কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ব্রাজিলের কোচ তিতে।
ষষ্ঠ বিশ্বকাপ শিরোপা জেতার মিশন নিয়ে কাতারে আসা হট ফেভারিট ব্রাজিলের টাইব্রেকে দুই গোলের ব্যবধানে পরাজয়ের কয়েক ঘণ্টা পর আসে এ ঘোষণা।
৬১ বছর বয়সী তিতে বলেন, ‘কোচ হিসেবে আমার সুযোগ (চক্র) এখানেই শেষ। আমার চেয়ে আরও অনেক বেশি যোগ্য প্রফেশনাল রয়েছেন। যখন তাদের গোল কিপার ম্যাচসেরা হন, এতেই বোঝা যায় মাঠে খেলার অবস্থা। এখানে হিরো বা ভিলেন হওয়ার কিছু নেই। খেলা বিবেচনায় নেয়ার অনেক কিছু রয়েছে। কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ ছাড়া ক্যারিয়ারে আমি সব কিছুই জিতেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অনেক সময় দুর্দান্ত খেলেছি। আমরা গোলপোস্টে শুট করেছি। বল বারে লেগে ফিরেও এসেছে। এটাই স্বাভাবিক। তবে আমি রেজাল্টকে সম্মান করি। এমন হারে আমি মর্মাহত। তবে আমাদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে আমি ব্যক্তিগতভাবে সন্তুষ্ট ও স্বস্তিতে আছি।’
তিতে আরও বলেন, ‘টাইব্রেকে পঞ্চম শুটটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় ফুটবলারের ওপর অনেক বেশি মানসিক চাপ থাকে। তাই সেটি করার জন্য নেইমারকে রাখা হয়েছিল। দুর্ভাগ্য সেই শটটি আর কাজে লাগেনি।’
চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে কোচের পদ থেকে পদত্যাগের কথা আগেই জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
ক্রোয়েশিয়ার কিপার লিভাকোভিচ একাই প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ভিনিসিয়াস-রিচার্লিসন-রাফিনিয়াদের সামনে। পুরো ম্যাচে ২১টি শট নিয়েছে ব্রাজিল গোলে। যার মধ্যে টার্গেটে ছিল ১১টি। ম্যাচের ১০৩ মিনিটে এমন একটি বল থেকে গোল করেন নেইমার। বাকি ১০টি শট ঠেকিয়ে দেন লিভাকোভিচ।
এবারের বিশ্বকাপে এক ম্যাচে এর চেয়ে বেশি সেভ করেননি আর কোনো কিপার।
বৃহস্পতিবার রাতে ফিফা বিশ্বকাপের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে সেলেকাওদের টাইব্রেকে ৪-২ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ক্রোয়েশিয়া। ১২০ মিনিট শেষে স্কোরলাইন ১-১ গোলের সমতায় থাকলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।
বিশ্বকাপের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে নির্ধারিত সময়ে গোলের দেখা পায়নি ক্রোয়েশিয়া ও ব্রাজিলের কেউই। অতিরিক্ত সময়ে খেলা গড়ালে ১০৫ মিনিটে নেইমারের গোলে ব্রাজিল এগিয়ে গেলেও ১১৭ মিনিটে ব্রুনো পেতকোভিচের গোলে সমতায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া।
আর টাইব্রেকে ৪-২ গোলের ব্যবধানে ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে শেষ পর্যন্ত সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ক্রোয়েশিয়া। আর এ হারে ২০০২ সালের পর থেকে বিশ্বকাপে ইউরোপের কোনো দেশের বিপক্ষে জয় অধরা থাকল ব্রাজিলের।
টাইব্রেকে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে ভ্লাসিচ, মায়ের, মডরিচ ও অরসিচ কেউই গোল মিস করেননি। ব্রাজিলের নেয়া কিকের মধ্যে রদ্রিগোর শট ঠেকিয়ে দেন ক্রোয়েশিয়ার কিপার ডমিনিক লিভাকোভিচ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শটে গোল করেন কাসেমিরো ও পেদ্রো। তবে নির্ধারণী চতুর্থ শটটি মিস করেন অভিজ্ঞ মারকিনিয়োস। পঞ্চম ও শেষ শটটি করার কথা ছিল নেইমারের। তবে গোল ব্যবধান দুইয়ের বেশি হয়ে যাওয়ায় শেষ শটটি করার সুযোগ পাননি নেইমার।
দুঙ্গাকে সরিয়ে তিতে ব্রাজিলের কোচের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ২০১৬ সালে।