চলমান বিশ্বকাপে আজ নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা ও নেদারল্যান্ডস পরস্পরের মুখোমুখি হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রথম দুই ম্যাচে জয় পেয়ে দারুণ ছন্দে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আজ হ্যাটট্রিক জয়ের লক্ষ্য প্রোটিয়াদের। অন্যদিকে দুটি ম্যাচ খেলে এখনও জেতেনি নেদারল্যান্ডস। প্রথম জয়ের খোঁজে থাকবে ডাচরা। ধর্মশালায় বাংলাদেশ সময় ২টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে দুই দলের ম্যাচটি। এই ম্যাচের চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার।
দুর্দান্ত পারফরমেন্সের গত দুই ম্যাচে বড় জয় তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রেকর্ডের বন্যা বইয়ে ১০২ রানের জয় পেয়েছিল প্রোটিয়ারা। প্রথমে ব্যাট করে তিন ব্যাটারের সেঞ্চুরিতে বিশ্বকাপ ইতিহাসে রেকর্ড ৫ উইকেটে ৪২৮ রান করে তারা। এরপর শ্রীলঙ্কা ৩২৬ রানে গুটিয়ে গেলে সহজ জয় পেয়ে বিশ্বকাপ শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় ম্যাচে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৩৪ রানে রেকর্ড জয় পায় প্রোটিয়ারা। দক্ষিণ আফ্রিকার করা ৩১১ রানের জবাবে ১৭৭ রানে শেষ হয় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস।
টানা দুই জয়ে আত্মবিশ্বাসী দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা বলেন, ‘প্রথম দুই ম্যাচেই ১শর বেশি রানের ব্যবধানে জয়, বিষয়টি অবশ্যই অনেক বড় ব্যাপার। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়কে আমি এগিয়ে রাখব। এই জয়ে ছেলেদের মধ্যে বাড়তি উত্তেজনা দেখা গেছে। পুরো দলের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে।’
জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেও হাসিমুখে মাঠ ছাড়তে চান বাভুমা। তিনি বলেন, ‘জয়ের ধারা অব্যাহত রাখাই এখন মূল লক্ষ্য আমাদের। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আমাদের রেকর্ড ভালো। কিন্তু আমাদের অতীত নিয়ে চিন্তা করলে হবে না। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে এবং নিজেদের পারফরমেন্সের দিকে নজর রাখতে হবে।’
নেদারল্যান্ডসকে হারাতে পারলেই বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে উঠবে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩ ম্যাচ শেষে ৬ করে পয়েন্ট আছে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের। রান রেটে এগিয়ে থাকার সুবাদে টেবিলের শীর্ষে আছে ভারত। নেদারল্যান্ডসকে হারালে ৬ পয়েন্ট হবে দক্ষিণ আফ্রিকারও। তখন রান রেটে এগিয়ে থাকার সুবাদে ভারতকে টপকে শীর্ষে উঠবে দক্ষিণ আফ্রিকা।
এদিকে অঘটন ঘটিয়ে এবারের বিশ্বকাপ শুরুর লক্ষ্য ছিল নেদারল্যান্ডসের। কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ৮১ রানের হার বরণ করে নেয় ডাচরা। পাকিস্তানের ২৮৬ রানের টার্গেটে ২০৫ রানে গুটিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস। পরের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গেও লড়াই করতে পারেনি নেদারল্যান্ডস। কোনোমতে ১শর নিচে হারের ব্যবধান নামিয়ে আনতে পারে। নিউজিল্যান্ডের ৩২২ রানের জবাবে ২২৩ রান পর্যন্ত যেতে পারে তারা। ৯৯ রানে ম্যাচ হারে ডাচরা। প্রথম দুই ম্যাচে হারলেও আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেনি নেদারল্যান্ডসের।
জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে আছে দল, এমনই জানালেন নেদারল্যান্ডসের অধিনায়ক স্কট অ্যাডওয়ার্ডস। তিনি বলেন, ‘প্রথম দুই ম্যাচে ছোট ছোট ভুলের কারণে আমরা হেরেছি। দল হিসেবে আমরা খুব বেশি খারাপ করিনি। এজন্য আমাদের আত্মবিশ্বাসে কোনো ছেদ পড়েনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী আমরা।’
পরিসংখ্যান অনুযায়ী নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাই। ওয়ানডেতে নেদারল্যান্ডসের কাছে কখনো হারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। এখন পর্যন্ত সাতবার মুখোমুখি হয়েছে দুদল। এর মধ্যে ছয়টি ম্যাচে জয় পেয়েছে প্রোটিয়ারা। একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয় বিশ্বকাপ মঞ্চে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে তিনবার দেখা হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার। ১৯৯৬, ২০০৭ ও ২০১১ সালের বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোতে শতভাগ জয় পেয়েছে প্রোটিয়ারাই।
দক্ষিণ আফ্রিকা দল: টেম্বা বাভুমা (অধিনায়ক), জেরার্ল্ড কোয়েৎজি, কুইন্টন ডি কক, রেজা হেনড্রিকস, মার্কো জানসেন, এনরিচ ক্লাসেন, কেশব মহারাজ, এইডেন মার্করাম, ডেভিড মিলার, লুঙ্গি এনগিডি, আন্দিলে ফেলুকুওয়াও, কাগিসো রাবাদা, তাবরিজ শামসি, রাসি ভ্যান ডার ডুসেন ও লিজার্ড উইলিয়ামস।
নেদারল্যান্ডস দল: স্কট অ্যাডওয়ার্ডস (অধিনায়ক), কলিন অ্যাকারম্যান, শারিজ আহমেদ, ওয়েসলি বারেসি, লোগান ফন বিক, আরিয়ান দত্ত, সিব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট, রায়ান ক্লাইন, বাস ডি লিডে, পল ফন মিকেরেন, রোলফ ফন ডার মারু, তেজা নিদামানুরু, ম্যাক্স ও’দাউদ, বিক্রম সিং ও সাকিব জুলফিকার।