায়নের জন্য অনুকুল পরিবেশ গড়ে তোলা। উদ্দেশ্য হিসাবে বলা হয়েছে, খাতটিতে স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত করা, ডিজিটাল ব্যবসার প্রসারের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, ডিজিটাল ব্যবসায় শৃংখলা আনয়নের মাধ্যমে ভোক্তার আস্থা বৃদ্ধি করা এবং প্রতিযোগিতামুলক বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা।
এই নির্দেশিকার বিধান প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে কর্তৃপক্ষ বিক্রেতা বা মার্কেটপ্লেস এর ট্রেড লাইসেন্স, কোম্পানি রেজিষ্ট্রেশন, ব্যাট নিবন্ধন বাতিল করা সহ সংশ্লিষ্ট মার্কেটপ্লেস নিষিদ্ধকরণসহ অন্যান্য আইননুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। ক্ষতিগ্রস্ত ক্রেতা সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আদালতে আইনানুগ প্রতিকারের জন্য অভিযোগ দায়ের করতে পারবে।
নির্দেশিকায় বলা হয়, ক্রেতা-বিক্রেতা একই শহরের হলে অনলাইনে পন্যের ক্রয়াদেশ গ্রহণের ৫ দিনের মধ্যে ডেলিভারি দিতে হবে। ভিন্ন শহর বা গ্রামে হলে সময় নেয়া যাবে সর্বোচ্চ ১০ দিন। তবে বিক্রয়ের জন্য প্রদশির্ত পণ্যের সম্পূর্ন মুল্য পরিশোধের ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে ওই পণ্য ডেলিভারি ম্যান বা ডেলিভারি সংস্থার কাছে হস্তান্তর করতে হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ক্রেতাকে এই হস্তান্তরের খবর টেলিফোনে, ই-মেইলে কিংবা এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে হবে।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, অনলাইন বিজনেস করতে হলে নীতিমালা মানতে হবে। যারা মানবে না সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সরকার ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার লাইসেন্স বাতিল করতে পারবে। ক্রেতারাও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আদালতে মামলা করতে পারবে।
ক্রেতার অভিযোগ যথাযথভাবে রেকর্ড করতে হবে। যে কোনো অভিযোগ পাওয়ার ৯৬ ঘন্টার মধ্যে সমাধানের ব্যবস্থা করে ক্রেতাকে ফোন, ই-মেইল বা এসএমএসএর মাধ্যমে জানাতে হবে।
ডিজিটাল কমার্স বা ই-কমার্সের মাধ্যমে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) বা নেটওয়ার্ক ব্যবসা পরিচালনা করা যাবে না। ডিজিটাল প্লাটফর্মে ওষুধু-ক্রয়-বিক্রয়ে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবং দাহ্য পদার্থের ক্রয়-বিক্রয়ে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে।
নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, সকল ডিজিটাল ব্যবসায়ীকে ট্রেড লাইসেন্স, ভ্যাট নিবন্ধন, টিআইন, ইউবিআইডি বা পিআরএ গ্রহণ করতে হবে। পিণ্য সরবরাহের সময় মুদ্রিত বিল প্রদান করতে হবে। যাতে প্রদেয় বা প্রদত্ত ভ্যাট ও আয়কর (যদি থাকে) উল্লেখ থাকতে হবে।
ডিজিটাল কমার্স মার্কেটপ্লেস বা ফেসবুক পেইজে ক্রয়-বিক্রয়, মুল্য ফেরত, পন্য ফেরত বা পরিবর্তন, ডেলিভারি পদ্ধতি, ডেলিভারির সময় এবং অন্যান্য শর্তাবরী বাংলায় লিখা থাকতে হবে এবং সুস্পষ্টভাবে তা প্রদর্শন করতে হবে।
পচনশীল দ্রব্য দ্রুততম সময়ে ডেলিভারি দেয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে। ডেলিভারির সময় যাতে পণ্যের কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য মার্কেট প্লেস কর্তৃপক্ষ যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বা দ্রব্যসামগ্রী বিক্রি করা যাবে না। নকল ভোজাল পন্য প্রদর্শন ও বিক্রয় করা যাবে না। মেধামস্বত্ব সংরক্ষণের নিয়ম যথাযথ পরিপালন করতে হবে। যেসব পণ্যের ক্ষেত্রে মান নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কর্তৃপক্ষের সনদ গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে-তার সনদ নিশ্চিত করতে হবে।
পন্যের ক্ষেত্রে পণ্যের উপাদান ও উপাদানের পরিমাণ, রাসায়নিক গঠনের বিবরণ থাকতে হবে।
যেসব পণ্যের ওয়ারেন্টি বা গ্যারান্টি আছে, তার জন্য ওয়ারেন্টি বা গ্যারান্টি পিরিয়ড ও সেবা প্রাপ্তির স্থান ও যোগাযোগ বিস্তারিত সহ অন্যান্য শর্ত সম্বলিত কার্ড বা ডিজিটাল কার্ড পণ্যের সঙ্গে সরবরাহ করতে হবে।
ক্যাশব্যাক অফারে ঘোষিতদ অর্থ পণ্য বা সেবা বিক্রয় সম্পন্ন হওয়ার পর কোনো ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানের ওয়ালেটে জমা রাখা যাবে না।
আরও পড়ুন:সিলেটের ছয়টি আসনের ৪৭ প্রাথীর মধ্যে ১৪ জনের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। আর স্থগিত করা হয়েছে দুই প্রার্থীর মনোনয়ন।
মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে রোববার সিলেট জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান এ ঘোষণা দেন।
এ ১৬ জন ছাড়া বাকিদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।
সিলেট-১ আসনে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা হয়েছে আওয়ামী লীগের ড. এ কে আবদুল মোমেন, জাকের পার্টির মো. আবদুল হান্নান, ইসলামী ঐক্যজোটের ফয়জুল হক, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. সোহেল আহমদ চৌধুরী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের।
আসনটিতে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী আবদুল বাছিতের মনোনয়ন বাতিল ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ইউসুফ আহমদের মনোনয়ন স্থগিত করা হয়েছে।
সিলেট-২ আসনে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা হয়েছে আওয়ামী লীগের শফিকুর রহমান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির ইয়াহিয়া চৌধুরী, তৃণমূল বিএনপির মো. আবদুল মান্নান খান, জাকের পার্টির মো. ছায়েদ মিয়া ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আলতাফুর রহমান সোহেলের।
এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহিয়া চৌধুরীর আয়কর রিটার্নের কাগজ জমা না দেয়ায় সকালে তার মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হয়। পরবর্তী সময়ে তিনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপস্থাপন করায় বিকেলে জেলা রিটার্নিং অফিসার তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন।
আসনটিতে মনোনয়ন স্থগিত রয়েছে জাতীয় পার্টির মাহবুবুর রহমান চৌধুরী ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. মনোয়ার হোসেনের। আর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে বর্তমান সংসদ সদস্য ও গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খান, তৃণমূল বিএনপির মো. আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. জহির, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান, ইকবাল হোসেন ও মোশাহিদ আলীর।
মোকাব্বির খানের মনোনয়ন বাতিল প্রসঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তা শেখ রাসেল হাসান বলেন, প্রার্থী মোকাব্বির খান গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি হিসেবে তার মনোনয়নপত্রে নিজেই সই করেন, কিন্তু তিনি যে দলের নির্বাহী সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন, তার কোনো প্রমাণ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে উপস্থাপন করতে পারেননি, যে কারণে তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী মেয়র পদে থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার বিধান না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
সিলেট-৩ আসনে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা হয়েছে আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আনোয়ার হোসেন আফরোজ, ইসলামী ফ্রন্টের শেখ জাহেদুর রহমান মাসুম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কফিল আহমদ চৌধুরীর। মনোনয়ন বাতিল হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএমএর মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল, মো. ফখরুল ইসলাম ও ইসলামী ঐক্যজোটের মো. মইনুল ইসলামের।
সিলেট-৪ আসনে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা হয়েছে আওয়ামী লীগের ইমরান আহমদ, ইসলামী ঐক্যজোটের মো. নাজিম উদ্দিন কামরান, জাকের পার্টির মো. আলী আকবরের। স্থগিত হয়েছে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মো. আবুল হোসেনের।
সিলেট-৫ আসনে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে আওয়ামী লীগের মাসুক উদ্দিন আহমদ, জাতীয় পার্টির শাব্বীর আহমদ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) মো. খায়রুল ইসলাম, তৃণমূল বিএনপির কুতুব উদ্দিন শিকদার, স্বতন্ত্র প্রার্থী আঞ্জুমানে আল ইসলাহর সভাপতি মোহাম্মদ হুছামুদ্দিন চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আহমদ আল কবীর ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. বদরুল আলমের।
মনোনয়ন স্থগিত হয়েছে তৃণমূল বিএনপির কয়ছর আহমদ কাওসারের।
সিলেট-৬ আসনের সবার মনোনয়ন বৈধ ঘোষাণা করা হয়েছে। এ আসনে বৈধ প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের নুরুল ইসলাম নাহিদ, জাতীয় পার্টির সেলিম উদ্দিন, তৃণমূল বিএনপির শমসের মবিন চৌধুরী, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের আতাউর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের সাদিকুর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন।
আরও পড়ুন:বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার যশোরের যুবদল নেতাকে হাসপাতালে চিকিৎসার সময় ডান্ডাবেড়ি পরানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিটের শুনানি শেষে আদেশের জন্য সোমবার দিন ঠিক করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এ দিন ঠিক করে দেয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
যুবদল নেতা আমিনুর রহমান মধুকে চিকিৎসার সময়ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তার স্ত্রী হাইকোর্টে এ রিট করেন।
গত ২৯ নভেম্বর যুবদল নেতাকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার ঘটনায় প্রকাশিত সংবাদের বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয়। ওই দিন বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী। তিনি আদালতের কাছে স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ প্রার্থনা করেন।
তখন হাইকোর্ট বলেছিলেন, ‘জঙ্গি সম্পৃক্ততাসহ হেইনাস ক্রাইমের (জঘন্য অপরাধের) ক্ষেত্রে সাধারণত অপরাধীকে ডান্ডাবেড়ি পরানো হয়। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের একাধিক সিদ্ধান্তও রয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে ডান্ডাবেড়ি পরানো যাবে, সে বিষয়ে গাইডলাইন আছে।’
তখন আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দেবেন না বলে রিট করার পরামর্শ দেন। তার পরিপ্রেক্ষিতেই মধুর স্ত্রী রিট করেন।
প্রেক্ষাপট
গত ২ নভেম্বর যশোর সদর উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের আমদাবাদ গ্রাম থেকে পুলিশ মধুকে আটক করে। এরপর ১২ নভেম্বর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা অবস্থায় আমিনুর রহমান মধু হৃদরোগে আক্রান্ত হন। কারাগার থেকে তার দুই পায়ে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া লাগিয়ে প্রথমে যশোরের ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ওই রাতেই তাকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। পরের দিন কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
দুই পায়ে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে ও ডান হাতে হাতকড়া লাগানো অবস্থায় হাসপাতালের মেঝেতে রেখে মধুকে চিকিৎসা দেয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন:আগামী ১০ নভেম্বর আওয়ামী লীগ সমাবেশ করতে চাইলে ইসির অনুমতি নিতে হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে রোববার সকালে পর্যবেক্ষণে ঢাকায় আসা ইইউ ইলেকশন এক্সপার্ট টিমের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আগামী ১০ তারিখ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ একটি সমাবেশ করার কথা বলছে। ইসির অনুমতি ছাড়া তারা এ সমাবেশ করতে পারবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের আচরণ বিধিতে যা আছে তাতে করে রাজনৈতিক সমাবেশের জন্য অনুমতি নিতে হবে। আমাদের লোকাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন আছে, যেমন রিটার্নিং অফিসার আছে তাদের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। তবে এখনও এ বিষয়ে আমরা কোনো চিঠি পাই নাই। চিঠি পেলে পরে চিন্তা করব।’
অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘আজকে আমাদের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইইউ এক্সপার্ট দল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বসতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে আমিসহ আমাদের যুগ্ম সচিবরা তাদের সঙ্গে বসেছি। তারা আগামী ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত এ দেশে থাকবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এক্সপার্ট দল মূলত আমাদের কাছে কিছু বিষয়ে জানতে চেয়েছে, আমরা সেগুলো তাদেরকে জানিয়েছি। তারা নির্বাচন পরবর্তী ও পূর্ববর্তী সময় সব বিষয় অবজার্ভ করবেন। তারা অবজারভ করবেন কোড অফ কন্ডাক্টের কোনো ভায়লেশন হচ্ছে কি না।’
‘তারা আমাদের নির্বাচন কমিশনের আইনগুলো জানতে চেয়েছেন। মূলত আইনগুলো বাংলায় লেখা হওয়ার কারণে তাদের বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে, তাই ইতোমধ্যে আমরা তাদের কিছু ইংরেজিতে প্রোভাইড করেছি।’
অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘মূলত তারা সারা দেশব্যাপী ঘুরবে। এ কারণে তাদের কিছু ইনকয়ারি ছিল, তারা সেগুলো আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন।’
এক্সপার্ট দল আর কী কী জানতে চেয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের নির্বাচনে কতজন ক্যান্ডিডেট হয়েছে, কতগুলো দল অংশগ্রহণ করছে, কতগুলো বিদেশি অবজারভার দল আসবে, কতগুলো লোকাল অবজারভার থাকবে এগুলো জানতে চেয়েছে। আলোচনা শেষে আমরা মনে করি, তারা আমাদের কথায় কনভিন্সড হয়েছে।’
বৈঠকে ইইউ ইলেকশন এক্সপার্ট টিমের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হলেন ডেভিড নোয়েল ওয়ার্ড (ইলেকশন এক্সপার্ট), আলেকজান্ডার ম্যাটাস (ইলেকটোরাল অ্যানালিস্ট), সুইবেস শার্লট (ইলেকটোরাল অ্যানালিস্ট) এবং রেবেকা কক্স (লিগ্যাল এক্সপার্ট)।
আরও পড়ুন:আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ২১ জন প্রার্থীর প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় মিলনাতনে রোববার দুপুরে প্রার্থী-সমর্থনকারীদের উপস্থিতিতে মনোনয়নপত্র যাচাই শেষে এ ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার রেহেনা আকতার।
এ সময় আওয়ামী লীগের মানিকগঞ্জ-১ আসনে আব্দুস সালাম, মানিকগঞ্জ-২ আসনে মমতাজ বেগম এবং মানিকগঞ্জ-৩ আসনে জাহিদ মালেকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ২১জন প্রার্থীর প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ঋণ খেলাপি ও কাগজপত্রে স্বাক্ষরে গড়মিল থাকায় জাতীয় পার্টিসহ অন্য দলের ১২জন প্রার্থীকে বাতিল ঘোষনা করা হয়।
জেলা প্রশাসক ও রির্টানিং অফিসার রেহেনা আকতার বলেন, ‘কাগজপত্রে ভুল বা ঋণ খেলাপি অথবা অন্য কারণে যাদের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে, তারা আপিল করতে পারবেন। আইনগতভাবে তাদের আপিলের সুযোগ আছে।’
রাজধানীর গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া বাস টার্মিনালে ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
রোববার দুপুর ২টা ৫২ মিনিটের দিকে বাসে অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট।
ফায়ার সার্ভিসের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার জানান, সিদ্দিক বাজার ফায়ার স্টেশনের দুইটি ইউনিট পুলিশ প্রটেকশনে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অগ্নি নির্বাপণ করে। বিকেল ৩টা ৮ মিনিটে আগুন সম্পূর্ণভাবে নির্বাপন করা হয়।
নোয়াখালী
নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান এ তথ্য জানান।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী ঋণ খেলাপি হওয়ায় মামুনুর রশিদ কিরনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
নোয়াখালী-৩ আসনে মোট ১১ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেন। এরমধ্যে নৌকার প্রার্থী মামুনুর রশিদ কিরনসহ চারজনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। অন্যরা হলেন জাসদের জয়নাল আবদীন, স্বতন্ত্র আবুল কাশেম ও মনিরুল ইসলাম।
এ আসনে বৈধ প্রার্থী জাকের পার্টির মো. বাহার উদ্দিন, স্বতন্ত্র মিনহাজ আহমেদ, স্বতন্ত্র ডা. এবিএম জাফর উল্যাহ, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. সুমন আল হোসাইন ভূঁইয়া।
এ ছাড়া বিভিন্ন কারণে তিনজনের মনোনয়ন স্থগিত করা হয়েছে। তারা হলেন স্বতন্ত্র আক্তার হোসেন ফয়সাল, জাতীয় পার্টির ফজলে এলাহী সোহাগ ও সাম্যবাদী দলের মহিউদ্দিন।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ৩০ নভেম্বর মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ দিনও বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (সিআইবি) রিপোর্ট অনুযায়ী মামুনুর রশিদ কিরন একজন ঋণ খেলাপি ছিলেন। তাই তার মনোনয়নপত্র আইন অনুযায়ী অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মামুনুর রশিদ কিরন বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ হালনাগাদ করা আছে। সব কাগজপত্র দেয়ার পরও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়ন বাতিল করেছেন। আমি নির্বাচন কমিশন বরাবর আপিল করব।
কক্সবাজার
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদসহ পাঁচজনের মনোনয়ন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।
রোববার দুপুর ১২টার দিকে যাচাই-বাচাইয়ের প্রথম পর্ব শেষে কক্সবাজারের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, জনতা ব্যাংকের লালদীঘি শাখা থেকে ফিস প্রিজারভারস নামের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে সালাহউদ্দিন আহমদসহ অন্য পরিচালকরা প্রায় অর্ধ শত কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। যা পরবর্তীতে খেলাপি হয়।
এরপর প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তন হলেও ব্যাংকের শর্ত অনুযায়ী সালাহউদ্দিন আহমদ এখনো সেই ঋণের একজন জামিনদার।মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট অনুযায়ী সালাহ উদ্দিন আহমদ একজন ঋণখেলাপি ছিলেন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, যে অজুহাতে আমার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে সেটি আদালতের মাধ্যমে স্টে করা ছিল। কেন মনোনয়ন বাতিল করা হলো আমি জানি না। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে আপিল করব।
এদিকে কক্সবাজার-১ আসনে ৯ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এইচ সালাহউদ্দিন মাহমুদ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, মহাসচিব আবদুল আউয়াল মামুন, ওয়ার্কার্স পার্টির মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মোহাম্মদ বশিরুল আলম, জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত প্রার্থী হোসনে আরা, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম ও জাফর আলমের ছেলে তানভীর আহমদ সিদ্দিকী তুহিন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, যাচাই-বাছাইয়ে শেষে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমদ ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম, শাহনেওয়াজ চৌধুরী, কমেডিয়ান কমর উদ্দিন আরমান ও শামসুদ্দিন মুহাম্মদ ইলিয়াছের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী কমেডিয়ান কমর উদ্দিন মুকুলসহ বাকি চারজনের মনোনয়ন কেন বাতিল করা হয়েছে সেটি তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শিমুল শর্মা বলেন, দ্বিতীয় পর্বে কক্সবাজার ৩ ও ৪ আসনের প্রার্থীদের মনোনয় যাচাই-বাচাই করা হবে। যাদের বিবেচনায় রাখা হয়েছে তাও জানানো হতে পারে।
এ ছাড়া কক্সবাজার- ২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ বাদশা ও কক্সবাজার-২ আসনের কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহীমের মনোনয়ন বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
টানা তিন বার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ফেল করা মো. আবদুল আলী বেপারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়তে চাইছেন, তবে যাচাই-বাছাইয়ে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে গেছে। এতে ভেঙে পড়েছেন তিনি, দিয়েছেন ‘আত্মহত্যার হুমকিও’।
রোববার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের মনোনয়নপত্র যাচাই শেষে তার প্রার্থিতা বাতিল করেন জেলা প্রশাসক ও রির্টানিং অফিসার রেহেনা আকতার।
প্রার্থিতা বাতিলের কথা শুনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রার্থিতা ফেরত চেয়ে মাটিতে কান্নায় লুটিয়ে পড়েন আবদুল আলী বেপারি। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এসে তাকে শান্ত্বনা দেন এবং প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিলের পরার্মশ দেন।
হলফনামাপত্রে জানা যায়, মানিকগঞ্জ-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ৬০ বছর বয়সী মো. আবদুল আলী বেপারি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বেড়াডাংগা এলাকার কিয়ামুদ্দিনের ছেলে। পেশায় তিনি একজন কৃষক। কৃষিকাজের মাধ্যমে বার্ষিক আয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং তার কাছে নগদ ২ লাখ টাকা ও এক ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। আলীর শিক্ষাগত সার্টিফিকেট না থাকলেও তিনি স্বশিক্ষিত।
পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, আবদুল আলী বেপারি ২০১১, ২০১৬ ও ২০২১ সালে ঘিওর উপজেলার সিংজুরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন এবং নির্বাচনে পরাজিত হন। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
কান্নায় ভেঙে পড়া আবদুল আলী বেপারি বলেন, ‘আমি এখন আমার ভোটারদের মুখ দেখাব কেমনে, আমি আর বাঁচুম না। আমি ভোট দিতে না পারলে মরুম, আমার জীবন রাখুম না।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার আবেদন, আমার ভোট আমাকে দিয়ে যেন মরতে পারি। আমার বিশ্বাস আছে, মানুষ আমাকে ভোট দেবে। আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সংসদে যাব। যেকোনো চক্রান্তের মাধ্যমে আমার নমিনেশন বাদ দেয়া হয়েছে। আমি এই চক্রান্ত বিশ্বাস করি না। আমাকে আমার ভোট দেয়ার সুযোগ দেয়া হোক।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য