কাতারে ফিফা বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে জয়ের পরই লিওনেল মেসি জানিয়েছিলেন, ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে ম্যাচটিই হতে যাচ্ছে তার বিশ্বকাপ ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। সে ঘোষণা অনুযায়ী রোববার ফ্রান্সের বিপক্ষে নামবেন আর্জেন্টাইন ফুটবলের পোস্টার বয়।
কাতারের লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় শুরু হবে ম্যাচটি। শেষ বিশ্বকাপকে রাঙাতে প্রস্তুত অধিনায়ক লিওনেল মেসি ও তার দল।
১৮ বছরের বর্ণিল ক্যারিয়ারে সম্ভাব্য সব অর্জন করতে পারলেও বিশ্বকাপের ট্রফিটি ছুঁয়ে দেখা হয়নি লিওনেল মেসির। সেই স্বপ্ন নিয়ে এবার কাতার বিশ্বকাপের শুরুটা করেছিলেন তিনি। বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে সেই শিরোপা থেকে এক হাত দূরে ৩৫ বছর বয়সী এ তারকা।
মেসি তার ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ৩৭টি ক্লাব শিরোপা জিতেছেন। সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ব্যালন ডর খেতাব পেয়েছেন সাতবার। ছয়বার ইউরোপীয় গোল্ডেন বুট জিতেছেন এ ফরোয়ার্ড।
আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে জিতেছেন একটি কোপা আমেরিকা শিরোপা ও একটি ফিনালিসিমা ট্রফি। অলিম্পিকের স্বর্ণ পদকসহ আর্জেন্টাইন সুপারস্টার মেসির যে গোলের পরিসংখ্যান, সে রেকর্ডভাঙা অনেকটা দুষ্কর।
এত অর্জনের পরও ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ বিশ্বকাপ ট্রফিটি তার অধরাই রয়েছে। ক্যারিয়ারের গোধূলিবেলায় আরও একবার সেই সুযোগ পেলেন তিনি। ফ্রান্সের বিপক্ষে জয় পেলেই সে স্বপ্ন পূরণ হবে তার।
এরই মধ্যে নিজের ক্যারিয়ারে অসাধারণ অর্জন মেসিকে পৌঁছে দিয়েছে পেলে, ডিয়েগো ম্যারাডোনা, আলফ্রেদো দি স্টেফানো ও ইয়োহান ক্রুইফদের কাতারে।
মেসির নজরকাড়া দক্ষতায় ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনালে ৩-০ গোলে জয়ের পর আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি বলেছিলেন, ‘এটা বলতে আমার দ্বিধা নেই যে, সে ইতিহাসের সেরা।’
ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক অ্যালান শিয়েরার মেক্সিকোতে ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপ শিরোপা জয় করা মেসির স্বদেশি প্রয়াত কিংবদন্তি ম্যারাডোনোকে সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় মনে করছেন।
তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘মেসি যদি এখানে জয়লাভ করতে পারেন, তাহলে তার সেই দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যাবে।’
১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। সে ম্যাচে ম্যারাডোনার বানিয়ে দেয়া বলে গোল করেছিলেন স্ট্রাইকার হোর্হে বুরুশাগা।
মেসি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মেসি এমন এক যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়, যেখানে শুধু ক্রিস্টিয়ানো রোনালডো তার কৃতিত্বের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।’
৬০ বছর বয়সী এ তারকা এএফপিকে বলেন, ‘জয় বা পরাজয় যাই হোক না কেন, মেসি ম্যারাডোনাকে ছাড়িয়েও যেতে পারবেন না, আবার তার চেয়ে পিছিয়েও থাকবেন না। যাই ঘটুক না কেন, ইতিহাসে ঢুকতে যাচ্ছেন মেসি।
‘বিগত ৭০ বছরের ইতিহাসে পাঁচজন খেলোয়াড়কে বিশ্বসেরা হিসেবে বিবেচনা করা হয়,যারা হলেন ডি স্টেফানো, ইয়োহান ক্রুইফ, পেলে, ম্যারাডোনা ও মেসি। বিশ্বকাপ জয় করুক বা না করুক, মেসি ওই তালিকায় ইতোমধ্যে ঢুকে গেছেন, তবে আমি আশা করি তিনি (বিশ্বকাপ জয় করতে) পারবেন।’