চলতি বছরের শুরু থেকেই অস্থির দেশের ফুটবলাঙ্গন। নারী দলের ইংলিশ কোচ পিটার বাটলারকে বয়কট করেন ১৮ নারী ফুটবলার। তার অধীনে কোনো অনুশীল না করে অবসরের হুমকিও দেন তারা। সংবাদ সম্মেলন ডেকে বাটলার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরেন সাবিনা-মনিকারা। পরে বাফুফে সভাপতিকে চিঠি দেন তারা। বাফুফে থেকে চেষ্টা করেও আসেনি দৃশ্যত কোনো সমাধান।
সেসময় কোচ পিটার বাটলার বৈঠকের জন্য ডাকলেও তাতে সাড়া দেননি বিদ্রোহী ফুটবলাররা। অবশেষে প্রায় আড়াই মাস পর গতকাল আলোচনার টেবিলে বসেছিলেন পিটার বাটলার ও সেই বিদ্রোহী ফুটবলাররা। যদিও ব্রিদাহীদের নেতৃত্ব দেওয়া সাবিনা খাতুনসহ ছিলেন না চার সিনিয়র ফুটবলার।
নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের জন্য রবিবার থেকে ক্যাম্প শুরু করেছে বাফুফে। ছুটি শেষে সেদিনই ইংল্যান্ড থেকে ঢাকা এসে পৌঁছেছেন কোচ বাটলার৷ গতকাল সকালে জিম সেশন থাকলেও বাটলারকে বয়কট করা ফুটবলাররা যোগ দেননি সেখানে। আলোচনার টেবিলে বসতে চেয়েছিলেন দুই পক্ষই।
এরপর প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে সংকটের নানা বিষয়ে আলোচনা করেছে দুই পক্ষ। আলোচনায় অংশ নেওয়া একাধিক ফুটবলার জানিয়েছেন, বাটলার বেশ কয়েকবার কয়েকজন খেলোয়াড়কে অভিযুক্ত করেছেন। আবার কখনো আন্দোলনের সমালোচনাও করেছেন। এসব বিষয়ে ফুটবলারদের উত্থাপিত প্রশ্ন খণ্ডন করে নিজের যুক্তিও দিয়েছেন বাটলার। ফুটবলারদের বিগত বিষয়াবলী ভুলে যাওয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি তিনি নিজেও এ বিষয়টি ভুলে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা নারী ফুটবলাররা এখন অনেকটাই নমনীয়। তবে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেননি এই ইংলিশ কোচের অধীনে ফেরার ব্যাপারে। যদিও কয়েকজন অনানুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন, তারা বাটলারের অধীনে অনুশীলনে ফিরতে রাজি হয়েছেন।
নমনীয় হয়েছেন কোচ পিটার বাটলারও। বিদ্রোহ চলাকালীন বিভিন্ন সময় মিডিয়ায় কয়েকজন ফুটবলারের নাম উচ্চারণ তিনি বলেছিলেন, তারা ফিরলে তিনি আর অনুশীলন করাবেন না তিনি। তবে জানা গেছে, মত পরিবর্তন করেছেন তিনি। তারা ফিরতে চাইলে অনুশীলন করাবেন বাটলার।
গতকাল আর কোনো জিম সেশন ছিল না। আজকের জিম বা মাঠের অনুশীলনে সবাই থাকেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়। নাকি বাংলার চিরকালীন প্রবাদ ‘ভাঙা গ্লাস কখনো জোড়া লাগে না’, এই প্রবাদের মতোই খেলোয়াড়-কোচ দুই পক্ষের দূরত্ব থেকে যায় থেকে যায় সেটার প্রকৃত উত্তর সময়ের হাতেই।
উল্লেখ্য, সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর জানুয়ারি মাসে শুরু হওয়া ক্যাম্পের প্রথম দিন টিম মিটিংয়ে যাননি ১৮ নারী ফুটবলার। এরপর কোচের প্রতি অভিযোগ এনে বাফুফে সভাপতিকে চিঠির পাশাপাশি মিডিয়ার সামনে বক্তব্য রাখেন ফুটবলাররা। দুই মাসের বেশি সময় অচলাবস্থার পর গতকালই প্রথম দুই পক্ষ সামনাসামনি হয়েছে।