লক্ষ্য ২৩০। ৫০ ওভারের ম্যাচেই এই লক্ষ্য বর্তমান ক্রিকেটে খুব বড় মনে হলেও তা টপকাতে গিয়ে ইংল্যান্ড হেরেছে ১০০ রানে।
শুনতে অবাক লাগলেও এমন ঘটনার সাক্ষী হয়েছে বিশ্বকাপের আজকের ম্যাচ দেখা ক্রীড়ামোদীরা। মোহাম্মদ শামি-বুমরাহদের আগুনে বোলিংয়ের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছেন ইংলিশ ব্যাটাররা।
শুরুতে ব্যাট করে ৯ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডকে ২৩০ রানের লক্ষ্য দেয় ভারত। লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ১২৯ রানেই গুটিয়ে গেছে ইংল্যান্ডের ইনিংস। চলতি বিশ্বকাপে ভারতকে প্রথম হারের স্বাদ দেয়ার যে সুযোগ ছিল ইংলিশদের সামনে। তবে তা দুঃস্বপ্নে পরিণত করেছেন বুমরাহ-শামিরা।
সতর্ক শুরুর পর দলীয় ৩০ রানে সেই যে উইকেট পড়া শুরু হলো, তা থামাতে পারেননি ইংল্যান্ডের কেউ। ব্যাটারদের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ সংগ্রহ ২৭, তাও এটি সপ্তম ব্যাটার লিয়াম লিভিংস্টোনের। রুট-স্টোকসরা তো শূন্য রানেই ফিরেছেন।
এ জয়ে এবারের বিশ্বকাপে আসরে সবার আগে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল ভারত। আর বিশ্বকাপে বাংলাদেশের মতো লজ্জাজনক পারফর্ম করে আগেভাগেই দেশে ফেরার টিকিট কাটল ইংল্যান্ড।
বল হাতে মোহাম্মদ শামি চারটি উইকেট, বুমরাহ তিনটি, কুলদীপ দুটি ও জাদেজা একটি উইকেট নিয়েছেন।
টস জিতে আজ ভারতকে শুরুতে ব্যাট করতে পাঠান ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। প্রথম ইনিংসে নির্ধারিত পঞ্চাশ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৯ রান তুলতে সমর্থ হয়েছে ভারত।
ভারতের এই সংগ্রহ আপাতদৃষ্টিতে খুব বেশি মনে না হলেও তা বড় লক্ষ্যে পরিণত করার সামর্থ্য যে রাখে দেশটির বোলিং লাইন-আপ, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন বোলাররা।
প্রতি ম্যাচে প্রথম পাওয়ার প্লেতে ভারতীয় ব্যাটাররা ব্যাটিং তাণ্ডব চালালেও আজ দেখা গেছে উল্টো চিত্র। চতুর্থ ওভারের শেষ বলে শুভমান গিল আউট হওয়ার পর রানের গতি আরও কমে যায় ভারতের। প্রথম পাওয়ার প্লেতে গিল ও কোহলিকে হারিয়ে ৩৫ রান তোলে ভারত।
ক্রিস ওকসের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ১৩ বলে ৯ রান করা শুভমান। পরে কোহলি এসে দেখেশুনে প্রথম ৮টি বল মোকাবিলা করলেও পরের বলে ক্যাচ হয়ে যান। সপ্তম ওভারে ডেভিড উইলির প্রথম চারটি ডেলিভারি ডট যাওয়ার পর পঞ্চম বলে ক্রিজ ছেড়ে এগিয়ে আসেন কোহলি। সেটি বুঝতে পেরে শর্ট লেংথে বল ফেলে বাউন্সার দেন উইলি। তা উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অফে দাঁড়িয়ে থাকা বেন স্টোকসের হাতে ধরা পড়লে শূন্য রানে ফিরতে হয় তাকে।
১১.৫তম ওভারে শ্রেয়াস আইয়ারকে ফেরান ওকস। কোহলির মতোই শর্ট লেংথের ডেলিভারিতে বিভ্রান্ত হয়ে সজোরে ব্যাট চালান শ্রেয়াস। কিন্তু টপ এজ হয়ে মিড অনে মার্ক উডের হাতে ধরা পড়েন তিনি। শ্রেয়াস ১৬ বল খেলে ৪ রানে আউট হলে ৪৩ রানে ৩ উইকেট হারায় ভারত।
এরপর লোকেশ রাহুলকে নিয়ে জুটি বড় করায় মনোযোগী হন রোহিত। এরপর ৯১ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন রাহুল। ৫৮ বলে ৩৯ রান করে ডেভিড উইলির বলে ফিরে যান তিনি।
এর কয়েক ওভার পর ৮৭ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন ভারতীয় অধিনায়কও। তার ইনিংসটিই ভারতীয় ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ। রশিদ খানের ডেলিভারিটি ডিপ মিড উইকেট দিয়ে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ব্যাটের উপরের দিকে লেগে তা বেশি গতি পায়নি। ফলে ডিপ মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা লিয়াম লিভিংস্টোন তালুবন্দি করেন বলটি।
১৮২ রানের মাথায় রবীন্দ্র জাদেজা ফিরে যান ৮ রান করে। এরপরই এক রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মোহাম্মদ শামি।
এসময় একপাশ আগলে ছিলেন সূর্যকুমার যাদব। তবে ৪৭ বলে ৪৯ রান করে ফিরে যান তিনিও। আর পঞ্চাশতম ওভারের শেষ বলে এক রান নিতে গিয়ে রান আউট হন ১২ রান করা জসপ্রিত বুমরাহ। শেষপর্যন্ত নয় উইকেটে ২২৯ রান করে ভারত।
ইংল্যান্ডের হয়ে তিন উইকেট নেন ডেভিড উইলি। ক্রিস ওকস ও আদিল রশিদ নেন দুটি করে উইকেট।