গত বছর অভিষেকের পর ৫টি ওয়ানডে খেললেও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে জাতীয় দলের জার্সি চাপানোর অপেক্ষা করতে হয়েছে ফারিহা তৃষ্ণাকে। অবশেষে এশিয়া কাপে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ক্যাপ পান ২০ বছর বয়সী এ পেইসার।
দলে এসেই নিজের সামর্থ্যের জানান দিয়েছেন তৃষ্ণা। দুর্দান্ত বোলিং করে তুলে নিয়েছেন হ্যাটট্রিক। ম্যাচ শেষে তিনি জানালেন, অভিষেক ম্যাচে মনে রাখার মতো কিছু করতে চেয়েছিলেন।
তৃষ্ণা বলেন, ‘অভিষেক ম্যাচ ছিল। চেষ্টা করেছি নিজের ভালোটা দেওয়ার। হ্যাটট্রিক হয়েছে। এতে অনেক খুশি যে অভিষেকেই স্মরণীয় কিছু করতে পেরেছি।’
সিলেটের উইকেটে নিয়মিত খেলেন নারী ক্রিকেটাররা। ঘরোয়া ক্রিকেটের টুর্নামেন্টও হয় এখানে। গত এনসিএলেও তৃষ্ণা এ মাঠে দারুণ বোলিং করেছেন। যে কারণে সিলেটের উইকেটকে নিজের জন্য লাকি মনে করছেন বাঁহাতি এ পেইসার।
তৃষ্ণা বলেন, ‘আত্মবিশ্বাস অনেক বেশি ছিল। এনসিএলে কিছু ভালো খেলেছি। এই উইকেটটা আমার জন্য সৌভাগ্যের। কারণ যখনই আমি খেলি, ভালো কিছু চেষ্টা করি অথবা হয়। অভিষেক ম্যাচেই বিশ্বাস ছিল ভালো কিছু হবে বা করতে হবে।
‘বল নিজের জায়গায় করার চেষ্টা করেছি। কোনো ভ্যারিয়েশনের চেষ্টা করিনি। শুধু স্বাভাবিকভাবে জায়গা ঠিক রাখার চেষ্টা করেছি।’
এশিয়া কাপে হ্যাটট্রিক করে রেকর্ডবুকে নাম লেখালেও গতমাসে আবুধাবির বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে মাঠে নামার সুযোগ পাননি। সে জন্য হতাশা নেই তৃষ্ণার।তিনি যোগ করেন, ‘প্রথমত আমি হতাশ ছিলাম না। কারণ জানি ওপরওয়ালা সব সময় পাশে থাকেন। ভেবেছি হয়ত আজ অভিষেক হবে না, কিন্তু পরে হবে। টিম কম্বিনেশনের উপর নির্ভর করে। আমার বিশ্বাস ছিল যেদিন আমি খেলব ভাল খেলব। কাজেই হতাশ ছিলাম না। নিজেকে প্রস্তুত করেছি।’
মালয়েশিয়ার বিপক্ষে নামার আগে টি-টোয়েন্টি ক্যাপ নিয়েছেন দলের সাবেক অধিনায়ক জাহানারা আলমের হাত থেকে। একই সঙ্গে সিনিয়রদের কাছ থেকেও পেয়েছেন উৎসাহ।
তৃষ্ণা বলেন, ‘ডেব্যু ক্যাপ উনার কাছ থেকে নিতে পেরেছি এটা অনেক ভালো লাগছে। উনি অভিজ্ঞ ক্রিকেটার এবং শুরু থেকে ক্রিকেটে আছেন। বাংলাদেশের সেরা পেইস বোলার। সেই সঙ্গে উনি উইশ করেছেন যেন দিনটা আমার ভালো হয়। দলের সব সিনিয়র অনেক ভালোবাসা নিয়ে উইশ করেছে।’
বাংলাদেশের একেবারে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে বেড়ে ওঠা ও ক্রিকেটে হাতেখড়ি তৃষ্ণার। অল্প কথায় জানালেন শুরুর দিককার সংগ্রামের কথা। ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় সাফল্যের দিনে স্মরণ করলেন মা-বাবা ও শিক্ষকদের কথা।
তিনি বলেন, ‘পঞ্চগড়ে ক্রিকেটটা মেয়েদের জন্য অনেক কঠিন। ক্রিকেট বলতে ছেলেদের ছাড়া মেয়েদের জন্য কিছুই নেই। আমাদের মাঠ আছে অথচ অনুশীলন করা যাচ্ছে না। সমর্থনের কথা যদি বলেন, তাহলে বাবা-মায়ের অনেক সমর্থন পেয়েছি। ক্রিকেটে আসার পেছনে আমার স্কুলের শিক্ষক আমিনুদ্দিন স্যারের অনেক সাহায্য ছিল।’