ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি পদে থাকছেন না সৌরভ গাঙ্গুলী। তার জায়গায় আসছেন ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেট দলের সদস্য রজার বিনি।
মঙ্গলবার মুম্বাইয়ে ভারতীয় বোর্ডের জরুরি বৈঠক হয়। এতে গাঙ্গুলীকে আর বোর্ডের সভাপতি পদে রাখা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আরেকটি পক্ষ বলছে, সৌরভ নিজেই বিসিসিআই সভাপতি পদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রজার বিনিকে সেখানে বসানো হচ্ছে।
১৮ অক্টোবর মুম্বাইয়ে বিসিসিআই সভাপতি পদসহ অন্যান্য পদের নির্বাচন রয়েছে। নির্বাচনে লড়াই করার জন্য ১১ ও ১২ অক্টোবর মনোনয়ন জমা দেয়ার দিন ঠিক করা হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী নেই দেখে রজার বিনির বোর্ড সভাপতি হওয়া নিশ্চিত। এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের ক্রিকেট মহল ও গাঙ্গুলীর ভক্তরা মনে করছেন, সাবেক এ ভারতীয় অধিনায়ক রাজনীতির শিকার।
তাদের ভাষ্য, খেলার মাঠেও রাজনীতির শিকার হয়েছিলেন সৌরভ। ক্রীড়া প্রশাসকের পদে বসেও একই রকম রাজনীতির শিকার হলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে তাকে সরানোর চেষ্টা চলছিল।
সৌরভকে আইপিএল টুর্নামেন্টের চেয়ারম্যান পদের প্রস্তাবও দেয়া হয়েছিল বলে খবর পাওয়া গেছে, কিন্তু সৌরভ সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন।
সৌরভ গাঙ্গুলী যখন বোর্ড সভাপতি পদে বসেন, তখন একাধিক মামলা ও নানা বিষয়ে জড়িয়ে বোর্ডের অবস্থা খারাপ ছিল। গাঙ্গুলী দৃঢ় হাতে হাল ধরে সেই খারাপ পরিস্থিতি থেকে অনেকটা ভালো জায়গায় এনেছেন। এই সময় তাকে সরিয়ে দেয়াটা স্রেফ রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে মনে করছে ভারতের ক্রিকেট মহল।২০১৯ সালে গাঙ্গুলী বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তখন সৌরভের বিজেপিতে যোগ দেয়া নিয়ে জোর জল্পনা তৈরি হয়েছিল।
বিজেপিতে যোগ দেয়ার আগে সৌরভকে বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট পদ উপহার দেয়া হয়েছে বলে রাজনীতির প্রাঙ্গণ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কিন্তু ‘ভেবে দেখব’ বলে সৌরভ আর কোনো রাজনৈতিক দলে, এমনকি চর্চায় থাকা বিজেপিতে যোগ দেননি।
বিজেপিতে যোগ দেননি বলেই ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের সভাপতি পদ থেকে সৌরভকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে সোচ্চার তৃণমূল কংগ্রেস।
বিসিসিআই নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ।সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘সৌরভকে হঠাৎ করে অপসারণ করা অত্যন্ত অপমানজনক বলে আমি মনে করি। ভারতীয় ক্রিকেট টিমের ক্যাপ্টেন ছিলেন, সৌরভ একজন যথেষ্ট সম্মানিত ব্যক্তিত্ব।’যদিও সৌরভ গাঙ্গুলী রাজনীতির শিকার হয়েছেন বলে মানতে নারাজ বিজেপি।ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী সৌরভ আরও তিন বছর বোর্ডের সভাপতি পদে থাকতে পারতেন, যেভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ছেলে জয় শাহ সম্পাদক পদে থাকছেন।
ট্রেনে, বাসে, ট্রামে এখন একটাই আলোচনা, বিজেপির রাজনীতির শিকার ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী।