বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিদেশে জন্ম নেয়া খেলোয়াড়ে অপ্রতিরোধ্য মরক্কো

  •    
  • ১১ ডিসেম্বর, ২০২২ ১২:২৯

প্যানাল্টিতে জয়সূচক গোলটি করে দলকে শেষ আটের টিকিট ধরিয়ে দেয়া আশরাফ হাকিমির জন্ম স্পেনের মাদ্রিদে। নকআউটে স্পেনের বিপক্ষে টাইব্রেকারে তিনটি শট ঠেকিয়ে জয়ের নায়ক গোলরক্ষক ৩১ বছর বয়সী ইয়াসিন বোনোও হচ্ছেন একজন অভিবাসী। প্লে-মেকার ও আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার হাকিম জিয়েচ ও সেন্টার মিডফিল্ডার সোফিয়ান আমরাবাট এই দুজনেরই জন্ম নেদারল্যান্ডসে।

ফুটবল বিশ্বকাপের প্রতিটি দলেই কমবেশি অভিবাসী বা বিদেশে জন্ম নেয়া খেলোয়াড় রয়েছেন। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স দলের অধিকাংশ ফুটবলারের জন্মই অন্য দেশে। নকআউটে ফিফা-২০১০ চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে ও কোয়ার্টার ফাইনালে ফেভারিট পর্তুগালকে হারিয়ে এবারের বিশ্বকাপে প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে সেমিফাইনালে পা রাখা মরক্কোর দলও এর ব্যতিক্রম নয়। দলটির কাতার বিশ্বকাপ স্কোয়াডের ২৬ সদস্যের মধ্যে ১৬ ফুটবলারের জন্মই মরক্কোর বাইরে।

গ্রুপপর্বে ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের ২ নম্বর দল বেলজিয়ামকেও গুঁড়িয়ে দেয় উত্তর আফ্রিকার এই দেশটিতে।

বিভিন্ন দেশে জন্ম নেয়া ও ইউরোপে ক্লাব ফুটবলে পরিচিত মুখ এমন সব ফুটবলারকে নিয়ে শক্তিশালী এক দল সাজিয়েছেন কোচ ওয়ালিদ রেগ্রাগুইয়ে।

প্যানাল্টিতে জয়সূচক গোলটি করে দলকে শেষ আটের টিকিট ধরিয়ে দেয়া আশরাফ হাকিমির জন্ম স্পেনের মাদ্রিদে। সেখানে শৈশব কাটিয়েছেন পিএসজি তারকা ফুটবলার ও দলের অন্যতম ডিফেন্ডার।

নকআউটে স্পেনের বিপক্ষে টাইব্রেকারে তিনটি শট ঠেকিয়ে জয়ের নায়ক গোলরক্ষক ৩১ বছর বয়সী ইয়াসিন বোনোও হচ্ছেন একজন অভিবাসী। কানাডার মন্ট্রিয়লে জন্ম নেয়া বোনোর প্রথম আট বছর কাটে সেখানে। পরে পরিবারের সঙ্গে মরক্কো চলে আসেন সেভিয়ার এই তারকা ফুটবলার।

বেলজিয়ামের বিপক্ষে মরক্কোর হয়ে প্রথম গোলের পর উচ্ছ্বসিত আব্দেলহামিদ সাবিরি। ছবি: ফিফা

প্লে-মেকার ও আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার হাকিম জিয়েচ ও সেন্টার মিডফিল্ডার সোফিয়ান আমরাবাট এই দুজনেরই জন্ম নেদারল্যান্ডসে।

দলের অধিনায়ক রোমাইন সাইস এবং লেফট উইংগার সোফিয়ানে বৌফালের জন্ম ফ্রান্সে।

এমনকি তাদের কোচ ওয়ালিদ রেগ্রাগুইয়ের জন্ম প্যারিসে হলেও জাতীয় দলের প্রশ্নে বেছে নিয়েছিলেন মরক্কোকেই। তবে কেবল মরক্কোই নয়, এবারের বিশ্বকাপে একশর বেশি ফুটবলার রয়েছেন যারা জন্মস্থানের বদলে বিশ্বকাপে বেছে নিয়েছেন অন্য দলকে।

ম্যাচের ৪২তম মিনিটে আতিয়াতের ক্রসে ডি বক্সের ভেতর বল পেয়ে যান ইউসেফ এন নেসিরি। সেখান থেকে দুর্দান্ত এক হেডে দলকে এগিয়ে দেন এই স্ট্রাইকার।

১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে প্রথম আফ্রিকার দেশ হিসেবে নকআউট পর্বে উঠেছিল মরক্কো। এবারের বিশ্বকাপে তাদের অর্জন গড়ে তুলেছে নতুন নতুন রেকর্ড। প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে তারা সেমিফাইনালে উঠে যায়। সেমিফাইনালে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে আটলান্টিক মহাসাগর ও ভূমধ্যসাগরের কোলঘেঁষা উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কো।

প্রথম আফ্রিকান দলের পাশাপাশি প্রথম মুসলিম দেশ হিসেবে মরক্কোর সামনে সুযোগ এসেছে ফ্রান্স বাধা টপকে ফাইনালে ওঠার। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সেই অধরা থেকে মাত্র দুই ধাপ পেছনে রয়েছেন জিয়েশ-বোনোরা।

শুক্রবার শেষ আটের লড়াইয়ে শেষতক আর গোলের দেখা মেলেনি পর্তুগালের। আর তাতেই আন্ডারডগ হয়ে কাতার বিশ্বকাপে আসা মরক্কোর হাত ধরে রচিত হয় নতুন আরেক ইতিহাস।

পর্তুগালের বিপক্ষে মরক্কোর এল-নেসিরিরি গোল উদযাপন। ছবি: টুইটার

মাঠে সমর্থন জোরদার ও খেলোয়াড়দের মনোবল বাড়িয়ে দিতে মরক্কোর রয়েল ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্টের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলোয়াড়দের স্বজনদেরকেও নিয়ে যাওয়া হয় কাতারে। তার এমন তত্ত্ব কাজে দিয়েছে বলে অনেকেরই ধারণা।

আশরাফ হাকিমি তার দুর্দান্ত গোলটিও উদযাপন করেন গ্যালারিতে থাকা তার মায়ের সঙ্গে।

মুসলিম অধ্যুষিত আফ্রিকার দেশটি এখন পর্যন্ত ছয়বার বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বে খেলার সুযোগ পায়। এই নিয়ে দুই বার শেষ ষোলোতে নিজেদের জায়গা করে নিতে পেরেছে তারা। সাড়ে তিন দশক আগে ১৯৮৬ সালে পূর্ব জার্মানিকে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছিল দেশটি।

অবিশ্বাস্যভাবে কাতার বিশ্বকাপে এখনও হারের স্বাদ পায়নি মরক্কো। গ্রুপপর্বের প্রথম ম্যাচে তারা গতবারের ফাইনালিস্ট ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে। দ্বিতীয় ম্যাচে ২-০ গোলে গুঁড়িয়ে দেয় ফুটবল পরাশক্তি বেলজিয়ামকে। আর গ্রুপপর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে কানাডাকে ২-১ গোলে হারিয়েছে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ২২তম অবস্থানে থাকা মরক্কো। এরপর ফুটবল জায়ান্ট স্পেন আর পর্তুগালকে ঘায়েল করে অদম্য মরক্কো।

আয়োজক দেশ হিসেবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রুপপর্বে সুযোগ পাওয়া কাতারসহ মোট চারটি আরব দেশ এবারের বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পায়। গ্রুপপর্বেই সৌদি আরব, তিউনিশিয়া ও কাতার বিদায় নেয়। শেষ ষোলো ও শেষ আট উতরে সেমিতে পৌঁছে গেছে মরক্কো।

এতে করে আরব দেশসহ মুসলিম বিশ্বের এখন একক সমর্থন তাদের প্রতি। যার প্রমাণ পাওয়া গেছে আল থুমামা স্টেডিয়ামে কানাডার বিপক্ষ ম্যাচে। গ্যালারিভর্তি শুধু মুসলিম প্রতিনিধিত্বকারী দেশটির জার্সি আর জাতীয় পতাকা। উপচে পড়া সমর্থকদের সবাই কিন্তু মরক্কোর অধিবাসী ছিলেন না। এদের বেশির ভাগই বিশ্ব মুসলিমরা।

এ বিভাগের আরো খবর