প্রথমে ব্যাট করে শ্রীলঙ্কার ব্যাটারদের সামনে যে লক্ষ্য দিয়েছিল বাংলাদেশ, তাতে সহজেই অনুমান করা যাচ্ছিল, অমন দুর্বল লক্ষ্য দিয়ে স্বাগতিকদের সঙ্গে পেরে ওঠা যাবে না। তবে শুরুতেই দুই উইকেট তুলে নিয়ে খেলায় ভালোই ফেরার সম্ভাবনা জাগিয়েছিল টাইগাররা। তবে শেষ পর্যন্ত আর পেরে ওঠেনি। অনুমিত জয়ই পেয়েছে সিংহলিজরা। একইসঙ্গে হার দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করল বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার কাছে ৫ উইকেটে হেরেছে সাকিব আল হাসানের দল।
পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তবে নাজমুল হোসেন শান্ত ছাড়া এই সিদ্ধান্তের প্রতিদান দিতে পারেননি আর কোন ব্যাটার। বাঁহাতি এই টপ অর্ডার ব্যাটারের লড়াকু হাফ সেঞ্চুরিতে ৪২ দশমিক ৪ ওভারে মাত্র ১৬৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
জয়ের জন্য ১৬৫ রানের ছোট তাড়া করতে নেমে শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে লঙ্কানরা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে এসে প্রথম আঘাতটা করেন তাসকিন। দিমুথ করুনারত্নেকে বোল্ড করেন তিনি। এরপর আঘাত হানেন শরিফুল ইসলাম। পাথুম নিসাঙ্কারকে প্যাভিলিনের পথ ধরান তিনি। শ্রীলঙ্কার দলীয় সংগ্রহ যখন ৪৩ ঠিক তখন তৃতীয় আঘাত হানেন সাকিব আল হাসান। ইনিংসে দ্বিতীয় শ্রীলঙ্কান হিসেবে বোল্ড হন কুশাল মেন্ডিস।
শুরুর ধাক্কা সামাল দেন সাদিরা সামারাবিক্রমা ও চারিথ আসালাঙ্কা। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে চতুর্থ ফিফটি তুলে নেন সামারাবিক্রমা। ৭৮ রানের জুটি অবশেষে ভাঙেন শেখ মেহেদী। ৭৭ বলে ৬ চারে ৫৪ রান করে আউট হন সামারাবিক্রমা। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। সাকিবের বলে বোল্ড হয়ে ২ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর আর কোন উইকেট হারায়নি লঙ্কানরা। দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন আসালাঙ্কা ও দাসুন শানাকা। ৩৯ ওভারে মাত্র ৫ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় লঙ্কানরা। আসালাঙ্কা অপরাজিত থাকেন ৯২ বলে ৬২ রানে আর শানাকা অপরাজিত থাকেন ২১ বলে ১৪ রানে। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি উইকেট নেন সাকিব।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি টাইগারদের। এই ম্যাচেই দেশের ১৪৩তম ওয়ানডে খেলোয়াড় হিসেবে অভিষেক হয় বাঁ-হাতি ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমের। তার সঙ্গে ওপেন করতে আসেন মোহাম্মদ নাঈম। কিন্তু অভিষেকটা রাঙাতে পারেননি তানজিদ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে শ্রীলঙ্কার স্পিনার মহেশ থিকশানার দ্বিতীয় বলে লেগ বিফোর আউট হন তানজিদ। ওয়ানডে অভিষেকে ১৬তম বাংলাদেশী ব্যাটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচে শূন্য রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ২ বল খেলা তানজিদ।
ওয়ানডাউনে নামা শান্তকে নিয়ে হাল ধরার চেষ্টা করলেও বেশিদুর এগুতে পারেননি নাঈম। দলীয় অষ্টম ওভারে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার বলে ১৬ রান করে আউট হন তিনি। চাপে থাকা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারেননি অধিনায়ক সাকিব। মাথিশা পাথিরানার বলে ৫ রানেই বিদায় নিতে হয় তাকে। একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করেন শান্ত। ক্রিজে শান্তর সঙ্গী হন তাওহিদ হৃদয়। ২৩তম ওভারে জুটিতে ৫০ পূর্ণ করেন শান্ত-হৃদয়। পরের ওভারে ৬৬তম বলে ওয়ানডেতে চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ন করেন শান্ত।
একই ওভারের শেষ বলে শান্ত-হৃদয়ের জুটি ভাঙ্গেন দাসুন শানাকা। রিভিউ নিয়ে শানাকার শিকার হওয়ার আগে ৪১ বলে ২০ রান করেন হৃদয়। এরপর উইকেটে এসে মুশফিকুর রহিম ভালো করার ইঙ্গিত দিয়েও আউট হন ১৩ রানে। শেষদিকে মেহেদী হাসান মিরাজ ৫ ও শেখ মাহেদি হাসান ৬ রানে আউট হলেও সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন শান্ত। কিন্তু থিকশানার করা ৪২তম ওভারের ১২২ বলে দলের ৮৯ রান করেন শান্ত। শেষ পর্যন্ত ৪২.৪ ওভারে ১৬৪ রানে অলআউট হয় টাইগাররা। শ্রীলঙ্কার হয়ে ৩২ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন পাথিরানা।