আর্থিক দুরবস্থার কারণে ২০২১ সালের ৫ আগস্ট ক্লাবের ইতিহাসের সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করতে ব্যর্থ হয় কাতালান জায়ান্ট বার্সেলোনা। চোখের জলে প্রিয় ক্লাব থেকে বিদায় নেন ‘আর্জেন্টাইন মায়েস্ত্রো’। সেদিন তার সঙ্গে কেঁদেছিল বিশ্বজুড়ে অসংখ্য বার্সেলোনা ও মেসি ভক্ত-সমর্থকও।
এরপর মেসির ঠিকানা হয় প্যারিস সেন্ত জার্মেই (পিএসজি)। পুরনো বন্ধু নেইমারের পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্যারিসের ক্লাবটিতে দুই মৌসুমের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন তিনি। তখন থেকেই দিন গুনে চলেছে বার্সার অসংখ্য ভক্ত। বিশ্বাস, আবারও নিজের ‘ঘরে’ ফিরবেন ফুটবলের এই বিস্ময় প্রতিভা।
পিএসজিতে মেসির সেই দুই মৌসুমের মেয়াদ শেষ হতে আর বেশি দেরি নেই। এর মাঝে কাতালুনিয়ায়ও শুরু হয়েছে নতুন তোড়জোড়। ঘরের ছেলেকে ঘরে ফেরানোর তোড়জোড়।
ইতোমধ্যে ক্লাবের পদস্থ কর্তারা যোগাযোগ শুরু করেছেন মেসির সঙ্গে। বন্ধু-সতীর্থ ও বর্তমান বার্সেলোনা ম্যানেজার শাভি এরনান্দেসও নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখছেন মেসির। শোনা যায়, মেসিকে নিয়ে আগামী মৌসুমে তার খেলোয়াড়ি পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন তাকে।
এরই মধ্যে ছেলেদের পুরনো স্কুলেও নাকি অগ্রিম আসন রিজার্ভ করে রেখেছেন, এমন গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে।
ক্লাব কর্তৃপক্ষও বসে নেই। মেসিকে ফেরাতে বার্সা স্টুডিওর অবশিষ্ট ৩০ শতাংশ মালিকানাও বিক্রি করে দিয়েছে বলে বিভিন্ন স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। এমনকি মেসিকে ফেরাতে আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য-সম্বলিত একটি ‘পরিকল্পনা’ও লা লিগা’র কাছে হস্তান্তর করেছে তারা। এর মধ্যে রয়েছে খেলোয়াড় বিক্রি, খেলোয়াড়দের বেতন কমানোসহ বেশকিছু বিষয়।
সব বিষয় যখন মেসিকে ফেরানোর পরিকল্পনার দিকেই অগ্রসর হচ্ছিল, ভক্তরা যখন আবারও আশায় বুক বেঁধেছিল, ঠিক তখনই সেই আশায় বড় ধাক্কা লাগল।
কয়েকদিন আগেই লা লিগা সভাপতি হাভিয়ের তেবাস জানিয়েছিলেন, মেসিকে ফেরানো কঠিন হবে বার্সার জন্য। এবার বার্সার পাঠানো ‘সম্ভাব্যতার পরিকল্পনা’ নাকচ করে দিয়েছে লা লিগা কর্তৃপক্ষ।
গোল ডটকম’র খবরে বলা হয়, বার্সেলোনার আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য আনতে এখনও প্রায় ২০০ মিলিয়ন ইউরো খরচ কমাতে হবে। এই অবস্থা থেকে উত্তীর্ণ হতে না পারলে নতুন খেলোয়াড় কেনা ও রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব হবে না ক্লাবটির জন্য।
লা লিগা থেকে নির্দেশিত খরচ কমানোর জন্য বার্সেলোনা তিন বছর সময় চেয়েছিল। সে সঙ্গে বার্সা আশা করেছিল যে প্রস্তাবিত ‘সম্ভাব্যতার পরিকল্পনা’র মাধ্যমে লা লিগা কর্তৃপক্ষ ক্যাম্প ন্যু’তে হিসাবের ভারসাম্য ফেরাতে তাদের সহযোগিতা করবে।
কিন্তু হাভিয়ের তেবাস স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘কাতালুনিয়া কর্তৃপক্ষকে খুব দ্রুত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে (এই মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই) তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাবে ভারসাম্য আনতে হবে। লা লিগার অন্য ক্লাবগুলোর মতো বার্সেলোনাকেও আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এর ফলে মেসিকে ফেরানোর পরিকল্পনা তো বটেই, নতুন ও লা মাসিয়ার তরুণ খেলোয়াড়দের রেজিস্ট্রেশন নিয়েও চিন্তায় পড়ে গেছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
চিন্তার মেঘ ঘন হচ্ছে বার্সার ভক্তদের মাঝেও। একটা চিন্তাই এখন সবার মনে উঁকি দিচ্ছে- মেসি ফিরবেন তো!