বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তুফান গতির বোলিং বনাম ইস্পাত কঠিন ব্যাটিংয়ের মহাযুদ্ধ হবে

  •    
  • ২১ অক্টোবর, ২০২৩ ২৩:৫৮

রোববার বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল ভারত ও নিউজিল্যান্ডের যে মহা-উত্তাপের ম্যাচ রয়েছে ধর্মশালায়, সেখানে ‘পাওয়ারফুল স্টার্ট’ দেখা যাওয়াটাই স্বাভাবিক। ফলে দুদলের ম্যাচটিও হাই-স্কোরিংয়ের হতে পারে বলে আমি মনে করি।

এই বিশ্বকাপে একটি বিষয় খুবই লক্ষণীয়- ইনিংসের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে দেখা যাচ্ছে ব্যাটারদের। দলগুলোর মধ্যে ‘পাওয়ার স্টার্ট’-এর প্রবণতা বেশি। গত বিশ্বকাপে কিন্তু এমনটা দেখা যায়নি। চার বছর আগে ‘ওয়াচফুল স্টার্ট’-এর দিকে ফোকাস ছিল সবার। এবার এই ‘ওয়াচফুল স্টার্ট’ ধারা যেন বিলীন! যে কারণে পাওয়ার প্লেতে প্রচুর রান উঠছে, মাঝের ওভারগুলোয় ইনিংস বেশি লম্বা হচ্ছে এবং শেষ দিকে গিয়ে দলীয় স্কোর তিন শ, সাড়ে তিন শ, এমনকি চার শ পর্যন্ত পার হওয়ার ঘটনা ঘটছে।

রোববার বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল ভারত ও নিউজিল্যান্ডের যে মহা-উত্তাপের ম্যাচ রয়েছে ধর্মশালায়, সেখানেও ‘পাওয়ারফুল স্টার্ট’ দেখা যাওয়াটাই স্বাভাবিক। ফলে দুদলের ম্যাচটিও হাই-স্কোরিংয়ের হতে পারে বলে আমি মনে করি।

এবারের বিশ্বকাপে ভিন্ন ধাঁচের ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ ভারত দলের। দেখবেন, ব্যাটিংয়ের শুরু থেকেই দ্রুতগতিতে স্কোর বোর্ডে রান তোলার প্রচেষ্টায় থাকেন ভারতীয় ব্যাটাররা। ওপেনার রোহিত শর্মা গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে শুরু থেকেই মারকুটে ব্যাটিং করছেন। কিছু বল দেখার পর উইকেটে থিতু হয়ে হাত-খুলে ব্যাটিং করার যে ধারা প্রচলিত, সেটি পাল্টে দিচ্ছেন রোহিতরা। তাদের ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ এমন- ডট বল খেলা যাবে না, যত পারো স্কোর বোর্ডে রান তোল।

মূলত মারকাটারি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের যুগে ওয়ানডেরও আধুনিকায়ন হয়েছে। যার উৎকৃষ্ট প্রমাণ ভারতের দাপট দেখানো ব্যাটিং। যাই হোক, হিমাচলের ধর্মশালা স্টেডিয়ামে কিউইদের বিপক্ষে ভারতের আরেকটি দোর্দণ্ড ও দুর্দান্ত ব্যাটিং প্রদর্শনী আমরা দেখতে পাব বলে আশা করি।

নিউজিল্যান্ডের সমান চার ম্যাচ খেলে প্রতিটিতে জয় পেয়েছে ভারত। কিন্তু নেট রান রেটে পিছিয়ে থাকায় পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরে অবস্থান দলটির। এক নম্বরে নিউজিল্যান্ড। এত শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ নিয়েও নেট রান রেটে ভারতের পিছিয়ে থাকার মূল কারণ হলো- যে কটি ম্যাচ খেলেছে তারা, প্রতিটিতেই পরে ব্যাটিং করে লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছে। আজ রান রেট বাড়িয়ে নেয়ার সুযোগ আসতে পারে তাদের এবং সেটি কাজে লাগাতে পারে তারা।

এটা সবার জানা, ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ কতটা শক্তিশালী, বিস্ফোরক ও আন্তর্জাতিক মানের। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, শুভমান গিলদের সমন্বয়ে গড়া টপ অর্ডার এতটাই ফর্মের তুঙ্গে যে, মিডল অর্ডার কিংবা লোয়ার মিডল অর্ডার, লোয়ার অর্ডারের প্রয়োজনই পড়ছে না। তবে আমি মনে করি, আজ নিউজিল্যান্ডের সাড়া জাগানো, দুনিয়া কাঁপানো, দুর্ধর্ষ ও বিধ্বংসী বোলিং কঠিন পরীক্ষা নেবে ভারতীয় ব্যাটারদের।

টেন্ট বোল্ট, টিম সাউদি, লকি ফার্গুসন, ম্যাট হেনরিদের তুফান গতির আগুনে বোলিংয়ে বিধ্বস্ত হতে পারে ভারত। নিউজিল্যান্ডের যেমন ভয়ংকর পেস ইউনিট, ঠিক একইভাবে স্পিন শক্তিতেও বলীয়ান তারা। এরই মধ্যে টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ১১ উইকেট শিকার করে বাঁহাতি স্যান্টনার প্রমাণ করেছেন, তার সঙ্গে রাচিন রবীন্দ্রও আছেন। ভারত দলে ডানহাতি ব্যাটারের সংখ্যা বেশি। এই দুই বাঁহাতি বেশি কার্যকরী হতে পারেন।

অফস্পিনে পার্ট-টাইমার হিসেবে গ্লেন ফিলিপসের বোলিংও বেশ কার্যকর। ফলে ধর্মশালার যে স্পোর্টিং উইকেট, সেখানে পেস ও স্পিনে সমানভাবে সফল হতে পারে কিউইরা।

আরেকটি বিষয় হলো- পাওয়ার প্লের প্রথম ১০ ওভার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। ভারতের শক্তিধর ব্যাটিংকে দুর্বল করতে হলে পাওয়ার প্লেতে বেশ কয়েকটি উইকেট শিকার করতে হবে নিউজিল্যান্ডকে।

এদিকে হার্দিক পান্ডিয়া ইনজুরিতে পড়ায় ব্যালান্সড একাদশ গড়তে গিয়ে কিছুটা বিপাকে পড়তে পারে ভারত। পান্ডিয়ার বদলে একাদশে জায়গা পাওয়ার দৌড়ে বেশ কয়েকজনের নাম শুনছি। এর মধ্যে রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ইশান কিষাণ, মোহাম্মদ শামি ও শার্দুল ঠাকুরের নাম আসছে। তবে কাকে একাদশে রাখা হবে, সেটি ভারতের কৌশলের ওপর নির্ভর করছে। সেখানে দেখতে হবে তারা পাঁচ জন নাকি ছয় বোলার নিয়ে খেলে। যার কাছ থেকে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি পূর্ণ বোলিংয়েরও আস্থা পাওয়া যাবে, তার একাদশে সুযোগ মিলতে পারে।

জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজরা গতির ঝড় তুলছেন। বোলিংয়ে দারুণ ভেরিয়েশন তাদের। ভারতীয় পেসারদের ধারালো গতির তোপে পড়তে পারেন টম লাথামরাও। তবে পাল্টা জবাব দেয়ার সেই সক্ষমতা কিউইদের আছে। পরিশেষে আমি বলব যে, বিশ্বকাপে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচগুলোর একটি হতে যাচ্ছে ভারত-নিউজিল্যান্ডের মহারণ। উত্তেজনায় ঠাসা, লড়াইয়ে আপসহীন এক ক্রিকেট মহা-যুদ্ধ দেখা যাবে- এমনটাই আশা করছি।

এ বিভাগের আরো খবর