কে বলবে এই শ্রীলঙ্কাই গ্রুপ পর্বে আফগান বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই খাবি খাচ্ছিল? কে বলবে এই লঙ্কানরাই বল হাতে মার খেয়েছিল জাজাই-জাদরানদের হাতে?
গ্রুপ পর্বের অসহায় শ্রীলঙ্কা যেন বদলে গেল বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ের মাধ্যমেই। নাটকীয় সেই জয়ে সুপার ফোর নিশ্চিত করে শ্রীলঙ্কা। এরপর ভিন্ন চেহারা নিয়ে জয়ের ধারায় এগিয়ে চলেছে শ্রীলঙ্কা।
শ্রীলঙ্কার এশিয়া কাপের শুরুটা হয়েছিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারের মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশকে হারিয়ে সুপার ফোর নিশ্চিত করলে সেখানেও তাদের প্রথম ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পায় আফগানদের।
গ্রুপ পর্বে আফগানদের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করলেও সুপার ফোরে এসে ঘুরে দাঁড়িয়েছে লঙ্কানরা। সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে আফগানদের বিপক্ষে ৪ উইকেটের জয় দিয়ে শনিবার মধুর প্রতিশোধ নিল শ্রীলঙ্কা।
আফগানিস্তানের দেয়া ১৭৬ রানের লক্ষ্যের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৫ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখেই জয় বাগিয়ে মাঠ ছাড়ে লঙ্কানরা।
রান তাড়ায় ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আফগান বোলারদের ওপর চড়াও হন দুই লঙ্কান ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস। এই দুই ওপেনারের ব্যাটিং তাণ্ডবে উদ্বোধনী জুটিতে ৬২ রান তোলে শ্রীলঙ্কা।
১৯ বলে ৩৬ করা কুশল মেন্ডিসকে বিদায় করে মারকুটে এই জুটি ভাঙেন নাভিন উল হক। স্কোরবোর্ডে ১৮ রান যোগ করতেই মাঠ ছাড়তে হয় নিশাঙ্কাকেও। মুজিব উর রহমানের শিকার বনে মাঠ ছাড়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২৮ বলে ৩৫ রান।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে লঙ্কানদের উইকেট তুলে নিলেও রানের ঘোড়ার লাগাম টানতে পারছিলেন না আফগান বোলাররা। দানুষ্কা গুনাথিলাকার ২০ বলে ৩৩, ভানুকা রাজাপাকসের ১৪ বলে ৩১ আর শেষদিকে হাসারাঙ্গা ডি সিলভার ৯ বলে ১৬ রানের সুবাদে ৪ উইকেট হাতে রেখেই জয় দিয়ে সুপার ফোর শুরুর উল্লাসে মেতে ওঠে শ্রীলঙ্কা।
এর আগে শারজায় আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা বেশ দুর্দান্ত হয় আফগানিস্তানের। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই লঙ্কান বোলারদের ওপর চড়াও হন আফগান ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ।
ইনিংসের তৃতীয় আর চতুর্থ ওভার মিলিয়ে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ২৯ রান। তবে পঞ্চম ওভারের চতুর্থ বলে মধুশঙ্কা ভাঙেন সেই জুটি। বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় ওপেনার হজরতউল্লাহ জাজাইকে। মাঠ ছাড়ার আগে তিনি খেলেন ১৬ বলে ১৩ রানের ইনিংস।
আর তাতেই ভাঙে আফগানদের ২৯ বলে ৪৬ রানের উদ্বোধনী জুটি। ভালো শুরুর মধ্য দিয়ে পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৪৯ রান তোলে আফগানরা।
এরপর শারজায় ঝড় তোলেন গুরবাজ। ২২ বলে তুলে নেন দুর্দান্ত এক অর্ধশতক। যা কিনা দলের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় দ্রুততম।
ফিফটি তুলে নিয়ে আরও মারকুটে হয়ে ওঠেন গুরবাজ। ম্যাচের ১৬তম ওভারে এসে থামে তার ঝড়। ৪৫ বলে ৮৪ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে হাসারাঙ্গার হাতে ধরা দিয়ে তাকে ফিরতে হয় আসিথা ফার্নান্দোর শিকার বনে।
এক ওভার বাদেই ৩৮ বলে ৪০ করে মধুশঙ্কার দ্বিতীয় শিকার বনে ফেরেন ইব্রাহিম জাদরান।
কিন্তু শেষ দুই ওভারে প্রত্যাশিত রান পায়নি আফগানরা। যার ফলে উইকেটের বিনিময়ে লঙ্কানদের সামনে ১৭৬ রানের লক্ষ্য দাঁড় করাতে সক্ষম হয় আফগানরা।