রাষ্ট্রায়ত্ত গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) হয়েছেন বিনায়ক সেন।
বৃহস্পতিবার সকালে তিনি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন বলে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে।
এতদিন তিনি এই সংস্থার গবেষণা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
বিনায়ক সেন বিআইডিএসের সদ্যবিদায়ী মহাপরিচালক কে এ এস মুর্শিদের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
১৯৮৬ সালে বিআইডিএসে যোগ দেন বিনায়ক সেন। তিনি দারিদ্র্য, আয়বৈষম্য ও মানব উন্নয়ন নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন।
একই সঙ্গে শ্রমবাজার, সামাজিক সুরক্ষা, সুশাসন, রাজনৈতিক অর্থনীতি বিষয়েও গবেষণার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জার্নালে তার অসংখ্য গবেষণা প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে।
১৯৯৮ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরে কাজ করেছেন বিনায়ক সেন। এ ছাড়া ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক খাদ্যনীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইএফপিআরআই) জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।
তিনি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), জাইকা, ইউএনএসকাপ, ডিএফআইডি ও ইউএনডিপির পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ভোলার বোরহানউদ্দিনে চিকিৎসক পরিচয়দানকারী স্যাকমো শফিকুল ইসলামের ব্যক্তিগত চেম্বারে ভুল চিকিৎসায় পঙ্গু হয়ে গেছেন তানভীর নামে আট বছর বয়সী এক শিশু এমন অভিযোগ তুলেছে তার পরিবার।
এ ঘটনায় বিচার চেয়ে ভুক্তভোগী শিশুর মা ওই স্যাকমোর বিরুদ্ধে ভোলার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা করে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। ঘটনার সত্যতা পেয়ে বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশ মামলা রুজু করে। আজ তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোরহানউদ্দিন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান।
জানাযায়, গত তিন মাস আগে স্যাকমো শফিকুলের ভুল চিকিৎসার কারনে গত (১৫জুলাই) অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তানভীরের দুটি হাঁতের কবজি ও একটি পাঁ কেটে ফেলা হয়েছে। শিশুটি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অভিযুক্ত চিকিৎসক নামধারী শফিকুলের বিরুদ্ধে এর আগেও নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। শফিকুল ইসলাম বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যাকমো হিসেবে কর্মরত আছেন। এছাড়া হাসপাতাল সড়কে আকিব মেডিকেল হল ও দেউলা মেডিকেল হল নামে দুটি ঔষধ বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ব্যক্তিগত চেম্বার করেন।
তানভীর (৮) উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ফুলকাচিয়া গ্রামের কৃষক মোসলেমের পুত্র।
তানভীরের বাবা মোসলেম জানান, তানভীর চরমোনাই মাদ্রাসায় হেফজ বিভাগে পড়াশুনা করে। চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল সে ছুটিতে বাড়ি আসে। ২২ এপ্রিল গায়ে জ্বর আসে,পরের দিন তাকে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে নিয়ে আসলে হাসপাতাল গেইটের সামনে আকিব মেডিকেলের মালিকের সাথে দেখা হয়, ছেলের অসুস্থতার কথা জানিয়ে তার পরামর্শ চাই। সবকথা শোনার পর আকিব আমাকে তার দোকানের চেম্বারে ছেলেকে নিয়ে যেতে বলে। একজন ভালো ডাক্তার দেখিয়ে দিবে বলে আমাকে আশ্বস্ত করে, আমি সরল বিশ্বাসে তার দোকানের চেম্বারে ছেলেকে নিয়ে যাই। আকিব শফিকুল ইসলামকে ডেকে এনে আমার ছেলেকে দেখতে বলে। 'চিকিৎসক শফিকুল ছেলেকে দেখে কিছু টেষ্ট করাতে বলেন। আহছানিয়া মেডিকেল সার্ভিসেস নামে একটি ডায়গনষ্টিকে টেস্ট করানো হয়। টেস্ট শেষে রিপোর্ট দেখে শফিকুল ইসলাম জানায় আমার ছেলের ডেঙ্গু হয়েছে। তিনি এন্টিবায়টিক ইনজেকশন প্রদানের কথা বলেন এরপর একই সাথে চারটি ইনজেকশন প্রয়োগ করেন। ইনজেকশন প্রয়োগের কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে আমার ছেলের গায়ে ছোট ছোট কালো বিচির মত উঠতে থাকে। আমি তাৎক্ষণিক বিষয়টি শফিকুল ইসলাম কে জানালে তিনি আমাকে বলেন এলার্জির জন্য এমনটা হচ্ছে ঠিক হয়ে যাবে'। তিনি ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পরে অবস্থার আরো অবনতি হলে তানভীরকে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। ভোলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর তারা বরিশালে নিয়ে যেতে বলেন। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে নেয়ার পর সেখানকার ডাক্তাররা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অক্সিজেনের সাহায্যে তানভীরকে জরুরি ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। ঢাকায় নিয়ে প্রথমে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে গিয়ে ডাক্তার দেখাই। তানভীরের শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হয়ে পড়ায় কিওর স্পেশিয়ালাইজড হাসপাতালের আইসিউতে (ICU) আট দিন ভর্তি রাখি। আইসিইউ থেকে বেড় করে শিশু হাসপাতালে নিয়ে আরো ৯দিন ভর্তি রাখি। শিশু হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রেফার করলে বার্ন ইউনিটে আরো এক মাস দশ দিন চিকিৎসা শেষে ১৮ জুন ছাড়পত্র প্রদান করে। ঢাকা মেডিকেলের ডাক্তার আমাকে বলেন অস্ত্রোপচার এর মাধ্যমে তানভীরের দুটি হাঁত ও দুটি পাঁ কেটে ফেলতে হবে। পনেরো দিন পরে এসে আবার যেনো ভর্তি করাই।
তিনি আরো জানান, আমি ঢাকা থেকে বাড়িতে এসে ডাক্তার শফিকুল ইসলাম ও আকিবের সাথে দেখা করে বিষয়টি তাদেরকে অবগত করি। তারা আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিয়ে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাসানোর ভয় দেখায়। আমি দরিদ্র মানুষ আমার ছেলের চিকিৎসা করাতে এই পর্যন্ত প্রায় ৯ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গেছে এবং চিকিৎসার জন্য আনুমানিক আরো ৫ লক্ষ টাকার প্রয়োজন কিভাবে টাকা জোগার করবো তা আমি জানিনা।
অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যাকমো শফিকুল ইসলাম জানান, গত তিন মাস আগে তানভীর নামে রোগিকে নিয়ে তার স্বজনরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাফেরা করতেছিলো কেউ তাকে চিকিৎসা দেয়নি। পরে তাকে আমি দেখেছি তার সারা গায়ে এলার্জি,ক্রাশ,ফোরার মতো এবং প্রচন্ড জ্বর ও খিচুনি ছিলো। আমি তাকে জ্বরের সিরাপ, জ্বরের সাপোজিটরি ও খিচুনি কমার জন্য সেডিল ইঞ্জেকশন হাপ এম্পুল দিয়েছি যাতে তার খিচুনি না হয়। আমি তাকে শুধু জ্বরের ট্রিটমেন্ট দিয়েছি। তিনি দাবী করেন, তার এমন অবস্থা ছিলো যে তাকে কেউ চিকিৎসা দিতে রাজি হয়নি, তাই তার ভালোর জন্য আমি তাকে চিকিৎসা দিয়েছিলাম। তিনি দাবী করেন তার বিরুদ্ধে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে তিনি কোনো ভুল চিকিৎসা দেয়নি।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা.কে.এম.রিজওয়ানুল ইসলাম জানান, আমাদের এখানে কর্মরত স্যাকমো শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে তানভীরের বাবা একটি অভিযোগ করেছেন। শফিকুল ইসলাম গত ২-৩ মাস আগে হাসপাতালের বাহিরে একটি প্রাইভেট চেম্বারে তানভীর নামে আট বছর বয়সী একটি রোগী দেখেছিলেন, বাচ্চাটা সম্ভবত জ্বর সাথে একটু ফোরার সমস্যা নিয়ে গিয়েছিলো তার কাছে। প্রাথমিকভাবে তারা বাচ্চাটির রক্ত পরীক্ষা করে ডেঙ্গু সন্দেহ করে। তারা বাচ্চাটিকে একটি সেফট্রিয়াক্সোন এন্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করে। আমরা জানি ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ এতে সেফট্রিয়াক্সোন ইঞ্জেকশনের কোনো প্রয়োজন নেই। যতটুকু কাগজপত্র দেখেছি তাতে সন্দেহ করা যায় হয়তোবা সেফট্রিয়াক্সোন দেয়ার ফলে একটা রেয়ার রিএ্যাকশন হয়েছে বাচ্চাটার। ঢাকা মেডিকেল থেকে যে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে সেখানেও তারা সন্দেহ করেছেন, তবে নিশ্চিত করাটা কঠিন। আমি যতটুকু জানি বাচ্চাটা মুমূর্ষ অবস্থায় আছে আমি তার সুস্থতা কামনা করি।
জুলাই গনঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে পটুয়াখালীতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী পালিত হয়েছে।
৩৬ জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালার অংশহিসেবে শনিবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গনে এক শহীদ এক বৃক্ষ রোপন কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন। এসময় পুলিশ সুপার মোঃ আনোয়ার জাহিদ, সিভিল সার্জন মোঃ খালেদুর রহমান মিয়া, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম সহ প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ, জুলাই যোদ্ধাবৃন্দ এবং গন্যমান্য ব্যাক্তবর্গ উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসন ও উপকুলীয় বন বিভাগ পটুয়াখালীর আয়োজনে এ কর্মসূচীতে জেলার গেজেটভুক্ত ২৪ জন শহীদের স্মৃতি সংরক্ষনে ২৪ টি বৃক্ষ রোপন এবং প্রতিটি বৃক্ষের পাশে শহীদের নামসহ তার অবদানের তথ্য সম্বিলিত ফলক স্থাপন করা হয়। এর আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে ২৪ এর গনঅভ্যুত্থ্যানে শহীদগন তাদের জীবন আত্মহুতি দিয়েছেন। তাদের এ অবদান ভোলার নয়। যারা জীবন দিয়েচেন তাদের আর ফিরে পাওয়া যাবেনা তবে এই বৃক্ষ দীর্ঘ বছর তাদের স্মৃতি বহন করবে।
নরসিংদীতে দেশ টেলিভিশনের সাংবাদিক আকরাম হোসেন ও তার পরিবারের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৯ জুলাই) সকালে নরসিংদী প্রেস ক্লাবের সামনে জেলার সর্বস্তরের সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাংবাদিকরা হলো সমাজের দর্পণ। তারা লেখনির মাধ্যমে সমাজের দুর্নীতি ও অনিয়ম তোলে ধরেন। যার কারণে সাংবাদিকদের ক্ষমতাবানদের চক্ষু স্থূলে পরিণত হতে হয়। আকরাম হোসেন একজন সাহসি সাংবাদিক। তিনি দেশ টিভির মাধ্যমে নরসিংদীর রাঘব বোয়ালদের অনিয়ম ও দুর্নীতি তোলে ধরেছেন। যার কারণে অনেকে তার উপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। এরই প্রেক্ষিতে প্রাণনাশের উদ্দেশ্য আকরাম ও তার পরিবারের উপর হামলা চালানো হয়। এতে অল্পের জন্য সে রক্ষা পায়। এঘটনায় সিসি টিভি ফুটেজের মাধ্যমে দুইজনকে গ্রেপ্তার করলেও তারা জামিন নিয়ে বের হয়ে এসেছে। পুলিশ এখনও ঘটনার মূল হোতাকে চিহ্নিত করতে পারছেন না। যার কারণে আকরাম এখনও হুমকির মুখে রয়েছে। আমরা অবিলম্বে মূলহোতাকে আইনের আওতায় ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দাবি জানাচ্ছি।
এসময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সাংবাদিক মো: খায়রুল ইসলাম, শাহাদাৎ হোসেন রাজু, তৌকির আহমেদ, ফাহিমা খানম, আশিকুর রহমান, মোস্তাক আহমেদ, শরিফ ইকবাল রাসেল, শামীম মিয়া, তৌহিদুর রহমান মিঠু, হৃদয় খান, এনামুল হক রানা, সুজন বর্মণ, আমিনুর রহমান সাদি প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ৯ মে শুক্রবার রাত পৌনে ১০টার দিকে শহরের বাসাইল এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশের হাসান সিএনজি ফিলিং স্টেশনে দেশ টেলিভিশনের সাংবাদিক আকরাম হোসেন ও তার পরিবারের ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। হামলায় অল্পের জন্য সপরিবারে প্রাণে রক্ষা পান তিনি। এ সময় হামলাকারীরা প্রাণনাশের হুমকিও দেয়।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ছবি অবমাননা এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কটুক্তির প্রতিবাদে মাগুরায় জাসাসের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার ঘন্টা ব্যাপী মাগুরা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) । মাগুরা জেলা শাখার শতাধিক নেতাকর্মী এই মানববন্ধনে অংশ নেয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মাগুরা জেলা শাখার আহবায়ক এডভোকেট কাজী মিহির, সদস্য সচিব ফেরদৌস রেজা, পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মাসুদ হাসান খান কিজিল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি আশরাফুজ্জামান শামীম, হাসানুর রহমান হাসু, জেলা ছাত্রদল নেতা শফিকুল ইসলাম, জেলা কৃষক দলের সভাপতি আব্দুর রশিদ, জেলা মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক স্মৃতি খাতুন প্রমূখ।
বক্তারা হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন শহীদ জিয়া ও তার পুত্র বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাদের নামে কোন ধরনের অবমাননা বরদাস্ত করা হবে না প্রয়োজনে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যখন প্রধান উপদেষ্টার সাথে লন্ডনে বৈঠক করেছেন, তখনই একটি রাজনৈতিক দল মনে হলো ভেঙ্গে পড়েছেন। তারেক রহমানের সাথে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক সেই রাজনৈতিক দল মেনে নিতে পারছেনা। সেই রাজনৈতিক দলের অতিত ইতিহাস নিয়ে বিতর্ক আছে।
দুলু আরও বলেন, একটা দেশ সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য নির্বাচিত সরকার দরকার। দেশের জনগণ ভোট দিয়ে যাদের ক্ষমতায় বসাবে। সেই দলের নেতা প্রধানমন্ত্রী হবে। এ দেশের জনগণ তিনশ’ আসনের মধ্যে বিএনপিকে যদি ২৫০ আসনে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে। তারপরেও তারেক রহমান সকল রাজনৈতিক দলকে নিয়ে দেশ পরিচালনা করবেন।
শনিবার দুপুরে নাটোরের আলাইপুরে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) এর জেলা শাখার কর্মী সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। কর্মী সম্মেলন জাসাসের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় জাসাসের আহবায়ক চিত্রনায়ক হেলাল খান বলেন, তারেক রহমান বলেছেন একটা অদৃশ্য শক্তি আমাদের পেছন থেকে ছুঁড়ি মারবে। বিগত কয়েতদিনের হত্যাকান্ডের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। যাতে দেশে নির্বাচন বিলম্বিত হয়। কারণ ষড়যন্ত্রকারীরা জানে নির্বাচন হলে বিএনপি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে।
সম্মেলনে জেলা বিএনপির আহবায়ক রহিম নেওয়াজ, সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান আসাদ, যুগ্ম আহবায়ক জিল্লুর রহমান বাবুল চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান শাহিন, সাইফুল ইসলাম আফতাব, যুবদলের সভাপতি এ হাই তালুকদার ডালিম, জেলা জাসাসের প্রস্তাবিত সভাপতি মেহেদি হাসান, সাবেক যুগ্ম আহবায়ক বাউল আব্দুল খালেক সরদারসহ দলের নেতাকর্মিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়,বুয়েট-এ যথাযোগ্য মর্যাদায় অনুষ্ঠিত হয়েছে জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা-২০২৫। উক্ত অনুষ্ঠানমালা সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করার জন্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ‘‘জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা-২০২৫ আয়োজক কমিটি” শীর্ষক একটি কমিটি গঠন করা হয়।আয়োজক কমিটির উদ্যোগে ২দিন ব্যাপী (১৫-১৬জুলাই,২০২৫)সমন্বিত জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা-২০২৫ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।
এ উপলক্ষ্যে বুধবার (১৬ জুলাই-২০২৫) বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন বুয়েটের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড.আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান ও আন্দোলনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন মাননীয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.আব্দুল হাসিব চৌধুরী। অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনে বুয়েটের ঘটনাবলীর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
উপাচার্য বলেন,‘‘জুলাই আন্দোলনের স্মৃতি শুধু স্মৃতি হিসেবেই থাকবে না আজ এখান থেকে সেই প্রতিজ্ঞা আমাদের করতে হবে। আমরা দেখেছি বর্বরতা;আমরা দেখেছি পিটিয়ে হত্যা করার মত ঘটনা।পুনর্জাগরণ এর জন্য যারা যুদ্ধ করেছে,নিহত হয়েছে,আহত হয়েছে তাদের উদ্দেশ্য সফল করার জন্য আমাদেরকে সকল প্রকার বর্বরতা এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে হবে। আমরা চেয়েছিলাম নৈতিক সোসাইটি তৈরি করতে,সে পথেই আমাদের এগোতে হবে। তা নাহলে এই বলিদান,আত্নাহুতির কোন মূল্য থাকবে না। আমি শুধু মুখে মুখে বলবো আর সেটা কাজকর্মে প্রকাশিত হবে না,তাহলে কিন্তু কোন লাভ হবে না এবং উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে;আত্মাহুতি দেয়া বিফলে যাবে। আমরা দ্বিতীয় বার সুযোগ পেয়েছি,তৃতীয়বার আমাদের জন্য সে সুযোগ নাও আসতে পারে।”
বুয়েট শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,‘‘গত কয়েকদিন আগে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা করার পরে প্রতিবাদ করার জন্য বুয়েট এবং ঢাবি থেকে একটা মিছিল এর আয়োজন করা হয়েছিলো,যা যথাযথভাবে প্রতিবাদ করারই কাজ কিন্তু প্রতিবাদে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার কোনোভাবেই কাম্য নয়।প্রতিবাদ এর বিষয়ে আমরা অবশ্যই প্রতিবাদ করবো,কিন্তু সেটা নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে নয়।আশা করি আমরা আবার সেই ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠবো এবং আমাদের যে দায়িত্ব আমরা সেটা নিজ নিজ জায়গা থেকে পালন করবো। দেশের উন্নয়নে আমরা সকলের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করবো। বুয়েটে অনুষ্ঠিত জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা ২০২৫ সফল হোক এই কামনা করছি।”
উপ-উপাচার্য বলেন,‘‘বিগত ৭৫ বছরে ৫টা গণঅভ্যুত্থানের ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোনো দেশে ঘটে নাই। জনগণের জীবন যখন শুকনো পাতার মতো হয়ে যায়, অত্যাচার, নিপীড়ন,নির্যাতন শোষণ হয়,তখন তার ফলে একটি স্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানল তৈরি করে। সকল গণঅভ্যুত্থানে এটাই বারবার ঘটতে দেখা যায়। ১৪ জুলাই যখন কোটা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের রাজাকারের নাতি-পুতি বলা হচ্ছিল তখন বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে মেয়েরা। তখন বুঝতে পেরেছিলাম এখানে স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি হচ্ছে,দাবানল সৃষ্টি হতে পারে। ১৫ জুলাই যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলা করা হয় এবং ১৬ জুলাই আবু সাঈদকে অদম্য সাহসিকাতার সাথে দুই হাত সম্প্রসারিত করে পুলিশের বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিয়ে মৃত্যুবরণ করতে দেখি তখনই বুঝতে পেরেছিলাম বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। এই বাঁধ ভাঙার ঘটনা আমরা ১৯৭১ সালেও দেখেছি। ইতিহাস বলে কোন দেশের সরকার যখন সমগ্র জনগণকে শত্রু বিবেচনা করে তখন সেই সরকার আর টিকে থাকতে পারে না।
এই আন্দোলনের সময় বুয়েটের বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে শিক্ষক,কর্মকর্তা,কর্মচারী,ছাত্র-ছাত্রী সকলের অংশগ্রহণে ৩০ জুলাই,২০২৪ তারিখে বুয়েটে সবচেয়ে বড় মিছিলের আয়োজন করা হয়।বুয়েট শিক্ষার্থীদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন,সত্য ভাষণে যে শক্তি আছে,অশ্লীলতায় সেই শক্তি নেই। শক্তিহীন মানুষ তার অশ্লীল বাক্য দিয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করতে চায়,বুয়েট শিক্ষার্থীরা এই কাজ করতে পারে না,পূনর্জাগরণে বুয়েট এই দেশকে অতীতেও পথ দেখিয়েছে ভবিষ্যতেও দেখাবে। তিনি বুয়েট শিক্ষার্থীদের সেভাবেই তৈরি হওয়ার পরামর্শ দেন।”
অনুষ্ঠানে বুয়েটের অনুষদের ডিন,শিক্ষক,শিক্ষার্থী,কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ আন্দোলনে তাদের স্মৃতিচারণ ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
সবশেষে ছোট পরিসরে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
নীলফামারীতে গোয়াল ঘরের দুয়ার ভেঙ্গে আনুমানিক ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা মূল্যের চারটি গরু চুরি করেছে চোরেরা। শনিবার (১৯ জুলাই) রাত দুইটার পর সদর উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের আরাজি ইটাখোলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ওই এলাকার মনাহার ইসলাম নামে এক ভ্যান চালকের গোয়ালঘর থেকে দুইটি ষাড়, একটি গাভীন দেশী জাতের গরু ও একটি অস্ট্রেলিয়ান জাতের গরু চুরি করে নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রতিদিনের ন্যায় গরুকে গোয়াল ঘরে রেখে তালাবদ্ধ করে রাখে পরিবারের সদস্যরা। শনিবার সকালে উঠে গোয়াল ঘর থেকে গরু বের করতে যায় মনাহারের মা জাহানারা বেগম। সেখানে গিয়ে দেখে গোয়াল ঘরের দুয়ার ভাঙ্গা। ভিতরে প্রবেশ করে দেখতে পায় একটি গরুও নেই। স্থানীয়রা ছুটে আশে পাশে অনেক খোজাখুজি করলেও গরুর আর সন্ধান পাওয়া যায় না।
ভুক্তভোগী মনাহার ইসলাম বলেন,‘রাত আনুমানিক আড়াইটা থেকে পাঁচটার মধ্যে এই চুরির ঘটনা ঘটেছে ধারনা করছি। কারন আমরা রাত ১টা পর্যন্ত জেগেই ছিলাম। আমার চারটি গরুর বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ২লাখ ৩৫ টাকা। গরুগুলো ছিল আমার জীবনের সকল সঞ্চয়। গরুগুলো চুরি হওয়ায় আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমার আর কোনো সঞ্চয় নেই। সব চোরে নিয়ে গেছে। থানায় অভিযোগ দিয়েছি, দেখি পুলিশ কি করে।’
জানতে চাইলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম.আর সাঈদ বলেন,‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।’
মন্তব্য