বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাফিজুল ইসলাম। ছবি: নিউজবাংলা
ডিবির ওসি জানান, হাফিজুল হত্যা মামলায় হাইকোর্ট থেকে নেয়া আগাম জামিনে ছিলেন। তবে তাকে পুলিশ এ্যাসাল্ট মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় আত্মগোপনে থাকা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যকে অবশেষে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি ও থানা পুলিশ।
বুড়িমারী বাজার থেকে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে হাফিজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে এই ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।
ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক নিউজবাংলাকে জানান, হাফিজুল হত্যা মামলায় হাইকোর্ট থেকে নেয়া আগাম জামিনে ছিলেন। তবে তাকে পুলিশ এ্যাসাল্ট মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
গত বছরের ২৯ অক্টোবর বিকেলে হাফিজুল ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও বিষয়টি প্রশাসনকে না জানিয়ে নিজেই মীমাংসার চেষ্টা করেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশকে খবর দেন। ঘটনার পরদিন থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।
এদিকে পাটগ্রামের তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুন্নাহারের দায়িত্ব পালনে অবহেলা ছিল কি না সে বিষয়ে বৃহস্পতিবার সকালে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ হলরুমে সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।
সেখানে বর্তমান ইউএনও রামকৃষ্ণ বর্মণ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুবেল রানা, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু নেওয়াজ নিশাত, ইউনিয়ন পরিষদ সচিব মাসুদুর রহমান মাসুম, পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শামসুল ইসলামসহ ১২ জন জেলা প্রশাসক আবু জাফরের সামনে সাক্ষ্য দেন।
এর আগে বুধবার সাক্ষ্য গ্রহণের বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেন জেলা প্রশাসক।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় এ তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি পুনরায় ঘটনাটির বিষয়ে আরও তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করার।’
শহীদুন্নবী জুয়েলের বাড়ি রংপুরের শালবন এলাকায়। তিনি রংপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের লাইব্রেরিয়ান ছিলেন।
বুড়িমারী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তর্কাতর্কির পর ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে পিটিয়ে হত্যা করা হয় ৫০ বছর বয়সী জুয়েলকে। পরে তার দেহে পেট্রল ঢেলে জ্বালিয়ে দেয়া হয়।
ঘটনার সময় শহীদুন্নবী জুয়েলের সঙ্গী ৫১ বছর বয়সী সুলতান জোবায়ের আব্বাসও আহত হন। এক পর্যায়ে পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়।
শহীদুন্নবী জুয়েল হত্যা ও মরদেহ পুড়িয়ে দেয়া এবং ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ভাঙচুরের ঘটনায় তখন তিনটি মামলা হয়।
তিন মামলায় ১১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ৪৮ জনকে, আত্মসমর্পণ করেছে ১২ জন। আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে ছয়জন।
চুয়াডাঙ্গায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগে ছয় কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ছবি: নিউজবাংলা
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি জানান, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
চুয়াডাঙ্গায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা ও স্বর্ণালংকার আদায়ের অভিযোগে ছয় কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার কেদারগঞ্জ ও এর আশপাশের এলাকায় সোমবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি নিউজবাংলাকে জানান, প্রায় ৮ মাস আগে ফেসবুকে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে কেদারগঞ্জ পাড়ার এক কিশোরের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। দেখা করার কথা বলে গত ২৫ মার্চ দুপুরে ওই কিশোর তার আরও কয়েকজন বন্ধু মিলে স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে মহিলা কলেজপাড়ার একটি বাড়িতে ধর্ষণ করে। এ সময় তারা কিশোরীর ছবি তোলে ও ভিডিও ধারণ করে।
ঘটনার পর থেকে ভিডিও এবং ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে কিশোরীকে ব্ল্যাকমেল শুরু করে। কয়েক দফায় কিশোরীর কাছ থেকে ১৬ হাজার টাকা, একটি স্বর্ণের চেইন ও ব্যাচলেট হাতিয়ে নেয়।
এরপরও সোমবার দুপুরে একইভাবে ব্ল্যাকমেল করে কিশোরীর কাছ থেকে এক লাখ টাকা দাবি করে চক্রটি। উপায় না দেখে ঘটনাটি পরিবারকে জানায় ওই কিশোরী। পরে তার বাবা রাতেই চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
রাতেই অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে।
ওসি আরও জানান, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই ছয় কিশোর অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
ওই স্কুলছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি।
লজ্জাবতীকে অবমুক্ত করা হয়েছে জঙ্গলে। ছবি: নিউজবাংলা
বানরের এই প্রজাতিটি সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ আইইউসিএনের লাল তালিকাভুক্ত। বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।
রাঙ্গামাটির কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানের গভীর জঙ্গলে অবমুক্ত করা হয়েছে ‘লজ্জাবতী’ নামের বিপন্ন প্রজাতির একটি বানরকে। বনবিভাগ জানায়, সোমবার রাতে এটিকে কাপ্তাইয়ের একটি রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়।
বনবিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মহসিন তালুকদার বলেন, সোমবার রাতে কাপ্তাইয়ের কেপিএম এলাকার সিয়াম ও রবিন নামের দুই তরুণ বানরটিকে দেখে। কেপিএম পশ্চিম ড্রাইভার কলোনির রাস্তার পাশে থাকা গাছে এটি বসে ছিল বলে তারা জানায়।
তারা বানরটি নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। তারাই পরে কাপ্তাই থানায় ফোন করে খবরটি জানায়।
পুলিশ সদস্যরা মঙ্গলবার ভোররাতে গিয়ে বানরটি থানায় নিয়ে আসে ও বন বিভাগকে খবর দেয়। বন কর্মকর্তা মহসিন থানায় গেলে ওসি নাসির উদ্দীন তার কাছে বানরটি হস্তান্তর করেন।
মহসিন বলেন, বানরটি পথ হারিয়ে লোকালয়ে চলে এসেছে। এটি সুস্থ আছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান শাহের নির্দেশে এটিকে জঙ্গলে অবমুক্ত করা হয়।
বানরটি সম্পর্ক তিনি জানান, এর ইংরেজি নাম Bengal Slow Loris বা Northern Slow Loris, বৈজ্ঞানিক নাম Nycticebus Bengalensis। দেশে এটি লজ্জাবতী বা লাজুক বানর নামে পরিচিত।
বানরের এই প্রজাতিটি সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ আইইউসিএনের লাল তালিকাভুক্ত।
বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।
লজ্জাবতী বানর সাধারণত গাছের উঁচু শাখায় থাকতে পছন্দ করে।
কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়ক থেকে মৃত হাতিটি উদ্ধার করা হয়। ছবি: নিউজবাংলা
ভোমরিয়া ঘোনা বিট কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন নিউজবাংলাকে জানান, হাতিটির মৃত্যুর কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে পাহাড় থেকে পড়ে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে।
কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়ক থেকে একটি মৃত বন্যহাতি উদ্ধার করা হয়েছে।
ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়কের পানেরছড়া ঢালায় সড়কের পাশে মঙ্গলবার সকালে মৃত হাতিটি দেখতে পান স্থানীয়রা। হাতিটি দুপুর পর্যন্ত সেখানেই পড়েছিল।
পরে পথচারীরা ভোমরিয়া ঘোনা বিট অফিসে খবর দিলে বনবিভাগের লোকজন এসে মৃত হাতিটি উদ্ধার করে।
ভোমরিয়া ঘোনা বিট কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন নিউজবাংলাকে জানান, হাতিটির মৃত্যুর কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে পাহাড় থেকে পড়ে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে।
তবে ময়নাতদন্তের পর এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। এরইমধ্যে বিশেষজ্ঞ দল আলামত সংগ্রহ করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা কফিল উদ্দিন জানান, ধানক্ষেত রক্ষায় অনেকে বিপজ্জনক বিদ্যুতের তারের ফাঁদ বসিয়েছেন। বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে হাতির মৃত্যু হতে পারে।
কক্সবাজারর উত্তর বন বিভাগের ঈদগাঁও রেঞ্জের পুর্ণগ্রাম বিটের বনাঞ্চলে এর আগেও একটি বন্যহাতি মারা যায়। গত তিন বছরে কক্সবাজারে ২০টি বন্যহাতি মারা গেছে।
একের পর এক বন্যহাতির মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে। এর পেছনে কারা দায়ী তা খুঁজে বের করতে পাচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর স্থানীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, আবাসস্থল ধ্বংস ও খাদ্য সংকটের কারণে প্রায় লোকালয়ে চলে আসছে বন্যহাতি। আর মানুষ জানমালের ক্ষতির আশঙ্কায় প্রতিনিয়ত হাতিগুলোকে হত্যা করছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যের ভাতিজা আমটি ছিঁড়ে ফেলেছে বলে অভিযোগ গাছের মালিকের। ছবি: নিউজবাংলা
আবদুর রহমান বলেন, ‘আমরা মাত্র দুইজন ছিলাম। আমি বয়স্ক মানুষ, শক্তি দিয়ে কি তাদের সাথে পারব? আবার তার চাচা মেম্বার মানুষ।’
লিচুগাছে ধরা সেই আমটি ছিঁড়ে গাছের নিচে ফেলে রেখে গেছে দুই তরুণ। এমন অভিযোগ গাছের মালিক আবদুর রহমানের।
নিউজবাংলার ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি মঙ্গলবার সকালে লাইভ করার পরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যের ভাতিজা আমটি ছিঁড়ে নিয়েছে বলে জানান গাছের মালিক।
আবদুর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, সকালে সফিকুল ইসলাম সিকিম মেম্বারের ভাতিজা সোহেল রানা আসে আমটি দেখতে। ফিরে যাওয়ার পথে একটি মোটরসাইকেল তাকে ধাক্কা দেয়। এ নিয়ে তর্ক হলে বিষয়টি সে তার চাচা সিকিম মেম্বারকে জানায়।
পরে মেম্বারের সঙ্গে তার দুই ভাতিজাসহ আরও দুইজন সেখানে উপস্থিত হয়। এরপর মেম্বারের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় আবদুর রহমানের। এক পর্যায়ে একজন গাছ থেকে আমটি ছিঁড়ে নিচে ফেলে চলে যায়।
আবদুর রহমান বলেন, ‘আমরা মাত্র দুইজন ছিলাম। আমি বয়স্ক মানুষ, শক্তি দিয়ে কি তাদের সাথে পারব? আবার তার চাচা মেম্বার মানুষ।’
এ বিষয়ে বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে বিভিন্ন জেলার মানুষসহ সাংবাদিকরা বার বার ফোন দিয়ে বিরক্ত করছে। সকালে আমি সেখানে গিয়ে আবদুর রহমানকে বলেছি, যাতে সেখানে একটু ভিড় কম হয়। এখন করোনার সময়, এমনি দেশের অবস্থা ভালো না।
‘এরপর সে আমাকে বলে আপনারা মেম্বার-চেয়ারম্যান কী করেন? এসব আপনারা সামলাতে পারেন না? এর মাঝে কে আমটি ছিঁড়েছে, আমি চিনি না তাদের। কারণ তারা তো আর আমার সঙ্গে যায়নি। এখন আবদুর রহমান আমার নামে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন।’
ঠাকুরগাঁও কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা পড়া আমটি দেখতে গিয়েছিলাম। যারা এ আমটি ছিঁড়ে ফেলেছে তারা মোটেও ভাল কাজ করেনি। এটা ঠাকুরগাঁওয়ে আমাদের নতুন একটা খোঁজ ছিল। আম গাছটি যেহেতু ছোট আমরা গাছটিকে পর্যবেক্ষণে রাখব।
এর আগে গত রোববার লিচুগাছে আমটি দেখতে পায় আবদুর রহমানের নাতি হৃদয়। তার কাছ থেকেই পাড়ার লোকজন এই বিরল গাছের বিষয়টি জানতে পারে।
হাসপাতালে সামনের ওষুধের দোকানের মালিকরা বলছেন, স্যালাইনের দাম বেড়েছে। তবে নগরীর অন্য এলাকার দোকানের মালিকদের বক্তব্য, আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে স্যালাইন।
বরিশাল সদরের জাগুয়া ইউনিয়নের আব্দুর রব ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন রোববার। বেড না পেয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন হাসপাতালের মাঠে।
ভ্যান চালক আব্দুর রবের অভিযোগ, হাসপাতাল থেকে দেয়া হচ্ছে না স্যালাইন, কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে।
তিনি বলেন, ‘হাসপাতাল দিয়া একটা স্যালাইন দেছেল শরীরে দেয়ার লইগ্গা। স্যালাইন শেষ হওয়ার পর নার্সগো ধারে চাইছেলাম, হেরা কইছে এহানে নাই। কইলো ফার্মেসি দিয়া কিন্না আনেন।
‘সরকারি হাসপাতালে যদি স্যালাইন না থাহে তয় মোগো মতো গরীব মাইনষে কেমনে চিকিৎসা নিমু। পরে হেই কথা মত দুইটা স্যালাইন কেনা লাগছে।’
আব্দুর রবসহ হাসপাতালে ভর্তি অন্য ডায়রিয়া রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, চাহিদা বেড়ে যাওয়ার সুযোগে হাসপাতালের বাইরের ওষুধের দোকানগুলো বেশি দামে স্যালাইন বিক্রি করছে। ৯০ টাকার স্যালাইন কারও কাছে চাওয়া হচ্ছে ১২০ বা ১৩০ টাকা, কারও কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে ২০০ টাকাও।
সরেজমিনে সোমবার সকালে সদর হাসপাতালের সামনে দেখা গেল, ডায়রিয়া রোগীর স্বজনরা স্যালাইনের জন্য ভিড় করে আছেন ওষুধের দোকানগুলোতে।
জাকিয়া বেগম নামে এক রোগীর স্বজন অভিযোগ করেন, ‘এমনেই কোনো সিট পাই নাই। হের উপর স্যালাইনডাও কেনা লাগে যদি তয় কি চিকিৎসা দেয় বুঝিনা।
‘স্যালাইনের আসল দাম ৯০ টাহা, আর হেই স্যালাইন ফার্মেসি ওয়ালারা সিন্ডিকেট কইরা ১৩০ টাহায় বেচে। এহানের ডাক্তার নার্সরা একটা বা দু্ইটা দিয়াই কয় নাই শেষ স্যালাইন।’
হাসপাতালের সামনের দি সেবা মেডিক্যাল হল নামের ওষুধের দোকানের কর্মচারি মো. বদরুদ্দোজার কাছে জানতে চাওয়া হয়, কেন স্যালাইনের দাম বেশি রাখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘হাজার মিলির কলেরা স্যালাইন রেট ৯০ টাকা করেই। তবে প্রোডাকশন কম থাকায় কোম্পানি অনেক বেশি দামে বিক্রি করেছে। তাই আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হয়েছে।’
হাজরা মেডিক্যাল হলের মো. শুভ বলেন, ‘৫০০ মিলির কলেরা স্যালাইনের দাম ৭০ টাকা আর হাজার মিলির কোম্পানি রেট ৯০ টাকা। অনেকে বেশি দাম রেখেছে। কিন্তু আমরা তা করিনি।’
নগরীর অন্য এলাকার ওষুধের দোকানে গিয়ে জানা গেল, স্যালাইনের দাম বাড়েনি। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর বিএম কলেজ এলাকার মা মেডিক্যাল হলের মালিক মো. কাদের বলেন, ‘কলেরা স্যালাইনের দাম বাড়েনি। যারা বেশি দাম নিচ্ছে তারা অবৈধভাবে তা নিচ্ছে।’
এদিকে, রোগীদের স্যালাইন বেশি কিনতে হচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মলয় কৃষ্ণ বড়াল বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে একজন রোগীকে তিন থেকে চারটি স্যালাইন আমরা দিয়ে থাকি। এর বেশি স্যালাইন লাগলে তাদের কিনতে হয় বাইরে থেকে। এমনিতে স্যালাইনের কোনো সংকট নেই আমাদের।’
ওষুধের দোকানের সঙ্গে যোগসাজশ করে স্যলাইনের সংকট দেখিয়ে নার্সরা রোগীদের তা কিনতে বাধ্য করছে কি না এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি এড়িয়ে যান।
বরিশাল বিভাগে কয়েকদিন ধরেই বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। এতে খোদ স্বাস্থ্য বিভাগ উদ্বিগ্ন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, বরিশালে এর আগে এমন ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা যায়নি।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বাসুদেব কুমার দাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হঠাৎ করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করেছি আমরা। শহরের মানুষ তেমন আক্রান্ত না হলেও, বেশি আক্রান্ত হচ্ছে উপকূল ও গ্রামাঞ্চলের মানুষ।’
তিনি জানান, অতিরিক্ত গরমে স্বস্তি পেতে মানুষ পান্তা কিংবা শরবত খাচ্ছে বেশি। এসব তৈরিতে দূষিত পানি ব্যবহারের কারণেই ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ছে বলে তার মত।
বাসুদেব কুমার দাস গত রোববার জানিয়েছিলেন, বরিশাল বিভাগে এ বছর জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের ২০ তারিখ পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩২ হাজার ছাড়িয়েছে। সব থেকে বেশি আক্রান্ত দ্বীপ জেলা ভোলায়। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৪২১। পটুয়াখালীতে আক্রান্ত ৬ হাজার ৭৩৭, পিরোজপুরে ৩ হাজার ৭৫০, বরগুনায় ৪ হাজার ৩৫৩ এবং ঝালকাঠিতে আক্রান্ত ২ হাজার ৯৯৮ জন।
জেনারেল হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৪ জন ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হন। জায়গা সল্পতার কারণে অনেককে মাঠে, ভ্যানে, গাছ তলায় বা ড্রেনের পাশে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামে দুর্ঘটনাকবলিত লরি ও ট্রাক উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। ছবি: নিউজবাংলা
মিয়াবাজার হাইওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আছাদুজ্জামান বলেন, ঘটনাস্থলে ট্রাকের চালক ও হেলপার মারা যান। এ সময় আহত এক মোটরসাইকেলচালককে হাসপাতালে নিলে তিনিও মারা যান। এখন পর্যন্ত কারও পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ট্রাক ও লরির সংঘর্ষে চালক, হেলপারসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন ৭ জন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামের আটগ্রাম এলাকায় মঙ্গলবার বেলা ১০টা ৫০ মিনিটে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, চৌদ্দগ্রামের উনকোট গ্রামের লরি চালক রাসেল, ট্রাকের হেলপার চট্টগ্রামের মিরেরশরাই উপজেলার করেরহাটের আলমগীর হোসেন ও মোটরসাইকেল চালক পেয়ার আহম্মেদ।
আহতরা হলেন, ট্রাক চালক শহীদ, লরির হেলপার শাহাদাত, স্থানীয় রাজন, জামাল, রেদোয়ান, মামুন ও রাজিব।
প্রত্যক্ষদর্শীরা নিউজবাংলাকে জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আটগ্রাম পুরাতন রাস্তার মাথায় একটি ট্রাক (ফেনী-ট-১১-০০৪৬) দাঁড়িয়ে ছিল। ঢাকামুখী একটি লরি (ঢাকামেট্রো-ঢ-৬২-০০১৬) ট্রাকটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এ সময় পাশে থাকা মোটরসাইকেলের সঙ্গেও সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে লরিটি সড়কের পাশে থাকা দোকানে ঢুকে যায়।
এতে ঘটনাস্থলে তিনজন নিহত হন। মিয়াবাজার হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ও চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আহতদের চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
মিয়াবাজার হাইওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আছাদুজ্জামান বলেন, ঘটনাস্থলে ট্রাকের চালক ও হেলপার মারা যান। এ সময় আহত মোটরসাইকেলচালককে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনিও মারা যান। দুর্ঘটনাকবলিত লরি ও ট্রাক উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ছয় মাস আগে প্রতাপ গ্রামের সৈয়দ আলীর বাড়ি থেকে অবৈধভাবে তার টেনে নিজের বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ নেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিশ্বাস হলদিয়া গ্রামের মুকুল মিয়া। গ্রামবাসী প্রতিবাদ করলে তাদের হুমকিও দেয়া হয়। ওই তারেরই ছেড়া অংশ পড়ে ছিল ক্ষেতের আইলে।
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে ধান ক্ষেতের আইলে ঘাস কাটতে গিয়ে ছেড়া তারে জড়িয়ে বিদ্যুতস্পর্শে গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের প্রতাপ গ্রামে মঙ্গলবার সকালে এই দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটে।
গৃহবধূর নাম সুমি বেগম; বাড়ি ওই ইউনিয়নের পশ্চিম খামার দশলিয়া গ্রামে। তিনি প্রতাপ গ্রামের বাবু মিয়ার স্ত্রী।
সাদুল্লাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাকিবুল ইসলাম এই তথ্যগুলো নিশ্চিত করেছেন।
সুমির পরিবার ও স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ছয় মাস আগে প্রতাপ গ্রামের সৈয়দ আলীর বাড়ি থেকে অবৈধভাবে তার টেনে নিজের বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ নেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিশ্বাস হলদিয়া গ্রামের মুকুল মিয়া। গ্রামবাসী প্রতিবাদ করলে তাদের হুমকিও দেয়া হয়। ওই তারেরই ছেড়া অংশ পড়ে ছিল ক্ষেতের আইলে।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সাদুল্লাপুর সাবজোনের ডিজিএম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘সাইড লাইনের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে যেসব অবৈধ সংযোগ আমাদের নজরে পড়ে তাৎক্ষণিক আমরা সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। কেউ যদি লুকোচুরি করে সাইড লাইন দেয় তার দায়ভার ওই গ্রাহককে নিতে হবে।’
এসআই রাকিবুল জানান, সুমির মরদেহ থানায় নেয়া হয়েছে। পরিবার অভিযোগ দিলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য