বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের যুদ্ধে নামছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া

  •    
  • ১৯ নভেম্বর, ২০২৩ ১১:১৮

বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে কোনো প্রকারের প্রস্তুতির কমতি রাখেনি ভারত। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান না হলেও শেষটা বর্ণিলভাবে রাঙানোর জন্য, স্মরণীয় করে রাখার জন্য জমকালো আয়োজনের ব্যবস্থা করেছে স্বাগতিকরা।

অপেক্ষার পালা শেষে বহু প্রতীক্ষিত ও আকাঙ্ক্ষিত বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই ম্যাচের জন্য গুজরাটের আহমেদাবাদের একশ ৩২ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম প্রস্তুত।

বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে কোনো প্রকারের প্রস্তুতির কমতি রাখেনি ভারত। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান না হলেও শেষটা বর্ণিলভাবে রাঙানোর জন্য, স্মরণীয় করে রাখার জন্য জমকালো আয়োজনের ব্যবস্থা করেছে স্বাগতিকরা।

বিশ্বকাপ শিরোপা জয় করে আবার বিশ্ব ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের খেতাব অর্জন করার জন্য মুখিয়ে আছে দুই ফাইনালিস্ট স্বাগতিক ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। দুদলের ফাইনাল ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় বেলা আড়াইটায় শুরু হবে। এই ম্যাচের চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার।

পাঁচবারের সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। এ নিয়ে অষ্টম বারের মতো ফাইনাল খেলছে দলটি। অন্যদিকে দুবারের সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত। এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো ফাইনাল খেলছে তারা। এর মধ্যে ২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে হৃদয় ভেঙে ছিল ভারতের। সেবার ভারত দলের অধিনায়ক ছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি। দলে ছিলেন রাহুল দ্রাবিড়ও। ঠিক দুই দশক পর আবার বিশ্বকাপের ফাইনালে দেখা দুদলের।

সম্প্রতি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে দেশের ক্রিকেটকে একটা ধারায় দিয়ে যান গাঙ্গুলি। আর দ্রাবিড় তো বর্তমান দলের প্রধান কোচই। সাবেক অধিনায়ক গাঙ্গুলি-দ্রাবিড়রা যা করে দেখাতে পারেননি, আজ আহমেদাবাদে বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে তা দেখানোর সুযোগ রোহিত শর্মাদের সামনে। এরই মধ্যে ‘বদল’, ‘প্রতিশোধ’ নানা ধরনের শব্দ উচ্চারিত হচ্ছে।

ভারতীয়দের মতে, গত ২০ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপে ফাইনালে হারের শোধটা নেয়ার সময় এসেছে। ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের নিশ্বাস দূরত্বে আছে ভারত। যেভাবে টুর্নামেন্টের শুরু থেকে দুর্দান্ত খেলে আসছে টিম ইন্ডিয়া, সেভাবে খেললে ফাইনালের মঞ্চে তাদের হাতেই উঠবে শিরোপা।

আবার অনেকের বিপরীত মত যে, ফাইনালে কিন্তু বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে সফল দল অস্ট্রেলিয়া। কীভাবে বড় ম্যাচে ভালো খেলে জয় ছিনিয়ে আনতে হয়, তা তাদের চেয়ে কারও বেশি জানা নেই। ফলে আজ পরাশক্তি এই দুই দলের মধ্যে ক্রিকেট মহাযুদ্ধের রুদ্ধশ্বাস শ্বাসরুদ্ধকর রোমাঞ্চকর ইতিহাসের সেরা একটি ফাইনাল দেখা যেতে পারে। ষষ্ঠবারের মতো অস্ট্রেলিয়া নাকি তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তুলবে ভারত- সেটিই এখন দেখার বিষয়।

টুর্নামেন্টজুড়েই ভালো ক্রিকেট খেলেছে দুটি দলই। লিগ পর্ব ও সেমিফাইনালে কোনো ম্যাচে হারেনি ভারত। টানা ১০ ম্যাচে অপরাজেয় দলটি। তবে জোড়া হারে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। অবশ্য প্রথম দুই ম্যাচের পর টানা ৮টি ম্যাচে অপ্রতিরোধ্য তারা। শক্তির বিচারে দুদলই সমানে সমান। কিন্তু ফর্মের বিচারে অজিদের চেয়ে এগিয়ে রোহিতরা। প্রতি ম্যাচেই দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলেছে তারা। তাদের ব্যাটিং লাইনআপ খুবই শক্ত। বিশেষ করে পাওয়ার প্লেতে ভারতীয় ওপেনাররা যে আগ্রাসী ব্যাটিং করে যাচ্ছেন, তা অসাধারণ।

ব্যাটিংয়ের মধ্যমণি বিরাট কোহলি টুর্নামেন্টে সাত শতাধিক রান সংগ্রহ করে বুঝিয়ে দিলেন যে, কতটা ভালো ফর্মে আছেন তিনি। শ্রেয়াস আইয়ার, রাহুল মিলে তাদের মিডল অর্ডারও দারুণ খেলছে। যে ছয় ব্যাটার নিয়ে খেলছে ভারত, তাদের প্রত্যেকে ফর্মের তুঙ্গে আছেন। হার্দিক পান্ডিয়া বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ায় ভারতের একাদশ গঠন করতে গিয়ে কিছুটা অসুবিধা হলেও সফলতার মুখ দেখছে দল। পান্ডিয়ার জায়গায় একাদশে সুযোগ পেয়ে ভারত দলে সবচেয়ে বেশি আলো পড়ছে এখন মোহাম্মদ শামির ওপর। এই ডানহাতি পেসার আগুনে ফর্মে আছেন।

সর্বশেষ সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭ উইকেট শিকার করে ভারতের জয় সুনিশ্চিত করেন। মাত্র ৬টি ম্যাচ খেলে তার নামের পাশে যোগ হয়েছে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ২৩টি উইকেট। শামির মতো ভারতীয় পেস ইউনিট টুর্নামেন্টজুড়ে ধারালো বোলিং উপহার দিয়েছে। জাসপ্রিত বুমরাহর বল খেলতেই পারছেন না প্রতিপক্ষের ব্যাটাররা। মোহাম্মদ সিরাজ কিছুটা খরচে হলেও সফল তিনিও। ফলে পেস ইউনিট ছন্দ ধরে রাখলে ফাইনালেও এগিয়ে যাবে ভারত। স্পিনেও দলটি সমৃদ্ধ।

কুলদীপ ও জাদেজার ঘূর্ণিতে দিশাহারা হতে পারে অস্ট্রেলিয়ানরা। স্পিন খেলার যে ঐতিহ্যগত সমস্যা তাদের, সেই দুর্বলতার সুযোগ নিতে পরিকল্পনা করবে স্বাগতিকরা। এজন্য স্পিনে শক্তি বাড়াতে অশ্বিনকে একাদশে রাখা হতে পারে। তবে কাকে একাদশের বাইরে রেখে অশ্বিনকে সুযোগ দেয়া হবে- সেটি চিন্তার বিষয় রয়েছে তাদের। উইনিং একাদশ নাও ভাঙতে পারে ভারত। সেমিফাইনালে ফিল্ডিংয়ে রোহিতদের কিছু দুর্বলতা ফুটে উঠেছে। সেগুলো শোধরে মাঠে নামবে তারা। ফাইনালে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অলআউট ক্রিকেট খেলে আরেকটি বিজয় ছিনিয়ে বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তুলতে চাইবে মেন ইন ব্লু।

অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ারও শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ রয়েছে। ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ভালো খেলছেন। মিচেল মার্শও বড় ইনিংস খেলে ভালো ছন্দে রয়েছেন। স্টিভেন স্মিথ হয়তো তার সেরা খেলাটা ফাইনালের জন্য জমিয়ে রেখেছেন। লাবুশেন ও ট্রাভিস হেড উইকেটে থিতু হয়ে গেলে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যেতে পারেন। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল তো এই বিশ্বকাপের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের সেরা বিজ্ঞাপন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে অপরাজিত ২০১ রানের ইনিংস খেলে যেভাবে দলের জয় নিশ্চিত করেছেন, ফাইনালের মঞ্চেও নিজেকে সবচেয়ে বেশি নিবেদন করবেন এই অলরাউন্ডার। তাদের লেজের দিকে ব্যাটাররাও ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংয়ে দারুণ বৈচিত্র্যময় অস্ট্রেলিয়া।

সেমিফাইনালে মিচেল স্টার্ক, হ্যাজলউডরা দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখান। অস্ট্রেলিয়ার বোলিংয়ের সেরা অস্ত্র লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা। টুর্নামেন্টে স্পিনে সবচেয়ে সফল বোলার তিনি। তার সামনে বেশ ভালো পরীক্ষা দিতে হতে পারে ভারতীয়দের। স্পিনে পার্ট টাইমার হিসেবে ম্যাক্সওয়েলও দক্ষ। সেমিফাইনালে অফস্পিনে ২ উইকেট পেয়েছেন ট্রাভিস হেড। বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিংয়েও এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। সব মিলিয়ে ভারতের মাটিতে আরেকটি বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়েই আজ মাঠে নামবে প্যাট কামিন্সরা।

অতীত রেকর্ডও অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে। এ পর্যন্ত মোট ১৩টি ম্যাচে দুদল পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৮টি ম্যাচে জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ৫টি ম্যাচে জিতেছে ভারত। তবে গত বিশ্বকাপে ৩৬ রানে ও চলতি বিশ্বকাপের লিগ পর্বের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ানদের ৬ উইকেটে হারিয়েছে তারা। এই দুটি জয় ভারতীয়দের উজ্জীবিত রাখছে।

এ বিভাগের আরো খবর