২০১২ সালে ম্যানচেস্টার সিটির ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জয়ের পর একটি ভিডিও বেশ ভাইরাল হয়। ৪৪ বছর পর সিটির লিগ শিরোপা জয়ের ম্যাচ দেখে ফেরা এক ভক্তের সাক্ষাৎকার ছিল ওই ছোট ভিডিওতে।
ইতিহাদ স্টেডিয়াম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বয়স্ক ওই সিটি সমর্থক বলেন, ‘আমার ৪৪ বছরের অপেক্ষা শেষ হলো। ১৯৬৮ সালে তাদেরকে শিরোপা জিততে দেখেছি। তাদেরকে আমি ৭৫ বছর যাবৎ সমর্থন করে আসছি। ছয় ফিট দুই ইঞ্চি লম্বা এক তরুণ ছিলাম। মাথা ভর্তি চুল ছিল আমার। দেখো এরা আমার কী অবস্থা করেছে (নিজের টাক মাথার দিকে ইঙ্গিত করে)!
ভাইরাল হয়ে পড়া সেই বৃদ্ধের নাম জানা যায়নি। জানার প্রয়োজনও নেই বোধহয়। যারা ফুটবলকে ভালোবাসেন তারা জানেন খেলাটার আবেগটাই এমন। দলের যে অবস্থাই থাকুক না কেনো ভক্তরা সমর্থন যুগিয়ে যান আজীবন।
ইউরোপে ফুটবল সংস্কৃতির দিকে তাকালে দেখা যাবে এই সমর্থন ও সমর্থকেরাই টিকিয়ে রেখেছে ফুটবল। প্রজন্মের পর প্রজন্ম জুড়ে চলে আসে নির্দিষ্ট কোনো দলের সমর্থন। কেউ বা বাবাকে দেখেছেন সমর্থন করতে। কারও বা জন্ম ও বেড়ে ওঠা নির্দিষ্ট শহরে যেখানে ফুটবল ক্লাব হাতে গোনা। ছোটবেলা থেকে তাদেরই সমর্থন করে চলা।
শহর বা এলাকা ভিত্তিক সমর্থকেরাই মূল ভিত্তি ইউরোপিয়ান ফুটবলের। লিভারপুল, ম্যানচেস্টার, মাদ্রিদ, মিলান, বার্সেলোনা কিংবা মিউনিখ এই শহরগুলোর পরিচয় বিশ্বজুড়ে এখন তাদের ফুটবল ক্লাবগুলোকে দিয়েই।
এই সমর্থকদের কথা না ভেবেই বা কিছু ক্ষেত্রে পাশ কাটিয়েই যখন ইউরোপের সেরা ১২টি ক্লাব চুক্তি করে ফেলে বিদ্রোহী এক টুর্নামেন্টের তখন তা আলোচনা- সমালোচনার ঝড় তুলবে সেটাই স্বাভাবিক। নতুন সুপার লিগ যাত্রার প্রাক্কালে ফুটবল ফ্যানদের কথা ভেবেছে কি না ক্লাবগুলো সেই প্রশ্ন তুলেছেন খোদ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
সুপার লিগে যোগ দেয়া ছয় ইংলিশ ক্লাবের সমালোচনা করে বরিস জনসন বলেন, ‘পরবর্তী কোনো পদক্ষেপ নেয়ার আগে ক্লাবগুলোকে তাদের সমর্থক ও ফুটবল কমিউনিটিকে জবাব দিতে হবে।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পর এই পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা করেছে খোদ ইউয়েফা। তাদের চেয়ারম্যান আলেক্সান্ডার সেফেরিনের কাছে এই পদক্ষেপ ভক্তদের মুখে থুথু দেয়ার সমান।
‘আমার মতে এই পরিকল্পনা সমর্থক ও পুরো সমাজের মুখে থুতু দেয়ার মতো। আমরা কোনোভাবেই খেলাটিকে আমাদের কাছ থেকে নিয়ে যেতে দেবো না।’
ক্লাব ও ইউয়েফা দ্বন্দ্বের শুরুটা কোথায় সেটা জানতে কিছুটা পেছাতে হবে।
ইউরোপের সেরা ক্লাব নির্ধারণ করার জন্যে ১৯৫৫ সালে শুরু হয় ইউরোপিয়ান কাপ। তবে এতে অংশগ্রহণ ছিল সীমিত। শুধু মাত্র চ্যাম্পিয়নরাই এতে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেতো। আর টুর্নামেন্ট নক-আউট হওয়ায় খুব বেশি ম্যাচ খেলারও সুযোগ পেতো না ক্লাবগুলো।
১৯৯২ সালে ইউয়েফা বদলায় টুর্নামেন্টের নাম। অ্যাপিয়ারেন্স ফি ও প্রাইজমানি বাড়লেও দলের সংখ্যা রয়ে যায় আটে। পরের বছর সংখ্যা দ্বিগুণ হলেও বড় ক্লাবগুলো নাখোশ ছিল তাতেও। মূলত তখন থেকেই শুরু হয় সুপার লিগের পরিকল্পনা।
সেটি ঠেকাতে ১৯৯৭-৯৮ সালে ইউয়েফা বর্ধিত কলেবরে আয়োজন করে চ্যাম্পিয়নস লিগ। ১৬ দল থেকে করা হয় ২৪ দলের টুর্নামেন্ট। তারও দুই বছর পর ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে শুরু হয় ৩২ দলের আসর। যা এখনও টিকে আছে।
ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলো বরাবরের দাবী ছিল বড় ক্লাবগুলো যেন লভ্যাংশ বেশি পায় যেহেতু তারাই টিভি রেটিং ও মাঠের দর্শককে বেশি আকর্ষণ করে। কিন্তু ইউয়েফা তাদের দাবিতে কান না দেয়ায় পরিকল্পনা করা হয় সুপার লিগের।
সুপার লিগে অংশ নিলে বাড়তি অর্থ সুবিধা পাবে দলগুলো এটা নিশ্চিত। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম টাইমসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী আমেরিকান কোম্পানি জেপি মরগ্যান টুর্নামেন্টের জন্য বাজেট করেছে ছয় বিলিয়ন ডলার। আর ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কোম্পানি ডিএজিএন দিচ্ছে সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার। প্রতিটি দল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের জন্য পাবে অন্তত ১২ কোটি ডলার। যেটি যেয়ে ঠেকতে পারে ৪৩ কোটি ডলারে।
এ ছাড়া লক্ষ্য করার মতো বিষয় ১২ ক্লাবের জোটের পাঁচটি ক্লাব আর্সেনাল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, টটেনহ্যাম হটস্পার, মিলান ও ইন্টারনাৎসিওনাল গত এক দশকে চ্যাম্পিয়নস লিগে নিয়মিত নয়। ঘরোয়া সাফল্যও কম পাচ্ছে এই দলগুলো।
বিশেষ করে ইংল্যান্ডের মাঝারি মানের দল আর্সেনাল, যারা সবশেষ লিগ জিতেছে ২০০৪ সালে ও কখনই চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতেনি। তাদের জন্য চ্যাম্পিয়নস লিগের আশায় বসে না থেকে সুপার লিগে খেলার প্রস্তাবই ভালো।
কারণ, এই ১২টি ক্লাব সহ মোট ১৫টি ক্লাবকে করা হবে টুর্নামেন্টের স্থায়ী সদস্য। বাকি ৫টি ক্লাব নির্বাচন করা হবে ঘরোয়া লিগে পারফর্মেন্সের ভিত্তিতে। ফলে, আর্সেনাল বা টটেনহ্যামের মতো অসফল কিন্তু জনপ্রিয় দলগুলোর সামনে সুযোগ নিশ্চিত ভাবে ১২ কোটি ডলার বাগানোর। সঙ্গে প্রতি মৌসুমের অন্যান্য আয় তো থাকছেই!
পাশাপাশি রয়েছে টিভি রেটিং ও স্টেডিয়ামে দর্শক উপস্থিতির বিষয়ও। ১২টি বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ক্লাব হওয়ার কারণে প্রায় সবসময়ই তাদের ম্যাচের রেটিং থাকে উচ্চ। তবে, যখন তারা নিচু সারির কোনো দলের বিপক্ষে খেলে ও ওই একই সময়ে অন্য দেশের লিগে বড় কোনো খেলা হচ্ছে তখন রেটিং কমে যাবার সম্ভাবনা থাকে বৈকি!
উদাহরণ হিসবে বলা যায়, যদি লিগ ম্যাচে আর্সেনাল মুখোমুখি হয় ফুলহ্যামের আর অন্য চ্যানেলে যদি থাকে মিলান বনাম ইউভেন্তাস লড়াই, বৈশ্বিক বাজারে দ্বিতীয়টিরই চাহিদা বেশি থাকবে সন্দেহ নেই।
এ ছাড়া এই ১২টি ক্লাবের স্টেডিয়ামগুলোও বিরাট। অন্তত ৭০ হাজার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন। বার্সেলোনার ক্যাম্প ন্যুয়ে ধরে প্রায় এক লাখ (৯৯ হাজার ৫০০)। এমন কোনো দল যখন চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলতে যায় বেলারুশের বাতে বরিসভের ১৩ হাজার ধারণক্ষমতার মাঠে, তখন টিকিট বিক্রি থেকে থেকে পাওয়া লভ্যাংশের পরিমাণ নিয়ে দুশ্চিন্তা করাটাই স্বাভাবিক তাদের জন্যে।
মোটা দাগে এই সব বিষয়গুলোই চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার প্রতি অনাগ্রহ সৃষ্টি করে ক্লাবগুলোর মধ্যে। সুপার লিগ হলে প্রতি সপ্তাহেই থাকবে ব্লকবাস্টার সব ম্যাচ। স্পনসররা ঝাপিয়ে পড়বেন, দর্শকে টইটুম্বুর হয়ে থাকবে গ্যালারি এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।
তবে, এতো পরিকল্পনা ও অর্থকড়ির ঝনঝনানিতে ক্লাবগুলো ভুলে গেছে ফুটবলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশের কথা। সমর্থক। শুরুতে যেমনটা বলা হয়েছে, সেই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরের ভক্তদের কথা ভাবতে হবে ক্লাবগুলোকে সবার আগে। ভাবতে হবে তাদের সংস্কৃতি ও চিরকালীন অভ্যাসের কথা।
যে অভ্যাসে তারা প্রতি উইকেন্ডে ছেলে-মেয়ে-স্ত্রী-বান্ধবী-বন্ধুকে নিয়ে যান মাঠে। ম্যাচ শেষ দলের জয়ে একান থেকে ওকান হাসি নিয়ে ফেরেন, প্রতিপক্ষ সমর্থকদের দু’কথা শোনাতে শোনাতে। লোকাল ডার্বিগুলো এখনও সমর্থকদের দেয় ‘ব্র্যাগিং রাইটস’।
ইউয়েফা এরই মধ্যে কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে। বলেছে সুপারলিগের দলগুলোকে তারা খেলতে দেবে না ঘরোয়া লিগ ও অন্য মহাদেশিয় আসরগুলোতে। নিষিদ্ধ হবেন ফুটবলাররা।
এই কারণেই ভক্তরা সুপার লিগ চাচ্ছেন না। তাদের ভয় ক্লাবগুলো ঘরোয়া ফুটবল থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে ও শুধুমাত্র খেলবে সুপারলিগে। নিষেধাজ্ঞার পরও থামবে না তাদের সেই নতুন ‘পয়সা বানানোর মেশিন’।
ভক্তদের ক্ষোভটা বোঝা গেছে তাদের প্রতিক্রিয়াতেই। ইংল্যান্ডের ছয়টি ক্লাবের সমর্থকেরা ক্লাবের সামনে ঝুলিয়ে দিয়েছেন নানা প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার। কোনোটাতে লেখা ‘গরীবদের থেকে ছিনিয়ে ধনীদের জন্য’, কোনোটাতে ‘ধিক্কার তোমাদের’।
সার্বজনীনতার কারণে ফুটবলকে ডাকা হয় দ্য বিউটিফুল গেইম। ভিয়া ফিয়োরিতার দিয়েগো মারাদোনা কিংবা আলজেরিয়ান ইমিগ্র্যান্ট জিনেদিন জিদান দোলা দেন ধনী গরীব নির্বিশেষে সকল সমর্থকের মনে। সুপার লিগ যদি জয় করতে পারে এই সমর্থকদের মন তাহলেই একমাত্র ইউয়েফার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেও সাফল্য পাওয়া সম্ভব।
আর যদি ফ্র্যাঞ্চাইজি মডেলে যেয়ে শুধুমাত্র টিভি রেটিং, বিজ্ঞাপণ ও মার্চেন্ডাইসিং-এ মনোযোগী হয় নতুন এই লিগ তাহলে হয়তো পুরনো সমর্থকদের ভুলে নতুনদের আকর্ষণ করার পরিকল্পনা আঁটতে হবে ক্লাবগুলোকে।
১২০ বছরের ক্লাব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বুন্দেসলিগার শিরোপা জেতার কৃতিত্ব দেখিয়েছে বায়ের লেভারকুসেন। রোববার ভার্ডার ব্রেমেনকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে লিগে বায়ার্ন মিউনিখের ১১ বছরের টানা আধিপত্য ভাঙতে সক্ষম হয়েছে শাবি আলোনসোর দল।
লিগের ২৯তম ম্যাচে এসে পাঁচ ম্যাচ হাতে রেখেই লিগ শিরোপা নিশ্চিত করেছে তারা। পুরো মৌসুমে দারুণ ফর্মে থাকা লেভারকুসেন এখন পর্যন্ত শুধু লিগে নয়, ইউরোপা লিগসহ সব ধরনের প্রতিযোগিতায় অপরাজিত রয়েছে।
ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টসের হ্যাটট্রিক এবং ভিক্টর বনিফেস ও গ্রানিট জাকার গোলে সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এদিন লেভারনকুসেন টানা ৪৩ ম্যাচে অপরাজিত থাকার গৌরব অর্জন করল।
এ পর্যন্ত পাঁচবার দ্বিতীয় স্থানে থেকে লিগ শেষ করলেও শিরোপার স্বাদ কখনও পাওয়া হয়নি লেভারকুসেনের। এই শিরোপার মাধ্যমে লেভারকুসেনর তাদের কুখ্যাত ‘নেভারকুসেন’ তকমা থেকেও সরে আসতে সমর্থ হয়েছে।
শিরোপা জয়ের আনন্দে কাল ম্যাচ শেষ হওয়ার ১০ মিনিট আগেই উদযাপন শুরু করে দেয় উচ্ছসিত সমর্থকরা। একে একে তারা সাইডলাইনে জড়ো হতে শুরু করেন। যদিও ম্যাচ তখনও চলছিল। লেভারকুসেনের খেলোয়াড়রা এক পর্যায়ে তাদের অনুরোধ জানায় গ্যালারিতে ফিরে যেতে। কিন্তু ৯০ মিনিটে পর পুরো স্ট্যান্ডই খালি হয়ে যায়, তখন সবাই ছিল মাঠের ভেতর। আবেগ আপ্লুত সমর্থকরা এ সময় খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাদের এই বিজয় উৎসব উপভোগ করতে থাকেন।
এই জয়ে লেভারকুসেনের পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯। জার্মান লিগ ইতিহাসে ২৯ ম্যাচ পর এটাই সর্বোচ্চ পয়েন্ট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বায়ার্ন মিউনিখের থেকে লেভারকুসেন ১৬ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছে।
ম্যাচের হ্যাটট্রিকম্যান ভিয়ার্টস বলেন, ‘এটা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। আমি বলতে পারব না, আমরা কী করেছি। আমার এখন ড্রেসিং রুমে ফিরে গিয়ে শান্ত হয়ে বসতে হবে। ইতোমধ্যেই আমরা সমর্থকদের সঙ্গে পার্টি শুরু করে দিয়েছি।’
ম্যাচ শুরুর ৯০ মিনিট আগে স্টেডিয়ামে এসে উপস্থিত হয় লেভারকুসেনের বাস। ৩০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ঘরের মাঠ বে আরেনাতে কাল পুরোটা সময়জুড়েই ছিল লাল-কালো জার্সিধারীদের আধিপত্য।
কোচ শাবি আলোনসোর সম্মানে শহরের বিমসার্ক স্ট্রিটটি সমর্থকরা সাময়িকভাবে ‘শাবি আলোনসো স্ট্রিট’ নামে আখ্যায়িত করে।
শিরোপা জয় নিশ্চিত হবার পর আলোনসোর এখন মূল লক্ষ্য বৃহস্পতিবার ইউরোপা লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে লন্ডনে ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষেও ম্যাচটি। ওই ম্যাচকে সামনে রেখে গতকাল মূল একাদশে সাতটি পরিবর্তন এনেছিলেন আলোনসো। এ কারণে বদলি বেঞ্চে ছিলেন ভিয়ার্টস, জেরেমি ফ্রিমপং ও আলেক্স গ্রিমালদো। এদের মধ্যে মৌসুমে এই প্রথম ম্যাচ শুরু করার সুযোগ পাননি গ্রিমালদো। তার পরিবর্তে মাঠে নামা পিয়েরো হিনকেপি শুরুতেই গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেছেন।
এদিন ব্রেমেন ডিফেন্ডার হুলিয়ান মালাতিনির বিপক্ষে ইয়োনাস হফমানের আদায় করা পেনাল্টি থেকে লেভারকুসেনকে এগিয়ে দেন বনিফেস। রেফারি সরাসরি পেনাল্টির নির্দেশ দিলেও পরবর্তীতে ভিএআর পরীক্ষা করে তা নিশ্চিত হতে হয়। বিরতির ঠিক আগে হফম্যান আবারও গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন, কিন্তু তার পাস থেকে আমিন আদলির শট ক্রসবারে লেগে ফেরত আসে।
দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা আগ্রাসী হয়ে খেলা শুরু করে ব্রেমেন, কিন্তু ম্যাচের ৬০তম মিনিটে বনিফেসের পাস থেকে শক্তিশালী শটে জাকা ব্যবধান দ্বিগুণ করলে ব্রেমেনর সব স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়।
আদলির পরিবর্তে মাঠে নামা ভিয়ার্টস আট মিনিট পর জাকার মতো প্রায় একইভাবে বল জালে জড়ান। ম্যাচ শেষের সাত মিনিট আগে ভিয়ার্টস তার দ্বিতীয় গোল করেন। এরপর ৯০তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ২০ বছর বয়সী এ জার্মান ফুটবলার। শেষপর্যন্ত ৫-০ গোলের বড় জয় পেয়ে শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতে লেভারকুসেন।
ইউরোপিয়ান ফুটবলে বড় চমক। লিভারপুল, বায়ার্ন মিউনিখ নয়, বায়ের লেভারকুজেনেই থেকে কোচিং চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শাবি আলোনসো।
ট্রান্সফার মার্কেট গুরু ফাব্রিৎসিও রোমানো এক্স পোস্টে জানিয়েছেন, কিছুক্ষণ আগেই লেভারকুজেনের খেলোয়াড়দের শাবি জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি এ ক্লাবটিতেই থেকে যাচ্ছেন।
ওই পোস্টে রোমানো লেখেন, শিষ্যদের তিনি (শাবি) বলেছেন, ‘আমি তোমাদের সঙ্গে আরও ট্রফি জিততে চাই। আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের জন্য প্রস্তুত হও।’
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে শাবি আলোনসো বলেন, ‘লেভারকুজেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমার মিটিং হয়েছে। সেখানে আমি তাদের জানিয়েছি, আগামী মৌসুমে আমি এখানেই নিজের কাজ চালিয়ে যাব।
‘অনেক ভেবেচিন্তে আমি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি মনে করি, আমার জন্য বর্তমানে এটিই (লেভারকুজেন) সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা।’
এ স্প্যানিশ কোচ বলেন, ‘এখানে আমার কাজ এখনও শেষ হয়ে যায়নি। ক্লাবকে আমি সাহায্য করতে চাই, খেলোয়াড়দের আরও উন্নতি করতে চাই। আমাদের ভক্তরা, (লেভারকুজেন) বোর্ডও অসাধারণ… এখানকার সবকিছুই চমৎকার।
‘ম্যানেজার হিসেবে আমি এখনও অনেক ছোট। তাই মনে করি, নিজের ভবিষ্যত সম্পর্কে এটিই আমার জন্য সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত। আমি এ কথাগুলো বলার আগে যথেষ্ট সময় নিয়েছি এবং এ বিষয়ে আমার মনে কোনো সংশয় নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘হ্যাঁ, শিষ্যদের আমি ইতোমধ্যে আমার সিদ্ধান্ত জানিয়েছি।’
এ সময় লিভারপুল ও বায়ার্ন মিউনিখ সম্পর্কে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নটি তিনি এড়িয়ে যান। বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। তারা (লিভারপুল ও বায়ার্ন) অবশ্যই অনেক বড় ক্লাব এবং দুই ক্লাবের সঙ্গেই আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তবে আমি যেখানে থাকতে চাই, সে জায়গাটিই এখন বেছে নিয়েছি।
‘নিজের ভবিষ্যত নিয়ে ভাবার সময় এখনই নয় বলে মনে করছি। বায়ের লেভারকুজেনে আমি নিজেকে আরও উন্নীত করতে চাই।’
চলতি মৌসুমে লেভারকুজেনের খেলোয়াড় ও ভক্ত-সমর্থকদের রূপকথার গালিচায় চড়িয়ে নিয়ে চলেছেন শাবি আলোনসো। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে শুধু তার দলই এখনও সব প্রতিযোগিতায় অপরাজিত।
বুন্দেসলিগায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে একপ্রকার অজেয় বায়ার্ন মিউনিখকে নাকানি-চুবানি খাইয়েছে তার শিষ্যরা। পয়েন্ট টেবিলেও বেশ বড় ব্যবধানে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে দলটি। চলতি মৌসুমে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বায়ার্নের সঙ্গে তাদের ব্যবধান ১০ পয়েন্টের। দুই দলেরই হাতে রয়েছে কেবল আটটি করে ম্যাচ।
অনেক ফুটবলবোদ্ধার মতো বায়ার্নের সাবেক অধিনায়ক ফিলিপ লামও মনে করেন, এবার লিগ শিরোপা লেভারকুজেনের ঘরেই যাচ্ছে। আর তা হলে ক্লাবটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বুন্দেসলিগার শিরোপা জয়ের স্বাদ দিতে চলেছেন আলোনসো।
শুধু তা-ই নয়, শীর্ষ চারে থাকায় আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে লেভারকুজেন।
গত ২৬ জানুয়ারি চলতি মৌসুম শেষে লিভারপুলের দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন ইয়ুর্গেন ক্লপ। ক্লপের এমন ঘোষণায় লিভারপুল সমর্থকরা চমকে গেলেও তখন থেকে ইংলিশ ক্লাবটির পরবর্তী কোচ কে হবেন, তা নিয়ে ফুটবল পাড়ায় শুরু হয় জোর আলোচনা।
এক্ষেত্রে আলোনসোর নামটি সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পেতে থাকে। আলোনসোর খেলোয়াড়ি জীবনের শুরুর দিকে অল রেডদের জার্সি পরে খেলার কারণে তার প্রার্থিতা বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছিল।
লিভারপুলের পরবর্তী কোচ হিসেবে আলোনসোকে দেখতে চেয়েছিলেন খোদ ক্লপও।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিকদের ক্লপ বলেছিলেন, ‘সে (শাবি) বিশ্বমানের খেলোয়াড় ছিল। কোচিং পরিবার থেকে আসায় এ কাজেও সে ভালো মনোবল পায়।
‘খেলোয়াড়ি জীবন থেকেই সে কোচের মতো ছিল। (লেভারকুসেনকে) যে ফুটবল সে খেলাচ্ছে, যেভাবে খেলোয়াড় এনে দল সাজিয়েছে- এককথায় অনবদ্য।’
লিভারপুলের পরবর্তী কোচ সম্পর্কে ক্লপ বলেন, ‘আপনি যদি আমাকে আরও আট সপ্তাহ আগেও এই প্রশ্নটি করতে, তাহলেও আমি একই কথা বলতাম। ওর জন্য আমি যেকোনো মুহূর্তে স্থান ছেড়ে দিতে পারি।’
অন্যদিকে চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতায় ভালোভাবে টিকে থাকা সত্ত্বেও গত বছরের মার্চে কোচ ইউলিয়ান নাগেলসমানকে ছাঁটাই করে বায়ার্ন মিউনিখ। দল জয় পেলেও ‘পারফরম্যান্স ভালো নয়’ অজুহাতে তাকে সরিয়ে ডর্টমুন্ড ও চেলসির সাবেক কোচ টমাস টুখেলকে দায়িত্ব দেয় ক্লাবটি।
তবে টুখেলের কোচিংয়েও সন্তুষ্ট নয় বায়ার্ন কর্তৃপক্ষ। এমনকি চলতি মৌসুম শেষে তার সঙ্গে ক্লাবটির সম্পর্কচ্ছেদের কথাও জানিয়ে দেয়া হয়েছে ইতোমধ্যে। ফলে নতুন কোচের খোঁজে রয়েছে তারাও।
এদিকে বায়ার্নে খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ার শেষ করা আলোনসো যেভাবে লেভারকুজেনকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তাতে তার নামটি বায়ার্নেরও পরবর্তী কোচ হওয়ার তালিকায় উপরের দিকে স্থান পায়।
এসব বিষয় নিয়ে এতদিন টুঁ-শব্দ করেননি শাবি। তবে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এসে সব জল্পনায় জল ঢেলে দিলেন তিনি। জানিয়ে দিলেন, লেভারকুজেন থেকে সরছেন না লিভারপুল, রিয়াল মাদ্রিদ ও বায়ার্ন মিউনিখের জার্সি গায়ে মাঝমাঠ সামলানো সাবেক এ তারকা ফুটবলার।
আরও পড়ুন:ব্রাজিলের সাবেক আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলোয়াড় রবিনহোকে ধর্ষণের দায়ে গ্রেপ্তার করেছে ব্রাজিলের ফেডারেল পুলিশ।
ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলানে খেলাকালীন ২০১৩ সালে একটি নাইট ক্লাবে আলবেনিয়ান নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ইতালিতে রবিনহোকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল বলে জানায় বিবিসি।
ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৭ সালে রবিনহোকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেয় ইতালির আদালত। এরপর বৃহস্পতিবার নিজ শহর সান্তোসের বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন ৪০ বছর বয়সী এ খেলোয়াড়।
ব্রাজিলের একটি আদালত বুধবার তাকে কারাগারের পাঠানোর আদেশ দেয়।
দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ২০২২ সালে ইতালির সর্বোচ্চ আদালত রবিনহোর শাস্তি বহাল রেখে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
ব্রাজিলের আইন অনুযায়ী, বিদেশে অপরাধ সংঘটিত করে কোনো নাগরিক দেশে ফিরলে বিদেশের বিচারিক কর্তৃপক্ষের কাছে অপরাধীকে হস্তান্তর করে না ব্রাজিল সরকার। রায়ের আগেই রবিনহো ইতালি ছাড়ায় ব্রাজিলেই শাস্তি কার্যকরের অনুরোধ জানায় দেশটির আদালত।
ব্রাজিলের বিচার ব্যবস্থার দ্বারা গৃহীত এ পদক্ষেপ স্থানীয় মিডিয়াতে অনেকের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছে। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, রবিনহো তার খ্যাতি এবং সম্পদের কারণে ন্যায়বিচার এড়িয়ে যাবেন।
তবে ম্যানচেস্টার সিটিতে দুই বছর কাটানো এ ফুটবলার বরাবরের মতো এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, নাইট ক্লাবের ঘটনাটি ওই নারীর ‘সম্মতিতে’ হয়েছিল।
আরও পড়ুন:মাত্র ২৫ বছর বয়সেই চলে গেলেন জাতীয় নারী দলের ফুটবলার রাজিয়া। বৃহস্পতিবার পুত্র সন্তান জন্ম দেয়ার পর সাতক্ষীরায় মারা গেছেন এই রাইট উইঙ্গার।
রাজিয়া সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থানার মৌতলা ইউনিয়নের লক্ষ্মীনাথপুর গ্রামের নূর আলী সরদারের মেয়ে।
জাতীয় ও বয়সভিত্তিক বিভিন্ন টুর্নামেন্টে ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত খেলেছেন রাজিয়া। ২০১৭ সালে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত পর্বে খেলেন তিনি। ভুটানে ২০১৮ সালের অনূর্ধ্ব-১৮ সাফে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে অংশ নেন রাজিয়া। এছাড়া ২০১৯ সালে নেপালে অনুষ্ঠিত সাফে জাতীয় দলে সাবিনা খাতুনদের সঙ্গেও খেলেছেন তিনি।
নারী ফুটবল লিগে খেলেছেন নাসরিন স্পোর্টিং ও এএফসি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জার্সিতে।
তার স্বামী ইয়াম রহমান জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রাজিয়ার মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি গাজীপুরে চাকরি করি। ইফতারির সময় বাসায় গিয়ে ফোন দিয়েছিলাম। কিন্তু ফোনটা ওর ছোট ভাই রিসিভ করে বলে ব্যস্ত আছি। কেউ আমাকে জানায়নি যে ওর পেইন (প্রসব ব্যথা) উঠেছে। আসলে ওর প্রচুর রক্তক্ষরণে হয়েছে। অথচ কেউ বিষয়টাতে গুরুত্ব দেয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওরা আমাকে গত রাত ১১টার দিকে জানায়, ছেলে ও মা সুস্থ আছে। কিন্তু পরে ওর প্রচুর রক্ত ঝরেছে। অচেতন হয়ে ছিল অনেক সময়। ভোর বেলা হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা গেছে। আমি সিজার করাতে বলেছিলাম, কিন্তু ওরা শোনেনি।’
ইয়াম নিজেও ফুটবলার ছিলেন। খেলেছেন বসুন্ধরা কিংস অনূর্ধ্ব-১৮, সাইফ স্পোর্টিং যুব দলে। তৃতীয় বিভাগেও খেলেছেন। ভালোবেসে ৩ বছর আগে বিয়ে করেছিলেন রাজিয়াকে।
সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে লিগ পর্বে টানা জয়ের পর শিরোপাও জিতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা।
রোববার কাঠমান্ডুর অদূরে ললিতপুরে আনফা একাডেমিতে ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। ১-১ সমতার পর টাইব্রেকারে ভারতকে ৩-২ গোলে হারান প্রীতিরা।
খেলার পঞ্চম মিনিটেই এগিয়ে যায়ং ভারত। দ্বিতীয়ার্ধে গিয়ে ম্যাচের ৭১ মিনিটে ফেরে সমতা। এরপর টাইব্রেকারে গোলকিপার ইয়ারজান বেগমের দক্ষতায় কাপ জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয় বাংলাদেশের।
এর আগে ৮ মার্চ লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে ভুটানের বিপক্ষে দারুণ জয় পায় বাংলাদেশের মেয়েরা। নেপাল ও ভারতকে হারিয়ে আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করা দল সেদিন ভুটানকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দেয়।
সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে লিগ পর্বে শেষ ম্যাচে ভুটানের বিপক্ষে দারুণ জয় পেয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা।
নেপাল ও ভারতকে হারিয়ে আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করা বাংলাদেশ শুক্রবার নেপালের কাঠমান্ডুর চেসাল স্টেডিয়ামে ভুটানকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দেয়।
টানা তিন ম্যাচ জিতে শীর্ষে থেকে সাইফুল বারী টিটুর দল খেলার ১৩ মিনিটেই এগিয়ে যায়। এরপর একে একে ৬টি গোল। সুরভী আকন্দ পেয়েছেন জোড়া গোল। বাকি ৪টি গোল করেছেন ফাতেমা, ক্রানুচিং, সাথী মানদা ও থুইনুই মারমার।
আগামী রোববার কাঠমান্ডুর অদূরে ললিতপুরে আনফা একাডেমিতে সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ টুর্নামেন্টে ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। লিগ পর্বে তাদের ৩-১ গোলে হারিয়েছিলেন প্রীতিরা।
সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালকে ২-০ গোলে হারিয়ে দারুণ সূচনা করেছে বাংলাদেশের নারীরা।
শুরু থেকেই দাপটের সঙ্গে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। সংঘবদ্ধ এক আক্রমণের প্রদর্শনীতে প্রথমার্ধের ২৪ মিনিটে বাংলাদেশ গোল পায়। সাথী মুন্ডার দারুণ এক মুভে থ্রু বল ঠেলে দেন প্রতিপক্ষের গোল বক্সের ভেতর। নেপালের গোলরক্ষক গোল বাঁচাতে পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি। বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড সুরভী আকন্দ প্রীতি দ্রুতগতিতে বক্সে প্রবেশ করে প্লেসিংয়ে গোল করেন।
৫ মিনিট পর গোলের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন প্রীতি নিজেই। বক্সের বাম দিকে দিয়ে আক্রমণে ছিলেন বাংলাদেশের আরেক খেলোয়ার আলফি। গোলরক্ষক তাকে থামাতে গিয়ে গিয়ে ফেলে দেন মাটিতে। ফলে পেনাল্টি পায় বাংলাদেশ। স্পট কিক থেকে বাংলাদেশকে ২-০ গোলের লিড এনে দেন প্রীতি। এভাবেই শেষ হয় প্রথমার্ধ।
বিরতির পর স্বাগতিক নেপাল ম্যাচে ফেরার চেষ্টা চালালেও বাংলাদেশের রক্ষণভাগ ভেদ করেতে পারেনি। বারবার তাদের আক্রমণ নস্যাৎ করে দিয়েছে বাংলাদেশের রক্ষণভাগ। খেলার ৬২ মিনিটের মাথায় আরিফার করা ক্রসে সুরভী প্রীতির প্লেসিং করা বল ফিরে আসে জালের পাশে লেগে। এরপর নির্ধারিত নব্বই মিনিটের খেলায় গোল পায়নি আর কোনো দল।
এবারের সাফ-১৬ টুর্নামেন্টে চারটি দল অংশ নিয়েছে। এক ম্যাচ শেষে সমান তিন পয়েন্ট করে অর্জন করেছে ভারত ও বাংলাদেশ। ৫ মার্চ বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে।
মন্তব্য