বিপিএল মানেই যেন চারদিকে সমালোচনার ছড়াছড়ি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, খবরের প্রতিবেদন কিংবা টেলিভিশন চ্যানেলের টকশো- সবখানেই যেন লোকে ব্যস্ত থাকে কাদা ছোড়াছুড়িতে। অন্ততপক্ষে বিপিএলের নবম আসর পর্যন্ত চলেছে এমনটাই। তবে এই টুর্নামেন্টের দশম আসরে এসে যেন কিছুটা হলেও বদলেছে চিত্রপট। আগের আসরগুলোর তুলনায় এ আসরে চোখে পড়েছে বেশকিছু পরিবর্তন।
খেলার স্কোরকার্ড থেকে শুরু করে ধরন সবকিছুতেই ছিল আধুনিকতার ছোঁয়া। ডিআরএস সিস্টেম, স্পাইডার ক্যাম ও রোবটিক ক্যামেরার ব্যবহারেরও দেখা মিলেছে এই পর্বে। যদিও মিরপুরের উইকেটের রহস্যময় আচরণ নিয়ে কিছুটা হলেও সমালোচনা হয়েছে ক্রিকেটভক্তদের মাঝে। কিন্তু দিনের ম্যাচগুলোতে রান না এলেও রাতের ম্যাচগুলোতে ঠিকই দেখা গেছে রানের ফোয়ারা। যদিও এখন পর্যন্ত এই উইকেট নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই ক্রিকেটারদের।
বর্তমানে চলছে দুই দিনের বিরতি। কারণ মিরপুর পর্ব শেষে আপাতত ১২ দিনের জন্য বিপিএল নিজের আস্তানা গেড়েছে। তবে এই টুর্নামেন্টের প্রথম পর্বে আরেকটি বিষয় ছিল চোখে পড়ার মতো, তা হলো দেশীয় ক্রিকেটারদের দাপট।
এখন পর্যন্ত বিপিএলের এবারের আসরের সবচেয়ে সফল ব্যাটার হলেন ফরচুন বরিশালের উইকেটকিপার ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। ৩ ম্যাচে তার রানসংখ্যা ১৫৬। এ ছাড়াও এই তালিকার দুই নম্বরে আছেন কুমিল্লার বাঁহাতি ব্যাটার ইমরুল কায়েস। যদিও তালিকার তিন নম্বরে আছেন আফগান ব্যাটার নজিবউল্লাহ জাদরান।
এমনকি বল হাতেও এগিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাই। ঢাকা পর্ব শেষে ৫ উইকেট নিয়ে শীর্ষে আছেন টাইগার দলের তিনজন নিয়মিত পেসার মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও খালেদ আহমেদ। যদিও বোলিং গড়ের কথা বিবেচনায় এই তালিকার এক নম্বরে আছেন মুস্তাফিজুর রহমানই।
এ ছাড়া ঢাকা পর্বে হওয়া বিপিএলের ৮ ম্যাচের মধ্যে এখন পর্যন্ত দেশীয় ক্রিকেটাররা সেরা হয়েছেন ৫ ম্যাচেই। এমনকি যে তিন ম্যাচে সেরা হয়েছেন বিদেশি ক্রিকেটাররা, সেখানেও ছিল টাইগার ক্রিকেটারদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
পাশাপাশি এ পর্বে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেছেন সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কঠিন সময় পার করা বেশ কিছু ক্রিকেটার। উদাহরণস্বরূপ বলতে গেলে সবার আগে উঠে আসবে দুই বাংলাদেশি ওপেনার নাঈম শেখ এবং তানজিদ তামিমের নাম। তারা দুজনই অফ ফর্মের বৃত্ত থেকে বের হয়ে নিজেদের দলকে জিতিয়েছেন। এ ছাড়াও এবারের বিপিএলের শুরু থেকেই বেশিরভাগ ক্রিকেটভক্তের নজর ছিল এই টুর্নামেন্টে ফরচুন বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবাল কেমন পারফর্ম করেন। তবে তিনি সফল ছিলেন। ৩ ম্যাচে ৩৯ গড়ে সবমিলিয়ে করেছেন ১০৭ রান।
বাংলাদেশের সামনে রয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর। তাই তো এই টুর্নামেন্টে দেশি ক্রিকেটারদের ফর্মে ফেরা কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে বাংলাদেশ শিবিরে।