ফিফা বিশ্বকাপের শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে টাইব্রেকে ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে হারিয়ে ৩৬ বছর পর শিরোপা ঘরে তুলেছে আর্জেন্টিনা। এ জয়ের পর বুয়েনস আইরেসের রাস্তায় উদযাপনে নেমে পড়ে লাখ লাখ আলবিসেলেস্তে সমর্থক ।
পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচে প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় মেসির দল। এরপরই খেলা ঘুরিয়ে দেয় ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপে। ৯০ মিনিটে ২-২ গোলে সমতায় থাকার পর অতিরিক্ত সময়ে ৩-৩ স্কোর সমান থাকায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকে। শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ ট্রফি ওঠে মেসির হাতে।
আর্জেন্টিনার ফুটবল কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনার বাড়ির বাইরে পরিবারের সঙ্গে মেসিদের জয় উদযাপন করছিলেন ১৩ বছরের স্যান্টিয়াগো। জয়ের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে এই কিশোর বলে, ‘বিশ্বাস হচ্ছিল না। এটা কঠিন ছিল, তবে আমরা পেরেছি, মেসিকে ধন্যবাদ।’
জয়ের কয়েক মিনিটের মধ্যে পতাকা হাতে দেশের আইকনিক নীল-সাদা জার্সি পরে আর্জেন্টাইন ভক্তরা বুয়েনস আইরেসের কেন্দ্রস্থল এবং অন্যান্য আইকনিক স্পট দখল করে নেয়।৪৬ বছর বয়সী আইনজীবী নিকোলাস পিরি বলেন, ‘এত টানাপড়েনের পর এটা একটা অপরিসীম আনন্দ। বিশ্বের সেরা একজন খেলোয়াড়ের নেতৃত্বে দলের সামঞ্জস্য ও খেলোয়াড়দের অবস্থা আমাদের এই জয়ের দিকে নিয়ে গেছে।’
বুয়েনস আইরেসে মেসিদের জয় উদযাপনে এসে ৪৬ বছর বয়সী ডিয়েগো আবারগেইলি বলেন, ‘এটি একটি অবিশ্বাস্য খেলা ছিল, মাঝে মাঝে যন্ত্রণাদায়কও।’
কাতারে খেলা দেখতে যাওয়া আর্জেন্টাইন সমর্থকরাও ম্যাচ জয়ের পর একইভাবে উদযাপন করেছে।
একজন সমর্থক বলেন, ‘ভেবেছিলাম আমি কিছুক্ষণের জন্য মারা গিয়েছি। আমার হৃৎস্পন্দন এক মিনিটের জন্য থেমে গিয়েছিল। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই চলেছে।’ এদিকে উল্টো চিত্র দেখা যায় ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে।
স্থানীয় হাই স্কুল শিক্ষার্থী উসমান দিও বলেন, ‘পেনাল্টিতে হারা ভয়াবহ। যদিও এই বিশ্বকাপ মেসির প্রাপ্য, কারণ তিনি ভালো খেলোয়াড়।’
ফ্রান্সের আরেক সমর্থক রোমেন সাইন বলেন, ‘এটা খুবই হতাশাজনক। আমরা ম্যাচে ফিরে এসেছিলাম , তখন বিশ্বাস হচ্ছিল যে আমরা পারব।’
ফ্রান্সের হারের পর প্যারিস ও নিস শহরে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বুলোন শহরে পুলিশের সঙ্গে ফ্রান্স সমর্থকদের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
ফ্রান্সের হার মাঠে বসেই দেখেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। হারের পর একটি টুইট বার্তায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘লেস বেলুস (ফ্রান্স ফুটবল দল) চলুন স্বপ্ন দেখি।’