মুদ্রাস্ফীতি অপ্রত্যাশিত রূপ নেয়ায় আগামী কয়েক মাসে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম ব্যাপক বাড়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভোক্তা পর্যায়ে স্বর্ণের দাম প্রতিদিনই ছিল ঊর্ধ্বমুখী। ফলে দেশটির স্বর্ণ খাত ১৩ বছরের মধ্যে রেকর্ড সর্বোচ্চ বার্ষিক দরবৃদ্ধি দেখতে যাচ্ছে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
দুবাইভিত্তিক দৈনিক খলিজ টাইমসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রে গত মাসে ভোক্তা পর্যায়ের সূচকে (সিপিআই) স্বর্ণের মূল্য বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ।
এর আগে এপ্রিলে এ সূচক বৃদ্ধির হার ছিল শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ, যা ২০০৯ সালের জুনের পর সর্বোচ্চ।
দুবাইয়ের আর্থিক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান সেঞ্চুরি ফাইন্যান্সিয়ালের বিনিয়োগবিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা বিজয় ভালেচা বলেন, ‘সিপিআই সূচকে প্রত্যাশার বিপরীত ধারার মধ্যেই গত সপ্তাহে স্বর্ণের দামে মিশ্র প্রবণতা ছিল। অর্থাৎ কিছু দেশে দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও অনেক জায়গায় ছিল নিম্নমুখী।
‘মুদ্রাস্ফীতির বিপরীতে অর্থনীতির রক্ষাকবচ হিসেবে বিবেচিত স্বর্ণ। বিশ্বজুড়ে মুদ্রাস্ফীতি কল্পনার চেয়েও বেশি বাড়ছে বলে তথ্য পাচ্ছি আমরা। এ কারণেই স্বর্ণের দাম বাড়ছে এবং এটি সুখবর।’
বিজয় ভালেচা আরও বলেন, ‘এ অঞ্চলে ১ হাজার ৮৪৫ থেকে ১ হাজার ৮৫০ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করছে স্বর্ণের দাম, যা ১ হাজার ৯১০ ডলারে গিয়ে ঠেকবে বলে স্পষ্ট ধারণা পাচ্ছি আমরা।’
দুবাইয়ে অনেক মূল্যের এ ধাতুর দর ১ দশমিক ১২ শতাংশ কমে শুক্রবার আউন্সপ্রতি ১ হাজার ৮৭৬ দশমিক ৮৭ ডলারে পৌঁছায়। আউন্সপ্রতি দাম কমে ২১ দশমিক ২১ ডলার।
দুবাই গোল্ড অ্যান্ড জুয়েলারি গ্রুপের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের প্রতি গ্রাম বিক্রি হয়েছে ২২৭ দশমিক ৫ দিরহামে। ২২ ক্যারেট ২১৩ দশমিক ৭৫ দিরহামে, ২১ ক্যারেট ২০৪ দিরহামে এবং ১৮ ক্যারেট ১৭৪ দশমিক ৭৫ দিরহামে বিক্রি হয়।
দুবাইসহ পুরো সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম কমে গ্রামপ্রতি গড়ে ২২৭ দশমিক ৫ দিরহাম হয়েছে।
ভালেচা বলেন, এখন পর্যন্ত ২২৪ দিরহামের কমে এ দর নামেনি। আগামী সপ্তাহেই এ দাম লাফিয়ে বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরএম ক্যাপিটাল অ্যানালিটিকসের প্রতিষ্ঠাতা ও জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক রাশেদ হাজিয়েভের মতে, স্বর্ণের দাম এরই মধ্যে বেড়ে ১ হাজার ৮৫৫ থেকে ১ হাজার ৮৭০ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করছে।
দ্রুতই এ দাম ১ হাজার ৯৫০ থেকে ১ হাজার ৯৭৫ ডলারে গিয়ে ঠেকবে বলে আভাস দিয়েছেন তিনি।
গত বছরের মার্চে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বড় ধরনের সংটের আশঙ্কায় চীনসহ বিভিন্ন দেশের বায়াররা স্বর্ণ কিনে মজুত রাখতে শুরু করে।
চাহিদা বাড়ায় সে সময় স্বর্ণের দাম সর্বোচ্চ চূড়ায় ওঠে। তখন আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) স্পট গোল্ড ২ হাজার ৬৩ ডলার পর্যন্ত বিক্রি হয়। পরে অবশ্য তা কমে আসে।
বাংলাদেশের বাজারে সর্বশেষ স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয় গত ২৩ মে। সে সময় সব ধরনের স্বর্ণের দাম ভরিতে ২ হাজার ৪১ টাকা করে বাড়ানো হয়।
সে অনুযায়ী, দেশে এখন প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেট স্বর্ণ ৭৩ হাজার ৪৮৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ৭০ হাজার ৩৩৪ টাকায়। ১৮ ক্যারেটের দাম ৬১ হাজার ৫৮৬ টাকা। আর সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ৫১ হাজার ২৬৩ টাকা।
তার ১২ দিন আগে ১০ মে স্বর্ণের দাম ভরিতে ২ হাজার ৩৩২ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় বাজারে দাম বাড়ানো হয় বলে জানিয়েছিল বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
গত বছরের আগস্টে দেশের বাজারে স্বর্ণের ভরি ৭৭ হাজার ২১৬ টাকায় উঠেছিল, যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এরপর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে স্থানীয় বাজারেও স্বর্ণের দাম ওঠানামা করেছে।
আরও পড়ুন:ইসরায়েলে রকেট ও ড্রোন হামলার পর ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইসরায়েলের ঘনিষ্ট দুই মিত্র হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাষ্ট্র। কারণ হিসেবে ইসরায়েলের ওপর তেহরানের ওই আক্রমণ মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক যুদ্ধের ইন্ধন যোগাতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদন থেকে এ খবর জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি অফিস অফ ফরিন অ্যাসেট কন্ট্রোল (ওএফএসি) জানিয়েছে, ১৩ এপ্রিলের হামলায় ব্যবহৃত ড্রোন উৎপাদনে জাড়িত ইরানের ১৬ ব্যক্তি ও ২ প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
এছাড়া ইরানের সামরিক বাহিনী ও অন্যান্য নিষিদ্ধ গোষ্ঠীকে সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করার অভিযোগ এনে দেশটির ইস্পাত উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত পাঁচটি সংস্থা ও গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাহমান গ্রুপকেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ওএফএসি।
অন্যদিকে, ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র শিল্পের সঙ্গে জড়িত সামরিক বাহিনী-সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি ইরানি সংস্থা, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে যুক্তরাজ্য।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলার জবাবে ১৩ এপ্রিল রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় তেহরান। এসব অস্ত্রের বেশির ভাগ ভূপাতিত করে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলো।
হামলায় দক্ষিণ ইসরায়েলে বিমান বাহিনীর একটি ঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সেটিতে কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে বলে জানা যায়। এ হামলায় সাত বছর বয়সী এক ইসরায়েলি শিশু মারাত্মক আহত হয়। এর বাইরে বড় ধরনের ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
ইতোমধ্যে ইরানের জবাবের পাল্টা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েলের অবশ্যই নিজেদের সুরক্ষা করার অধিকার রয়েছে।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের সামরিক তৎপরতাকে নিরুৎসাহিত করে, দেশটির ওপর এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ চালিয়ে যেতে ওএফএসিকে নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
বাইডেন বলেছেন, ‘যারা ইরানকে হামলায় ইন্ধন দেয় ও তা সমর্থন করে, তাদের সবাইকে এটি স্পষ্ট করতে চাই যে, সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ নেবে।’
ট্রেজারি বিভাগের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও ইরানের বাণিজ্যিক গ্রেডের মাইক্রোইলেক্ট্রনিক্স শিল্পের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। মাইক্রোইলেক্ট্রনিক্স খাতে ইরানের রাশ টেনে ধরতেই তাদের এ সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে। তবে এ নিষেধাজ্ঞা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশটির বাইরে উৎপাদিত প্রযুক্তি পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
ইসরায়েলে হামলার পর এ অঞ্চলে ইরানের কার্যকলাপের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যতের সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে চলতি সপ্তাহেই সতর্ক করে যুক্তরাষ্ট্র। তার পরপরই বৃহস্পতিবার এমন সিদ্ধান্তের কথা জানাল ওয়াশিংটন।
ইসলামী প্রজাতন্ত্রের দেশ ইরান ও এর নেতাদের আর্থিক শাস্তির মুখোমুখি করতেই ক্যাপিটল হিলে তড়িঘড়ি করে এসব আইন প্রণয়ন করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
তবে শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারাও ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে তেহরানের মিত্র দেশগুলো তথা গাজা, ইয়েমেন ও লেবাননে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র সরবাহের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলছে।
এ বিষয়ে ইইউ-এর পররাষ্ট্র নীতি বিভাগের প্রধান জোসেফ বরেল বলেছেন, ‘তেহরানকে শাস্তি দিতে ও ইসরায়েলের ওপর ভবিষ্যত হামলা প্রতিরোধে সহায়তায় বিদ্যমান ইইউ নিষেধাজ্ঞা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী ও প্রসারিত করা হবে।’
তবে একইসঙ্গে ইসরায়েলকেও সংযমী হতে বলেছেন তিনি।
বরেল বলেন, ‘আমরা একটি যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছি, মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক যুদ্ধ, যা বিশ্বের বাকি অংশ বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। তাই যেকোনো মূল্যে আমাদের এটি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।’
আরও পড়ুন:ভারতে ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হচ্ছে শুক্রবার। লোকসভার ৫৪৩টি আসনে সাত দফায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
লোকসভায় পশ্চিমবঙ্গের রয়েছে ৪২টি আসন। শুরুর দিনে এই রাজ্যে তিনটি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। আসন তিনটি হলো-কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার।
বাকি ২৮টি রাজ্য ও ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে শুক্রবার ভোটগ্রহণ হচ্ছে ১৭টি রাজ্য ও ৪টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১০২টি আসনে। একইসঙ্গে এদিন ভোটগ্রহণ হবে অরুণাচল প্রদেশের বিধানসভার ৬০টি ও সিকিমের ৩২টি আসনে।
ভারতে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলো হলো- পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখন্ড, ত্রিপুরা, তামিলনাড়ু, সিকিম, রাজস্থান, পদুচেরি, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, মেঘালয়, মণিপুর, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, লাক্ষাদ্বীপ, জম্মু ও কাশ্মীর, ছত্রিশগড়, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে বিজেপি ৩০৩, কংগ্রেস ৫২, সমাজবাদী পার্টি ৫, বহুজন সমাজ পার্টি ১০, তৃণমূল ২২, ডিএমকে ২৩, ওয়াইএসআর কংগ্রেস ২২ ও টিডিপি ২টি আসনে জয় পেয়েছিল।
গত নির্বাচনে গোটা দেশে নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন বিজেপির ৪০ জন, তৃণমূলের ৯ জন, কংগ্রেসের ৬ জন, ওডিশার বিজেডির ৫ জন মিলিয়ে সর্বমোট ৭৮ জন।
এ বছর ভারতে প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন (১৮-১৯ বছর বয়সী) এক কোটি ৮০ লাখ ভোটার।
ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে দেশটির একটি সামরিক স্থাপনায় বুধবার হামলা চালিয়েছে লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ।
ওই হামলায় কমপক্ষে ১৪ ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
হামলার দায় স্বীকার করে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর কয়েকজন সদস্য নিহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ইহুদি রাষ্ট্রটিতে প্রতিশোধমূলক আক্রমণ করা হয়েছে।
ইরান সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীটির ভাষ্য, লেবানন সীমান্তবর্তী উত্তর ইসরায়েলের আরব সংখ্যাগরিষ্ঠ গ্রাম আরব আল-আরামশেতে ইসরায়েলের নতুন একটি সামরিক পর্যবেক্ষণ কমান্ড সেন্টারে দূর নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র ও বিস্ফোরক ড্রোন দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানায়, গতকালের হামলায় তাদের ১৪ সেনা আহত হন, যাদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা গুরুতর।
সেনাবাহিনী আরও জানায়, পূর্ব লেবাননে ‘সন্ত্রাসীদের অবকাঠামোতে’ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের যুদ্ধবিমান।
দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় মঙ্গলবার হিজবুল্লাহর একজন ফিল্ড কমান্ডারসহ তিনজন নিহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালায় সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।
ওই সময় ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তাদের হামলায় হিজবুল্লাহর স্থানীয় দুই কমান্ডার ও অন্য একজন সদস্য নিহত হন।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে দুই বছরে ৫০ হাজারের বেশি সেনা সদস্য হারিয়েছে রাশিয়া। এক প্রতিবেদনে এমনটা দাবি করেছে বার্তা সংস্থা বিবিসি। দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মৃত সেনাদের তথ্য সংগ্রহ করে আসছেন বিবিসির প্রতিবেদকরা।
রাশিয়া ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করে। এরপর থেকে বিবিসি রাশিয়া, স্বাধীন মিডিয়া গ্রুপ মিডিয়াজোনা ও স্বেচ্ছাসেবীরা মৃতের সংখ্যা গণনা করে আসছে। এই পরিসংখ্যান তৈরিতে কবরস্থানে সেনাদের কবর, বিবিসির অফিসিয়াল রিপোর্ট, সংবাদপত্র ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ওপেন সোর্স থেকে পাওয়া তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে।=
বিবিসি অনুসন্ধান অনুসারে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দ্বিতীয় বছরে ২৭ হাজার ৩০০ জনের বেশি রুশ সেনা নিহত হয়েছে। তবে সেনা নিহতের সংখ্যা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি রাশিয়া।
বিবিসি বলছে, সামগ্রিক মৃত্যুর সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে রুশ কর্তৃপক্ষের দেয়া সরকারি হিসাবে মৃত্যুর সংখ্যার তুলনায় এই সংখ্যা আট গুণ বেশি। যদিও বিবিসির বিশ্লেষণে পূর্ব ইউক্রেনে রুশ-অধিকৃত দোনেস্ক ও লুহানস্কে মৃতের সংখ্যা হিসাবে নেয়া হয়নি। সেটি হিসাবে নিলে রাশিয়ার পক্ষে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হবে।
অন্যদিকে বিবিসি ও মিডিয়াজোনার সঙ্গে কর্মরত স্বেচ্ছাসেবীরা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া জুড়ে ৭০টি কবরস্থানে নতুন সামরিক কবর গণনা করছেন। কবরস্থানগুলো উল্লেখযোগ্যভাবে প্রসারিত হয়েছে।
ছবি এবং ভিডিও থেকে বোঝা যায় যে এই নতুন কবরগুলোর বেশিরভাগই ইউক্রেনে নিহত রুশ সেনা ও অফিসারদের।
রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের (রুসি) স্যামুয়েল ক্র্যানি-ইভান্স বলেন, ‘২০২২ সালে যুদ্ধের শুরুতে রাশিয়া জটিল সামরিক অভিযান পরিচালনার জন্য তার পেশাদার ও অভিজ্ঞ সেনাদের ব্যবহার করতে সক্ষম হয়।
‘যুদ্ধের মধ্যে সেই অভিজ্ঞ সেনাদের অনেকের মৃত বা আহত হওয়ায় তাদের স্থানে অল্প প্রশিক্ষণ বা সামরিক অভিজ্ঞতা আছে এমন স্বেচ্ছাসেবক, বেসামরিক এবং বন্দিদের ব্যবহার করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পেশাদার সেনারা যা করতে পারে, বিকল্প সেনারা তা করতে পারে না।’
আরও পড়ুন:মরুভূমির দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে গত কয়েকদিন ধরে চলছে তীব্র বৃষ্টিপাত ও ঝড়। এ ঘটনায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতা ও বন্যায় স্থানীয় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়া বন্যার কবলে পড়ে অন্তত একজন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে রয়টার্স।
দেশটির জাতীয় আহওয়া কেন্দ্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আমিরাতের আবুধাবি প্রদেশের ওমান সীমান্তে অবস্থিত আল আইন শহরে ২৫৪ মিলিমিটার (৮ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত ৭৫ বছরে অর্থাৎ ১৯৪৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত এটিই দেশটিতে একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।
মঙ্গলবার দিনের শেষভাগে বৃষ্টিপাত কমে এলেও বুধবার সকাল থেকেই জলাবদ্ধতার কারণে দুবাই বিমানবন্দরের কার্যক্রমে বিঘ্ন দেখা দিয়েছে। এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বেশ কিছু ফ্লাইট স্থগিত রাখা হয়।
বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দরের অন্যতম দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তাদের ফ্লাইট শিডিউল উল্লেখযোগ্য আকারে বিঘ্নিত হয়েছে। অসংখ্য ফ্লাইটকে ভিন্ন দেশে অবতরণ করতে বলা হয়েছে বা আগমন বিলম্বিত করা হয়েছে।
দুবাই ছাড়তে আগ্রহী যাত্রীদের বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে এয়ারলাইন্সের কাছ থেকে ফ্লাইট শিডিউল সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিতে বলা হয়েছে।
বিমানবন্দরের প্রাতিষ্ঠানিক এক্স অ্যাকাউন্টে জানানো হয়, ‘অত্যন্ত বৈরি পরিবেশে আমরা বিমানবন্দরের কার্যক্রম স্থিতিশীল করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, আরব আমিরাতের ৭০ বছর বয়সী এক নাগরিক মঙ্গলবার সকালে মারা গেছেন। দেশের উত্তরের রাস আল খায়মাহ প্রদেশে আকস্মিক বন্যায় তার গাড়িটি ডুবে যায়।
আরব আমিরাতের গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারী বৃষ্টিপাতে দেশের কিছু অংশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির কথা জানানো হয়েছে, যার মধ্যে আছে ধসে পড়া সড়ক ও দালান। এগুলোতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।
এদিকে প্রবল ঝড় বৃষ্টিতে ওমানে কমপক্ষে ১৮ জনের মৃত্যু খবর পাওয়া গেছে।
কারাগার থেকে সরিয়ে গৃহবন্দি রাখা হয়েছে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চিকে।
বুধবার এক সূত্র এএফপিকে এ কথা জানিয়েছে।
সামরিক কর্তৃপক্ষের একজন মুখপাত্র জানান, গরম আহাওয়ার কারণে দেশটির বয়স্ক কারাবন্দিদের ‘প্রয়োজনীয় যত্ন’ নেয়া হচ্ছে।
এক্ষেত্রে ৭৮ বছর বয়সী নোবেল বিজয়ীর ক্ষেত্রে এমন পদক্ষেপ সাময়িক বা সাজা হ্রাসের অংশ কি না তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
২০২১ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি অভুত্থানে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সামরিক জান্তা। আটক করা হয় সু চি সহ বেশ কিছু নেতাকে।
অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরু হয়।
জান্তা সরকার এরই মধ্যে বেশ কিছু মামলায় গোপনে বিচারকাজ শেষ করে কয়েক বছরের কারাদণ্ড হয়েছে অং সান সু চির।
ইসরায়েলে ইরান সরাসরি হামলা চালানোর পর পশ্চিমাসহ অনেক দেশই বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। আরোপ করা হয়েছে নানা নিষেধাজ্ঞা। এবার যুক্তরাষ্ট্র দেশটির ওপর আরও কঠোর হওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন ওয়াশিংটনে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার এ প্রসঙ্গে কথা বলেন বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদন জানিয়েছে।
ইয়েলেন বলছেন, নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে ইরানের ওপর। তাদের তেল বাণিজ্যেও এই নিষেধাজ্ঞা প্রভাব ফেলবে।
তিনি বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে, আমি পুরোপুরি আশা করি যে, আমরা আগামী দিনে ইরানের বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা দেব।’
ইয়েলেন বলেন, ‘আমরা আমাদের নিষেধাজ্ঞার পূর্বরূপ দেখি না। তবে আমার কাছে ইরানের সন্ত্রাসী অর্থায়ন ব্যাহত করার সব বিকল্প আছে।’
তিনি বলেন, আগেও ট্রেজারি এবং স্টেট ডিপার্টমেন্ট তেল রপ্তানি করার ক্ষমতা হ্রাস করে ইরানের ‘অস্থিতিশীল’ আচরণ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিয়েছে।
ট্রেজারি সেক্রেটারি বলেন, ‘স্পষ্টতই, ইরান কিছু তেল রপ্তানি চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের আরও কিছু করার আছে। আমি আমাদের প্রকৃত নিষেধাজ্ঞার কার্যক্রমের পূর্বরূপ দেখাতে চাই না, তবে অবশ্যই আমরা সমাধান করতে পারি।’
গত শনিবার ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রথম বারের মতো সরাসরি হামলা চালানো শুরু করে ইরান। শত শত ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন নিক্ষেপ করে এই হামলা হয়।
এই হামলায় একটি সাত বছর বয়সী একটি মেয়ে আহত হয়েছে এবং একটি সামরিক স্থাপনা সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই হামলার পর পরই প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছে নানা পক্ষ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য