সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় পুলিশের এক উপপরিদর্শকের ওপর হামলার অভিযোগে ১২ জুলাই রাতে গ্রেপ্তার করা হয় উপজেলা যুবলীগ নেতা অরিন্দম চৌধুরী অপুকে। তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়কও।
এ মামলায় অপু ছাড়া আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন বিশ্বজিৎ রায় ও রতন রায়। এর মধ্যে গ্রেপ্তার আছেন রতন রায়।
অপুর বিরুদ্ধে মাদক আইনেও একটি মামলা করা হয়েছে।
অপুর পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনাটি সাজানো। হেফাজত নেতা মামুনুল হককে নিয়ে প্রচারিত একটি সংবাদের লিংক ফেসবুকে শেয়ার করার জেরে তাকে ফাঁসানো হয়। তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে নির্যাতনও করা হয়।
অপুর বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছেন যিনি, শাল্লা থানার সেই উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলী আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ছিলেন। গত শুক্রবার ছাড়া পেয়েছেন।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান শনিবার নিউজবাংলাকে বলেন, পরিবারের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে দেখা হয়েছে। অপুকে হেফাজতে নির্যাতনের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
এসআইয়ের ওপর হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে বলা যাবে। এখন আমার এসআই আহত হয়ে হাসপাতালে আছে। তার চোখের নিচে, পা ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। হামলা না হলে এই আঘাতের চিহ্ন কোথা থেকে আসলো। কেউ আক্রান্ত হলে তো আইনের আশ্রয় নিতেই পারে। তবে তদন্ত শেষ হলে সব বলা যাবে।’
তবে অরিন্দম চৌধুরী অপুর ভাই আইনজীবী অমিতাভ চৌধুরী রাহুলের দাবি, হামলার অভিযোগ আনা এসআই শাহ আলী সাম্প্রদায়িক প্রতিহিংসা থেকে তার ভাইকে ফাঁসিয়েছেন।
অমিতাভ বলেন, গত ৩ এপ্রিল হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের তৎকালীন নেতা মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জের একটি রিসোর্টে বেড়াতে গিয়ে জনরোষে পড়ার পরদিন তার স্ত্রীর সঙ্গে কথোপকথনের একটি অডিও ফাঁস হয়। যা প্রচার করে একাত্তর টিভি। ওই সংবাদের লিংক ফেসবুকে শেয়ার করেন অপু। এরপর স্থানীয় কয়েকজন তাকে হুমকি দেয়।
এর আগে ১৭ মার্চ একই উপজেলার নোয়াগাঁওয়ে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটে। এ কারণে ফেসবুকের হুমকির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে ১০ এপ্রিল শাল্লা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন অমিতাভ।
অমিতাভ বলেন, ‘সাধারণ ডায়েরি করার পরও থানা থেকে হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে আমার ভাইয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। তখন এসআই শাহ আলী আমার ভাইকে তার ফেসবুকে দেয়া লিংক মুছে ফেলার কথা বলেন এবং সাধারণ ডায়রি থেকে হেফাজত ইসলামের প্রসঙ্গটি বাদ দিতে চাপ দেন।
‘এসআই শাহ আলীর চাপ প্রয়োগের বিষয়টি গত ১৪ এপ্রিল আমরা পুলিশ সুপারকে লিখিতভাবে জানাই। পরে সার্কেল এএসপি বিষয়টি অনুসন্ধান করেন এবং এসআই শাহ আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয় বলে আমরা জানতে পেরেছি।’
এসপির কাছে অভিযোগ দেয়ায় শাহ আলী ক্ষুব্ধ হন অপুর ওপর, এমন অভিযোগ অমিতাভের।
তিনি বলেন, ‘এই ঘটনার জেরেই এখন আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে হামলার মিথ্যে অভিযোগ তোলা হয়েছে। অথচ ঘটনার রাতে তিনি বাসায় ছিলেন। বাসা থেকে তাকে থানায় একটি জরুরি কাজের কথা বলে ডেকে নেয়া হয়। এরপর সেখানে তাকে রাতভর মারধর করা হয়। ভোররাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে একজন ফোন দিয়ে আমাদের এ তথ্য জানায়। এরপর আমরা হামলা ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানতে পারি।’
অপুর বিরুদ্ধে মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, সোমবার মধ্যরাতে ডিউটি শেষ করে থানা থেকে বের হয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন তিনি। পথে অপুর নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক এসআই শাহ আলীর উপর হামলা করেন। এতে গুরুতর আহত হন শাহ আলী।
এ ব্যাপারে শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর আলম শনিবার বলেন, ‘পুলিশের ওপর হামলা মামলাায় দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়টি এখন তদন্তাধীন। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে আমি কোনো মন্তব্য করবো না।’
ওসির দাবি, ওই রাতে অপুকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি।
এসব বিষয়ে এসপি মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে শনিবার তিনি বলেন, ‘জিডি করার পর চাপ প্রয়োগের যে অভিযোগ করা হয়েছে তা ওই সময়ই শেষ হয়ে গেছে। যে এসআইকে তারা অভিযুক্ত করেছিলেন তাকেই বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেই। তিনি প্রতিবেদন জমাও দেন। ফলে এই ঘটনার জেরে এখন গ্রেপ্তার করা হয়েছে এমন অভিযোগ সঠিক নয়।’
এসপি বলেন, ‘থানা হেফাজতে অপুকে নির্যাতনের কোনো প্রমাণ পাইনি। গ্রেপ্তারের দিন তিনি মাদক নিয়েছিলেন। মাদক পরীক্ষার জন্যই তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। অসুস্থ হওয়ার কারণে নয়। তারপরও অপুর পরিবার যদি মনে করেন তাকে নির্যাতন করা হয়েছে, তবে তারা আইনের আশ্রয় নিতে পারেন।’
তিনি জানান, অপুর বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক মামলা রয়েছে থানায়। এর মধ্যে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা। ফলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন কিছু নয়।
গ্রেপ্তারের পর থানা থেকে রাতে অপুকে হাসপাতালে নেয়ার কারণ জানতে চাইলে শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুমন ভুইয়া বলেন, ‘তখন আমি হাসপাতালে ছিলাম না। ফলে কেন আনা হয়েছিল বলতে পারব না। এছাড়া এটি কয়েকদিন আগের ঘটনা। প্রতিদিন হাসপাতালে অনেক রোগী আসেন। কে কী সমস্যা এসেছিলেন তা মনে রাখা সম্ভব নয়।’
আহত অবস্থায় এসআই শাহ আলীর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাকে শুক্রবার ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সিলেটে গিয়ে পরবর্তী চিকিৎসা নিতে বলা হয়েছে।
অরিন্দম চৌধুরী অপুকে গ্রেপ্তারের খবরে ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে লেখক ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক হাসান মোরশেদ লেখেন, ‘অপু ৭১ টিভির রিপোর্ট শেয়ার করার পর শুরু হয় তাকে মেরে ফেলার হুমকি-ধামকি। এমনকি তার স্ত্রীর ছবি বিকৃত করে নোংরামী করা হয়। অপু তখন আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হয়। ঐ অবস্থায় থানায় জিডি করেন তার ভাই। কিন্তু থানার একজন এসআই উল্টো টালবাহানা করে জিডি না নিয়ে বরং তাকে চাপ দেন হেফাজতের নাম উল্লেখ না করতে। অপু এই এসআই এর বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ জেলা এসপির কাছে অভিযোগ করলে ওই এসআইকেই নির্দেশ দেয়া হয় জিডি গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে।
‘সুনামগঞ্জের এসপি সাহেবের আলাপ থেকে স্পষ্ট, উক্ত এসআই সে সময় অপুর সাধারণ ডায়েরি নিতে চায়নি। পরে এসপি সাহেবের নির্দেশে সে সাধারন ডায়েরি নিতে বাধ্য হয়। যেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মামনুল হক ও হেফাজতের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন সেখানে একজন এসআইয়ের এতো হেফাজত প্রেম কেন? তার এই ভূমিকার জন্য পুলিশের কোনো বিভাগীয় তদন্ত হয়েছিল কিনা?’
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক খায়রুল হুদা চপল বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। আমি পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেছি। এ ঘটনার যাতে সুষ্ঠু তদন্ত হয় এবং সে ন্যায় বিচার বঞ্চিত না হয় এ ব্যাপারে পুলিশ সুপারকে অনুরোধ করেছি।’
অপুকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে ‘সচেতন শাল্লাবাসীর’ ব্যানারে সিলেট নগরে মানববন্ধন করা হয়। সেখানে অপুর পরিবারের পক্ষে একই অভিযোগ আনে শাল্লাবাসী।
এর আগে গত ১৭ মার্চ ফেসবুকে মামুনুল হকের সমালোচনা করে স্ট্যাটাস দিয়ে শাল্লার নোয়াগাওয়ে হিন্দু গ্রামে হামলা চালানো হয়। ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয় হিন্দুদের শখানেক ঘরে। এই ঘটনার প্রতিবাদেও অপু সোচ্চার ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন:পাহাড়ে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ বিরোধী যৌথ অভিযানের কারণে বান্দরবানের থানচি, রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
মঙ্গলবার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আমাদের পার্বত্য তিনটি উপজেলাতে বিশেষ করে বান্দরবানের থানচি, রুমা এবং রোয়াংছড়িতে যৌথ বাহিনীর অপারেশন চলমান রয়েছে। আপাতত এই তিনটি উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। পরে সুবিধাজনক সময়ে আয়োজনের চেষ্টা করব।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। থানচি, রোয়াংছড়িতে আগামী ৮ মে ও রুমায় ২১ মে ভোট হওয়ার কথা ছিল।
গত ২ এপ্রিল রুমার সোনালি ব্যাংকে ডাকাতি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্র লুট করা হয়। এছাড়া ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ করা হলেও পরে ছাড়া পান তিনি। পর দিন রুমায় সোনালি ও কৃষি ব্যাংকে দিন দুপুরে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
এ সব ঘটনায় কেএনএফ জড়িত বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। এরপর যৌথ বাহিনীর অভিযানে এখন পর্যন্ত ২১ নারীসহ ৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কেএনএফ-এর সদস্য অভিযানে নিহতও হয়েছেন।
নির্বাচন ভবনে আয়োজিত সভায় নির্বাচন কমিশন সদস্য, সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন দপ্তর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এবারের জাতীয় নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক থাকার পরও দেশি-বিদেশি চক্র অপপ্রচার মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরে তো বটেই বাইরেও নির্বাচিত সরকারকে হটানোর চক্রান্ত দীর্ঘদিন ধরে দেখছি।
মঙ্গলবার সকালে গুলিস্তানের ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি আয়োজিত প্রচারপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, একটি চিহ্নিত অপশক্তি দেশের গণতন্ত্র এবং জনগণের ভোটাধিকার নস্যাৎ করতে নির্বাচনবিরোধী অপতৎরতায় লিপ্ত রয়েছে। গণতন্ত্র, শান্তি, উন্নয়ন নির্বাচনবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেণ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের ও প্রগতিশীল শক্তির কাছে, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব বিরোধী অপশক্তি আমাদের ভিত্তিমূলে আঘাত করতে যাচ্ছে। তাদের আমাদের প্রতিহত করতে হবে, সেজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের মাধ্যমে সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগের জন্য জনগণকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আহ্বান জানিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ভোট দিয়ে আপনার নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করুন। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে জনগণ সব শক্তির উৎস।
তিনি বলেন, দেশবিরোধী অপশক্তি জাতির পিতার পরিবারকে হত্যা করে জনগণকে সামরিক স্বৈরশাসনের জাঁতাকলে দীর্ঘকাল পিষ্ট করেছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে হত্যার রাজনীতি বন্ধ করেছেন।
রাজধানীর সদরঘাটের শ্যামবাজার ঘাটে একটি লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে ওই আগুনের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এমভি বাঙালি নামের লঞ্চটিতে কোনো যাত্রী ছিল না।
ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানিয়েছেন, দুপুর ১টা ৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় চারটি ইউনিট। পরে যোগ দেয় আরও একটি ইউনিট।
তিনি জানান, দুপুর পৌনে ২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। লঞ্চটির তৃতীয় তলায় আগুনের সূত্রপাত। আগুনের কারণ ও বিস্তারিত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, লঞ্চটি নোঙর করা ছিল। হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
কুমিল্লার বুড়িচং সীমান্তে ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক আহত হয়েছেন।
উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের চড়ানল তেঁতুলতলা সীমান্তে সোমবার রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহত বিল্লাল হোসেন (২৮) রাজাপুর ইউনিয়নের লড়িবাগ এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিল্লাল হোসেন ভারত থেকে অবৈধ পথে চিনি ও অন্য পণ্য ওঠা-নামার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সোমবার রাত ৮টার দিকে তেঁতুলতলা সীমান্ত দিয়ে আসা চিনি নামানোর সময় বিএসএফের সদস্যরা গুলি করে তাকে। তার শরীরে ৩০টির মতো ছররা (ছোট গুলি) গুলি লাগে।
পরে বিল্লালকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। গুলিতে তার চোখ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান চিকিৎসক।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন জানান, গুলিতে আহত ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা নেই। সীমান্তের ঘটনা সম্পর্কে বিজিবি বলতে পারবে।
বিজিবির সংকুচাইল বিওপির কামান্ডার ফারুক কামাল জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তারা এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে পারবেন না।
আরও পড়ুন:মাদারীপুরের ডাসারে তীব্র গরমের মধ্যে জমিতে কাজ করতে গিয়ে এক বৃদ্ধ কৃষক হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন।
মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছে তার পরিবার।
মারা যাওয়া আজগর আলী বেপারী (৭৫) উপজেলার গোপালপুর এলাকার পশ্চিম বনগ্রাম গ্রামের মৃত বরম আলীর ছেলে।
প্রচণ্ড গরমে শরীর উত্তপ্ত হয়ে অজ্ঞান হওয়াসহ নানা লক্ষণ দেখা দিলে তাকে বলা হয় হিট স্ট্রোক।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কৃষক আজগর আলী বেপারী প্রচণ্ড রোদের মধ্যে তার বাড়ির পাশের একটি জমিতে কাজ করতে যান। এ সময় তিনি প্রচণ্ড গরমের ফলে হিট স্ট্রোকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে বাড়িতে নওয়ার পথেই তিনি মারা যান।
ইউপি সদস্য হালিম জানান, গরমের ভেতর জমিতে কাজ করতে গিয়ে আজগর আলণী হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন।
এ ব্যাপারে ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম শফিকুল ইসলাম জানান, বৃদ্ধ বয়সে আজগর আলী জমিতে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে তাপমাত্রা সইতে না পেরে হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন। ঘটনাটি দুঃখজনক। পারিবারিকভাবে তাকে দাফন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে পাঁচটি চুক্তি এবং পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
সফররত কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মঙ্গলবার এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্বাক্ষর হয়।
পাঁচ চুক্তির মধ্যে রয়েছে- উভয় দেশের পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তি, দ্বৈতকর পরিহার ও কর ফাঁকি সংক্রান্ত চুক্তি, আইনগত বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি, সাগরপথে পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি এবং দু দেশের ব্যবসা সংগঠনের মধ্যে যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন সংক্রান্ত চুক্তি।
পাঁচ সমঝোতা স্মারকের মধ্যে রয়েছে- কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, শ্রমশক্তির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক এবং বন্দর ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক।
চুক্তিগুলোর মধ্যে প্রথমটিতে কাতারের পক্ষে বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন হামাদ আল থানি ও বাংলাদেশের পক্ষে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, দ্বিতীয়টিতে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি ও বাংলাদেশের অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, তৃতীয়টিতে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি ও বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, চতুর্থটিতে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি ও বাংলাদেশের নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং পঞ্চমটিতে কাতার চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান শেখ খলিফা বিন জসিম আল থানি ও বাংলাদেশের ফেডারেশন অব চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম সই করেন।
সমঝোতা স্মারকগুলোর মধ্যে সব কটিতে কাতারের পক্ষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি এবং বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা সই করেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শিমুল হলে একান্ত বৈঠক হয় শেখ হাসিনা ও শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পৌঁছালে মঙ্গলবার সকালে কাতারের আমিরকে ফুল দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় গাইবান্ধার সাঘাটায় ও মুন্সীগঞ্জ সদরে নির্বাচনের আগেই চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন চারজন।
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটের আগেই এমনকি প্রতীক বরাদ্দের আগেই চেয়ারম্যান নিশ্চিত হয়েছেন আইনজীবী এস এম সামশীল আরেফিন টিটু।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের তিনজন প্রার্থীর মধ্যে অপর দুজন প্রার্থী নিজেদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
বিষয়টি মঙ্গলবার সকালে নিশ্চিত করেছেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গাইবান্ধার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোত্তালিব।
তিনি জানান, এর আগে সোমবার বিকেলে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকতার কাছে লিখিতভাবে স্বেচ্ছায় নিজেদের প্রার্থীতা প্রত্যাহারপত্র দেন ওই দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী। প্রার্থীতা প্রত্যাহার করা দুই প্রার্থী হলেন, হাসান মেহেদী বিদ্যুৎ এবং অপরজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল আজাদ শীতল।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালিব বলেন, ‘আজ প্রতীক বরাদ্দ শেষে দুপুরের পর তার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি ঘোষণা করা হবে।’
নির্বাচনে সাঘাটা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদ ছাড়াও সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রার্থী এবং সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জনসহ ১১ জন প্রার্থীর চূড়ান্ত হয়েছে।
সাঘাটা উপজেলায় পুরুষ ভোটার এক লাখ ২০ হাজার ৬৫৩ জন এবং নারী এক লাখ ২১ হাজার ৫৮ জনসহ মোট ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৪১ হাজার ১২ জন। এ ছাড়া ১০৩ টি ভোট কেন্দ্র এবং বুথ রয়েছে ৬৬১টি। উপজেলায় অতি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৩৮। এ উপজেলায় ব্যালটে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন।
মুন্সীগঞ্জে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত তিনজন
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আনিস উজ্জামান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নাজমুল হাসান সোহেল এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাসিনা গাজী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
বিষয়টি সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নিশ্চিত করেছেন মুন্সীগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বশির আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী ছিলেন আনিস উজ্জামান। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুই জন করে প্রার্থী থাকলেও ওই পদগুলোতে একজন করে প্রার্থী নিজেদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।’
তিনি জানান, এতে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আনিস উজ্জামান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নাজমুল হাসান সোহেল এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাসিনা গাজী নির্বাচিত হয়েছেন।
এ কারণে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে না এবং যথাসময়ে তাদের গেজেট প্রকাশিত হবে বলে জানান তিনি।
ষষ্ঠ ধাপের এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে আগামী ৮ মে ১৫০ উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য