মেসির ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেয়ার খবরে হতাশ হয়েছিলেন বার্সেলোনার ভক্ত-সমর্থকরা। তবে একের পর এক তারকা ফুটবলারকে বার্সায় সাইন করিয়ে তাদের সে দুঃখ ভোলানোর চেষ্টা করছে স্প্যানিশ ক্লাবটি।
বার্সার এমন কর্মকাণ্ডে সমর্থকদের মাথায় স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে- অন্য সব খেলোয়াড়কে পারলেও মেসিকে কেন দলে ভেড়াতে পারল না বার্সেলোনা?
২০২২-২৩ মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই আথলেতিক বিলবাউ থেকে বিনামূল্যে বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছেন ডিফেন্ডার ইনিগো মার্তিনেস। এরপর ৪৫ মিলিয়ন ইউরোয় (৩৫+১০) ব্রাজিলের ক্লাব আতলেতিকো পারানায়েন্সে থেকে ‘নতুন রোনালদো’ খ্যাত ভিতর রকে’কে বার্সায় নিয়ে আসার চুক্তি একপ্রকার পাকাপাকি। বুধবার ফ্রি ট্রান্সফারে বার্সায় আসার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটির জার্মান অধিনায়ক ইলকায় গুনডোয়ান।
১৯ বছর বয়সী সেনেগালের প্রতিভাবান সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার মিকাইল ফায়েকেও সম্প্রতি দলে ভিড়িয়েছে হুয়ান লাপোর্তার বার্সেলোনা।
বার্সেলোনা ম্যানেজার শাভি এরনান্দেসের চাহিদা অনুযায়ী একজন কন্ট্রোলিং মিডফিল্ডার (পিভোট) কেনারও চেষ্টায় রয়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। ম্যানচেস্টার সিটির রদ্রি, ইন্টার মিলানের মার্সেলো ব্রজোভিচ, রিয়াল সোসিয়েদাদের মার্তিন জুবিমেন্দি ও ফিওরেন্তিনার মরোক্কান মিডফিল্ডার সোফিয়ান আমরাবাটের নাম রয়েছে ক্লাবটির পছন্দের তালিকায়।
আবার তুরস্কের বিস্ময় বালক আরদা গুলেরকেও ক্লাবটি দলে টানার চেষ্টায় রয়েছে বলে গুঞ্জন চলছে।
তবে নতুন খেলোয়াড়রা সাইন করলেও তাদের এখনই বার্সেলোনায় রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে না। লা লিগার ফেয়ার প্লে পলিসি অনুযায়ী, বর্তমান খেলোয়াড়দের বেতন কমানো, খেলোয়াড় বিক্রি বা ধারে অন্য ক্লাবে পাঠানো এবং নতুন আয়ের উৎস খোঁজাসহ একাধিক হিসাব মেলাতে হবে ক্লাবটির। আর এ কাজ তাদের করতে হবে নতুন মৌসুম শুরুর আগে, অর্থাৎ ১২ আগস্টের মধ্যে।
ক্লাবের এসব জটিল হিসাব মেলানোর আগপর্যন্ত অপেক্ষা করতে রাজি হয়েছেন নতুন চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়রা। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম মেসি; অনিশ্চয়তা নিয়ে তিনি কোনোভাবেই অপেক্ষা করতে চাননি।
নতুন করে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করার আগে বার্সার কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশনের শতভাগ নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন মেসি, কিন্তু মে মাসে চলমান মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই সে নিশ্চয়তা দিতে ব্যর্থ হন বার্সা প্রেসিডেন্ট লাপোর্তা। ফলে ২০২১ সালের মতো শেষ সময়ে হতাশ হওয়ার ঝুঁকি আর নিতে চাননি আর্জেন্টাইন মায়েস্ত্রো।
ইউরোপ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বার্সেলোনার ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় মেসি। ডেভিড বেকহ্যামের ইন্টার মায়ামিতে যোগ দিয়েছেন তিনি।
পরে এক স্বাক্ষাতকারে ইউরোপীয় ফুটবল ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ার বিষয়ে কথা বলেন মেসি। তিনি জানান, ফুটবলের সম্ভাব্য সব লক্ষ্য তার পূরণ করা হয়ে গেছে। তাই ক্যারিয়ারের শেষে এসে আর মাথায় চাপ নিয়ে খেলতে চান না তিনি। চাপমুক্ত থেকে খেলা চালিয়ে যাওয়া ও পরিবারকে সময় দেয়াটাই এখন তার প্রধান উদ্দেশ্য।
বার্সেলোনার জন্য অপেক্ষা না করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দুবছর আগে বার্সেলোনা কর্তৃপক্ষের সেই সিদ্ধান্তের পর ক্লাবের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের ওপর থেকে একেবারেই বিশ্বাস উঠে গেছে। সেবারের মতো এবারও যে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না, সে বিষয়ে আমি সন্দিহান। তাই আর অনিশ্চয়তায় থাকার ঝুঁকি নিতে চাইনি।’