বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সংহারপূর্ণ ব্যাটিং-বোলিংয়ের এক্সিবিশন দেখতে চাই

  •    
  • ২৪ অক্টোবর, ২০২৩ ২৩:২৬

ধারে-ভারে অর্জনে-গর্জনে অস্ট্রেলিয়া মহাশক্তিধর দল হলেও নেদারল্যান্ডসকে হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। তারাও চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে জানে। আর সেটিই আজ দিল্লির মাঠে দেখা যেতে পারে।

যেভাবে হাঁকডাক শোনা গিয়েছিল দলটির- এখন পর্যন্ত সেভাবে বিশ্বকাপে আধিপত্য বিস্তার করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। চার ম্যাচ খেলে দুটিতেই হার। অবশ্য বুধবার খর্ব শক্তির দল নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টুর্নামেন্টে তৃতীয় জয় তুলে নেয়ার দারুণ সুযোগ অস্ট্রেলিয়ানদের সামনে।

কিন্তু এই ম্যাচের আগে আমি অস্ট্রেলিয়ার বেশ কিছু উদ্বেগের জায়গা দেখছি। তাদের ব্যাটিংয়ের শক্তি-সামর্থ্য সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। তাদের পাওয়ারফুল ব্যাটিং লাইনআপ। তাদের বোলিং অ্যাটাকও বিশ্বমানের এবং খুবই ধারালো প্রকৃতির।

একটি বিষয় লক্ষ্য করলাম, এ টুর্নামেন্টে তাদের বোলাররা কিন্তু সেভাবে বিধ্বংসী হয়ে উঠতে পারছে না। পাওয়ার প্লেতে ব্যর্থ হচ্ছেন পেসাররা। ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ইনিংসের প্রথম ১২টি ডেলিভারিতে ৩ উইকেট শিকার করে নতুন বলে দারুণ কীর্তি দেখান দুই পেসার হ্যাজলউড ও মিচেল স্টার্ক। কিন্তু এই ম্যাচের পর পাওয়ার প্লেতে আর সুবিধা করতে পারেননি তারা। টানা ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে উইকেট নেই তাদের। প্রত্যাশিত উইকেট শিকার করে প্রতিপক্ষ দলকে বিপদে ফেলতে পারছেন না। পাওয়ার প্লেতে উইকেটশূন্য থাকার পাশাপাশি প্রচুর রানও খরচ করতে হচ্ছে তাদের।

বিশ্বকাপে প্রথম চার খেলা দলগুলোর মধ্যে ইনিংসের প্রথম ১০ ওভারে বোলিংয়ে সবচেয়ে হতাশাজনক স্ট্রাইক রেট বাংলাদেশের। এর পরের অবস্থানে অস্ট্রেলিয়া। তারা পাওয়ার প্লেতে ৩৮ ওভার বোলিং করে গেলেও উইকেটের দেখা পায়নি। হ্যাজলউড কিংবা স্টার্কের মতো দ্রুতগতির বোলাররা যখন হতাশ হয়, তখন বুঝতে হবে ব্যাটাররা অসাধারণ ব্যাটিং দক্ষতা দেখাচ্ছেন।

আমি মনে করি, পাওয়ার প্লেতে হ্যাজলউড ও স্টার্কের পাশাপাশি নতুন বলে অস্ট্রেলিয়ার বাজি হতে পারেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। বিশ্বকাপে এখনও নতুন বল হাতে নেননি ডানহাতি এই পেসার। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের এক-তৃতীয়াংশের বেশি ম্যাচে কিন্তু কামিন্সের নতুন বলে বোলিং করার অভিজ্ঞতা আছে।

পাওয়ার প্লের ব্যর্থতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে। কেননা পাওয়ার প্লের উইকেট প্রত্যেক দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ে উইকেট পতন হলে রানের গতি কমে যায়, বিপাকে পড়ে দল। প্রতিপক্ষ দল পরিস্থিতি সামলে উঠতে উঠতেই ম্যাচ তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে পাওয়ার প্লের হতাশা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে অজি পেসারদের।

এদিকে এরই মধ্যে মাঠে কিছু ভুল সিদ্ধান্তের কারণে অস্ট্রেলিয়াকে ভুগতে হয়েছে। উইকেট পর্যবেক্ষণ এবং উইকেটের চরিত্র বিবেচনায় টস জিতে আগে বোলিং না ব্যাটিং করা যায়- এ ব্যাপারে দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে ভুল করছেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। মাঠে রিভিউ নেয়ার সিদ্ধান্তও বেশির ভাগ সময় তাদের বিপক্ষে যাচ্ছে। এই ছোট জিনিসগুলো বড় করে দেখতে হবে, যাতে নিখুঁত ম্যাচ খেলা যায়। যে দল কম ভুল করে, তারা কিন্তু এগিয়ে থাকে।

নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে অস্ট্রেলিয়ানদের। দিল্লির যে স্টেডিয়ামে খেলা হবে, সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার ম্যাচে সাতশর বেশি রান হয়েছে। আবার এই ভেন্যুতেই বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে মাটিতে নামিয়ে দিয়েছিল আফগানিস্তান।

পেসারদের সঙ্গে স্পিনাররাও দিল্লির উইকেটে সুবিধা পেয়ে থাকেন। স্পিন বেশ কার্যকর হয়। এটি দেখা গেছে আফগান স্পিনারদের কল্যাণে। স্পিন শক্তি কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে পারে নেদারল্যান্ডস। বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে অঘটনের জন্ম দিয়েছে ডাচরাও। ওই মোমেন্টাম কাজে লাগিয়ে আরেকটি রূপকথার জন্ম দিতে পারে স্কট অ্যাডওয়ার্ডসরা।

মজার ব্যাপার হলো, ডাচ অধিনায়ক অ্যাডওয়ার্ডস অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভূত। আর তার নেতৃত্বেই বিশ্ব মঞ্চে অস্ট্রেলিয়াকে ধরাশায়ী করার পরিকল্পনা ও কৌশল প্রয়োগ করে জয়ের লক্ষ্য নেদারল্যান্ডসের।

ডাচ দলটির বেশ কিছু ক্রিকেটার দক্ষিণ আফ্রিকান। এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকার যুব ক্রিকেট দলেও খেলেছেন। আরেকটি ব্যাপার হলো- তাদের বেশ কিছু ক্রিকেটার কাউন্টি ক্রিকেট খেলে থাকেন। বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে কাউন্টি ক্রিকেটে খেলার কারণে সে সময় গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের দলে পায়নি নেদারল্যান্ডস। তবু বাছাই পর্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, স্কটল্যান্ডের মতো দলগুলোকে হারিয়েছে ডাচরা। এবার পরিপূর্ণ দল নিয়ে বিশ্বকাপে খেলছে তারা। এটি তাদের জন্য ইতিবাচক দিক।

অন্যদিকে আইপিএলে খেলার সুবাদে ভারতের কোন মাঠ কেমন, কন্ডিশন সম্পর্কে বেশ জানাশোনা অস্ট্রেলিয়ানদের। এই অভিজ্ঞতা কাজে দেবে তাদের।

পরিশেষে বলব, ধারে-ভারে অর্জনে-গর্জনে অস্ট্রেলিয়া মহাশক্তিধর দল হলেও নেদারল্যান্ডসকে হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। তারাও চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে জানে। আর সেটিই আজ দিল্লির মাঠে দেখা যেতে পারে।

এ বিভাগের আরো খবর