‘শক্তিতে নিজের চেয়ে দুর্বল শত্রুকে সবসময় ধ্বংস করতে হবে। তবে তারা যদি জীবন সম্পর্কে নিরাশ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, তাহলে তাকে আর কষ্ট দেয়া যাবে না।’
প্রাচীন ভারতের বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও দার্শনিক কৌটিল্য বা চাণক্যের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ক বই অর্থশাস্ত্রের সাংগ্রামিক অধিকরণের শেষ অনুচ্ছেদে এ কথা বলা হয়েছে।
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের প্রায় তিন মাস পেরোতে চলল। এরই মধ্যে বিভিন্ন শহর থেকে মার খেয়ে পিছু হটেছে রুশ সেনারা। ইউক্রেনের নিয়মিত সেনাবাহিনীর বাইরেও দেশটির সাধারণ জনতা নাম লিখিয়েছে প্রতিরোধ যুদ্ধে। পশ্চিমাদের অত্যাধুনিক অস্ত্রের চালান তাদের প্রতিনিয়ত আরও শক্তিশালী করে তুলছে। ২০১৪ সালে যত সহজে ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ করেছে ক্রেমলিন এবং দোনবাসের বিশাল একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রুশপন্থি বিদ্রোহীরা, বর্তমান যুদ্ধে তার চেয়ে অনেক বেশি রসদ দিয়েও সেই ধরনের বিজয়ের দেখা পাচ্ছে না রাশিয়া, যাতে পুরো ইউক্রেন দখলের বদলে অ্যাযভ সাগরতীরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখা ও দোনবাস দখলে মনোযোগ দিয়েছে মস্কো। এই যাত্রায় বন্দরনগরী মারিওপোলের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিতেই ত্রাহি অবস্থা রাশিয়ার। ইউক্রেন সেনাদের দুর্দমনীয় মনোভাব যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করছে।
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো ও ব্রিটেনের মতে, এই যুদ্ধ বছরের পর বছর চলতে পারে।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়াকে নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কাবু করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। মস্কোকে আন্তর্জাতিক লেনদেনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম সুইফট থেকে বের করে দিয়েছে তারা। রাশিয়ার তেল-গ্যাস বিক্রিও দুঃসাধ্য করার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি ইউক্রেনকে ৩শ' কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়েছে ওয়াশিংটন। মার্কিন দেখানো পথে হাঁটছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও। রাশিয়ার তেল-গ্যাসের নির্ভরতা কমাতে নানান পদক্ষেপ নিয়েছেন জোটের নেতারা। তাই মার্কিন অনলাইন পোর্টাল দি ইন্টারসেপ্টের জেরেমি স্ক্যাহিলের সাথে আলাপচারিতায় যুক্তরাষ্ট্রের ভিন্নমতাবলম্বী ও দার্শনিক নোয়াম চমস্কি বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রিয় ইচ্ছাকে পূর্ণ করেছে। সোনার থালায় ইউরোপকে তার হাতে তুলে দিয়েছে’।
বৈশ্বিক সংকটে যত সাহসী ও দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন অ্যাঙ্গেলা মের্কেল, ইউরোপীয় ইউনিয়নের এখনকার নেতৃত্ব ততটা কার্যকর নয়। জার্মানির সাবেক এই চ্যান্সেলর রুশ ভাষায়ও পটু ছিলেন। ভালো সম্পর্ক ছিল রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে। অনেকে মনে করেন এখন মের্কেল থাকলে যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি অন্যরকম হতো। রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল ইউরোপের জন্য রাতারাতি বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব নয়। তাই ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের শত আহ্বানে রাশিয়ার কাছ থেকে গ্যাস না কেনার মতো ঘোষণা দিতে পারছে না তারা। উল্টো ইউক্রেনকে সহযোগিতার কারণে পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়াকে গ্যাস দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়া থেকে আসে বুলগেরিয়ার গ্যাসের আমদানির ৭৫ শতাংশ আর পোল্যান্ডের ৫৪ শতাংশ। দেশ দুটির জন্য চটজলদি এই আঘাত মোকাবিলা করা খুবই কঠিন হবে। চেক রিপাবলিক ও লাটভিয়ার শতভাগ, হাঙ্গেরির ৯৫ শতাংশ ও স্লোভাকিয়ার ৮৫ শতাংশ গ্যাস আসে রাশিয়া থেকে। তাই তারা স্বপ্নেও মস্কোর গ্যাসের ওপর নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে ভাবতেই পারে না। এছাড়া, জার্মানির ৬৬ শতাংশ, ফিনল্যান্ডের ৬৭ শতাংশ, এস্তোনিয়ার ৪৬ শতাংশ, রোমানিয়ার ৪৪ শতাংশ, ইতালির ৪৩ শতাংশ, লিথুনিয়ার ৪১ ও গ্রিসের গ্যাস আমদানির ৩৮ শতাংশ মস্কোর। তাই রাশিয়ার গ্যাসের ওপর দেশগুলোর এই নির্ভরতা পুতিনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের বড় শক্তি হয়ে দেখা দিয়েছে। তাই ইউক্রেন ইস্যুতে ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে সবাই নিন্দা পর্যন্তই এগুতে পারছে।
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার অর্থনীতিকে যেমন ঘাতপ্রতিরোধী করছে, তেমনি রুবলকেও যে কোনো সময়ের চেয়ে করছে শক্তিশালী। ঋণ ও লেনদেনের অর্থ বিশেষ করে গ্যাসের অর্থ পরিশোধে রুবলের ওপর জোর দিয়েছে রাশিয়া। এতে তরতর করে বাড়ছে রুবলের চাহিদা। একইসাথে ডলারনির্ভর দুনিয়াকে নতুন পথ দেখাচ্ছে। চীনও তার লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে ইয়েনকে গুরুত্ব দিচ্ছে, যা আর্থিক ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি দীর্ঘ মেয়াদে কার্যকর হলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার হাতিয়ার আরেকটু দুর্বল হবে।
বলা হয়ে থাকে, ইউক্রেন যুদ্ধ পুতিনের প্রেস্টিজ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। দোনবাসের দিকে মনোযোগ দেয়ার আগে পুরো রণকৌশল ঢেলে সাজিয়েছেন তিনি। বদলে ফেলেছেন কমান্ডারদের। তারপরও খুব বেশি সাফল্য এখনও আসেনি, যা তাকে আরও মরিয়া করে তুলছে। এই সময় তার স্বাস্থ্যের নানা জটিলতার খবর চাউর হয়েছে পশ্চিমা গণমাধ্যমে। এমনকি তাদের দাবি, ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন পুতিন। তবে এ সব বিষয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য আসেনি। বর্তমান বাস্তবতায় ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘ সময় ধরে চালানোর অবস্থায় নেই রাশিয়া। কারণ সাবেক সোভিয়েতের সাথে এই রাশিয়ার যোজন যোজন ফারাক। তাই পুতিনের দরকার চটজলদি সাফল্য, যার ওপর ভিত্তি করে যুদ্ধ শেষের ঘোষণা পারবেন তিনি। সেই ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে গোটা দুনিয়া। বিশ্বজুড়ে নিত্যপণ্যের দাম ব্যাপক হারে বাড়ার পেছনে একটি বড় কারণ ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। এর ফলে ভীষণ কষ্টে আছে আফ্রিকাসহ তৃতীয় বিশ্বের মানুষ।
ফুরকানুল আলম: নিউজ এডিটর, চ্যানেল 24
আরও পড়ুন:বিদেশি বস্তুর সংস্পর্শে উত্তর কোরিয়ায় করোনা ছড়িয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম। সংক্রমণ এড়াতে দক্ষিণ সীমান্ত থেকে উড়ে আসতে পারে এমন বস্তুর বিষয়ে সতর্ক থাকতেও নাগরিকদের আহ্বান জানানো হয়েছে।
কয়েক বছর ধরে দক্ষিণের কর্মীরা লিফলেট এবং মানবিক সাহায্য পাঠাতে সীমান্তের ওপারে বেলুন উড়িয়ে আসছে। উত্তর কোরিয়া কর্তৃপক্ষের সন্দেহ, এসবের কিছু একটাতে করেই উত্তরে ভাইরাস পাঠানো হয়েছে।
এসব অভিযোগ গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। তারা জানিয়েছে, ভাইরাস এভাবে ছড়ানোর কোনো আশঙ্কাই নেই।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলছে, দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তের কাছে অজ্ঞাত সামগ্রীর সংস্পর্শে এসেছিলেন দুই ব্যক্তি। পরে তাদের করোনা শনাক্ত হয়।
এপ্রিলের শুরুতে ইফো-রিতে একটি পাহাড়ে বস্তুগুলো খুঁজে পাওয়ার পর একজন ১৮ বছর বয়সী সৈনিক এবং পাঁচ বছর বয়সী শিশু ভাইরাসের জন্য ইতিবাচক পরীক্ষা করেছিল, এটি রিপোর্ট করেছে।
এপ্রিলের শুরুতে ১৮ বছরের এক সেনাসদস্য ও পাঁচ বছরের এক শিশুর করোনা শনাক্ত হয়। তারা দাবি করে, ইফো-রির একটি পাহাড়ে কিছু বস্তুর সংস্পর্শে এসেছিলেন তারা। এর পর থেকে দ্রুত গোটা দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ে।
পরিস্থিতি সামলাতে সীমান্তরেখা, সীমান্ত এলাকায় আবহাওয়া এবং বেলুনের মাধ্যমে আসা বস্তু থেকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন। অদ্ভুত কোনো বস্তুর দেখা পেলে সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনকে জানানোর নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
এপ্রিলের শেষ দিক থেকে উত্তর কোরিয়ার জনগণ এক ধরনের জ্বরে আক্রান্ত হতে থাকে। দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেশে। সংক্রমণ ঠেকাতে দেশটির ৪৭ লাখ মানুষ এখন লড়াই করছে। কিম জং উন এই প্রাদুর্ভাবকে ‘দেশের সবচেয়ে বড় অশান্তি’ বলে বর্ণনা করেছেন।
আরও পড়ুন:গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের (ডিআর কঙ্গো) দুটি সশস্ত্রগোষ্ঠীর সদস্যরা এক কঙ্গোলিজ নারীকে দুবার অপহরণ করেন। পালা করে তাকে ধর্ষণ করা হয়। ওই নারীকে দিয়ে মানুষের মাংস রান্না করিয়ে তা খেতে বাধ্য করানো হয়।
স্থানীয় সময় বুধবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে এমনটি জানিয়েছে দেশটির অধিকারবিষয়ক একটি সংগঠন।
নারী অধিকারবিষয়ক সংগঠন ফিমেল সলিডারিটি ফর ইন্টিগ্রেটেড পিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এসওএফইপিএডিআই) প্রেসিডেন্ট জুলিয়েন লুসেঞ্জ নিরাপত্তা পরিষদে বক্তব্য দেয়ার সময় ওই নারীর বিভীষিকাময় কাহিনি তুলে ধরেন।
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের সামনে তিনি সংঘাতে বিধ্বস্ত ও বিপর্যস্ত পূর্ব কঙ্গোর এই দেশটি নিয়ে বক্তব্য দেন।
নিরাপত্তা পরিষদ কঙ্গো সম্পর্কে একটি নিয়মিত ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে। গত মে মাসের শেষের দিকে ডিআর কঙ্গোর সশস্ত্র বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে ভয়াবহ লড়াই ও সহিংসতা ব্যাপকহারে বেড়ে যায়।
লুসেঞ্জ বলেন, যে নারীকে সশস্ত্রগোষ্ঠী কোডেকোর সদস্যরা অপহরণ করেন তিনি অপহৃত আরেকজনের জন্য মুক্তিপণ দিতে গিয়েছিল।
অধিকার সংগঠনকে ওই নারী বলেন, অপহরণের পর তাকে বারবার পালা করে ধর্ষণ এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়।
অপহরণের শিকার নারী বলেন, ‘সশস্ত্রগোষ্ঠীর সদস্যরা আমার সামনে এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যা করেন। তার নাড়িভুঁড়ি টেনে বের করে ফেলে দেন। দেহটি কেটে টুকরো টুকরো করেন এবং আমাকে সেগুলো রান্না করতে বলেন। এ সময় তারা আমাকে দুটি রান্নার পাত্রও এনে দেন। পরে তারা সব বন্দিকে মানুষের রান্না করা মাংস খেতে দেন।’
নিরাপত্তা পরিষদের সামনে এভাবে ওই নারীর বীভৎস স্মৃতির কথা তুলে ধরেন লুসেঞ্জ।
লুসেঞ্জ বলেন, ‘কয়েক দিন পর ওই নারীকে ছেড়ে দেয়া হয়। বাড়ি ফেরার সময় অন্য একটি মিলিশিয়া গ্রুপ তাকে আবারও অপহরণ করে। ওই সশস্ত্রগোষ্ঠীর সদস্যরাও তাকে পালা করে ধর্ষণ করেন।’
ওই নারী বলেন, ‘অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তারা আমাকে আবারও মানুষের মাংস রান্না করতে বলেন। আমাকে তা খেতে বাধ্য করেন। অবশেষে সেখান থেকে আমি পালিয়ে বাঁচতে সক্ষম হই।’
লুসেঞ্জ তার কাউন্সিল ব্রিফিংয়ের সময় দ্বিতীয় সশস্ত্রগোষ্ঠীর নাম উল্লেখ করেননি। মন্তব্যের জন্য কোডেকোর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি বলেও জানান তিনি।
কোডেকোসহ বেশ কয়েকটি সশস্ত্রগোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে কঙ্গোর খনিজসমৃদ্ধ পূর্বাঞ্চলের জমি এবং সম্পদ দখলে নিতে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘাত চালিয়ে যাচ্ছে। এমন সংঘাতে গত এক দশকে কয়েক হাজার মানুষ হত্যা করা হয়। বাস্তুচ্যুত হয়েছে কয়েক লাখ মানুষ।
কঙ্গোর সেনাবাহিনী গত মে মাস থেকে এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১২-১৩ সালে এই গোষ্ঠী দেশটির বড় কয়েকটি অঞ্চল দখল করে নেয়।
২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
আরও পড়ুন:ভারতের জনপ্রিয় ফ্যাক্ট-চেকিং ওয়েবসাইট AltNews-এর প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক মোহাম্মদ জুবায়ের ও সমাজকর্মী তিস্তা শেতলবাদকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, ‘বিজেপি একটি অপদার্থ দল।’
আসানসোলে মঙ্গলবার এক কর্মিসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ কথা বলেন।
বিজেপি নেতৃত্বকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘যখন আপনাদের নেতারা ধর্ম নিয়ে মিথ্যা বলেন, ঘৃণা ছড়ান, তখন আপনারা তাদের গ্রেপ্তার করেন না। আর আমরা কথা বললে খুনি বানিয়ে দেন। জুবায়েরকে কেন গ্রেপ্তার করলেন? তিস্তাকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়েছে? ওরা কী করেছেন? গোটা দুনিয়া এর নিন্দা করছে।’
AltNews-এর প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ জুবায়েরকে সোমবার গ্রেপ্তার করে দিল্লি পুলিশ। সংবাদমাধ্যমে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত বিভিন্ন খবরকে ভুল প্রমাণ করে দিয়েছেন এই জুবায়ের। দিল্লি পুলিশের তরফে বলা হয়, দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলে জুবায়েরের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার গ্রেপ্তার করা হয় সমাজকর্মী তিস্তা শেতলবাদকে। গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগে গুজরাট এটিএস মুম্বাইয়ের বাসভবন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
মহানবীকে (সা.) নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার নাম উল্লেখ না করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘আমি নাম নেব না। আমরা নাম নিতে চাই না। কিন্তু যারা ধর্ম তুলে গালাগালি করেন, তাদের আপনারা গ্রেপ্তার করেন না কেন? তবে আমাদের সরকার তাকে সমন পাঠিয়েছে। আমরা ছাড়ব না।’
আরও পড়ুন:জার্মানির এলমাউতে জি-৭ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলো এবং ভারতসহ এর পাঁচটি অংশীদার দেশ সোমবার ‘২০২২ রেজিলিয়েন্স (সহনশীলতা) ডেমোক্রেসি স্টেটমেন্ট’-এ স্বাক্ষর করেছে। এতে ‘সুশীল সমাজের স্বাধীনতা ও বৈচিত্র্য রক্ষা’ এবং ‘অনলাইন ও অফলাইনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ থাকার কথা ঘোষণা রয়েছে।
ওই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরই প্রকাশিত এক সংবাদে জানা যায়, সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্ক টুইটারকে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক অ্যাকাউন্ট ও আন্তর্জাতিক অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ফ্রিডম হাউস, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং কৃষকদের বিক্ষোভের সমর্থকদের কিছু টুইট ব্লক করতে বলা হয়েছিল।
২৬ জুন টুইটারের প্রকাশ করা এক নথিতে এ তথ্য পাওয়া গেছে। লুমেন ডাটাবেজে দাখিল করা নথি অনুসারে, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি ও ২৯ ডিসেম্বর এসব অনুরোধ জানানো হয়েছিল।
খবরটি প্রথম ‘এনট্র্যাকার’ নামে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্টে খবরটি প্রথম প্রকাশ পায়। তাতে দাবি করা হয়েছে, বিষয়বস্তু অপসারণে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধগুলো ২৪ ব্যাচে এসেছিলো। কিন্তু রোববার টুইটারে তা প্রকাশ করা হয়েছে (দৃশ্যত প্রয়োগ করা হয়েছে)।
অনলাইন তথ্য বা পোস্ট অপসারণের অনুরোধগুলো ট্র্যাক করে লুমেন ডাটাবেজ৷ এই ডাটাবেজে গুগল, ফেসবুক ও টুইটারের মতো নেতৃস্থানীয় ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোর ওয়েব লিঙ্ক বা অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।
টুইটারে প্রকাশ করা নথি অনুসারে, সামাজিক নেটওয়ার্কটিকে সরকার আন্তর্জাতিক অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ফ্রিডম হাউসের টুইটগুলোকে ব্লক করতে বলেছিল- যা বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র, রাজনৈতিক স্বাধীনতা এবং ইন্টারনেটে বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ মানবাধিকার নিয়ে গবেষণা এবং সমর্থন করে। নথি অনুসারে, সরকার টুইটারকে বিধায়ক জার্নাইল সিংসহ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টির সদস্যদের টুইটগুলো ব্লক করার অনুরোধ করেছিল।
কিষাণ একতা মোর্চার অ্যাকাউন্ট ব্লক করতে সরকার টুইটারকে অনুরোধ করেছিল। সোমবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে, কৃষক ইউনিয়নগুলোর যৌথ মঞ্চ সম্মিলিত কিষাণ মোর্চা (এসকেএম) তাদের টুইটগুলো ব্লক করতে সরকারের অনুরোধের তীব্র সমালোচনা ও আপত্তি জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে কিষাণ মোর্চা বলেছে, ‘সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা কোনো সতর্কবাণী ছাড়াই কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত টুইটার অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ করার তীব্র বিরোধিতা করছে৷ টুইটার ভারতে প্রায় এক ডজন টুইটার অ্যাকাউন্ট আটকে রেখেছে, যার মধ্যে @kisanektamorcha খামার আন্দোলনে যুক্ত টুইটার হ্যান্ডেল রয়েছে।’
সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘কমিটি ফর প্রটেকশন অফ জার্নালিস্ট’ সাংবাদিক রানা আইয়ুব ও সিজে ওয়ারলেম্যানের টুইট ব্লক করার ভারত সরকারের পদক্ষেপের নিন্দা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জার্মানিতে জি-৭ সম্মেলনে অংশ নেয়ার পর এক বিবৃতিতে প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘জার্মানি, আর্জেন্টিনা, কানাডা, ফ্রান্স, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, সেনেগাল, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমাদের গণতন্ত্রের স্থিতিস্থাপকতা শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করে।
‘উন্মুক্ত গণ বিতর্ক, স্বাধীন ও বহুত্ববাদী মিডিয়া এবং অনলাইন ও অফলাইনে তথ্যের অবাধ প্রবাহ সক্ষম করে, যা নাগরিক এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জন্য বৈধতা, স্বচ্ছতা, দায়িত্ব ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করে।
দুটি খবরে মোদি সরকারের দ্বিচারিতা প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
আরও পড়ুন:ভারতের জনপ্রিয় ফ্যাক্ট-চেকিং ওয়েবসাইট AltNews-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক মোহাম্মদ জুবায়েরকে গ্রেপ্তারের নিন্দা করেছে এডিটরস গিল্ড অফ ইন্ডিয়া। ভারতের প্রেস ক্লাবও জুবায়েরকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছে।
এডিটরস গিল্ড মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘AltNews-এর সতর্ক নজরদারি সমাজে মেরুকরণের হাতিয়ার হিসেবে বিভ্রান্তিকর তথ্য ব্যবহারকারী ও উগ্র জাতীয়তাবাদী মনোভাব জাগিয়ে তোলার কাজে সংশ্লিষ্টদের ক্ষুব্ধ করে তুলেছিল।
‘২০২০ সালের এক মামলায় জুবায়েরকে দিল্লি পুলিশের বিশেষ শাখায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল। এই মামলায় গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে দিল্লি হাইকোর্ট থেকে সুরক্ষা পেয়েছিলেন তিনি। জুবায়ের যখন সমনের জবাব দিয়েছিলেন, তখন চলতি জুন মাসের শুরুতে শুরু হওয়া একটি অপরাধমূলক তদন্তের ক্ষেত্রে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জুবায়েরের ২০১৮ সালের একটি পোস্ট ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে- এমন একটি বেনামি টুইটার হ্যান্ডেল-এর অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
গিল্ড দাবি করেছে, দিল্লি পুলিশ অবিলম্বে জুবায়েরকে মুক্তি দিক। কারণ জার্মানিতে জি-৭ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেয়া প্রতিশ্রুতিগুলো জোরদার করতে অনলাইন ও অফলাইন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করে একটি স্থিতিস্থাপক গণতন্ত্র নিশ্চিত করার জন্য এটি প্রয়োজন।’
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন গিল্ডের সভাপতি সীমা মুস্তাফা, সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় কাপুর ও কোষাধ্যক্ষ অনন্ত নাথ।
সংবাদের নিরপেক্ষতা, সংবাদমাধ্যমের ঋজু অবস্থান, সাংবাদিকতার মৌলিক দর্শন যখন প্রশ্নের মুখে তখন বিকল্প সংবাদের ধারণা তৈরিতে কাজ করছিল AltNews। ফ্যাক্ট চেকিং জার্নালিজমকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে এই প্রতিষ্ঠান। তা নিয়ে যখন জাতীয় রাজনীতি নতুন করে আন্দোলিত হচ্ছে তখন জুবায়ের সম্পর্কে আরও একটি বিষয় সামনে এসেছে।
পুলিশি হেফাজতে থাকা এই সাংবাদিকের নাম রয়েছে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য সম্ভাব্যদের তালিকায়। নরওয়ের রাজধানী অসলোর পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট চলতি বছরের মে মাসে এ বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য সম্ভাব্যদের নিয়ে যে তালিকা করেছে তাতে জুবায়েরের নাম রয়েছে। AltNews-এর আরেক প্রতিষ্ঠাতা প্রতীক সিনহার নামও রয়েছে ওই তালিকায়। সে সঙ্গে ভারত থেকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য পিআরআইও-এর সংক্ষিপ্ত তালিকায় নাম রয়েছে বিশিষ্ট সমাজকর্মী হর্ষ মন্দারের।
ভারতের রাজনৈতিক মহলেও জুবায়েরকে গ্রেপ্তারের বিরোধিতায় একাধিক নেতা সরব হয়েছেন। সোমবার তাকে গ্রেপ্তারের পর থেকেই একটি অংশ কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এই গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে টুইট করে বিজেপি সরকারের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘সত্যের একটি কণ্ঠকে গ্রেপ্তার করলেও আরও হাজার হাজার কণ্ঠের জন্ম হবে।’
কংগ্রেস এমপি শশী থারুর জুবায়েরের গ্রেপ্তারকে ‘সত্যের ওপর আক্রমণ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং তার মুক্তি দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘AltNews একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা দিয়ে আসছে।’
কংগ্রেসের আরেক এমপি জয়রাম রমেশ বলেন, ‘সাংবাদিক জুবায়েরকে গ্রেপ্তার করে দিল্লি পুলিশ প্রতিহিংসামূলক কাজ করেছে। কারণ AltNews সরকারের বানোয়াট দাবিগুলোকে তুলে এনেছে।’
আইনজীবী-কর্মী প্রশান্ত ভূষণও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘যারা ঘৃণাত্মক বক্তব্য প্রকাশ করছে, এই সরকার তাদের অনুসরণ করছে। জুবায়েরকে গ্রেপ্তার সত্যের ওপর আক্রমণ। অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে।’
জুবায়েরকে গ্রেপ্তারের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই নোবেল শান্তি পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকার প্রসঙ্গ টানছেন। কেউ কেউ বলছেন, এটাই ভারত। যেখানে নোবেল শান্তি পুরস্কারের মনোনয়ন তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিকে জেলে ঢোকানো হয়।
এখানে বলে রাখা ভালও, পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট অসলোর সঙ্গে নোবেল কমিটির কোনো সম্পর্ক নেই। তারা কেবল সুপারিশ করে।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে AltNews-এর যাত্রা শুরু হয়। এটি বিশ্বের প্রথম সারির ফ্যাক্ট-চেকিং আউটলেটগুলোর একটি। এর প্রতিষ্ঠাতারা বছরের পর বছর ধরে অনলাইন ট্রোলিং ও পুলিশি মামলার মুখোমুখি হচ্ছেন। বিশেষ করে ডানপন্থি গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছেন তারা।
আরও পড়ুন:জর্ডানের লোহিত সাগরের আকাবা বন্দরে বিষাক্ত ক্লোরিন গ্যাসের পাত্র ছিদ্র হয়ে ১১ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
স্থানীয় সময় সোমবারের এ দুর্ঘনায় আড়াই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
কর্তৃপক্ষ বলছে, গ্যাস ভর্তি কন্টেইনার সরাতে দিয়ে নিচে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে। ২৫ থেকে ৩০ টনের কন্টেইনারটি জিবুতিতে যাচ্ছিল।
সিসি টিভির ফুটেজে দেখা গেছে, উপরের দিকে তোলা হচ্ছে কন্টেইনার। এরপর হঠাৎ তা নিচে পড়ে যায়। এরপর কন্টেইনার থেকে গ্যাস বের হতে থাকে। ছড়িয়ে পড়তে থাকে চারদিক।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আহত ১৯৯ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
বন্দর থেকে ১০ মাইল দূরে আকাবা শহরের বাসিন্দাদের বাড়িতে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ঘর-বাড়ির দরজা-জানালা বন্ধ রাখতে বলে কর্তৃপক্ষ।
ক্লোরিন গ্যাস সাধারণত শিল্প এবং গৃহস্থালি পরিষ্কারের কাজে ব্যবহৃত হয়। স্বাভাবিক তাপমাত্রা এবং চাপে এই গ্যাস দেখতে হলুদ-সবুজ। শ্বাস বা কোনোভাবে শরীরে প্রবেশ কিংবা ত্বকের সংস্পর্শে আসলে ক্লোরিন শরীরের কোষ ক্ষতিগ্রসন্ত করে। এতে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটতে পারে।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনের মধ্যাঞ্চলীয় ক্রেমেনচুক শহরের একটি শপিংমলে আঘাত হেনেছে রুশ মিসাইল। এতে অন্তত ১১ জন সাধারণ ইউক্রেনীয়র মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আর আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন।
আল-জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, হামলার ঘটনায় ১১ জন নিহত হওয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউক্রেনের মধ্যাঞ্চলীয় পলটাভা অঞ্চলের গভর্নর দিমিত্র লুনিন। ধ্বংসস্তপের মধ্যে আরও মৃতদেহ আছে কি-না খুঁজে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এ ছাড়া আহত ৫০ জনের মধ্যে ২১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি ও ২৯ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে, জানান লুনিন। এই ঘটনাকে তিনি সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রম হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কারণ ওই শপিংমলের আশপাশে কিংবা কাছাকাছি এলাকায়ও কোনো সামরিক কর্মকাণ্ড ছিল না।
ক্রেমেনচুকের শপিংমলে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র সচিব অ্যান্টনি ব্লিংকেনও। রুশ এই হামলায় পুরো বিশ্ব আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে বলে এক টুইটে উল্লেখ করেন তিনি।
এর আগে ওই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি দাবি করেন, মিসাইল আঘাত হানার সময় ওই শপিংমলে অন্তত ১ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, রুশ মিসাইল হামলায় লুহানস্কের অন্তর্ভুক্ত লিশিচানস্ক শহরে আরও অন্তত ৮ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গভর্নর সেরহি গাইডাই। ওই হামলায় আরও ২১ জন আহত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ ছাড়া ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ শহরে ৫ জন সাধারণ মানুষ নিহত ও ২২ জন আহত হয়েছেন এমন খবর দিয়েছেন ওই শহরের গভর্নর ওলেহ সিনেহুবয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য