বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শ্রীলঙ্কার স্বপ্ন ভেঙে সেমির পথে একধাপ এগোলো আফগানিস্তান

  •    
  • ৩০ অক্টোবর, ২০২৩ ২২:৫০

পাকিস্তানের বিপক্ষে আগে বল করে পরে ধৈর্য্যশীল ব্যাটিং করে যেভাবে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল, সেই পথ ধরে আজও সফলতা পেয়েছে আফগানিস্তান।

বিশ্বকাপের গ্রপপর্বের মাঝপথে এসেছে হঠাৎ জ্বলে উঠেছে আফগানিস্তান। প্রতি ম্যাচে ব্যাট-বল-ফিল্ডিংয়ে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে ছুটছে তাদের জয়রথ। আজ শ্রীলঙ্কাকে সাত উইকেটে হারিয়ে সেমিফাইনালের পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেছে হাশমতউল্লাহ শহিদির দল।

শুরুতে ব্যাট করে ইনিংসের তিন বল বাকি থাকতে ২৪১ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কার ইনিংস। পরে আফগান ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ শূন্য রানে ফিরে গেলেও পরের প্রত্যেক ব্যাটারই নিজের ধৈর্য্য ও সাবলীলতার পরিচয় দেন। ১৩১ রানে তিন উইকেট হারানোর পর অধিনায়ক শহিদি ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই আফগানিস্তানকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।

পাকিস্তানের বিপক্ষে আগে বল করে পরে ধৈর্য্যশীল ব্যাটিং করে যেভাবে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল, সেই পথ ধরে আজও সফলতা পেয়েছে আফগানিস্তান।

বিশ্বকাপে সমর্থকদের আনন্দ দিতে ত্রুটি রাখছেন না আফগান ক্রিকেটাররা। ছবি: ক্রিকইনফো

শ্রীলঙ্কার দেয়া ২৪২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে রানের খাতা খোলার আগেই উইকেট হারায় আফগানিস্তান। প্রথম ওভারের চতুর্থ বলটি ফুলার লেংথে ইনসুইং ডেলিভারি করেন দিলশান মধুশঙ্ক। সামনে পা এনে বলটি স্কয়ার অঞ্চলে ফ্লিক করতে গিয়ে ব্যর্থ হন গুরবাজ। ফলে বল প্রথমে তার প্যাডে লেগে উইকেটে আঘাত করে।

শূন্য রানে উইকেট হারিয়ে ইনিংসের হাল ধরেন ইব্রাহিম জাদরান ও রহমত শাহ। প্রথম পাওয়ার প্লেতে ৫০ রান তোলে এই জুটি। তবে স্কোরবোর্ডে ব্যক্তিগত ৩৯ রান যুক্ত করে ইব্রাহিম জাদরান ফিরলে ৭৩ রানের এই জুটি ভাঙে। এবারও শ্রীলঙ্কাকে ব্রেকথ্রু এনে দেন মধুশঙ্ক।

১৭তম ওভারের পঞ্চম ডেলিভারিটি শর্ট লেংথে রেখে বাউন্সার দিয়েছিলেন মধুশঙ্ক। সেটিকে আপার কাট করেন জাদরান। কিন্তু বলে বেশি গতি না থাকায় থার্ড ম্যান অঞ্চলে করুনারত্নের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

দ্বিতীয় উইকেটে ৫৮ রানের জুটি গড়ে ব্যক্তিগত ৬২ রান করে বিদায় নেন রহমত শাহ। ২৮তম ওভারের শেষ বলে কাসুন রাজিথার ক্রস-সিম ডেলিভারিটি লেগে ঘুরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন রহমত। কিন্তু ব্যাটের কানায় লেগে উপরে উঠে গেলে মিড-অন থেকে ক্যাচটি লুফে নেন করুনারত্নে।

১৩১ রানে তিন উইকেট হারালে জয়ের জন্য আফগানিস্তানের সমীকরণ তখন ১৩২ বলে ১১২ রান।

গুরবাজকে ফিরিয়ে লঙ্কানদের উল্লাস। ছবি: ক্রিকইনফো

হাশমতউল্লাহ শহিদি ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ২০০ পার করে আফগানিস্তান। এর কিছু পর ৬৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন আফগান অধিনায়ক শহিদি। তার দুই বল পরে অর্ধশতক পূর্ণ করেন ওমরজাই।

শেষে ২৮ বল বাকি থাকতে এই দুই ব্যাটারই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন। হাশমতউল্লাহ শহিদি ৭৪ বলে ৫৮ রান ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই ৬৩ বলে ৭৩ রান করে অপরাজিত থাকেন।

এদিন শ্রীলঙ্কার হয়ে দুই উইকেট নেন মধুশঙ্ক। আরেকটি উইকেট নেন কাসুন রাজিথা।

এর আগে এদিন টস জিতে শ্রীলঙ্কাকে আগে ব্যাট করতে পাঠান আফগান অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শহিদি।

ব্যাটে নেমে সাবধানী শুরুর পরও দলীয় ২২ রানে প্রথম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ষষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফিরতে হয় শ্রীলঙ্কান ওপেনার দিমুথ করুণারত্নেকে। ফজলহক ফারুকির ঘুর্ণি বুঝতে না পেরে স্লাইড করতে চেয়েছিলেন দিমুথ। কিন্তু ব্যাটে সংযোগ না হওয়ায় বল প্যাডে গিয়ে লাগে। শুরুতে আম্পায়ার আঙুল উঁচু না করলেও আফগানিস্তান রিভিউ নিয়ে সফল হয়।

এরপর অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস এসে দ্বিতীয় উইকেটে স্থিরতা আনেন। ১৮.১তম ওভারে দলীয় ৮৪ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের শর্ট লেংথ ডেলিভারিটি মাথার উপর দিয়ে স্কয়ার কাট করতে চেয়েছিলেন নিশাঙ্কা। কিন্তু টপ এজ হয়ে উপরে উঠে গেলে দৌড়ে গিয়ে বলটি তালুবন্দি করেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ।

যদিও বলটি ওয়াইড ডেলিভারি কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল। রিভিউও চান নিশাঙ্কা, কিন্তু সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় তাকে ৬০ বলে ৪৬ রান করে ফিরে যেতে হয়।

ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংয়ের ঝলক দেখায় আফগানিস্তান। ছবি: ক্রিকইনফো

তৃতীয় উইকেটে ইনিংসের সবচেয়ে বড় জুটি গড়েন কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিক্রমা। তবে পঞ্চাশ বলে ৩৯ রান করে কুশল আউট হলে ভাঙে ৫০ রানের জুটিটি। ২৮তম ওভারে মুজিবের চতুর্থ ডেলিভারিটি পড়তে ব্যর্থ হন লঙ্কান অধিনায়ক। ফলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ-মিড উইকেটে ধরা পড়েন তিনি। এর পর থেকেই মূলত নিয়মিত উইকেট পড়া শুরু হয় শ্রীলঙ্কার।

নিজের পরের ওভারে, অর্থাৎ ত্রিশতম ওভারে সামারাবিক্রমাকেও ফেরান মুজিব। ওভারের প্রথম বলেই তাকে এলবিডব্লিউ আউট হয়ে যান ৪০ বলে ৩৬ রান করা সামারাবিক্রমা।

১৬৭ রানের মাথায় ধনঞ্জয় ডি সিলভাকে বোল্ড করেন রশিদ খান। ১৮০-তে ফারুকির বলে রশিদ খানকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আসালঙ্কা। ১৮৫-তে ১ রান করে রান আউট হয়ে যান চামিরা।

এরপর আরেকটি বড় জুটি গড়ার চেচষ্টা করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও মাহিসা থিকশানা। এই জুটিটি স্কোরবোর্ডে ৪৫ রান যুক্ত হওয়ার পর আউট হন থিকশানা। ফলে ৪৭ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৩০ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। এরপর ২৩৯ রানের মাথায় ফারুকি ম্যাথিউসকে ও পঞ্চাশতম ওভারের তৃতীয় বলে কাসুন রাজিথা রান আউট হয়ে গেলে ২৪১ রানে শেষ হয় লঙ্কানদের ইনিংস।

দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬০ বলে ৪৬ রান করেন পাথুম নিশাঙ্কা। আফগানদের হয়ে ৩৪ রানে ৪ উইকেট শিকার করেছেন ফজলহক ফারুকি।

এ বিভাগের আরো খবর