ইসলামের নামে মামুনুল হক যে ভাষায় উসকানি দিয়ে আসছিলেন, তার সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক ছিল না। মামুনুল হক যে ভণ্ড, প্রতারক, মিথ্যুক সেটা আমি অনেক আগে থেকেই বলে আসছিলাম। তবে সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে অভিসারের পর মামুনুল হকের সব জারিজুরি ফাঁস হয়ে গেছে।
রিসোর্টে মিথ্যা দিয়ে তার শুরু। তারপর একের পর এক মিথ্যার জালে জড়িয়ে পড়েছেন নিজে, সঙ্গে জড়িয়েছেন ইসলামকেও। এত দিন মামুনুল যা বলতেন তাই বিশ্বাস করতে হতো মানুষকে। কিন্তু এখন ধরা পড়ার পর তার বাকি আবরুটাও খসে গেছে। এখন সবাই বুঝে গেছে, মামুনুল একটা লম্পট ছাড়া আর কিছুই নয়। মামুনুলের মিথ্যার শুরু তার রিসোর্ট বুকিং থেকে। রিসোর্ট বুকিংয়ের সময় তার ওপর কোনো চাপ ছিল না।
সেখানে তিনি সঙ্গে থাকা নারীর নাম লেখেন আমেনা তৈয়েবা, এই নামটা তার প্রথম স্ত্রীর। অথচ তার সঙ্গে ছিল কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণা। স্থানীয় লোকজন মামুনুলকে আটক করার পরও তিনি দাবি করেন, তার সঙ্গে থাকা নারীর নাম আমেনা তৈয়েবা। অথচ পরে তিনি নিজেই জানিয়েছেন, তার কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম জান্নাত আরা ঝর্ণা।
প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোন আলাপের সময়ও তিনি দাবি করেছেন, সঙ্গে থাকা নারী ‘আমগোর শহীদুল ভাইয়ের ওয়াইফ’। স্ত্রীকে সান্ত্বনা দেয়ার জন্য তিনি বলেছিলেন, তুমি আবার মাঝখান দিয়া কিছু মনে কইরো না। প্রথম স্ত্রী কিছুই মনে করেননি। টেলিফোনে কিছুই বলেননি। খালি বলেছেন, ‘বাসায় আসেন, কথা হবে’। প্রথম স্ত্রীর এই হুমকি মামুনুল হক নিতে পারেননি। রয়্যাল রিসোর্ট কেলেঙ্কারির পর মামুনুল আর বাসায় ফেরার সাহস পাননি। পুলিশের কাছে ধরা দেবেন, তবু প্রথম স্ত্রীর কাছে যাবেন না।
প্রথম স্ত্রী তেমন কিছুই করেননি, শুধু সন্তানদের নিয়ে বাসা ছেড়ে চলে গেছেন। রয়্যাল রিসোর্টে ধরা খাওয়ার পর ফেসবুক লাইভে দ্বিতীয় স্ত্রীর কথা স্বীকার করেছিলেন মামুনুল, সঙ্গে স্বীকার করে নিয়েছিলেন ফাঁস হওয়া ফোনালাপ সবই সত্যি। তিনি বরং তার ব্যক্তিস্বাধীনতা খর্ব করে টেলিফোন কথোপকথন ফাঁস করার প্রতিবাদ করেছিলেন। বিভিন্ন পর্যায়ের ফাঁস হওয়া টেলিফোন সংলাপে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল, মামুনুল আসলে দ্বিতীয় বিয়ে করেননি। করলেও সেটা তার প্রথম স্ত্রী এবং পরিবারের কেউ জানতেন না।
মামুনুল দাবি করেছিলেন, জান্নাত আরা ঝর্ণার সঙ্গে তার স্বামীর ছাড়াছাড়ির পর ‘মানবিক কারণে’ শরিয়তসম্মতভাবে তাকে তিনি বিয়ে করেছিলেন। এর মধ্যেই ফাঁস হয়ে যায় তার তৃতীয় বিয়ের খবর। যদিও সেটা স্বীকার করার মতো সময় তিনি পাননি।
মামুনুলের পিতা শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক একজন স্বঘোষিত স্বাধীনতাবিরোধী। তবে তিনি ইসলাম বিষয়ে একজন আলেম ছিলেন। আর মামুনুল হক হলেন সেই আলেমের ঘরে জালেম। মুখে ইসলামের কথা বললেও তার চালচলন, কথাবার্তা, আচার-আচরণ, জীবনযাপন সব ইসলামবিরোধী। ইসলাম শান্তির কথা বলে। মামুনুল সহিংসতার কথা বলেন। ইসলাম নিয়মতান্ত্রিক জীবন বিধানের কথা বললেও, মামুনুলের পুরোটাই ছিল উচ্ছৃঙ্খল আর ইসলামবিরোধী।
ইসলামে চার বিয়ের অনুমোদন আছে বটে। তবে অবশ্যই দ্বিতীয় বিয়ের আগে প্রথম স্ত্রীর অনুমোদন নিতে হবে এবং সব স্ত্রীকে সমান মর্যাদা দিতে হবে। কিন্তু মামুনুল ধরা খেয়ে স্বীকার করা দ্বিতীয় স্ত্রীকে মর্যাদা তো দূরের কথা কোনো সামাজিক স্বীকৃতিই দেননি।
একটা মজার কথা বলে নিই। মামুনুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম জান্নাত আরা ঝর্ণা। আর ফাঁস হওয়া তৃতীয় স্ত্রীর নাম জান্নাতুল ফেরদৌস লিপি। তার মানে জান্নাতের প্রতি তার বিশেষ আকর্ষণ ছিল। ইসলামে বলা আছে, পুণ্যবানরা মৃত্যুর পর জান্নাতে যাবেন এবং সেখানে তাদের জন্য ৭২ জন হুর অপেক্ষা করছে। কিন্তু মামুনুলের মনে হয় ধৈর্য একটু কম। মৃত্যুর পর জান্নাতে গিয়ে হুরের জন্য অপেক্ষা করার চেয়ে দুনিয়াকেই জান্নাত বানিয়ে ফেলার প্রকল্প নিয়েছিলেন। তাই জান্নাত নামের নারীদেরই যেন তিনি টার্গেট করেছিলেন।
সাধারণ নৈতিকতায় দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে যা ইচ্ছা তাই করার অধিকার আছে। কেউ কারো ওপর জোর খাটালেই সেটা অন্যায়। কিন্তু ইসলামে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কোনো বৈধতা নেই। মামুনুল হক মুখে ইসলামের কথা বললেও যাপন করেছেন এক ইসলামবিরোধী জীবন। রিসোর্ট কেলেঙ্কারির পর থেকেই আমি মামুনুলের মিথ্যাচার নিয়ে বলে আসছি। তার ‘রুহানী পুত্র’রা সেটা বিশ্বাস করেনি। তারা বরং আমাকে মিথ্যাবাদী বলে আসছিলেন।
মামুনুল যখন নিজের সব মিথ্যার দায় স্বীকার করে নিলেন এবং ‘স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে সীমিত পরিসরে সত্য গোপন করার’ ফতোয়া জারি করলেন, তখন তাদের কারও কারও টনক নড়লেও সবার নয়। বাকি অন্ধরা বলতে চেষ্টা করল, ইসলামে চার বিয়ে করার অনুমোদন আছে। মামুনুলও হুঙ্কার দিলেন, আমি একাধিক বিয়ে করলে কার কী? মামুনুলের কথাবার্তার ধরন এবং কসম আর অভিশাপের বাহার দেখে আমি তখনই নিশ্চিত ছিলাম লম্পট মামুনুল আসলে দ্বিতীয় বা তৃতীয় কোনো বিয়েই করেনি। কারণ, বারবার বলার পরও মামুনুল বিয়ের কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। তখন তার রুহানী পুত্ররা দাবি করছিলেন, তিনি শরিয়তসম্মতভাবে বিয়ে করেছিলেন। অথচ এই মামুনুলই আগে বলেছিলেন, ইসলামে গোপন বিয়ের কোনো বৈধতা নেই। মামুনুলরা নিজেদের লাম্পট্য জায়েজ করার জন্য ইসলামকে নিজেদের মতো করে কাস্টমাইজ করে নেন।
পুলিশ রিমান্ডে যাওয়ার পর এখন মামুনুল স্বীকার করছেন, সকলি গরলে ভেল। তিনি বিয়েশাদি কিচ্ছু করেননি। জান্নাত আরা ঝর্ণা এবং জান্নাতুল ফেরদৌস লিপির অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়েছিলেন তিনি। নামকাওয়াস্তে ভরণপোষণের বিনিময়ে তিনি তাদের দিনের পর দিন ভোগ করেছেন। মামুনুলের দাবি তিনি দুই জান্নাতের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন। এখন বোঝা যাচ্ছে, জান্নাত আরা ঝর্ণার ডায়েরিই সত্য। ডায়েরিতে বিয়ের কোনো কথা নেই, আছে কন্টাক্টের কথা। এক লম্পট মামুনুল যে আমাদের কত কিছু শেখালেন। এখন তিনি দাবি করছেন, ‘কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ’। হে আল্লাহ, এই লম্পটদের কবল থেকে তুমি ইসলামকে হেফাজত কর।
মামুনুলের ভাগ্য ভালো, তারা যে বাংলাদেশ কায়েম করতে চান, সেটা এখনও হয়নি। হলে এত গ্রেপ্তার, রিমান্ডের সুযোগ তিনি পেতেন না। এত দিনে পাথর ছুড়ে এই জেনাকারীকে হত্যা করা হতো।
লেখক: সাংবাদিক, কলাম লেখক
আরও পড়ুন:কদিন ধরেই দাবদাহে পুড়ছে জনজীবন। গরমে অতিষ্ঠ মানুষ। দিনভর তীব্র তাপপ্রবাহ, তবে রাতে কিছুটা স্বস্তি মিলছে। এই অবস্থা থেকে আপাতত মুক্তি মিলছে না।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপপ্রবাহ যেভাবে বয়ে যাচ্ছে, আরও কটা দিন এভাবেই তা চলবে। কোথাও কোথাও সামান্য বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তবে এতে গরম তেমন একটা কমবে না।
মঙ্গলবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার ও রাঙ্গামাটি জেলাসহ ঢাকা, রংপুর ও বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
এতে বলা হয়, সিলেট বিভাগে দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
অধিদপ্তর বলছে, সারা দেশের দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।
আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংম পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
পরবর্তী পাঁচ দিনের আবহাওয়াও প্রায় একই থাকতে পারে জানিয়েছে অধিদপ্তর।
এর আগে সোমবার চলমান তাপপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে ৭২ ঘণ্টার জন্য দেশজুড়ের রেড অ্যালার্ট জারি করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তার আগেও গত ১৯ এপ্রিল তিন দিনের হিট অ্যালার্ট দেয়া হয়। অ্যালার্ট থাকবে ২৫ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত।
টানা কদিন দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা বেড়েছে। বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজশাহী, পাবনা, বরিশালেও প্রচণ্ড গরম। সোমবার খুলনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুসারে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরের জেটিতে ভিড়েছে।
জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার ৯ দিন পর সোমবার আমিরাতের স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৭টার দিকে জাহাজটি সমুদ্রবন্দরের জেটিতে নোঙর করে।
জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপ সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
রাতে জাহাজ পরিদর্শনে যান মালিকপক্ষের লোকজন, আমিরাতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আবু জাফর ও বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল বিএম জামালসহ কর্মকর্তারা।
এ সময় বাংলাদেশ মিশনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয় তাদের। জাহাজের ২৩ নাবিক সুস্থ রয়েছেন।
এদিকে কেএসআরএম গ্রুপের ডিএমডি শাহরিয়ার জাহান রাহাতের নেতৃত্বে একটি টিম দুবাই গেছে। বাংলাদেশ থেকে যাওয়া কেএসআরএম গ্রুপের টিমটি নাবিকদের বরণ করে নেয়।
কেএসআরএম গ্রুপের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম জানান, জাহাজটি বন্দরের জেটিতে ভিড়েছে। নাবিকরা সবাই সুস্থ আছেন। নাবিকরা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে বলে তিনি জানান।
কেএসআরএম গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে নাবিকরা চাইলে বাইরে আসতে পারবেন না। কারণ, আরব আমিরাতে প্রবেশের জন্য এখনও তাদের ভিসা হয়নি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের ভিসার জন্য আবেদন করা হবে।
জাহাজের মালিকপক্ষ জানায়, এখন জাহাজের কয়লা খালাসের প্রক্রিয়া শুরু হবে। এরপর নতুন করে কার্গো ভর্তি করার পর দেশে ফেরার প্রস্তুতি নেয়া হবে।
এদিকে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দেশটির আজমান প্রদেশে বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেএসআরএম গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাহরিয়ার জাহান।
জাহাজটি ২১ এপ্রিল বিকেলে আল হামরিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে নোঙর করে। ২২ এপ্রিল এটি নোঙর ফেলে জেটিতে।
আগে জাহাজটি ২২ এপ্রিল নোঙর করবে বলে জানিয়েছিল জাহাজটির মালিকপক্ষ। তারা আরও জানিয়েছেন, পণ্য খালাসের কার্যক্রম শেষ করার পর শুরু হবে নাবিকদের দেশে ফেরার প্রক্রিয়া।
১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় রাত ৩টার দিকে জলদস্যু মুক্ত হয় জাহাজটি। এরপর আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে নাবিকরা।
গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে পড়ে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। জলদস্যুরা জাহাজে উঠে নাবিকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে দস্যুদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় নিয়ে যেতে বাধ্য করে। একপর্যায়ে সুবিধাজনক স্থানে জাহাজটি নোঙর করায় দস্যুরা। এরপর মুক্তিপণের বিষয়ে দেনদরবার শুরু হয়।
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছে সোমবার।
এদিন রাত ৯টায় ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় ফেসবুকের ভেরিফায়েড পেজে পোস্টে এ কথা জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছে সোমবার রাত ৯টায়। এ সময় ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে।
পোস্টে জানানো হয়, বর্তমানে দেশব্যাপী চলছে তীব্র তাপদাহ। এই মুহূর্তে বিদ্যুৎ বিভাগ আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে জনজীবনে স্বস্তি বজায় রাখতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদনে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এর আগে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড ছিল রোববার ১৫ হাজার ৬৬৬ মেগাওয়াট।
২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আব্দুল জব্বারের বলী খেলা। বলীখেলা উপলক্ষে ২৪ এপ্রিল থেকে ২৬ এপ্রিল শুক্রবার পর্যন্ত ৩ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন থাকছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) সোমবার এ নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে। খবর বাসসের
সিএমপি জানিয়েছে, বলী খেলা ও বৈশাখী মেলা চলাকালে ক্রেতা-বিক্রেতাসহ আগত লোকজনের সমাগমের কারণে মেলা সংলগ্ন নির্ধারিত স্থানগুলোতে বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত লালদিঘি অভিমুখী সব প্রকার যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
সিএমপির ট্রাফিক-দক্ষিণ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এনএম নাসিরুদ্দিন জানিয়েছেন, লালদিঘির পাড় মাঠে মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পণ্য বিক্রেতারা তাদের পণ্য-দ্রব্যাদি নিয়ে আসবেন এবং ক্রেতা সাধারণসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ লোকজনের সমাগম ঘটবে। বলী খেলা ও বৈশাখী মেলা চলাকালে নগরীর আন্দরকিল্লা মোড় (জামে মসজিদের সামনে), পুরাতন টেলিগ্রাফ রোড, বোস ব্রাদার্স মোড় (পুলিশ প্লাজার সামনে), রাইফেল ক্লাব, কোতোয়ালী মোড় (সিডিএ গেট), আমানত শাহ মাজার রোডের মুখ ও টেরিবাজার ফুলের দোকানের (তিন রাস্তা মুখ) সামনে রোড ব্লক স্থাপনের মাধ্যমে ডাইভারশন প্রদান করা হবে। ফলে উক্ত সময়ে লালদিঘি অভিমুখে সব ধরনের যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক আমদানি-রপ্তানিসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ডভ্যানসহ অন্যান্য যানবাহনসমূহ কোতোয়ালী মোড় হয়ে ফিরিঙ্গীবাজার মেরিন ড্রাইভ রোড ব্যবহার করে চাকতাই ও রাজখালী হয়ে চাকতাই-খাতুনগঞ্জে যাতায়াত করবে।
ঐতিহ্যবাহী আব্দুল জব্বারের বলী খেলা উপলক্ষে অনুষ্ঠিতব্য বৈশাখী মেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের নিমিত্তে উল্লিখিত নির্দেশনাগুলো সব প্রকার যানবাহনের চালক ও যাত্রী সাধারণসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথভাবে মেনে চলার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে এ ৩ দিন ওই এলাকার সড়কগুলো এড়িয়ে বিকল্প সড়ক ব্যবহারের জন্যে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের টেকনাফে অপহরণের শিকার দুজনকে ফিরে পাওয়া গেছে।
উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর-হোয়াইক্যং ঢালার সড়কে সোমবার রাতে তাদের পাওয়া যায় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এর আগে রোববার রাতে ফার্মেসি থেকে বাড়ি ফেরার পথে অপহরণের শিকার হয়েছিলেন ওই দুজন।
তারা হলেন উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের পশ্চিম থাইংখালী এলাকার জাকের হোসাইনের ছেলে মো. জহির উদ্দিন (৫১), বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর নয়াপাড়া এলাকার মৃত মো. শফিকের ছেলে মোহাম্মদ রফিক (৩২)।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাত ১১টার দিকে পুলিশ ও স্থানীয় জনতার তৎপরতায় অপহৃত পল্লী চিকিৎসক জহির ও অন্যজনকে অক্ষত অবস্থায় বাহারছড়া ইউনিয়নের শীলখালীতে পাওয়া গেছে।
এদিন সকাল থেকে উখিয়া সার্কেল ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেল, টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মছিউর রহমান, হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ শাহাদাত হোসেনসহ একদল পুলিশ এবং বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকনসহ স্থানীয় লোকজন উদ্ধার কাজ চালিয়েছিল। অভিযানে উদ্ধার করতে না পারলেও রাতে অপহৃত দুজনকে ছেড়ে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওসমান গনি জানান, সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দুর্গম পাহাড়ে পুলিশের অভিযানের ফলে অপহরণকারীরা অবশেষে দুই অপহৃতকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।
নাটোরের সিংড়ায় ট্রাকচাপায় সুকাশ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য সচিব নিহত হয়েছেন।
নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের জোলারবাতা এলাকায় সোমবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো ইলিয়াস আহমেদ রনি (৩২) উপজেলার কাকিয়ান গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে।
সিংড়া থানার ওসি আবুল কালাম জানান, সোমবার বিকেলে নাটোর থেকে বগুড়াগামী একটি মিনি ট্রাক জোলারবাতা এলাকায় রনির বাইককে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই বাইক চালক রনি মারা যান। এ সময় রনির চাচাত ভাই মান্নাফ হোসেন আহত হন।
পরে আহত মান্নাফকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এবং রনির মরদেহ পরিবারে কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ওসি জানান, এ ঘটনার পর ট্রাকের চালক ও সহকারী পালিয়ে গেছে। ট্রাকটি জব্দ করে থানায় নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:দেশজুড়ে চলমান তাপপ্রবাহে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় চাহিদার তুলনায় উৎপাদন ঘাটতির কারণে দেশে বিদ্যুতের প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে। সূত্র: ইউএনবি
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অফ বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ন্যাশনাল লোড ডিসপ্যাচ সেন্টারের (এনএলডিসি) তথ্য অনুযায়ী, সোমবার বিকেল ৩টায় দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৫ হাজার ২২০ মেগাওয়াট। সে সময় দেশ জুড়ে বিদ্যুতের লোডশেডিং ছিল ৯৯৬ মেগাওয়াট।
এদিন সন্ধ্যায় বিদ্যুতের চাহিদার পূর্বাভাস ছিল ১৫ হাজার ৬৬৬ মেগাওয়াট এবং সরবরাহের পূর্বাভাস ছিল ১৬ হাজার ২০০ মেগাওয়াট।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য বড় শহরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়াতে গিয়ে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেড়ে গেছে।
তীব্র গরমের মধ্যে বিদ্যুৎহীনতায় গ্রামের মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। শেষ মুহূর্তের সেচ কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে মারাত্মকভাবে।
বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া সংবাদে জানা যায়, এই গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ের মাত্রা গ্রামীণ মানুষের দুর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
এদিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার তথ্যে দেখা যায়, দৈনিক তিন হাজার ৭৬০ মেগাওয়াট ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে দেশে এই সময়কালে গ্যাস উৎপাদন হয়েছে তিন হাজার ৪৬ মিলিয়ন ঘনফুট।
এ অবস্থায় বেশ কিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বিশেষ করে যেগুলো প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে গ্যাস ব্যবহার করে থাকে, সেগুলোতে গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো দু’হাজার ৩১৬ দশমিক ৯ এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে এক হাজার ৩৪৯ দশমিক ৯ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ পেয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য