রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এগুলো সবই যুদ্ধের সময় ব্যবহার করা হয়েছে। যখন যেখানে পাওয়া যাচ্ছে তখন নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে। এগুলো আলাদা করে খুঁজে বের করার সুযোগ নেই।’
রংপুর বিভাগের চার জেলায় গত পাঁচ বছরে ছয়টি মর্টারশেল উদ্ধার করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ দল সেগুলো নিষ্ক্রিয় করেছে। তবে হতাহতের ঘটনা এ বছরই প্রথম।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় গত ২৪ মার্চ একটি মর্টারশেল উদ্ধার হয়। সেটির বিস্ফোরণে তিনজন নিহত হয়েছে।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ধারণা, উদ্ধার হওয়া এসব মর্টারশেল মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহার করা হয়েছে।
পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি অফিস জানিয়েছে, ২০১৫ সালের ৫ মার্চ লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পশ্চিম সারডুবি এলাকায় স্থানীয় লোকজন পুকুর খোঁড়ার সময় একটি মর্টারশেল দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ মর্টারশেলটি উদ্ধার করে হাতিবান্ধা থানায় রাখে। পরে তা নিষ্ক্রিয় করা হয়।
২০১৮ সালের ১৩ এপ্রিল একই জায়গায় আরও একটি মর্টারশেল পাওয়া যায়। সেটিও নিষ্ক্রিয় করা হয়।
২০১৬ সালের ৮ এপ্রিল পঞ্চগড় সদর উপজেলার জগদল এলাকার চাওয়াই নদীর গোয়ালপাড়া ঘাটে মাছ ধরতে গিয়ে পরিত্যক্ত একটি মর্টারশেল খুঁজে পায় স্থানীয় স্কুলশিক্ষার্থী সাকিমুল ও শাকিল। পরে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দিলে সেটিও একইভাবে নিষ্ক্রিয় করা হয়।
এরপর ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি পঞ্চগড়ের চাওয়াই নদী থেকে ১৯৬২ সালের একটি মর্টারশেল উদ্ধার করে পুলিশ। চাওয়াই নদী থেকে বালি তোলার সময় মর্টারশেলটি পানিতে ভেসে উঠলে দেখতে পায় স্থানীয়রা। বিষয়টি জানতে পেরে অমরখানা বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা থানায় খবর দেয়।
মর্টারশেলটি ১৯৬২ সালের হলেও তা কোন দেশের সেটি জানা যায়নি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় ৬ নম্বর সেক্টরে ছিল পঞ্চগড়। পঞ্চগড়ের জগদলের পাশে অমরখানা এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের শক্ত ঘাঁটি ছিল। চাওয়াই নদীর ওপার থেকে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাদের বারবার সম্মুখযুদ্ধ হয়।
এরপর মুক্তিযোদ্ধারা আশ্রয় নেয় মাগুরমারীতে। পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়াগামী মহাসড়কে চাওয়াই নদীর উপর নির্মিত অমরখানা ব্রিজ ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়ায় হানাদাররা তেঁতুলিয়ায় প্রবেশ করতে পারেনি।
নিষ্ক্রিয় করা মর্টারটি যুদ্ধের সময় ওই এলাকায় ব্যবহারের জন্য আনা হয়েছিল এমনটা ধারণা এই মুক্তিযোদ্ধার।
গত বছরের ১৮ মার্চ রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ ইউনিয়নের লহনী বিলে মাটি খোঁড়ার সময় প্রায় ছয় কেজি ওজনের মর্টারশেল পাওয়া যায়। শ্রমিকরা বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ফয়জার রহমানকে জানালে তিনি মিঠাপুকুর থানাকে খবর দেন।
পুলিশের ধারণা, মর্টারশেলটি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানি বাহিনী নিক্ষেপ করেছিল। কোনো কারণে সেটি বিস্ফোরিত হয়নি।
সর্বশেষ মর্টারশেলটি পাওয়া যায় গত ২৪ মার্চ বিকেলে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের বোরহান উদ্দিনের বাড়িতে। মর্টারশেলটির বিস্ফোরণ হলে প্রাণ হারান বোরহান উদ্দিন, একই গ্রামের অহেদুল ও কুমড়িডাঙ্গা গ্রামের রানা মিয়া।
রাজধানী ও রংপুর থেকে বোমা বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পরদিন সকালে। তারা বাড়ির ভেতর মর্টারশেলের অবশিষ্ট কিছু বিস্ফোরক দ্রব্য পান। সেগুলোর বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ধ্বংস করা হয়।
প্রথমে নাশকতার আশঙ্কা করা হলেও সংবাদ সম্মেলনে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) জানায়, বগুড়ায় নির্মাণাধীন ভবনের মাটি খুঁড়ে পাওয়া মর্টারশেলকে মূল্যবান কিছু ভেবে সেটি বাড়িতে নিয়ে যান বোরহান উদ্দিন। সহযোগীদের নিয়ে কাটতে গেলে সেটি বিস্ফোরিত হয়। তাতেই ঘটে হতাহতের ঘটনা।
রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এগুলো সবই যুদ্ধের সময় ব্যবহার করা হয়েছে। যখন যেখানে পাওয়া যাচ্ছে তখন নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে। এগুলো আলাদা করে খুঁজে বের করার সুযোগ নেই।’
শুক্রবার ভেসে আসা মৃত তিমি। ছবি: নিউজবাংলা
‘আমরা দুইটি বিষয় সামনে রেখে তিমির নমুনাগুলো পরীক্ষা করে দেখেছি। সেগুলো হচ্ছে- বিষাক্ত কোনো কিছু খেয়ে তিমিটি মারা গেছে নাকি প্লাস্টিক জাতীয় কোনো বস্তু খেয়ে মারা গেছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এই দুইটি কারণ আমরা খুঁজে পাইনি। আঘাতের কারণে মারা গেছে কি না সেটি ময়নাতদন্ত রিপোর্টে জানা যাবে। তিমির মূলত ময়নাতদন্ত করবে বনবিভাগের অধীনে ভেটেরিনারি সার্জনরা। এই রিপোর্ট পেতে আরও অপেক্ষা করতে হবে।’
কক্সবাজার সাগরে ভেসে আসা মৃত দুইটি তিমিকে হত্যা করা হয়েছে নাকি স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে এ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পরিবেশবাদীরা দাবি করেছেন, তিমিগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। তবে মৎস্য অফিস বলছে, ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা যাবে না তিমিগুলোর মৃত্যুর কারণ।
মৃত দুইটি তিমির নমুনা সংগ্রহ করেছেন মৎস্য বিভাগের বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ আশরাফুল হক। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুক্রবার তীরে আসা তিমির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছি। সেটির বয়স আনুমানিক ৩০ বছর। তিমিটি ব্রাইডস হোয়েল প্রজাতির।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দুইটি বিষয় সামনে রেখে তিমির নমুনাগুলো পরীক্ষা করে দেখেছি। সেগুলো হচ্ছে- বিষাক্ত কোনো কিছু খেয়ে তিমিটি মারা গেছে নাকি প্লাস্টিক জাতীয় কোনো বস্তু খেয়ে মারা গেছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এই দুইটি কারণ আমরা খুঁজে পাইনি। আঘাতের কারণে মারা গেছে কি না সেটি ময়নাতদন্ত রিপোর্টে জানা যাবে। তিমির মূলত ময়নাতদন্ত করবে বনবিভাগের অধীনে ভেটেরিনারি সার্জনরা। এই রিপোর্ট পেতে আরও অপেক্ষা করতে হবে।’
তিমি, ডলফিন জাতীয় প্রাণী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার যে ধরনের যন্ত্র দরকার সেই ধরনের জিনিসপত্র দেশে নেই বা থাকলে সেটি খুবই কম। তিমিগুলোর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে এটি বড় সমস্যা বলেও জানান এই মৎস্য বিশেষজ্ঞ।
পরিবেশবাদী সংগঠন সেভ দ্য নেচার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম রিয়াদের ধারণা, তিমিগুলোর মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না। তিনি বলেন, ‘এসব তিমির গায়ে ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে। তাই তিমিগুলো মেরে ফেলা হয়েছে বলে ধারণা করছি।’
তিমি বেশ বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবেই পরিচিত। পানিতে থাকলেও বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে বেঁচে থাকে তারা। এ কারণে মাছের মতো বেশিক্ষণ পানির নিচে ডুব দিয়ে থাকতে পারে না। পানির উপরিভাগেও বিচরণ আছে তাদের। স্বচ্ছ ও পরিষ্কার পানি পছন্দ করে প্রাণীটি।
তীরে ভেসে আসা তিমিগুলো বঙ্গোপসাগরের গভীর সমুদ্রের গিরিখাত সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে বসবাস করে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সের অধ্যাপক সাইদুর রহমান চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘চতুর শিকারী না হলে তিমি মারা সহজ নয়। কারণ, বিশালদেহী তিমি শিকারীকে ঘায়েল করতে পারে। সাধারণত তিমিকে হত্যার জন্য প্রাণীটির ঘাড়ের কাছে আঘাত করা হয়। এতে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে মারা যায়।’
নিষিদ্ধ হলেও তিমি কেন হত্যা করা হয়, তার কারণ জানিয়ে এই অধ্যাপক বলেন, ‘এদের চর্বি অনেক মূল্যবান। এ ছাড়া খাদ্য হিসেবেও মাংস ব্যবহৃত হয়। খাদ্য ও চর্বিসহ অন্যান্য উপাদান সংগ্রহ করাই এই তিমি মেরে ফেলার অন্যতম কারণ।‘
হত্যার উদ্দেশ্য ছাড়াও অন্য আঘাতেও তিনি মারা যেতে পারে বলে জানান এই অধ্যাপক। তিনি বলেন, ‘সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে অনেক জেলে মাছ ধরে। জেলেদের জালে তিমি আটকে যাওয়ার খবর আমরা মাঝেমাঝে পাই। জেলেদের জালে আটকে অনেক তিমি আহত হয়। পরে ধীরে ধীরে সেটি মারা যায়। এরপর তিমির দেহ ভেসে তীরে চলে আসতে পারে।’
গবেষণার কাজে সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড ঘুরে দেখেছেন প্রকৃতি বিষয়ক সাংবাদিক ও অ্যাক্টভিস্ট হোসেন সোহেল। তিনি বলেন, ‘ব্রাইডস হোয়েল প্রজাতির তিমি সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে দেখা যায়।
‘সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড ছোট একটি জায়গা যার পরিধি ১৪ কিলোমিটার কিন্তু সেখানে ভিড় করে শত শত বাণিজ্যিক ও উডেন বোট। কাঠের বোটের ৬০ ফুট লম্বা আর বাণিজ্যিক ফিশিং বোটে প্রায় ২০০ ফুট লম্বা নানান আকৃতির জাল ফেলা হয় সাগরগর্ভে।
‘যুগ যুগ ধরে অন্যদেশের জেলেরা সোয়াচে মাছ ধরে চলেছে। সেখানে দিনরাত ফিশিং চলে। সেই সোয়াচে জায়গা জুড়ে রয়েছে তিমির ঝাঁক। আমি নিজের চোখে সোয়াচে দেখেছি বাচ্চাসহ একটি বড় তিমি। দিনরাত যদি ফিশিং হয় তাহলে সেখানে বাস করা তিমি কীভাবে থাকবে?’
তিমিগুলোর মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে গুরুত্ব দিয়ে হোসেন সোহেল বলেন, ‘এইসব মৃত তিমি কোথায় থেকে আসছে নাকি সোয়াচ থেকে মরে ভেসে আসছে অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। মনগড়া পোস্টমর্টেম ও তদন্ত প্রতিবেদন দিলে হবে না। এইসব প্রাণী হত্যার ক্ষেত্রে প্রায় দেখা যায় বা তদন্তে লেখা থাকে হার্ট অ্যাটাক, হিট স্ট্রোক, বয়স্ক, বার্ধক্যজনিত রোগসহ আরও কিছু। জেলেদের জালে অথবা কীভাবে একের পর এক প্রাণীগুলো মারা যায় তা খুঁজে বের করতে হবে।’
২০১৮ সালে মে মাসে কুয়াকাটা সৈকতে মৃত অবস্থায় ভেসে আসে বড় আকারের একটি ব্রাইডস হোয়েল। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সেন্ট মার্টিন উপকূল ঘেঁষে সাগরে ভাসতে দেখা যায় আরও একটি মৃত ব্রাইডস হোয়েল। একই বছর জুনে টেকনাফে আরও একটি ব্রাইডস হোয়েল ভেসে আসে।
বাড়ির গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে নিহত মিরকাদিম পৌর মেয়রের স্ত্রী কানন বেগম। ছবি: নিউজবাংলা
নিহতের ছেলে রাশেদ মানিক নিউজবাংলাকে জানান, ‘শরীরের ৬০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় তার মায়ের অবস্থা আশংকাজনক ছিল। অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার রাতে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।’
বাড়ির গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিম পৌর মেয়রের স্ত্রী কানন বেগম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুরে তিনি মারা যান।
মেয়রের ছেলে রাশেদ মানিক নিউজবাংলাকে জানান, শরীরের ৬০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় তার মায়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার রাতে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আর ১২ জনের মধ্যে ৯ জনকে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
পৌরসভার কর্মকর্তা মনির হোসেনসহ দুইজন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে মুন্সিগঞ্জ সদরের মিরকাদিম পৌরসভার মেয়র হাজী আব্দুস সালামের বাসায় বিস্ফোরণে চারজন কাউন্সিলরসহ ১৩ জন দগ্ধ হন। এ সময় পৌর মেয়র অক্ষত থাকলেও তার স্ত্রী গুরুত্বর আহত হন।
আহত চার কাউন্সিলর হচ্ছেন মো. সোহেল, মো. আওলাদ, দীন ইসলাম ও রহিম বাদশা।
আহত অন্যরা হলেন মেয়রের স্ত্রী কানন বেগম, মো. মোশারফ, মনির হোসেন, শ্যামল দাস, পান্না, কালু, ইদ্রিস আলী, মঈনউদ্দিন ও মো. তাজুল।
মিরকাদিম পৌরসভার কাউন্সিলর রহিম বাদশা সাংবাদিকদের বলেন, ‘পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে মেয়রের বাসার তৃতীয়তলার একটি কক্ষে আলোচনা করছিলাম আমরা। হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।
‘মুহূর্তে কক্ষের ভেতর আগুনের শিখা দেখা যায়। বিস্ফোরণে কক্ষের আসবাবপত্র, জানালার কাচ ফেটে চুরমার হয়ে গেছে।’
বিস্ফোরণের শব্দ পেয়ে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আহতদের স্বজনরা অভিযোগ করেন, বিস্ফোরণের বিষয়টি নিয়ে রহস্য ও প্রতিপক্ষের পরিকল্পিত হামলা হতে পারে।
পরে সিআইডির বোমা নিষ্ক্রিয় টিম, ফায়ার সার্ভিস ও জেলা পুলিশ ঘটনাস্থলের আলামত পরীক্ষার পর নিশ্চিত করেন, বিস্ফোরণটি বাড়ির গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে হয়েছে।
কাশিমপুর কারাগারের মৃত হাজতি জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: নিউজবাংলা
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেলার আবু সায়েম জানান, মাদক মামলায় বন্দি ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। শুক্রবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে কারা হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক জাহাঙ্গীরকে মৃত ঘোষণা করেন।
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার লেখক মুসতাক আহমেদের মৃত্যুর পর জাহাঙ্গীর আলম নামের আরেক হাজতির মৃত্যু হয়েছে।
গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে তিনি মারা যান।
৪২ বছর বয়সী জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী দত্তপাড়া এলাকায়। তিনি মাদক মামলায় কাশিমপুর কারাগার-২ এ বন্দি ছিলেন। তার হাজতি নম্বর ছিল ২৩৫৪/২০।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেলার আবু সায়েম নিউজবাংলাকে জানান, মাদক মামলায় বন্দি ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। শুক্রবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে কারা হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়।
অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে চিকিৎসক রাত পৌনে ১০টার দিকে জাহাঙ্গীরকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে জাহাঙ্গীরের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে ২৫ ফেব্রুয়ারি মুশতাক আহমেদ সন্ধ্যা থেকে অসুস্থ অনুভব করলে তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে রাত ৮টা ২০ মিনিটে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মৃত্যুর দেড় মাস পর কারাগে আরেক হাজতির মৃত্যু হলো।
অষ্টগ্রাম থানার ওসি জানান, কাকনের গলায় গামছার প্যাঁচের ও যৌনাঙ্গে খানিকটা কাটার দাগ আছে।
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে পাটক্ষেত থেকে কৃষকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
অষ্টগ্রাম উপজেলার পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউনিয়নের ঘোষহাটিতে ইউনুস মিয়ার পাটক্ষেত থেকে শনিবার সকাল সাতটার দিকে কাকন মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
কাকন মিয়ার বাড়ি ওই ইউনিয়নের পরশপাড়া এলাকায়।
কাকনের বড় ভাই জালু মিয়া নিউজবাংলাকে জানান, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে খাওয়াদাওয়া করে বের হন কাকন। এরপর আর বাড়ি ফেরেননি। সকালে খোঁজাখুঁজি করে পাটক্ষেতে তার মরদেহ পাওয়া যায়। এরপর পুলিশকে খবর দিলে তারা মরদেহ উদ্ধার করে।
অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম মোল্ল্যা নিউজবাংলাকে জানান, কাকনের গলায় গামছার প্যাঁচের ও যৌনাঙ্গে খানিকটা কাটার দাগ আছে।
মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে।
গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানাকে আটক করে পুলিশ। ছবি: নিউজবাংলা
সদর থানার ওসি জানান, আর্থিক লেনদেন নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। তবে এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গাইবান্ধায় আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ি থেকে জুতা ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে আটক করা হয়েছে।
সদর উপজেলার বল্লমঝার ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের মাসুদ রানার বাড়ি থেকে শনিবার দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। রানা জেলা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক।
জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলীর বাড়ি জেলা শহরের থানাপাড়া এলাকায়। তিনি আফজাল সুজের ডিলার। শহরের স্টেশন রোডে তার দোকান আছে।
পরিবারের অভিযোগ, এক মাস আগে হাসান লালমনিরহাট যান। গত ৫ মার্চ তাকে সেখান থেকে অপহরণ করেন রানা। এরপর বিভিন্ন জায়গায় তাকে আটক রেখে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পসহ সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন। এ ছাড়া তার পরিবারের কাছেও পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। টাকা দিতে না পারায় তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়।
শনিবার সকালে রানার বাড়িতে হাসানের ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া গেছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজার রহমান নিউজবাংলাকে জানান, আর্থিক লেনদেন নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। তবে এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনার পর স্থানীয়রা রানাকে গণপিটুনি দেয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে রানাকে আটক করে।
তাদের অভিযোগ, রানা সুদের ব্যবসা করতেন। সুদ-সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই তিনি হাসানকে অপহরণ করেন।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, সকালের দিকে হাসানের মোবাইল থেকে তার স্ত্রীর মোবাইলে একটি এসএমএস আসে। এতে লেখা ছিল, তার মৃত্যুর জন্য রানা দায়ী থাকবে।
এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার। ফাইল ছবি
কাশিমপুর কারাগারের জেল সুপার, তার স্ত্রী, শ্বশুর, জেলের রানার ও এক নার্স করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তারা সবাই আইসোলেশনে আছেন।
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর সুপার আব্দুল জলিল করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সেই সঙ্গে আক্রান্ত হয়েছেন তার স্ত্রী ও শ্বশুরও।
এ ছাড়া নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ এসেছে কারাগারের রানার মাহফুজুল হকের। তারা সবাই নিজেদের বাসায় আইসোলেশনে রয়েছেন।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেলার আবু সায়েম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেলার আবু সায়েম জানান, করোনার লক্ষণ দেখা দিলে গত ২৭ মার্চ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষার জন্য দেন জেল সুপার আব্দুল জলিল। পরে তার পরিবারের লোকজনের নমুনা পরীক্ষা করলে স্ত্রী ও শশুরের করোনা শনাক্ত হয়।
এ ছাড়াও কারাগারের রানার মাহফুজুল হক, কারা হাসপাতালের এক নার্সও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
২৮ মার্চ জেল সুপার রাজারবাগে সেন্ট্রাল পুলিশলাইন হাসপাতালে এবং অন্যরা হোম আইসোলেনে যান।
আইসোলেশনে থেকে নমুনা পরীক্ষায় কারাগারের রানার ও নার্সের নমুনা পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ ফল আসে।
তাদের সবার রোগমুক্তির জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
নিজ বাড়ির পুকুর থেকে পুলিশ জয়নাল আবেদীনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। ছবি: নিউজবাংলা
ইউপি চেয়ারম্যান সাদাকাত উল্লাহ জানান, জয়নাল ও লিমার ৯ ও ৫ বছরের দুটি মেয়ে আছে। বিয়ের পর লিমার কায়ুম নামে স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কয়েকবার সালিশে বিষয়টি মীমাংসারও চেষ্টা হয়েছে।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ছুরিকাঘাত ও যৌনাঙ্গ কেটে স্বামীহত্যার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
উপজেলার বাড়বকুন্ড ইউনিয়নের তেলিপাড়ায় নিজ বাড়ির পুকুর থেকে শনিবার সকালে পুলিশ জয়নাল আবেদীনের মরদেহ উদ্ধার করে।
সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বণিক নিউজবাংলাকে জানান, শনিবার সকালে জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী লিমা আক্তার ঘুম থেকে উঠে প্রতিবেশীদের জানান, রাতে খাওয়াদাওয়া শেষে তারা একসঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন কিন্তু সকালে উঠে স্বামীর খোঁজ পাচ্ছেন না। এরপর প্রতিবেশীরা জয়নালের মরদেহ পুকুরে ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেন।
ওসি আরও জানান, জয়নালের যৌনাঙ্গ কাটা ও তলপেটে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বাড়বকুন্ড ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাদাকাত উল্লাহ জানান, জয়নাল ও লিমার ৯ ও ৫ বছরের দুটি মেয়ে আছে। বিয়ের পর লিমার কায়ুম নামে স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কয়েকবার সালিশে বিষয়টি মীমাংসারও চেষ্টা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে।
পুলিশ জানায়, ওই দম্পতির বড় মেয়েটি রাতে ঘুমের মাঝে কায়ুমসহ আরেকজনকে ঘরে দেখেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লিমাকে আটক করা হয়েছে।
মন্তব্য