দলবদলের বাজারে রেকর্ড গড়ে পিএসজি থেকে সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আল হিলালে যোগ দিয়েছেন নেইমার। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে গিয়েই পর্তুগিজ সুপারস্টার ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর সৌদি প্রো লিগে যোগ দেয়া ও লিগের উন্নয়নে তার ভূমিকার প্রশংসা করেছেন ব্রাজিয়াল রাজপুত্র।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আল হিলালের পোস্ট করা একটি ভিডিও নেইমারকে বলতে শোনা যায়, ‘শুরুতে ক্রিস্তিয়ানোকে (রোনালদো) সবাই পাগল বলেছিল। কিন্তু আপনি আজ দেখতে পাচ্ছেন, এই লিগটি কতটা উন্নতি করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও কতটা উন্নতি করবে। এ সবকিছু শুরু হয়েছে ক্রিস্তিয়ানোর হাত ধরে।’
রোনালদোর পদাঙ্ক অনুসরণ করে তিনিও সৌদি লিগের উন্নতি করতে চান জানিয়ে নেইমার বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ আমাকে সবসময় টানে। আর যখন এ ধরনের একটি চ্যালেঞ্জ সামনে আসে, তখন মানসিক শক্তি আরও বেড়ে যায়। এই লিগের উন্নয়নের জন্যই আমি এখানে এসেছি এবং এ চ্যালেঞ্জটি আমি সবসময় মাথায় রাখব।’
তিনি বলেন, ‘এখানে (লিগে) অনেক পরিবর্তন এসেছে। ইউরোপের অনেক খেলোয়াড়কে তারা নিয়ে এসেছে, বিশেষ করে, চলতি দলবদলের মৌসুমে যে পরিমাণ তারকা খেলোয়াড় এখানে এসেছেন, তাতে নিশ্চিত করেই বলা যায় যে, আসন্ন মৌসুম অনেক প্রতিযোগিতামূলক হতে চলেছে।’
২০২২ সালের ডিসেম্বরে শীতকালীন দলবদলের সময় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে সৌদির ক্লাব আল নাসরে পাড়ি জমান পর্তুগিজ সুপারস্টার ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। ২০ কোটি (২০০ মিলিয়ন) ইউরোর বিনিময়ে আড়াই বছরের চুক্তিতে আল নাসরে যোগ দেন তিনি। তারপর চলতি গ্রীষ্মকালীন দলবদলের শুরু থেকেই সৌদি ফুটবলে যোগ দিতে ইউরোপিয়ান ফুটবলারদের লাইন লেগে যায়।
রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ এক বছর থাকতেই রিয়াল ছেড়ে আল-ইতিহাদে যোগ দেন ফ্রান্সের তারকা ফুটবলার করিম বেনজেমা। এরপর একে একে চেলসি থেকে এন’গোলো কঁতে, কালিদু কুলিবালি, এদুয়ার্দ মেন্দি; লিভারপুলের রবের্তো ফিরমিনো, সাদিও মানে, জর্ডান হেন্ডারসন; ম্যানচেস্টার সিটির রিয়াদ মাহরেজ ও ইন্তার মিলানের মার্সেলো ব্রোজিভিচের মতো তারকা খেলোয়াড়রা ইউরোপ ছেড়ে পাড়ি জমান সৌদি আরবে।
শুরুতে মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটির লিগে গিয়ে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো ব্যাপক সমালোচনার শিকার হন। সৌদির অর্থের প্রাচুর্যের কাছে নিজেকে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে ইউরোপীয় বিভিন্ন নামী ক্রিড়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যমে নাক সিঁটকান সাংবাদিক ও সমালোচকরা। সৌদি আরবের ফুটবলে এমন বৈপ্লবিক পরিবর্তনকে সমালোচনা করে এ ধরনের পরিকল্পনা সফল না হওয়ার কথাও শোনা যায়। উদাহরণ হিসেবে ইউরোপীয় ফুটবলের পণ্ডিতরা ফুটবল নিয়ে চীনের ব্যর্থ পরিকল্পনার বিষয়টি তুলে ধরেন।
তবে রোনালদোর পর একে একে অসংখ্য তারকা ফুটবলার ইউরোপ ছেড়ে সৌদি পাড়ি জমানোয় ফুটবল পণ্ডিতদের সে সমালোচনা ধীরে ধীরে কমে এসেছে। পরিবর্তে সৌদি ফুটবলের ভবিষ্যত নিয়ে ইতিবাচক সম্ভাবনার কথাও আলোচনা করতে দেখা যাচ্ছে তাদের।
ফুটবলারদের সে তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন নেইমার। পিএসজির সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ও ক্লাবটির নতুন কোচ লুইস এনরিকের পরিকল্পনায় না থাকায় পিএসজি ছাড়তে একপ্রকার বাধ্য হন নেইমার। শুরুতে তার বার্সেলোনায় ফেরা নিয়ে গুঞ্জন উঠলেও সব গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে তিনি আল হিলালে নাম লেখান।