বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পাঁচ ম্যাচ খেলব বলিনি: তামিম

  • চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত   
  • ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১২:৩৩

ভিডিওবার্তায় সবশেষে তামিম বলেন, ‘আমি উইশ করব যে ১৫ জন বিশ্বকাপে গিয়েছে, তারা যতটুকু সম্ভব বাংলাদেশের জন্য সাকসেস নিয়ে আসবে। আরও অনেক কিছুই ঘটেছে এটা আপনারা দেখেছেন আমি নিশ্চিত। একটা কাহিনি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হতে পারে, দুটো কাহিনি ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে, কিন্তু একজনের সঙ্গে তিন-চার মাসে যদি সাত-আটটা কাহিনি হয়, তাহলে সেটা ইচ্ছাকৃত হয়। আর একটা কথা, আমাকে সবাই মনে রাখিয়েন। ভুলে যাইয়েন না।’

বেশি দিন আগের কথা নয়। জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক ছিলেন অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল। ধারণা করা হচ্ছিল, তার নেতৃত্বেই বিশ্বকাপে খেলবে বাংলাদেশ, তবে কী থেকে যেন কী হয়ে গেল! তামিমকে ছাড়াই ঘোষণা করা হলো ১৫ সদস্যের বিশ্বকাপ দল।

গত মঙ্গলবার বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, বিশ্বকাপ খেলার জন্য পুরোপুরি ফিট নন তামিম, যে কারণে তাকে বাদ দিয়েই স্কোয়াড ঘোষণা করেন নির্বাচকরা।

এ নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া না জানালেও গতকাল সকালে নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা স্ট্যাটাসে তামিম জানান, একটি ভিডিওবার্তার মাধ্যমে বিগত কয়েক দিনের ঘটনার ব্যাপারে কিছু কথা বলবেন। আর তামিম কথাগুলো বলবেন বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপে খেলতে ভারতের উদ্দেশে উড়াল দেয়ার পর।

গতকাল বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ভারতের উদ্দেশে উড়াল দেয় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল। এর ঘণ্টাখানেক পর নিজের ফেসবুক পেজে একটি ১২ মিনিটের ভিডিওবার্তা দেন তামিম, যেখানে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা, তার না থাকা ইত্যাদি বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন তিনি।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে শেষে হালকা চোট অনুভব করেছিলেন তামিম ইকবাল। তখন সে বিষয়টি টিম ম্যানেজমেন্টকে জানান এ ওপেনার। তিনি শুধুই চোটের কথা মাথায় রাখতে বলেছিলেন। অথচ টিম ম্যানেজমেন্ট সেটাকে ইস্যু বানিয়েছে, এমন অভিযোগ তার।

ভিডিওবার্তার শুরুতে তামিম বলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম সবাইকে। গলায় ইনফেকশন হয়েছে, সো ক্লিয়ারলি বলতে পারছি না। স্ট্যাটাস দেখেই বুঝতে পেরেছেন, শেষ কয়েক দিনে যা যা লেখা হয়েছে, আর আসলে যা ঘটেছে কমপ্লিটলি ডিফারেন্ট। যা যা ঘটেছে, পুরো জিনিসটাই স্টেপ বাই স্টেপ জানাই। কারণ এটি আমার যারা ফ্যান এবং বাংলাদেশের ক্রিকেট লাভার তাদের জানা উচিত।’

এরপর তামিম আরও বলেন, ‘বেসিক্যালি সবাই জানেন, আমি অবসরে যাই, অবসরে যাওয়ার কারণ ছিল। এরপর প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে ফিরে আসি। এরপর যে দুই মাস আমি প্রচণ্ড পরিমাণ কষ্ট করি নিজেকে ফিট করার জন্য। আমি নিশ্চিত, যারা সম্পৃক্ত ছিল, ফিজিও থেকে শুরু করে, আমি নিশ্চিত সবাই একমত হবেন, এমন কোনো সেশন বা এক্সারসাইজ নেই, যেটি তারা চেয়েছেন কিন্তু আমি করি নাই।

‘নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের পর মানসিকভাবে আমি খুব খুশি ছিলাম। গত চার-পাঁচ ম্যাচের যত বিষয়, সব ভুলে গিয়েছিলাম। ম্যাচ শেষে আমার ইনজুরির অবস্থা ফিজিওকে জানাই। তখন ড্রেসিংরুমে নির্বাচকরা আসেন। আমি তাদের বলেছিলাম, আমার অবস্থা সামনে এমনই থাকবে। আমাকে দলে রাখলে বিষয়টি মাথায় রাখবেন। হোটেলে যাওয়ার পর আমাকে ফিজিও পর্যবেক্ষণ করেন। ফিজিওর রিপোর্টে ছিল প্রথম ম্যাচের পরে আমার ব্যথার অবস্থা কী, দ্বিতীয় ম্যাচের পর কী হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ২৬ তারিখের (নিউজিল্যান্ড সিরিজের শেষ ম্যাচ) ম্যাচের দিন অবস্থা কেমন হতে পারে। রিপোর্ট অনুযায়ী, খেলার জন্য আমি ফিট, কোনো সমস্যা নেই, তবে আমাকে বলা হয়েছিল আমি রেস্ট নিতেও পারি।’

কিউইদের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে রেস্ট নেয়ার বিষয়ে দেশসেরা ওপেনার বলেন, ‘শেষ ম্যাচটায় রেস্ট নিলে সে ক্ষেত্রে আমার প্রস্তুতি ম্যাচের জন্য রিহ্যাব হয়ে যেত এবং বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচও আমি খেলতে পারব, এমনটা ছিল রিপোর্টে। আমি কোথাও বলিনি যে, পাঁচটা ম্যাচ খেলব বা পাঁচ ম্যাচ খেলতে পারব। এটা মিথ্যা। জানি না কীভাবে এটি মিডিয়াতে ছড়ানো হয়েছে। শুধু তিন নির্বাচককে জানিয়েছিলাম আমি পুরোপুরি ফিট না, দল ঘোষণার সময় যেন তারা এটি মাথায় রাখেন।

‘আমি নিশ্চিত কালকে নান্নু ভাইও কথাটা ক্লিয়ার করেছেন। আমি জানি না এ কথাটা মিডিয়াকে খাওয়ানো হলো কীভাবে বা কে করেছে এটি, কিন্তু এ জিনিস একদমই মিথ্যা। যে জিনিস আমি নির্বাচকদের বলেছিলাম যে, আমার শরীর এ রকমই থাকবে। এখন যে রকম অবস্থায় আছে, আমার ব্যথা থাকবে। আপনারা যখন দলটা নির্বাচন করবেন, তখন এটা মাথায় রাখবেন।’

বিসিবির পক্ষ থেকে মিডল অর্ডারে খেলার প্রস্তাবও দেয়া হয় জানিয়ে তামিম বলেন, “বোর্ডের টপ লেভেল থেকে একজন ফোন করে আমাকে বললেন, ‘তুমি বিশ্বকাপে যাবা, কিন্তু তোমাকে তো ম্যানেজ করে খেলাতে হবে। একটা কাজ করো, তুমি প্রথম ম্যাচ খেলিও না।’ আমি বলেছি, ‘এখনও ১২/১৩ দিন সময় আছে। এই সময়ের মধ্যে তো আমি ভালো অবস্থায় থাকব। তো কী কারণে খেলব না?’ তখন বলল, ‘আচ্ছা তুমি যদি খেলো তাহলে আমরা পরিকল্পনা করছি, তুমি নিচের দিকে খেলবা।’”

তিনি বলেন, “তাদের প্রস্তাব শুনে আমি তো অবাক। জিজ্ঞেস করলাম এটা কোন ধরনের কথা। এরপর বলা হলো মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করানোর কথা। অথচ আমি ১৭ বছর ধরে এক পজিশনে খেলে আসছি। আমাকে জোর করে করে অনেক জায়গায় বাধা দেয়া হচ্ছে, ইচ্ছে করে। তখন আমি বললাম, ‘দেখেন, আপনারা একটা কাজ করেন, যদি আপনাদের এমন চিন্তাধারা থাকে, তাহলে আপনারা আমাকে পাঠায়েন না। আমি এই নোংরামির মধ্যে থাকতে চাই না। প্রতিদিন আপনারা আমাকে একেকটা নতুন জিনিস ফেস করাবেন, আমি এই জিনিসগুলোয় থাকতে চাই না।’ তারপরও ফোনে উনার সঙ্গে আমার অনেক কথাবার্তা হয়। সেগুলো এই প্ল্যাটফর্মে না বলাই ভালো।

“এটা আমার আর উনার মধ্যেই থাক। তারপরও বলেছি, যদি এগুলো হয় আমাকে রাখিয়েন না। আমি এই নোংরামোর মধ্যে থাকতে পারব না। সো ওভারঅল আমি ব্যক্তিগতভাবে যে জিনিসটা ফিল করেছি, মিডিয়াকে আই ডোন্ট নো আমি ঠিক বলছি কি বলছি না। কারণ আমাদের অনেকেরই অভ্যাস আছে বড় একটা জিনিসকে ঢাকার জন্য আরেকটা জিনিস ঠিক করা। সে পাঁচ ম্যাচ খেলবে তাকে ক্যামনে সিলেক্ট করব। অ্যাজ আই সেইড ইট ওয়াজ ফলস। এমন কোনো কথাই হয়নি। আমি নিশ্চিত সেদিন টিম সিলেক্টর ছিল, ফিজিও ছিল, ট্রেনার ছিল- সবাই ছিল। কী বলেছি সেটা আপনাদের সঙ্গেও ক্লিয়ার করেছি। বাট ওভারঅল আমার কাছে মনে হয়, ইফ ইউ রিয়েলি ওয়ান্ট মি টু মেক মি মেন্টালি ফ্রি অ্যান্ড হ্যাপি। বিকজ আই অ্যাম কামিং আউট অব অ্যা ভেরি ব্যাড থ্রি-ফোর মান্থস। আমার জন্য খুব কঠিন ছিল তিন-চার মাস।”

সবশেষে তামিম বলেন, ‘আমি উইশ করব যে ১৫ জন বিশ্বকাপে গিয়েছে, তারা যতটুকু সম্ভব বাংলাদেশের জন্য সাকসেস নিয়ে আসবে। আরও অনেক কিছুই ঘটেছে এটা আপনারা দেখেছেন আমি নিশ্চিত। একটা কাহিনি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হতে পারে, দুটো কাহিনি ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে, কিন্তু একজনের সঙ্গে তিন-চার মাসে যদি সাত-আটটা কাহিনি হয়, তাহলে সেটা ইচ্ছাকৃত হয়। আর একটা কথা, আমাকে সবাই মনে রাখিয়েন। ভুলে যাইয়েন না।’

এ বিভাগের আরো খবর