বিশেষ কোনো উপলক্ষের দশক পূর্তির উদযাপন করাই যায় বা বিভিন্ন জয়ন্তীর - রজত, সুবর্ণ....। কিন্তু ৩১ বছর পূর্তি মোটেই স্মৃতিচারণা করার মতো উপলক্ষ নয়। তবে সেই বিশেষ উপলক্ষটা বিশেষ কারও হলে এই নিয়ম আর খাটে না। এই যেমন শচীন টেন্ডুলকার।
প্রতি বছর ১৫ নভেম্বর দিনটি এলেই ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম অবধারিতভাবে মনে করিয়ে দেবে, এত বছর আগে এই দিনে শচীন টেন্ডুকারের টেস্ট অভিষেক হয়েছিল। ‘এত’ শব্দটার জায়গায় যে শুধু সংখ্যাটা বদল হয়, তা তো বুঝতেই পারছেন। শুধু ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমই বা বলছি কেন, আজ বিশ্বের যেকোনো ক্রিকেট পোর্টালে গেলেই দেখবেন, নিয়মকে প্রমাণ করা দুয়েকটা ব্যতিক্রম বাদ দিলে ১৫ নভেম্বর দিনটির এই আলাদা মহিমার কথা বলা আছে। সঙ্গে পাদটীকার মতো করে আরেকটা তথ্যও, একই দিনে টেস্ট অভিষেক আধুনিক ক্রিকেটের আরেক ‘গ্রেট’ ওয়াকার ইউনিসের।
শুধুই দিনটিকে হিসাবে নিলে অনেক গ্রেটের টেস্ট অভিষেকই মিলে যাবে। শচীন টেন্ডুলকার আর ওয়াকার ইউনিসের ব্যাপারটা সম্ভবত অনন্যতাই দাবি করে। এই দুজনের টেস্ট অভিষেক তো শুধু একই দিনে নয়, একই টেস্টে। আজ থেকে ৩১ বছর আগে করাচিতে একই সঙ্গে অমরত্বের দিকে যাত্রা শুরু হয়েছিল এক ব্যাটসম্যান আর এক ফাস্ট বোলারের।
দুজনই তখন টিন এজার। করাচি টেস্ট শুরুর দিন টেন্ডুলকারের বয়স ১৬ বছর ২০৫ দিন। ওয়াকারের ১৭ বছর ৩৬৪ দিন। ব্যাটসম্যান-বোলার বলে অভিষেকে দুজন সরাসরি প্রতিপক্ষও। সেই লড়াইয়ে জয়ীর নাম ওয়াকার ইউনিস। টেস্টে প্রথম ব্যাটিং করতে নেমে চোখেমুখে কেমন আঁধার দেখেছিলেন, তা টেন্ডুকার নিজেই অনেকবার বলেছেন। ২৪ বছর পর যাঁর ক্যারিয়ার শেষ হবে টেস্ট খেলার ডাবল সেঞ্চুরি করার অবিশ্বাস্য এক কীর্তি গড়ে, তাঁর নাকি মনে হয়েছিল, জীবনের প্রথম টেস্টটাই না শেষ টেস্ট হয়ে যায়! সেই ‘যন্ত্রণা’ থেকে টেন্ডুলকারকে মুক্তি দিয়েছিলেন ওয়াকার। খুব দ্রুতই ব্যাটসম্যানদের দুঃস্বপ্ন হয়ে ওঠা ইনসুইঙ্গারে টেন্ডুলকারকে বোল্ড করে। ২৪ বলে ১৫ রানের ইনিংসেও অবশ্য টেন্ডুলকারীয় অন ড্রাইভে দুটি চার ছিল।
টেস্ট অভিষেক একই সঙ্গে, তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে পরিচয় ধরলে ওয়াকার মাসখানেকের সিনিয়র। বাবার কর্মসূত্রে যে শারজায় কৈশোরের অনেকটা সময় কেটেছে তাঁর, সেখানেই ওয়ানডে অভিষেক হয়েছে। এমনই গতির ঝড় তুলে যে, আম্পায়ার ডিক বার্ড তাঁকে দিয়ে দিয়েছেন বিশ্বের দ্রুততম বোলারের স্বীকৃতি। দাবানলের মতো যা ছড়িয়ে পড়েছে ক্রিকেট বিশ্বে। সবচেয়ে বড় কারণ, সেই টুর্নামেন্টেরই এক দল ওয়েস্ট ইন্ডিজে তখন খেলছেন ম্যালকম মার্শাল, ইয়ান বিশপ, কার্টলি অ্যামব্রোস ও কোর্টনি ওয়ালশ।
টেস্ট অভিষেকের আগে ওয়াকারের ৮টি ওয়ানডে খেলা হয়ে গেছে। শারজার ওই টুর্নামেন্টের পর নেহরু কাপ খেলতে ঘুরে এসেছেন ভারতও। এক্সপ্রেস ফাস্ট বোলারদের ছায়াসঙ্গী ইনজুরিও উঁকিঝুঁকি দিতে শুরু করেছে। যে কারণে টেস্ট অভিষেকের পর সেই সিরিজের পরের দুই টেস্টে দর্শক হয়ে থাকতে হয়েছে। টেন্ডুলকার সেই দুটি টেস্টেই খেলেছেন এবং দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম হাফ সেঞ্চুরিও করে ফেলেছেন। টেন্ডুলকারের সঙ্গে ওয়াকারের আবার দেখা শিয়ালকোটে সিরিজের শেষ টেস্টে। প্রথম তিন টেস্ট ড্র হয়েছে বলে নিজেদের পেস আক্রমণকে লেলিয়ে দিতে পাকিস্তান যেখানে তৈরি করেছে ঘাসে ঢাকা সবুজ উইকেট। শচীন টেন্ডুলকার নামের অত্যাশ্চর্য গল্পের প্রথম অধ্যায়টাও সেখানেই লেখা। যাতে আছেন ওয়াকার ইউনিসও। যাঁর বাউন্সার টেন্ডুলকারের নাকে ছোবল দিয়ে রীতিমতো রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছে। সেই রক্ত মুছে ব্যাটিং চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন টেন্ডুলকার এবং পরের বলটিতেই মেরেছেন বাউন্ডারি!
ওয়াকারও বুঝে গেছেন, প্রথম দর্শনে যাঁকে মোটেই 'বিশেষ কিছু' মনে হয়নি, মুখে বেবি ফ্যাটের চিহ্ন বয়ে বেড়ানো সেই ব্যাটসম্যান অন্য ধাতুতে গড়া। ভবিষ্যতে আরও অনেকবারই এর সঙ্গে লড়াইয়ে নামতে হবে। কেই-বা তখন ভেবেছিল, টেস্ট ম্যাচে দুজনের আবার দেখা হবে দশ বছর পর!
আধুনিক ক্রিকেটের সবচেয়ে আফসোসটার কথা বলার সময় হলো এখন। ফর্মের তুঙ্গে থাকা অবস্থায় শচীন টেন্ডুলকার বনাম দুই ডব্লিউ, ওয়াসিম আকরাম আর ওয়াকার ইউনিস। যে লড়াইয়ের কথা ভাবলেই জিভে জল চলে আসে। ওই সিরিজের পরই আরও অনেকবারের মতো দুই দেশের সম্পর্ক ভেঙে পড়ায় যা আসলে কখনো আমাদের দেখাই হয়নি। শচীন টেন্ডুলকারের ব্যাটে যখন রানের ফল্গুধারা বইছে, একই সময়ে রিভার্স সুইংয়ে ব্যাটসম্যানদের বুকে কাঁপন তুলছেন দুই ডব্লিউ; কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে তাঁদের দেখাই হচ্ছে না। আবার যখন তা হলো, টেন্ডুলকার তখনো দেদীপ্যমান, কিন্তু ওয়াকারের ক্যারিয়ার-সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়েছে। প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেছে দিনের পর দিন গতির ঝড় তোলার ধকল নিতে নিতে ক্লান্ত শরীর, যেটির ছাপ পড়ছে বোলিংয়েও। এমনই যে, ১৯৯৯ সালের সেই ভারত সফরে প্রথম দুই টেস্টে মাত্র ২ উইকেট নেওয়ার পর তৃতীয় টেস্টে দল থেকেই বাদ পড়ে গেছেন ওয়াকার।
ওয়াকারের বাউন্সারে টেন্ডুলকারের রক্তাপ্লুত নাকের সেই শিয়ালকোটের পর চেন্নাইয়ে আবার যখন দুজনের দেখা হয়েছে টেস্টে, আরও ৫৩টি টেস্ট খেলে ফেলেছেন ওয়াকার, টেন্ডুলকার খেলেছেন ৬৪টি। ৫৫ টেস্টে ২১.৫৭ গড়ে ২৭৫ উইকেট ওয়াকারকে সর্বকালের সেরা ফাস্ট বোলারদের দলে ঢোকার ছাড়পত্র একরকম দিয়েই দিয়েছে। ৬৪ টেস্টে ৫৪.৭৭ গড়ে ৪৮২০ রান শচীন টেন্ডুলকারকেও তুলে দিয়েছে অমরত্বের হাইওয়েতে।
কিন্তু ওই যে আফসোসটা, একই সঙ্গে শুরুর পর সমান্তরালভাবে এগিয়ে চলা দুই গ্রেটের টেস্ট ক্যারিয়ার পরস্পরকে ছেদ করেছে কিনা আর মাত্রই একবার! ১৯৮৯ সালে দুই টেস্টের পর ১৯৯৯ সালেও দুই টেস্ট- মাত্র এই চার টেস্টেই শেষ টেন্ডুলকার-ওয়াকারের টেস্ট লড়াইয়ের গল্প। এত সব অর্জনের পরও টেন্ডুলকারেরও তাই হয়তো আফসোস হয়, সেরা ফর্মের দুই ডব্লিউকে তাঁর জয় করা হয়নি। গত শতকের নয়ের দশকে টেন্ডুলকার-লারা দ্বৈরথে ক্রিকেট বিশ্ব যখন দ্বিধাবিভক্ত, পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের যে তখন ব্রায়ান লারাকেই এগিয়ে রাখতে দেখেছি, এর কারণও হয়তো এটাই। সঙ্গে আরেকটি নাম এসেছে, সেটিও রিভার্স সুইং সামলানোর দক্ষতাকে মানদণ্ড ধরেই। নিউজিল্যান্ডের মার্টিন ক্রো। যে পরীক্ষা টেন্ডুলকারকে দিতেই হয়নি, সেটিতে তাঁকে 'ফেল' বলে দেওয়াটা অন্যায়, আবার পাসই বা করাবেন কিভাবে!
ওয়ানডেতে অবশ্য সেরা ফর্মের দুই ডব্লুর সঙ্গে টেন্ডুলকারের মাঝে মধ্যেই দেখা হয়েছে। তাতে আফসোসটা বরং আরও বেড়েছে। ওয়ানডে কি আর ব্যাটসম্যান-বোলারের ক্ল্যাসিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মঞ্চ হতে পারে! টেস্ট ক্রিকেট, একমাত্র টেস্ট ক্রিকেটই যেটি ধারণ করার মতো কলোসিয়াম। তারপরও নিছক কৌতুহল মেটানোর জন্য হলেও পরিসংখ্যানের আয়নায় ওয়ানডেতে টেন্ডুলকার-ওয়াকার লড়াইটা দেখে নেওয়া যেতেই পারে। টেস্টের মতো ওয়ানডেতেও দুজনের প্রথম লড়াইয়েও জিতেছিলেন ওয়াকার। টেস্ট ক্রিকেটে টেন্ডুলকারকে প্রথম আউট করেছিলেন, ওয়ানডেতেও তা-ই। ১৯৮৯ সালের সেই সিরিজেই ওয়ানডে অভিষেকে শূন্য রানে আউট হওয়ার যন্ত্রনা উপহার দিয়েছিলেন টেন্ডুলকারকে। প্রায় সাত বছর পর ওয়াকারকে দ্বিতীয়বারের মতো উইকেট দেওয়ার পর অবশ্য টেন্ডুলকার খুব বেশি কষ্ট পেয়েছিলেন বলে মনে হয় না। কারণ ১৯৯৬ সালে শারজায় পেপসি কাপের ওই ম্যাচে এর আগেই ১১৪ রান করা হয়ে গেছে তাঁর।
২৩টি ওয়ানডে ম্যাচে প্রতিপক্ষ দলে টেন্ডুলকারকে পেয়েছেন ওয়াকার। আউট করেছেন চারবার। এই হিসাবটা সহজেই পাওয়া যায়, কিন্তু ওয়াকারের বলে টেন্ডুলকার কত রান নিয়েছেন, তা জানার কোনো উপায় নেই। তবে ওই ২৩ ম্যাচে দুজনের পারফরম্যান্স তো জানাই যায়। ২টি সেঞ্চুরি ও ৪টি হাফ সেঞ্চুরিসহ টেন্ডুলকারের রান ৭৮০। ওই ২৩ ম্যাচের স্ট্রাইক রেট আর ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট প্রায় সমান (৮৬.৩৭/৮৬.২৩), তবে অ্যাভারেজ প্রায় সাড়ে সাত কম (৩৭.১৪/৪৪.৮৩)।
প্রতিপক্ষ দলে টেন্ডুলকার, এমন ম্যাচের একটিতে ৫ উইকেট নিয়েছেন ওয়াকার, একটিতে ৪ উইকেট, মোট উইকেট ৩৬। ওই ২৩ ম্যাচের অ্যাভারেজ-স্ট্রাইক রেট-ইকনমি রেটের সঙ্গে ক্যারিয়ার রেকর্ডের আশ্চর্য সমতা (২৩.৯১/২৩.৮৪, ৩০.৫/৩০.৫ ও ৪.৭০/৪.৬৮)। নিছক তথ্য হিসাবেই সংখ্যার এই কচকচানি। প্রতিপক্ষ দলে ওয়াকার থাকলে টেন্ডুলকারের পারফরম্যান্স একটু খারাপ হয়েছে আর ওয়াকারের একই থেকেছে- এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে যতই প্ররোচনা থাকুক এতে, তা হবে অতি সরলীকরণ।
এ সবের দরকারই কি! ৩১ বছর আগে আজকের এই দিনে টেস্ট ক্রিকেটে একই সঙ্গে আবির্ভূত হয়েছিলেন দুই ক্ষণজন্মা ক্রিকেটার- আমরা বরং সেটিরই উদযাপন করি।
লাইনটা লিখতে লিখতে ওই আফসোসটা আবারও হচ্ছে।
বিশ্বখ্যাত স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদকে জাতীয় দলে নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
পাকিস্তানের সাবেক লেগ স্পিনার ও বিশ্বকাপজয়ী এই খেলোয়াড়ের এ পদে কাজ করার প্রচুর অভিজ্ঞতা ও সাফল্যের রেকর্ড রয়েছে।
৫৩ বছর বয়সী মুশতাক এর আগে ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানসহ বিখ্যাত ক্রিকেট দলের দেশগুলোর স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। তার চিত্তাকর্ষ জীবনবৃত্তান্ত পাকিস্তানের বোলিং পরামর্শদাতা হিসাবেও গর্বিত।
নিয়োগের বিষয়ে মুশতাক বলেন, ‘স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অংশ হতে পারাটা আমার জন্য অনেক গর্বের। আমি এই ভূমিকার জন্য আগ্রহী এবং আমার অভিজ্ঞতা খেলোয়াড়দের দিতে চাই। কারণ, তারা খুব কোচিং যোগ্য এবং আমি সবসময় বিশ্বাস করি যে, তারা বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দলগুলোর মধ্যে একটি।’
চলতি মাসের শেষের দিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি ক্যাম্পের আগে মুশতাককে নিয়োগ দেয়া হলো। ২০২৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিতব্য আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সমাপ্তি পর্যন্ত দলের সঙ্গে কাজ করবেন তিনি।
চলমান ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) দারুণ ফর্মে আছেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ৫ ম্যাচ থেকে ১০ উইকেট নিয়ে আছেন উইকেট শিকারিদের তালিকার ৩ নম্বরে। প্রথম ম্যাচেই হয়েছিলেন ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’ও। বোলারদের শ্মশানঘাটখ্যাত আইপিএলে মুস্তাফিজের এমন পারফরম্যান্স বেশ ভালোভাবেই দেখছেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। ফিজের এমন পারফরম্যান্স এ বছরই অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বেশ কাজে দেবে বলে মত তাদের।
তবে বিপত্তি বেঁধেছে আগামী মাসে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর নিয়ে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। সেই সিরিজের জন্য মুস্তাফিজকে অনাপত্তিপত্র দেওয়া হয়েছে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। এরপর দেশে ফিরে ফিজকে খেলতে হবে জাতীয় দলের হয়ে। তবে অনেকেই মনে করেন বিশ্বকাপের জন্য সঠিক প্রস্তুতি নিতে মুস্তাফিজকে জিম্বাবুয়ে নয় আইপিএলে খেলতে দেওয়া উচিত। সেজন্য এ বাঁহাতি পেসারের অনাপত্তিপত্রের মেয়াদ বাড়ানো উচিত বিসিবির।
যদিও একদিন বাড়িয়ে ১ মে পর্যন্ত করা হয়েছে ফিজের ছুটি। তবে মুস্তাফিজকে পুরো সময়ের জন্যই আইপিএলে খেলানোর পক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবি পরিচালক আকরাম খান। তার মতে, মোস্তাফিজ আইপিএলে থাকলে বাংলাদেশই লাভবান হবে। গতকাল মিরপুরে গণমাধ্যমকে বলেন আকরাম খান।
তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, সে চেন্নাইয়ের হয়ে যত ম্যাচ খেলবে, ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হবে, তার সঙ্গে বাংলাদেশও লাভবান হবে। কারণ, জিম্বাবুয়ের সঙ্গে খেলার চেয়ে সেখানে খেললে অনেক কিছু শিখতে পারবে। ড্রেসিংরুমের ব্যাপার আছে, বড় খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলবে। সেখানকার মান ভালো, বিভিন্ন উইকেট, বিভিন্ন মানের খেলোয়াড়ের সঙ্গে খেলবে। আমার মনে হয়, ওর সুযোগ পাওয়া উচিত।’
আকরাম খান আরও বলেন, ‘আমার কাছে যেটা মনে হচ্ছে, মোস্তাফিজের পারফরম্যান্স নিয়ে আমরা চিন্তিত ছিলাম। কারণ, সে গত এক বছর ধরে ধুঁকছিল। আইপিএলে কিন্তু ওর পারফরম্যান্স ভালোর দিকেই যাচ্ছে, একদম যে ভালো হচ্ছে, তা না।’
সাবেক এ অধিনায়কের মতে, ‘যেহেতু সে (মুস্তাফিজ) লঙ্গার ভার্সনে খেলে না, আইপিএলে গিয়ে যদি এ রকম ভালো করতে থাকে তাহলে বিশ্বকাপে আমরা বেশি লাভবান হব। এই জিনিসটা চিন্তা করতে পারে বোর্ড। তারপরও এটা নির্ভর করছে কোচিং স্টাফ, নির্বাচকদের চিন্তা-ভাবনার ওপর। কিন্তু সে যে ভালো করছে, এটা বাংলাদেশের জন্য ভালো।’
আরও পড়ুন:দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ার যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন ২০২৭ সালের ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্ট শুরুর তিন বছর আগেই নিজেদের ৮ ভেন্যু চূড়ান্ত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান নির্বাহী ফোলেতসি মোসেকি এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকান নিউজ ২৪ ওয়েবসাইটকে মোসেকি বলেন, ‘বৈজ্ঞানিক কারণ বিবেচনা করে দক্ষিণ আফ্রিকার আট ভেন্যু বাছাই করা হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে দূরত্ব ও হোটেল রুমের সহজলভ্যতা বিবেচনায় রাখা হয়েছে।’
দেশটির নিয়মিত টেস্ট ভেন্যু জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স, সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্ক, কেপটাউনের নিউল্যান্ডস, ডারবানের কিংসমিড ও গেবেরার সেন্ট জর্জে’স পার্কে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের অধিকাংশ ম্যাচ।
অন্য ভেন্যুগুলো হচ্ছে, ব্লুমফন্টেইনের মানগাউং ওভাল, পার্লের বোল্যান্ড পার্ক ও ইস্ট লন্ডনের বাফেলো পার্ক।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের আসর আয়োজন করতে চলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবুয়ে। এর আগে ২০০৩ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল তারা। তবে এ টুর্নামেন্টের আয়োজনে নামিবিয়া এবারই প্রথম।
আয়োজক দেশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করলেও আসরের টিকিট পেতে আফ্রিকান কোয়ালিফায়ারে খেলতে হবে নামিবিয়াকে।
তিনজন স্বাধীন নারী পরিচালক নিয়োগ দিয়ে ইতিহাস গড়েছে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সিডব্লুআই)। ক্রিকেট বিশ্বে এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল।
নিয়োগ পাওয়া তিন নারী পরিচালক হলেন- ডায়ান ক্যাম্পবেল, লুইস ভিক্টর-ফ্রেডেরিক ও ডেবরা করিয়াট-প্যাটন। এক বছরের মেয়াদে আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত কাজ করবেন তারা।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিডব্লুআই জানিয়েছে, ক্যাম্পবেল, ভিক্টর-ফ্রেডেরিক ও করিয়াট-প্যাটনকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বোর্ড। আপাতত তাদের মেয়াদ এক বছর, যা শেষ হবে আগামী বছরের মার্চ।
তিনজনের মধ্যে প্রথমবার পরিচালকের দায়িত্ব পেলেন ক্যাম্পবেল ও ভিক্টর-ফ্রেডেরিক। অন্যদিকে ২০১৯ থেকে ২০২১ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন করিয়াট-প্যাটন।
বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলকে উপহার প্রদানের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার গণভবনে আমন্ত্রণ করে নিয়ে এসে নারী দলের প্রত্যেককে উপহার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেটারদেরও গণভবনে ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী। তার আমন্ত্রণে দুই দলের নারী ক্রিকেটাররা ক্রীড়াপ্রেমী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
অস্ট্রেলিয়ার পুরো ক্রিকেট দলের সঙ্গে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের ১৫ স্কোয়াডের সদস্যরা গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে। এর বাইরে ক্রীড়ামন্ত্রী ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও নারী বিভাগের চেয়ারম্যান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
সেখানে নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলে সবাইকে নিয়ে ছবি তোলেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ক্রিকেটারদের হাতে উপহার তুলে দেন তিনি। সাদা রংয়ের একটি প্যাকেট তুলে দেওয়া হয় মারুফা-নিগারদের হাতে।
বিসিবির পরিচালক এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাদেল জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী দুই দলের নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সুযোগ সুবিধার খোঁজ খবরও নিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভালো খেলতে না পারলেও প্রধানমন্ত্রী মেয়েদের অনুপ্রাণিত করেছেন। ক্রিকেটারদের হাতে উপহারও তুলে দিয়েছেন।’
তিনি জানান, ‘সবাইকে ঈদের পর আবার দাওয়াত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেসময় আমাদের সাবেক অনেক ক্রিকেটারসহ পুরো দলকে যেতে বলেছেন তিনি।’
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে এসেছে অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেট দল। ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতেছে অজিরা। মঙ্গলবার এক ম্যাচ হাতে রেখেই অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে।
গত ১৭ মার্চ ঢাকায় পা রাখে অ্যালিসা হিলির দল। ২১ মার্চ থেকে শুরু হয় তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।
আইসিসি উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত এই সিরিজে বাংলাদেশ ধবলধোলাই হয়েছে। এরপর এক ম্যাচ হাতে রেখে টি-টোয়েন্টি সিরিজও ২-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে অজিরা। বৃহস্পতিবার সিরিজের শেষ ম্যাচটিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
মাঠের খেলায় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কোনোভাবেই সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে সম্পর্কের দিক থেকে এগিয়ে থাকল। বন্ধুত্বের জায়গা থেকে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যালিসা হিলিকে ঢাকাইয়া জামদানি শাড়ি উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
সিলেটে প্রথম টেস্টে ৩২৮ রানে হারের পর চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টেও বড় পরাজয় বরণ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজ নির্ধারণী এ ম্যাচের পঞ্চম দিন বুধবার ১৯২ রানের জয় তুলে নিয়েছে সফরকারীরা।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ছয় ব্যাটারের অর্ধশতকে ৫৩১ রান করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে প্রথম ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান তুলতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা।
প্রথম ইনিংসে সাড়ে তিন শর বেশি লিড নেয়া শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয়টিতে সাত উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। তাতে ৫১১ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ।
বিশাল এ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ইনিংসের মতো হতাশাজনক ব্যাটিং না করলেও বিজয় থেকে অনেক দূরেই থেমে যায় টাইগারদের রানের চাকা। মমিনুল হক ও মেহেদি হাসান মিরাজের জোড়া অর্ধশতকে ৩১৮ রান তুলতে সক্ষম হয় সফরকারী।
এ জয়ের মধ্য দিয়ে ২-০তে সিরিজ জিতে নিল শ্রীলঙ্কা। ব্যাটে-বলে নৈপুণ্য দেখিয়ে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ ও প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ হওয়ার গৌরব অর্জন করেন কামিন্দু মেন্ডিস।
আরও পড়ুন:সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট জয়ের জন্য বাংলাদেশকে ৫১১ রানের বিশাল টার্গেট দিয়েছে সফরকারী শ্রীলঙ্কা।
প্রথম ইনিংসে পাওয়া ৩৫৩ রানের লিডকে সাথে নিয়ে ৭ উইকেটে ১৫৭ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। খবর বাসসের
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিন শেষে ৬ উইকেটে ১০২ রান সংগ্রহ ছিল শ্রীলঙ্কার।
মঙ্গলবার চতুর্থ দিন ১ উইকেট হারিয়ে ৫৫ রান যোগ করে ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা।
৩৯ রান নিয়ে খেলতে নেমে সাকিব আল হাসানের বলে বোল্ড হবার আগে ৫টি চারে ৫৬ রান করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। ৩ রানে শুরু করা প্রবাথ জয়সুরিয়া ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন। অন্যপ্রান্তে বিশ্ব ফার্নান্দো অপরাজিত ৮ রান করেন।
বাংলাদেশের হাসান মাহমুদ ৬৫ রানে ৪টি, খালেদ আহমেদ ৩৪ রানে ২টি ও সাকিব ৩৯ রানে ১টি উইকেট নেন।
মন্তব্য