বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইরান-আমেরিকা ‘মহারণ’ কাতারে

  •    
  • ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ১৯:৫৪

আল থুমামা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় মুখোমুখি হচ্ছে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র। গ্রুপ ‘বি’ থেকে দুই দলেরই নক আউট পর্বে খেলার সুযোগ রয়েছে। তবে মাঠের লড়াই ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠতে পারে দুই দেশের রাজনৈতিক উত্তাপ।

কাতার বিশ্বকাপে মঙ্গলবার গভীর রাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে মাঠে নামছে ইরান। ফুটবলে শক্তির দিক থেকে দুই দলের খুব একটা পার্থক্য নেই। ফিফা রেটিংয়ে যুক্তরাষ্ট্র ১৬ নম্বরে; চার ধাপ পিছিয়ে ইরানের অবস্থান ২০-এ। তবে মাঠের লড়াই ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠতে পারে দুই দেশের রাজনৈতিক উত্তাপ।

নারীর পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে ইরানে চলমান বিক্ষোভ-প্রতিবাদের ঢেউ এরই মধ্যে কাতার বিশ্বকাপের মাঠেও পৌঁছে গেছে। বিক্ষোভে সংহতি জানিয়ে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জাতীয় সংগীত গাননি ইরানি ফুটবলাররা। পাশাপাশি আগের দুই ম্যচে গ্যালারিতেও দৃশ্যমান ছিল ইরানিদের প্রতিবাদ। আমেরিকার বিপক্ষে ইরানের তৃতীয় ম্যাচে ক্ষোভের এই মাত্রা আরও তীব্র হতে পারে।

আল থুমামা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় মুখোমুখি হচ্ছে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র। গ্রুপ ‘বি’ থেকে দুই দলেরই নক আউট পর্বে খেলার সুযোগ রয়েছে। মাঠের লড়াইটাও তাই হাড্ডাহাড্ডি হবে।

ফ্রান্সে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে শেষবার মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। ইরানের ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর তেহরান-ওয়াশিংটন সম্পর্ক ছিন্ন হয়। তারপর সেই ম্যাচেই হয়েছিল দু'দলের প্রথম দেখা।

সে ম্যাচের আগে অভূতপূর্ব এক ঘটনা ঘটেছিল। উত্তেজনায় পানি ঢেলে ইরানি খেলোয়াড়রা প্রতিপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছিলেন সাদা গোলাপ। তোলা হয়েছিল গ্রুপ ছবিও।

ম্যাচে হামিদ ইস্টিলি এবং মেহেদি মাহদাভিকিয়ার গোলে ২-০তে জয় পায় ইরান। সেটি ছিল বিশ্বকাপের কোনো ম্যাচে ইরানের প্রথম জয়। আনন্দের বন্যা বয়ে গিয়েছিল তেহরানের রাস্তায়।

এবার কাতার বিশ্বকাপে গত শুক্রবার ওয়েলসের বিপক্ষে প্রথম জয় পায় ইরান। এর আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৬-২ গোলে হার মানতে হয়েছিল ইরানি ফুটবলারদের। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে এবার জয় পেলে প্রথমবারের মতো নক আউট পর্বে খেলবে তারা।

তবে আমেরিকার বিপক্ষে লড়াইটা কেবল ফুটবল নিয়ে নয়।

ইসলামি শাসনের ইরান যে কয়েকটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে দেশ শাসন করছে, নারীদের হিজাব তার একটি। ৭০ দিনের বেশি সময় ধরে ইরানে হিজাববিরোধী তুমুল বিক্ষোভ চলছে; যেটা এখন ইরানের সরকার পতনের আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।

বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার হিসাবে, বিক্ষোভ দমাতে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে প্রাণ দিয়েছেন চার শতাধিক মানুষ। তাদের মধ্যে আছে ৬০ জনের বেশি শিশু। ইরানি কর্তৃপক্ষ অবশ্য আনুষ্ঠানিক পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি।

হিজাব ঠিকমতো না করার অভিযোগে গ্রেপ্তার কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনি পুলিশি হেফাজতে মারা যান গত ১৬ সেপ্টেম্বর। সেদিন থেকেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজধানী তেহরান। অল্প দিনে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে গোটা ইরানে।

‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ স্লোগানটি বিশ্বকাপেও দেখা যাচ্ছে। অনেক ইরানি বিক্ষোভকারী আশা করছেন জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের পাশাপাশি সাবেক এবং বর্তমান অ্যাথলেটিকরাও তাদের সমর্থন দেবেন।

ইরান দলের অধিনায়ক এহসান হাজিসাফি গত সপ্তাহে দোহায় সংবাদ সম্মেলনে বিক্ষোভে সংহতি প্রকাশ করেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ শুরুর আগে খেলোয়াড়রা জাতীয় সংগীত গাইতে অস্বীকৃতিও জানান। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে জাতীয় সংগীতে কণ্ঠ মিলিয়েছেন খেলোয়াড়রা।

ইংল্যান্ড ম্যাচের পর ইরানে আবার চাঙা হয় বিক্ষোভ। নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতা ও ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দেয়ার ঘটনাও ঘটতে থাকে।

তবে ওয়েলসের বিপক্ষে জয়ের পর নিরাপত্তা বাহিনীর চোখের সামনেই রাস্তায় উদযাপনে মাতে ইরানি জনতা। এর আগে বিক্ষোভ দমাতে যে পুলিশ সরাসরি গুলি ছুড়তে দ্বিধা করেনি, সেই পুলিশ সদস্যরাও সেদিন পতাকা নাড়িয়ে তাদের উৎসাহ দেয়। মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা, রাস্তায় নাচতে-গাইতেও দেখা গেছে তাদের। সেদিন প্রথা ভেঙে ইরানের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত নিউজ ওয়েবসাইটগুলো হেডস্কার্ফহীন উল্লসিত নারীদের ছবি প্রকাশ করে৷

ইরানের শীর্ষ কর্মকর্তারা তাদের দেশে ‘দাঙ্গা’ এবং ‘সন্ত্রাসবাদ’-এর মূল চালিকাশক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করছেন, তবে তা অস্বীকার করেছে ওয়াশিংটন।

এ বিভাগের আরো খবর