বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সুপ্রিমেসি ধরে রেখেছে ভারত

  •    
  • ১৬ নভেম্বর, ২০২৩ ২৩:৪৯

টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই ভারত দলটি অপ্রতিরোধ্য। দাপুটে ক্রিকেট খেলে শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়ে ফাইনালের মঞ্চে এসে পৌঁছেছে তারা। বলা যায়, শিরোপা জয়ের জন্য এখন শুধু ফিনিশিং টাচটাই দেয়ার বাকি তাদের। টানা জয়ের মালায় আরেকটি জয়ের ফুল সংযোজন করতে পারলেই তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের মধুর স্বাদ পাবেন রোহিত শর্মারা।

এক যুগ পর আবার বিশ্বকাপ জয়ের সীমানায় দাঁড়িয়ে ভারত। লিগ পর্ব ও সেমিফাইনাল মিলিয়ে মোট দশ ম্যাচ খেলে দশটিতেই জয় পেয়েছে দলটি। অপরাজিত দল হিসেবেই ফাইনালে উঠেছে তারা।

টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই দলটি অপ্রতিরোধ্য। যে ব্র্যান্ডের দাপুটে ক্রিকেট খেলে শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়ে ফাইনালের মঞ্চে এসে পৌঁছেছে তারা। এতে বলা যায়, শিরোপা জয়ের জন্য এখন শুধু ফিনিশিং টাচটাই দেয়ার বাকি ভারতের। টানা জয়ের মালায় আরেকটি জয়ের ফুল সংযোজন করতে পারলেই তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের মধুর স্বাদ পাবেন রোহিত শর্মারা।

আমি এই ভারত দলটির চ্যাম্পিয়ন না হওয়ার কোনো কারণ দেখছি না। সবদিক থেকেই সমৃদ্ধ দলটি। এ পর্যন্ত কোনো দিক থেকেই ভারতকে পেছনে ফেলার মতো শক্তি টুর্নামেন্টে উদয় হয়নি। যে কারণে সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায় তারা।

পরীক্ষার খাতায় প্রতি ম্যাচেই একশতে একশ মার্ক পেয়ে ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়েছে ভারত। যে ধরনের ক্রিকেট খেলেছে, ব্যাটিং-বোলিংয়ে সেরা পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছে স্বাগতিকরা। আমার মনে হয়, ফাইনালে তাদের দমিয়ে রাখা যাবে না। শিরোপা জয়ের অভিন্ন লক্ষ্যেই এগিয়ে যাবে মেন ইন ব্লুজরা।

কপিল দেব, মহেন্দ্র সিং ধোনির পর এবার রোহিত শর্মার নেতৃত্বে আরেকটি বিশ্বকাপ শিরোপার হাতছানি ভারতের সামনে। বেশ কিছু কারণে আমি এই দলটিকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দেখছি।

প্রথমত বলব, স্বপ্নের ফর্মে আছে দলটি। যদি বলা হয়, এই বিশ্বকাপের সেরা দল কোনটি? বিনা সংকোচে এক কথায় উত্তর- ভারত। যেমন দুর্দান্ত ব্যাটিং তাদের, তেমনি বোলিংয়েও অনন্য। ফিল্ডিংয়েও এগিয়ে দলটি।

অধিনায়ক রোহিত শর্মা ইনিংসের শুরুতে নতুন ধারার আগ্রাসী ব্যাটিং করে পরের ব্যাটারদের জন্য কাজ সহজ করে দিচ্ছেন। দলের সেরা ব্যাটার বিরাট কোহলি ইনিংস মেরামত করে লম্বা করছেন। টপ অর্ডারের ব্যাটাররা এতটাই ফর্মে আছেন যে, তাদের পুরোপুরি ব্যাটিং অর্ডার ব্যবহার করতে হচ্ছে না।

অন্যদিকে মোহাম্মদ শামি, সিরাজ, বুমরাহদের সমন্বয়ে যে পেস ইউনিট গড়ে উঠেছে ভারতের, সেটি সর্বকালের অন্যতম সেরা বলে খেতাব পাচ্ছে। তাদের পেসারদের গতির তোপে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের মধ্যে ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে শামির দ্রুতগতির বলের সামনে খুবই অসহায় দেখা যাচ্ছে ব্যাটারদের। এ ছাড়া কুলদীপ, জাদেজা ও অশ্বিনের বৈচিত্র্যময় মায়াবী ঘূর্ণিও বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখছে।

গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়েও আলাদা নজর কেড়েছে ভারত। প্রতি ম্যাচে দলের মধ্যে সেরা ফিল্ডার নির্বাচন করার ট্রেন্ড টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই চালু করেছে তারা। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপ জয়ের জন্য একটি দল যেসব অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত থাকার দরকার, কোনো কিছুর কমতি নেই স্বাগতিক দলের।

দ্বিতীয়ত বলব অধিনায়ক রোহিত শর্মার ক্রিকেটীয় মস্তিষ্কের কথা। মাঠের লড়াইয়ে যেভাবে ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি বুঝে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার দূরদর্শিতা দেখান তা সত্যিই অতুলনীয়। সব সময় বলি, ক্রিকেটে অধিনায়কের রোলটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দলের সফলতা অনেকাংশেই নির্ভর করে অধিনায়কের ওপর। খেলায় অনেক প্রেক্ষাপট তৈরি হয়। তা সামনে থেকে অধিনায়ককে সামাল দিতে সফল হতে হয়।

আমি মনে করি, একজন সফল অধিনায়কের সব ধরনের গুণ রোহিতের মধ্যে আছে। যেভাবে ভারত দলটি অসাধারণ হয়ে উঠেছে, এর পেছনে তার নেতৃত্বের বড় প্রভাব রয়েছে।

তৃতীয়ত বলব, একটি দল তখনই অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে, যখন দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে আগ্রাসী মনোভাব ও অপরাজেয় থাকার দৃঢ় মানসিকতা তৈরি হয়। ভারত দলটির টিম স্পিরিট অন্য পর্যায়ের। মাঠের লড়াইয়ে জয়ের জন্য ভারতীয়দের যে শরীরী ভাষা ফুটে ওঠে, তা খুবই ইতিবাচক দিক। তাদের গা ছেড়ে দেয়ার ভাব কখনও দেখা যায়নি। প্রতিটি ম্যাচ তারা বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে খেলছে। কীভাবে ঐকবদ্ধ হয়ে ভালো থেকে আরও ভালো খেলা যায়, প্রতিনিয়ত সেই চেষ্টা তাদের মধ্যে থাকে। তাদের প্রতিটি পদক্ষেপে তা ফুটে ওঠে। এই বৈশিষ্ট্য তাদের অন্য দল থেকে আলাদা করেছে। বিশ্বকাপ জেতার ক্ষেত্রে তাদের এই ঐক্যবদ্ধতা বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

চতুর্থত বলব, হোস্ট কান্ট্রি হওয়ায় ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের সম্ভাবনা প্রবল। সম্প্রতি দেখা গেছে, যারাই হোস্ট হচ্ছে, তারাই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। ২০১১ সালে ভারত, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিশ্বকাপের আসর। সেবার ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জয় করে ভারতীয়রা।

২০১৫ সালে বিশ্বকাপের আয়োজন করেছিল অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। এই দুটি দলই টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলেছে। তবে বিশ্বকাপ জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। গত বিশ্বকাপের কথা যদি বলি, সেখানেও হোস্ট কান্ট্রি ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ জিতেছে। এই ধারাবাহিকতায় বলাই যায়, এবার তাহলে বিশ্বকাপ শিরোপা থাকছে ভারতের ঘরেই!

এরপর বলব হোম কন্ডিশনের কথা। এটিও ভারতকে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রাখছে। তাদের বড় সুবিধা হলো- ফাইনালে তারা এবার এশিয়ার বাইরের একটি দলকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে। টুর্নামেন্ট বলেন, সিরিজ বলেন, ভারতের কন্ডিশনে খেলতে এসে বিপাকে পড়ে সফরকারী দল। হোম অ্যাডভান্টেজের পুরো সুবিধা কাজে লাগায় টিম ইন্ডিয়া।

আরেকটি লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, এবার লম্বা টুর্নামেন্ট হচ্ছে। এক ভেন্যু থেকে অন্য ভেন্যুতে গিয়ে খেলছে দল। এই যে ভ্রমণ-ক্লান্তি, সেই ধকল কাটিয়েই খেলতে হচ্ছে সবাইকে। এখানেও এগিয়ে ভারত। খেলোয়াড়দের সতেজ ও চনমনে রাখার জন্য খেলার মাঝেই অবসর ও ছুটির সুযোগ করে দিয়েছে ভারত। এ ছাড়া মাঠভর্তি দর্শক-সমর্থক তাদের জন্য বাড়তি অনুপ্রেরণার উৎস।

সব মিলিয়ে পরিশেষে আমি এটাই বলব, এই বিশ্বকাপে অদম্য ভারত দল আরেকটি শিরোপা জয়ের দিকেই ধাবিত হচ্ছে। তাদের আটকানো মুশকিল হবে। ১৯ নভেম্বর আহমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় ফাইনালে লাখো দর্শকের সামনে তুলির শেষ আঁচড়টি দেয়ার অপেক্ষায় রোহিত অ্যান্ড কোং।

এ বিভাগের আরো খবর