বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আফগানিস্তানের বোলিং সাম্রাজ্য বিশ্বমানের

  •    
  • ২২ অক্টোবর, ২০২৩ ২৩:১৮

ধারে-ভারে ঐতিহ্যে পাকিস্তানের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও বর্তমান পারফরম্যান্স আর মোমেন্টাম কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে পারে আফগানিস্তান। দুই দলের মধ্যে আমরা একটি ক্ল্যাসিক লড়াই দেখতে পারব বলে আশা করি।

চলতি বিশ্বকাপে একটা ভিন্ন জিনিস দেখছি, ভারত দল দারুণ একটা সংস্কৃতি চালু করেছে। তাদের ফিল্ডিং কোচ প্রতি ম্যাচেই দলের সেরা ফিল্ডারকে পুরস্কৃত করে থাকেন। এজন্য কে কার চেয়ে ভালো ফিল্ডিং করতে পারে, এ নিয়ে প্রতিযোগিতা হয় বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মাদের মাঝে।

ব্যাটিং-বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিংটাও খুব জরুরি। কিন্তু এই বিভাগে অনেক দুর্বলতা ফুটে উঠছে পাকিস্তান দলের। সোমবার তারা প্রতিবেশী দেশ আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে। এই ম্যাচে যদি কার্যকরি ফিল্ডিং না হয় তা হলে আবারও বিপদে পড়তে পারে পাকিস্তান।

ক্রিকেটের পরিভাষায় একটা কথা আছে- ‘ক্যাচ মিস মানেই ম্যাচ মিস’। এ দৃষ্টান্ত পাকিস্তানের গত ম্যাচে দেখেছি আমরা। ক্যাচ মিসের কারণেই অস্ট্রেলিয়ার কাছে ধরাশায়ী হতে হয়েছে তাদের। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তিন-তিনটি ক্যাচ মিস হয় পাকিস্তানের। এর মধ্যে ডেভিড ওয়ার্নারের সহজ ক্যাচটি ছেড়ে দেন উসামা মির। এই ক্যাচ মিসের সুবাদে ওয়ার্নার ব্যাটিং তাণ্ডব চালিয়ে দেড়শর বেশি রান করেন একাই এবং ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেন।

গত বিশ্বকাপেও আমরা পাকিস্তানের বাজে ফিল্ডিং, ক্যাচ মিসের মহড়া দেখেছি। সেখান থেকে তারা এবারও বেরিয়ে আসতে পারছে না। টুর্নামেন্টে ভালো কিছু করতে হলে কিংবা লক্ষ্যে অবিচল থাকতে হলে এই ছোট ছোট ভুলগুলো শুধরাতে হয়। তা না হলে হতাশা থেকে বের হওয়া কঠিন হয়ে যায়।

আমি বলব, পাকিস্তানের তুলনায় আফগানিস্তানের ফিল্ডিং অনেক ভালো হচ্ছে। তারা হাফ চান্সকে ফুল চান্সে রূপান্তর করতে জানে। এই বিভাগে তাদের সুনাম রয়েছে। এ জায়গায় এগিয়ে থাকবে আফগানরা।

বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটার বাবর আজম বিশ্বকাপে রান পাচ্ছেন না। দলের প্রধান অস্ত্রই নিষ্প্রভ। রিজওয়ান, শফিকরা সেঞ্চুরি পেলেও ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিক নন। হঠাৎ ব্যাটিং লাইনআপে ধস নামার ঘটনাও ঘটছে পাকিস্তানের। ব্যাটাররা আস্থার জায়গা তৈরি করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। এটি পাকিস্তানের জন্য দুশ্চিন্তার আরেকটি বড় কারণ।

ধারাবাহিক ভালো করতে না পারলে আত্মবিশ্বাসের মাত্রা এমনিতেই কমে যায়। ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বড় দুটি ম্যাচে হারের পর প্রচণ্ড চাপে এখন পাকিস্তান। এই সুযোগ নিতে চাইবে আফগানরা। তাই চাপ ও হতাশা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ পাকিস্তানের সামনে।

অন্যদিকে, বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে অঘটনের জন্ম দেয়ার পর বেশ চনমনেই আছে আফগানরা। এই মোমেন্টাম তাদের জন্য ইতিবাচক। তবে আফগানিস্তানের মূল শক্তির জায়গা হলো স্পিন। রশিদ খান, মুজিব উর রহমান ও মোহাম্মদ নবি- বিশ্বমানের এই ত্রয়ী স্পিনার খুবই ভয়ংকর। তাদের বিষাক্ত স্পিন বিষে নীল হতে দেখা যায় প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের।

স্পিন শক্তির কল্যাণে আন্তর্জাতিক মঞ্চে অনেক সাফল্য পাচ্ছে আফগানিস্তান। নিঃসন্দেহে সোমবারের ম্যাচে তারা পাকিস্তানকেও কঠিন চ্যালেঞ্জ জানাবে। বিশেষ করে চেন্নাইয়ের যে মাঠে খেলা হবে, সেই এম এ চিদাম্বরাম স্টেডিয়ামের উইকেট বিবেচনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে এগিয়ে থাকতে পারে আফগান যোদ্ধারা।

ঐতিহ্যগতভাবেই এই উইকেটে স্পিন ধরে। লো-স্কোরিং ম্যাচ হয়। চেন্নাইয়ের উইকেট বেশ ভালোভাবে চেনা রশিদদেরও। সব মিলিয়ে আমার কাছে মনে হয়, আফগানিস্তানের স্পিন শক্তির কাছে ধরাশায়ী হতে পারে পাকিস্তান। আরেকটি বড় সাফল্য অর্জন হতে পারে আফগানদের।

এদিকে, ঐতিহ্যগতভাবে পাকিস্তানের মূল শক্তির জায়গা হলো বিধ্বংসী পেস বোলিং অ্যাটাক। কিন্তু গত ম্যাচে তাদের পেসাররা অনেক ব্যয়বহুল ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শাহিন শাহ আফ্রিদিরা দেরিতে জ্বলে ওঠেন। ততক্ষণে ম্যাচ বেরিয়ে যায়। তাদের তারকা পেসার নাসিম শাহ ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ায় পেস-ইউনিটের শক্তি কমে গেছে। তাই শাহিন আফ্রিদি, হ্যারিস রউফ, হাসান আলীর দিকেই তাকিয়ে পাকিস্তান। আশা করি, এই ম্যাচে তারা বিধ্বংসী বোলিং উপহার দেবেন।

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে পেস শক্তি বনাম স্পিন শক্তির দারুণ লড়াই হবে বলে মনে হচ্ছে। আরেকটি বিষয় হলো টস। এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ম্যাচটি যেহেতু দিবা-রাত্রির হবে, সে ক্ষেত্রে টসজয়ী দল আগে ব্যাটিং করে দিনের আলোর সুবিধা কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে। পরে বোলিং-ফিল্ডিংয়ে রাতের শিশিরের সুবিধা আদায় করে নেবে।

শেষদিকে আমি এটা বলব, ধারে-ভারে ঐতিহ্যে পাকিস্তানের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও বর্তমান পারফরম্যান্স আর মোমেন্টাম কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে পারে আফগানিস্তান। দুই দলের মধ্যে আমরা একটি ক্ল্যাসিক লড়াই দেখতে পারব বলে আশা করি।

এ বিভাগের আরো খবর