একে তো পৌষের হাড় কাঁপানো শীত, সঙ্গে কুয়াশায় ভেজা আউটফিল্ড। যার সুবাদে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে একের পর এক ক্যাচ ও ফিল্ডিং মিস। আবহাওয়া ও মাঠের কঠিন লড়াইয়ে সহজ জয় তুলে নিয়েছে মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার সিলেট স্ট্রাইকার্স। ১৯৫ রানের টার্গেট দিয়েও তাদের থামাতে পারেনি সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশাল।
বরিশালের রানের পাহাড় টপকে ব্যাক টু ব্যাক জয় তুলে নিয়েছে মাশরাফির সিলেট। ৬ বল ও ৬ উইকেট হাতে রেখেই তারা সহজ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে।
বরিশালের করা ১৯৪ রানকে তাড়া করতে গিয়ে শুরুতে কিছুটা থমকে গেলেও নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয়ের ১০১ রানের জুটিতে লড়াইয়ে ফিরে আসে সিলেট।
হাফ সেঞ্চুরি থেকে ২ রানের আক্ষেপ নিয়ে রান আউট হয়ে শান্ত মাঠ ছাড়লেও হৃদয় ঠিকই তুলে নেন চলতি বিপিএলের ব্যক্তিগত প্রথম অর্ধশতক। কারিম জানাতের এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে ৫৫ রানে তিনি সাজঘরে ফিরলেও হোম অফ ক্রিকেটে ঝড় তোলেন তার সঙ্গী জাকির হাসান।
চার ছক্কার ফুলঝুড়ি ছুটিয়ে জাকির খেলেন ১৮ বলে ৪৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। দলীয় ১৭৪ রানে জাকির সাজঘরে ফিরলে বাকি কাজটা নির্বিঘ্নেই সেরে আসেন মুশফিকুর রহিম ও থিসারা পেরেরা। মুশির অপরাজিত ১১ বলে ২৩ আর পেরেরার হার না মানা ৯ বলে ২০ রানের সুবাদে ১ ওভার হাতে রেখেই ৬ উইকেটের জয় পায় সিলেট।
দুই দলের ইনিংসে মিস ফিল্ডিং আর ক্যাচ মিস ছিল অনেকগুলো। যা ব্যাটারদের ইনিংস লম্বা করতে সহায়ক হয়েছে।
শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুতে টসে জিতে ব্যাট করতে নামে বরিশাল। শুরু থেকেই মারকুটে ভূমিকায় অবতীর্ণ হন দুই ওপেনার চাতুরাঙ্গা ডি সিলভা ও আনামুল হক বিজয়। সিলেটের বোলারদের তুলোধুনা করে পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে রান তোলেন বিনা উইকেটে ৫৪।
দলীয় ৬৭ রানে বিজয় আর ৭৩ রানে সিলভার বিদায়ের পর ইফতিখার আহমেদকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেয়ার মিশনে নামেন দলপতি সাকিব আল হাসান। ইনিংসের দ্বাদশ ওভারে ব্যক্তিগত ১৩ রানে ইফতিখার ও ১৯ রানে রিয়াদ মাঠ ছাড়লেও উইকেট কামড়ে ধরে মার অব্যাহত রাখেন সাকিব।
ব্যক্তিগত ৩২ রানে ইমাদ ওয়াসিমের হাতে জীবন পান সাকিব। তারই সুবাদে ২৬ বলে তুলে নেন দুর্দান্ত এক অর্ধশতক। ব্যক্তিগত ৬৬ রানে তিনি ফের জীবন পান আকবর আলির হাতে। কিন্তু তৃতীয়বার সাকিবের ক্যাচ তালুবন্দি করতে সক্ষম হন মোহাম্মদ আমির। ৩১ বলে ৬৭ রান করে মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার তৃতীয় শিকার বনে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।
সিলেটের ক্যাচ ও ফিল্ডিং মিসের মহড়ার সামনে শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে বোর্ডে ১৯৪ রান তুলতে সক্ষম হয় বরিশাল। ১৯৫ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে সিলেট। আর তা তারা ১৯ ওভারেই টপকে যায় সাবলীল ব্যাটিংয়ে।