বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের সঙ্গে হেরে দ্বিতীয়টিতে ঘুরে দাঁড়ায় আর্জেন্টিনা। মেক্সিকোর বিপক্ষে স্বস্তির জয়ের পর নকআউট পর্বের আশা বাঁচিয়ে রাখে লিওনেল স্কালোনির দল।
এবার পোল্যান্ড-বাধা হার হতে পারলেই মেসির স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে এক ধাপ এগিয়ে যাবে লাতিন আমেরিকার দলটি।
কাতারের নাইন সেভেন্টি ফোর স্টেডিয়ামে বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় পোল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা। গ্রুপ ‘সি’তে থাকা আর্জেন্টিনা পোলিশদের হারাতে পারলে নকআউট পর্বের পাশাপাশি গ্রুপের শীর্ষস্থানটাও নিশ্চিত করবে।
দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা এই মুহূর্তে সৌদি আরবের সঙ্গে সমান তিন পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। পোল্যান্ডের চেয়ে এক পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে আর্জেন্টিনা।
৩৪ বছর বয়সী রবার্ট লেওয়ানডোভস্কি ক্যারিয়ারের প্রায় শেষ দিকে এসে বিশ্বকাপে গোল আদায় করতে পেরেছেন। সৌদি আরবের বিপক্ষে শনিবার ২-০ ব্যবধানে জয়ের ম্যাচে গোলের দেখা পেয়েছেন লেভা।
এর আগের ম্যাচে মেক্সিকোর বিপক্ষে পেনাল্টিতে গোল মিস করেছিলেন বার্সেলোনার ‘গোল মেশিন’ খ্যাত এই স্ট্রাইকার।
ম্যাচ শেষে বার্সার তারকা স্ট্রাইকার জানান, আন্তর্জাতিক সর্বোচ্চ আসরে এতদিনে তার স্বপ্নপূরণ হয়েছে, কিন্তু এখনও তার ও সতীর্থদের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়নি। ১৯৮৬ সালের পর প্রথমবারের মতো গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে শেষ ষোলোতে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়েই কাতারে খেলতে এসেছে পোল্যান্ড।
কাতারে এ পর্যন্ত খেলা দুই ম্যাচে প্রথম দল হিসেবে এখনও কোনো গোল হজম করেনি পোল্যান্ড। এতে তাদের রক্ষণভাগের শক্তিমত্তা প্রমাণ হচ্ছে। এমনকি শেষ চারটি আন্তর্জাতিক ম্যাচেও পোল্যান্ড কোনো গোল হজম করেনি।
আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সে ধারাবাহিকতা ধরে রাখা কিছুটা হলেও কঠিন। দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে আগের ১১ ম্যাচের প্রতিটিতে গোল হজম করতে হয়েছে পোল্যান্ডকে।
অন্যদিকে সৌদি আরবের কাছে প্রথম ম্যাচে ২-১ গোলে হেরে হতবাক হয়ে যাওয়া আর্জেন্টিনা চার দিন পরই মেক্সিকোকে ২-০ গোলে হারিয়ে আবারও লড়াইয়ে ফিরে আসে। দলের সুপারস্টার লিওনেল মেসি ও এনজো ফার্নান্দেসের গোলে জয়ে পায় দলটি।
বিশ্বকাপের শুরুতে ফেভারিটের তকমা নিয়ে কাতারে খেলতে এসে প্রথম ম্যাচেই ছোট দল সৌদি আরবের কাছে হেরে সমর্থকদের হতাশ করা দলটি এখন দারুণ আত্মবিশ্বাসী। সেই আত্মবিশ্বাস পোল্যান্ডের বিপক্ষে কাজে লাগাতে চাইবেন মেসি, দি মারিয়ারা।
পোলিশ বস কেস্লভ মিশনেভিচ অপরিবর্তিত দল নিয়েই আজ মধ্যরাতে মাঠে নামার আশা করছেন। আক্রমণভাগে লেওয়ানডোভস্কির সঙ্গে যথারীতি থাকবেন আরকাদিয়ুস মিলিক।
গোলরক্ষক ভইচেক শেজনি সৌদি আরবের বিপক্ষে প্রথমার্ধে পেনাল্টি রুখে দিয়ে নিজেকে আরও একবার বড় আসরে দারুণভাবে প্রমাণ করেছেন। প্রথম দুই ম্যাচে রক্ষণভাগ সামলানো ম্যাটি ক্যাশ, কামিল গ্লিক, ইয়াকুব কিভয়ের ও বারটোস বেরেসিনস্কির ওপর ভরসা করা হচ্ছে।
সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে শততম ম্যাচ থেকে মাত্র চার ম্যাচ দূরে থাকা অভিজ্ঞ গ্রিগর ক্রাইচোভিয়াকের সঙ্গে বার্মিংহামের ক্রিস্টিয়ান বিয়েলিক থাকবেন।
এদিকে আর্জেন্টিনার লাইনআপ নিয়ে স্কালোনিকে আরও একবার ভাবতে হচ্ছে। বিশেষ করে রক্ষণভাগ ও মধ্যমাঠে পরিবর্তনের আভাস রয়েছে। লিসান্দ্রো মার্তিনেস সেন্টারব্যাকে তার জায়গা ফিরে পেতে পারেন। তার সঙ্গে থাকবেন নিকোলাস ওতামেন্দি।
গনসালো মনতিয়েল, নায়ুয়েল মোলিনা ও হুয়ান ফয়েথ রাইটব্যাক পজিশন নিয়ে লড়াইয়ে আছেন। লেফটব্যাকে থাকবেন নিকোলাস তালিয়াফিকো ও মার্কোস আকুনিয়ার মধ্যে যেকোনো একজন।
প্রথম দুই ম্যাচে বদলি বেঞ্চে থাকা এনজো ফার্নান্দেস প্রথমবারের মতো মূল একাদশে সুযোগ পেতে পারেন। আক্রমণে যথারীতি লাউতারো মার্তিনেস, আনহেল দি মারিয়া ও লিওনেল মেসিই থাকছেন।
হুলিয়ান আলভারেস ও পাওলো দিবালাকে আরও একবার দেখা যেতে পারে বদলি বেঞ্চে।