পড়াশোনা শেষ করে ক্যারিয়ার পরিকল্পনা করতে বসলে প্রতিযোগিতার দৌড়ে অনেকখানিই পিছিয়ে পড়তে হবে। এর জন্য ছাত্রজীবন থেকেই একটি গোছালো পরিকল্পনা করে নিতে হবে। আপনি কি এগিয়ে থাকতে চান অন্যদের থেকে? তাহলে এখনই বসে পড়ুন ক্যারিয়ার পরিকল্পনা নিয়ে। পরিকল্পনাই এগিয়ে রাখবে আপনাকে।
অনেকে পড়াশোনা শেষ করে ক্যারিয়ার পরিকল্পনা করতে বসেন। স্বাভাবিকভাবেই তখন প্রতিযোগিতার দৌড়ে পিছিয়ে পড়তে হয়। অথচ ছাত্রাবস্থাতেই কর্মজীবনের পরিকল্পনা করে নিলে পস্তাতে হয় না। তাই এখনই সাজিয়ে নিন নিজের ক্যারিয়ার পরিকল্পনা। পরিকল্পনার ক্ষেত্রে কোনো ভুল করা যাবে না। সঠিক পরিকল্পনা ও সে অনুযায়ী নিজেকে যদি তৈরি করতে পারেন, চাকরির জন্য আপনাকে হন্যে হয়ে ঘুরতে হবে না। চাকরিই আপনাকে খুঁজে নেবে।
পরিকল্পনা শুরু থেকেই
ক্যারিয়ার পরিকল্পনা শুরু হয় অষ্টম শ্রেণি পাশের পর থেকেই। এ সময় বিভাগ ও বিষয় নির্বাচনের উপর ক্যারিয়ারের অনেক কিছু নির্ভর করবে। অনেকেই লক্ষ্য স্থির না করেই মাধ্যমিক পর্যায়ে মানবিক, বাণিজ্য বা বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়। ভালো করে বুঝেশুনেই বিভাগ নির্বাচন করা উচিত। আবার অনেকেই যেকোনো বিষয় পেলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে যায়। পড়া শেষ করার পর বুঝতে পারে, তার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল না। তখন আর কিছুই করার থাকে না। ভালো চাকরি পেতে বেগ পোহাতে হয়। কেউ কেউ অতিরিক্ত যোগ্যতা বা ভাগ্য সহায় হওয়ার কারণে ভালো চাকরি জুটিয়ে নিতে সক্ষম হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সে পেশার জন্য যে ব্যক্তিত্ব, দক্ষতা দরকার তা তার নেই। তাই নিজের আগ্রহ, যোগ্যতা, ব্যক্তিত্ব, রুচি, দক্ষতা, পারিপার্শিক অবস্থা প্রভৃতি বিবেচনায় এনে পরিকল্পনা করতে হবে।
কী এই ক্যারিয়ার পরিকল্পনা
আপনার কোন বিষয়ে আগ্রহ বেশি, কোন পেশার সঙ্গে যুক্ত হলে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারবেন, সে বিষয়টি আপনাকেই স্থির করতে হবে। যে বিষয়টিতে ক্যারিয়ার গড়ার ইচ্ছা, তা ভবিষ্যতে কতটুকু সুবিধাজনক হবে, তাও ভাবতে হবে। এ ছাড়া সমাজে সে পেশার গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু তাও আমলে নিতে হবে। কেউ যদি প্রশাসক হতে চান, তার জন্য হয়তো মানবিক বিভাগ বেছে নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে চাইলে তো আর কলা বা বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হওয়া যাবে না! আবার কেউ যদি বিজনেস এক্সিকিউটিভ হতে চান, বাণিজ্য বিভাগ বেছে নেয়াই তার জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত। আর এই দিকগুলো আগে থেকেই ভাবতে হবে। তারপর লক্ষ স্থির করতে হবে। আমাদের দেশে যদিও নিয়োগ পরীক্ষায় ভালো করলে যেকোনো বিভাগ থেকেই বেশির ভাগ পেশায় যাওয়া যায়।
নিজেকে জানতে হবে সবার আগে
বিশ্বখ্যাত দার্শনিক সক্রেটিস বলেছিলেন, ‘নিজেকে জানো।’ ক্যারিয়ার পরিকল্পনার ক্ষেত্রে নিজেকে জানতে হবে সবার আগে। নিজেকে জানার মাধ্যমেই আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, কোন বিষয়ে নিজের আগ্রহটা বেশি। পাশাপাশি সামর্থ্যের বিষয়টাও মাথায় রাখতে হবে। বুঝতে হবে প্রতিযোগিতায় অন্যদের সঙ্গে আপনি কতটুকু পেরে উঠতে পারবেন। এরপর সিদ্ধান্ত নিন নিজের ক্যারিয়ারটাকে কীভাবে সাজাবেন, কোন দিকে মোড় নেবে আপনার পেশাজীবন। লক্ষ্য নির্ধারণের আগে নিজের সম্পর্কে জানতে হবে। নিজের সম্পর্কে জানা মানে নিজের আগ্রহ, কৌতূহল, আকাঙ্ক্ষা, পছন্দ-অপছন্দ, মানসিকতা এসব বিষয় বুঝতে হবে।
বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত
আমাদের দেশে একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা না থাকায় মাধ্যমিক পর্যায়ে শাখা নির্বাচনের সময়ই শিক্ষার্থীদের একটি পথ বেছে নিতে হয়। মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা, বিজ্ঞান-এই তিনটি শাখার মধ্যে যেকোনো একটিকে নির্বাচন করার আগে নিজের যোগ্যতা সম্পর্কে পুরোপুরি অবহিত হতে হবে। আমাদের দেশে অভিভাবকদের মধ্যে ছেলেমেয়েদের ওপর জোর করে কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়; যা অনেক ক্ষেত্রে মঙ্গলজনক হয় না। যদিও মাধ্যমিক পর্যায়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজেই সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো পরিপক্বতা আসে না, তারপরও তাদের মতকে একেবারেই অগ্রাহ্য করা ঠিক হবে না। সবচেয়ে ভালো হয়, যদি শিক্ষার্থী ও অভিভাবক একসঙ্গে বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়।
সংশোধনের সুযোগ
এসএসসি পাসের পর উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ভর্তি হওয়ার সময় শাখা পরিবর্তনের একটি সুযোগ থাকে। বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করে শিক্ষার্থীরা শাখা পরিবর্তনের মাধ্যমে মানবিক বা ব্যবসায় শিক্ষা শাখায়, মানবিক বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে শিক্ষার্থীরা মানবিক বিভাগে ভর্তি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে মাধ্যমিক পর্যায়ে যে শাখা ছিল, উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে সে শাখায় ভর্তি হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। তবে যদি মনে হয়, শাখা পরিবর্তনের মাধ্যমে আরও ভালো বা সুনিশ্চিত ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব, সে ক্ষেত্রে শাখা পরিবর্তন করা যেতে পারে। আর যদি মনে হয়, শাখা নির্বাচন ভুল ছিল বা যে শাখায় আপনি পড়াশোনা করেছেন তা সহজে আত্মস্থ করতে পারছেন না, তবে শাখা পরিবর্তনের মাধ্যমে তা সংশোধন করে নেয়াই ভালো।
চূড়ান্ত ধাপ
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সময় বিষয় নির্বাচনে কোনোক্রমেই ভুল করা যাবে না। এ সময় সিদ্ধান্ত নিতে হবে অনেক ভেবেচিন্তে। আর সিদ্ধান্তের আগে অভিজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে নেয়া ভালো। ব্যক্তিগত ধ্যান-ধারণা ও আকাঙ্ক্ষার চেয়ে যে বিষয়টি বেশি গুরুত্ব দিতে হবে তা হলো, বাস্তব ক্ষেত্রে বিষয়টির গুরুত্ব কতটুকু। বিষয়টি কতটুকু সময়োপযোগী ও সম্ভাবনাময় সে বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। নিজের আগ্রহ ও পছন্দের বিষয়টি তো প্রাধান্য পাবেই। আত্মীয়স্বজন ও পরিচিতজনদের পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকেও শিক্ষা নিতে হবে। সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে এ বিষয়ে সবার সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করাই ভালো।
স্বপ্ন সত্যি করার পালা
ছোটকাল থেকেই অনেকের মনে রঙিন স্বপ্ন গেঁথে যায়-কেউ ডাক্তার হবে, কেউ পাইলট হবে, কেউ প্রকৌশলী, আবার কেউ হতে চায় শিক্ষক। পরিকল্পনা অনুযায়ী সঠিক পথে এগিয়ে যেতে পারলে স্বপ্নকে বাস্তবের রেখায় দাঁড় করানো কঠিন কোনো বিষয় নয়। সবকিছু ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত যখন নিয়েই ফেলেছেন, এর সঙ্গে আরও একটি বিষয় যোগ করুন, তা হলো আত্মবিশ্বাস। বিশ্বাস রাখবেন, ছাত্রজীবনে যদি ভালো ফলাফল থাকে বা আপনি নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করতে পারেন, তবে উপযোগী বা চাহিদা অনুযায়ী চাকরি নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে। আর যে পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে চান, সে ক্ষেত্রে কর্মরতদের সঙ্গে মিশতে পারেন। এতে পেশাটি সম্পর্কেও পূর্ব ধারণা পাওয়া যাবে। আর একটি বিষয়, শুধু পরিকল্পনা করলেই কি হলো? সে অনুযায়ী নিজেকে কিন্তু তৈরিও করে নিতে হবে।
সময় ব্যবস্থাপনা
জীবনে প্রতিষ্ঠা পেতে হলে সবার আগে সময়কে গুরুত্ব দিতে হবে। যে যত বেশি সময়ের সদ্ব্যবহার করতে পারবে, সফল হওয়ার সম্ভাবনাও তার তত বেশি। ‘আগামীকাল করব’ বলে কোনো কাজ ফেলে না রেখে প্রত্যেক দিনের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। প্রয়োজনে প্রতিদিনের কাজের রুটিন করে নিন। এতে আপনি সহজেই সময়কে কাজে লাগাতে পারবেন। আর একটি বিষয়, অনেকেই একটি কাজে অনেক সময় নিয়ে ফেলেন। যা সঠিক ক্যারিয়ার পরিকল্পনার অন্তরায়। সময় ব্যবস্থাপনা যদি সঠিকভাবে করতে পারেন, আপনি সাফল্যের পথে অনেক দূর এগিয়ে গেলেন।
যোগাযোগ দক্ষতা
সাফল্যের পেছনে যোগাযোগ দক্ষতা অনেক বেশি কাজ করতে পারে। দেখা গেল, একটি ভালো চাকরির বিজ্ঞাপন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। আপনি সেই চাকরির জন্য যোগ্য, অথচ বিজ্ঞাপনটি আপনার চোখেই পড়েনি। অথচ বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলে কিন্তু আপনি সহজেই বিষয়টি জানতে পারতেন। তাদের আলোচনাতেই হয়তো উঠে আসত বিষয়টি। এভাবে যোগাযোগ দক্ষতার অভাবেও কিন্তু আপনি চাকরির সুযোগ হারাতে পারেন। এ জন্য আপনি সমাজের নানা পেশাজীবী ও বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে মিশতে পারেন। নিয়মিত পত্র-পত্রিকা পড়া, টেলিভিশনে খবর শোনা, জব সাইট ভিজিট, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্যারিয়ার বিষয়ক বিভিন্ন গ্রুপ ও পেজে চোখ রাখা ক্যারিয়ার পরিকল্পনার অংশ হতে পারে।
আপনি প্রস্তুত তো?
শুধু লক্ষ স্থির করে বসে থাকলে হবে না, নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য প্রচুর পড়াশোনা করতে হবে। দলগতভাবে পড়াশোনা বেশ কাজে দেবে। চাকরি ক্ষেত্রে ভালো করার জন্য ইংরেজিতে ভালো দখল থাকতে হবে। মায়ের ভাষা বাংলাও অতটা সহজ নয়। সেটিও ঝালিয়ে নিতে হবে। আর আজকাল প্রায় সব চাকরির পরীক্ষায়ই সাধারণ জ্ঞান থাকে। এ বিষয়েও জানতে হবে। এ ছাড়া গণিতে অনেকেরই ভীতি আছে, সেটিও দূর করতে হবে। দৈনন্দিন বিজ্ঞানও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর মৌলিক সব বিষয়েই মোটামুটি দখল থাকতে হবে। এ ছাড়া অনার্সের বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পাঠগুলো বেশ ভালো করেই আত্মস্থ করতে হবে। আজকাল চাকরিতে শর্তই জুড়ে দেওয়া হয়, কম্পিউটার জানতে হবে। এ ছাড়া আপনার কাঙ্ক্ষিত চাকরিতে কী ধরনের যোগ্যতা চাওয়া হয় বা কী ধরনের প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়-এসব বিষয় জেনে সে অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে।
চাকরিই আপনাকে খুঁজবে
বর্তমান সময়ে শোনা যায়, ‘চাকরি, সে তো সোনার হরিণ! তার দেখা মেলাই ভার।’ এ কথা মোটেও বিশ্বাস করবেন না। অযোগ্য লোকেরাই এসব কথা বলে। আবার অনেকের কথা থেকে মনে হয়, চাকরি পাওয়ার চেয়ে দুঃসাধ্য কিছু বুঝি আর নেই। এ কথা পুরোপুরি ঠিক নয়। আগে চাকরির বাজারের জন্য নিজেকে তৈরি করুন, তারপর আর আপনাকে বেকার বসে থাকতে হবে না।
লেখক: ক্যারিয়ার বিশেষজ্ঞ
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে আগামী রোববার ও সোমবার এক ঘণ্টার কর্মবিরতির পরিবর্তে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা। নতুন কর্মসূচি অনুযায়ী ১ জুন রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, ফাওজুল কবির খান ও সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের কাছে স্মারকলিপি দেবেন তারা। পরের দিন সোমবার স্মারকলিপি দেবেন দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের কাছে। এছাড়া মাঠপর্যায়ে সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের মাধ্যমেও স্মারকলিপি দেওয়া হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার কর্মবিরতি শেষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থিত সচিবালয় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সাংবাদিকদের কাছে নতুন কর্মসূচি তুলে ধরেন ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান বাদীউল কবীর, মুহা. নূরুল ইসলাম ও কো-মহাসচিব নজরুল ইসলাম।
কর্মসূচি ঘোষণার আগে সকাল ১০টা থেকে এক ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেন সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। কর্মবিরতি শেষে ঐক্য ফোরামের নেতারা বলেন, আগামী রোববার ও সোমবার এক ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করা হবে না। এর পরিবর্তে রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, ফাওজুল কবির খান ও সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। আর সোমবার স্মারকলিপি দেওয়া হবে দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের কাছে। মাঠপর্যায়ে সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের মাধ্যমেও স্মারকলিপি দেওয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এখন জাপান সফরে আছেন। প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফেরার পর ‘ভালো সংবাদ’ পাওয়া যেতে পারে বলে আশা করছেন ঐক্য ফোরামের নেতারা। তাদের প্রত্যাশা, ‘ভালো সংবাদ’ নিয়েই তাঁরা ঈদুল আজহা পালন করতে পারবেন।
জাপান সফর শেষে প্রধান উপদেষ্টা শনিবার দেশে ফিরলে কর্মচারীদের দাবির কথা তার কাছে তুলে ধরবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এদিকে ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা দ্বিতীয় দিনের মতো সারাদেশে কলমবিরতি পালন করেছেন।
চলতি বছরে মে ও জুন মাসে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের রাজস্বখাতের বিভিন্ন গ্রেডের ১১টি পদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
গত ২৫ মে ২০২৫ তারিখ বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সম্মেলন কক্ষে সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ এর সভাপতিত্বে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের জনবল নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে করণীয় সম্পর্কে পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সচিব মহোদয় স্বচ্ছ, দুর্নীতিমুক্ত এবং অংশগ্রহণমূলক নিয়োগে যাবতীয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণকে পরীক্ষার হলভিত্তিক আসনব্যবস্থা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
আগামী ৩০/০৫/২০২৫ তারিখ শুক্রবার সকাল ১০:০০টা হতে ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকায় বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদের লিখিত পরীক্ষা এবং ৩১/০৫/২০২৫ তারিখ শনিবার বিকাল ০৩:০০টা হতে একই কেন্দ্রে কম্পিউটার অপারেটর, সাঁটলিপিকার-কাম-কম্পিউটার অপারেটর, সাঁটমুদ্রাক্ষরিক-কাম-কম্পিউটার অপারেটর, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া, আগামী ২১/০৬/২০২৫ তারিখ শনিবার সকাল ১০:০০টা হতে ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকায় বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কানুনগো, ক্যাশিয়ার, একাউন্ট এসিস্ট্যান্ট, সার্ভেয়ার, চেইনম্যান ও অফিস সহায়ক পদে জনবল নিয়োগের নিমিত্ত লিখিত পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে।
লিখিত পরীক্ষা গ্রহণের সময়সূচি ও কেন্দ্রের তালিকা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট www.bba.gov.bd-এ প্রকাশ করা হয়েছে এবং সকল প্রার্থীদের আবেদনে উল্লিখিত মোবাইল নম্বরে SMS-এর মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য আরও জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত তারিখ ও সময়-এ প্রার্থীদের প্রবেশপত্রে উল্লিখিত শর্তসমূহ মেনে পরীক্ষা কেন্দ্রে নির্ধারিত সময়ের ০১ (এক) ঘণ্টা পূর্বে আবশ্যিকভাবে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নিজাম উদ্দিনকে সচিব হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী ও ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা-ট্রাস্টি মনসুর আহমেদ চৌধুরী ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বিদায়ী চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
আর টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের নতুন দুই সদস্য হয়েছেন সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাকালীন নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার মনজুর হাসান এবং নারীর ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা ও সুশাসন বিশেষজ্ঞ তাহেরা ইয়াসমিন।
তাছাড়া টিআইবির অডিট কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন সংস্থাটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ফারুক আহমেদ। অডিট কমিটির অপর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত কম্পট্রোলার জেনারেল, ডিফেন্স ফাইন্যান্স মোতাহার হোসেইন।
টিআইবি’র নতুন চেয়ারপারসন মনসুর আহমেদ চৌধুরী বহুল আলোচিত ভাসমান হাসপাতাল ‘জীবন তরী’-এর উদ্যোক্তা। মানবাধিকার বিশেষ করে প্রতিবন্ধীদের অধিকারের নিশ্চয়তাসহ তাদের জীবন-মানের সার্বিক উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে তিনি কাজ করছেন।
‘জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরাম’ গঠনে মনসুর আহমেদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবন্ধীবিষয়ক কমিটির সদস্য হিসেবে (২০০৯-১২ মেয়াদে) দায়িত্ব পালন করেছেন।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি নিরাফাত আনাম মেমোরিয়াল ইনক্লুশন পদক, সিলেট রত্ন পদক, আজীবন সম্মাননা (সিঙ্গার বাংলাদেশ ও চ্যানেল আই) এবং সিনিয়র অশোকা ফেলোশিপ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।
টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের নতুন সদস্য ব্যারিস্টার মনজুর হাসান বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। টিআইবির প্রতিষ্ঠাকালীন নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন ছাড়াও তিনি ব্র্যাকের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০০৩ সালে ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছ থেকে ‘অফিসার অফ দ্য মোস্ট এক্সেলেন্ট অর্ডার অফ দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (ওবিই)’ উপাধিতে ভূষিত হন।
বোর্ডের আরেক নতুন সদস্য তাহেরা ইয়াসমিন নারীর ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা এবং সুশাসন বিশেষজ্ঞ। তিনি অক্সফাম, কেয়ার এবং জিআইজেড-এর মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে শীর্ষস্থানীয় পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জিআইজেড-এর রুল অব ল’র অপারেশন পরিচালক এবং অ্যাকসেস টু জাস্টিস ফর উইম্যান প্রোগ্রামের সিনিয়র অ্যাডভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বেসরকারি সংস্থা ও উন্নয়ন খাতে স্ট্রাটেজিক প্ল্যানিং ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি সুখ্যাতি অর্জন করেছেন।
প্রসঙ্গত, ট্রাস্টি বোর্ড টিআইবির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম। বোর্ডের অন্যরা হলেন- অধ্যাপক ড. তাসনিম আরেফা সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক; দ্য ডেইলি স্টার প্রকাশক ও সম্পাদক মাহফুজ আনাম, কোষাধ্যক্ষ।
সদস্যবৃন্দ হলেন- সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ আবুল মোমেন, অধ্যাপক ড. ফখরুল আলম, অ্যাডভোকেট সুস্মিতা চাকমা, সোসাইটি অফ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট (শেড)-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ফিলিপ গাইন, মানবাধিকার ও সমাজকর্মী বনশ্রী পাল এবং ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল-এর প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক ফারুক আহমেদ।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জনবিভাগের সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব করা হয়েছে।
রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
ড. নাসিমুল গনি বিসিএস ১৯৮২ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। ২০০৯ সালে তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়। চার বছর ওএসডি থাকার পর ২০১৩ সালে তাকে চাকরি থেকে অবসর দেয়া হয়।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাকে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জনবিভাগে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়।
৪২তম (বিশেষ) বিসিএস স্বাস্থ্য নিয়োগ পরীক্ষায় লিখিত ও মৌখিক উভয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগবঞ্চিত এক হাজার ৯১৯ জন চিকিৎসক তাদেরকে দ্রুত নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন।
রোববার ৪২তম (বিশেষ) বিসিএস স্বাস্থ্যে অপেক্ষমাণ চিকিৎসকরা সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি জানান।
‘৪২তম (বিশেষ) বিসিএস স্বাস্থ্য (লিখিত ও মৌখিক) উভয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও ক্যাডার পদে নিয়োগবঞ্চিত ১৯১৯ জন চিকিৎসককে ন্যায্য নিয়োগ’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে।
সংবাদ সম্মেলনে নিয়োগবঞ্চিত চিকিৎসকরা বলেন, ২০২১ সালে ৪২তম বিসিএসের ফলাফলে পর্যাপ্ত পদ না থাকায় এক হাজার ৯১৯ জন চিকিৎসক দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগবঞ্চিত হয়ে আছেন। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও তারা বৈষম্যের শিকার। স্বাস্থ্য অধিদফতর নীতিগতভাবে দ্রুত দু’হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা চাই এক্ষেত্রে ৪২তম বিসিএসের অপেক্ষমাণ চিকিৎসকদের অগ্রাধিকার দেয়া হোক।
তারা বলেন, দেশে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে চরম চিকিৎসক সংকট রয়েছে। সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী তাদের মৌলিক অধিকার হিসেবে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় রোগীরা যথাযথ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না।
সাধারণ বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ উল্লেখ করে চিকিৎসকরা বলেন, বর্তমানে ৪৪, ৪৫ ও ৪৬তম বিসিএস প্রক্রিয়াধীন। ৪২তম বিসিএসের পরে আর কোনো চিকিৎসক নিয়োগ হয়নি। তাই দীর্ঘ প্রক্রিয়া এড়িয়ে দ্রুত নিয়োগ দিয়ে চিকিৎসক সংকট নিরসনের দাবি জানাচ্ছি আমরা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও এবি পার্টির আহ্বায়ক মেজর (অব.) অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওহাব মিনার, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ডা. ফারজানা সাথী, ডা. মো. রেজওয়ান কবীরসহ ৪২তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ চিকিৎসকরা।
সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) ৪৭তম বিসিএসের আবেদনের নতুন তারিখ চূড়ান্ত করেছে। গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- আগামী ২৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে আবেদন করতে পারবেন প্রার্থীরা। তা চলবে আগামী ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। এবার প্রার্থীদের আবেদন ফি দুশ’ টাকা।
পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমান বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এর আগে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষাসহ সব ধরনের সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষার আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বিসিএসে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ২০০ থেকে কমিয়ে ১০০ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, ৪৭তম বিসিএসের আবেদন শুরুর একদিন আগে ৯ ডিসেম্বর (সোমবার) অনলাইনে আবেদন অনিবার্য কারণে স্থগিত করে পিএসসি।
মন্তব্য