২০২৬ বিশ্বকাপ ৩২টি দলের পরিবর্তে বর্ধিত কলেবরে ৪৮টি দল নিয়ে অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফিফা। এশিয়া থেকেও সে কারণে এই আসরে আটটি দল বাছাইপর্ব পেরিয়ে সরাসরি খেলার সুযোগ পাচ্ছে। আন্ত:মহাদেশী প্লে-অফ খেলে আরও একটি দলেরও এই অঞ্চল থেকে খেলার সুযোগ রয়েছে।যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও ক্যানাডায় হতে যাওয়া এ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে বাছাইপর্বের নতুন কাঠামো চূড়ান্ত করেছে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি)। বুধবার বাছাইপর্বের কাঠামো ও সম্ভাব্য সূচিও প্রকাশ করেছে এএফসি। ২০২৩ সালে অক্টোবরে শুরু হবে এশীয় অঞ্চলের বাছাইপর্ব। আগের দুই বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের মতই এবারের এই বাছাইপর্বের ফলাফল ২০২৭ এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বেও কার্যকর করা হবে।এএফসি সদস্যভূক্ত ৪৭টি দেশকেই এই বাছাই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে।ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে এএফসির ২৬ থেকে ৪৭ নম্বরে থাকা ২২টি দল খেলবে প্রাথমিক প্লে-অফে। ড্রতে বাছাই করা হবে কোন ১১টি দল কোন ১১টি দলের বিপক্ষে খেলবে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে দুই লেগের প্লে-অফ বাধা পেরিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা ২৫টি দলের সঙ্গে যোগ দেবে ১১টি দল। প্লে-অফ থেকে বিশ্বকাপে জায়গা পেতে এশিয়ার একটি দলকে কমপক্ষে তিনটি রাউন্ড পেরোতে হবে।প্রিলিমিনারি যৌথ বাছাইপর্ব : রাউন্ড ওয়ান (বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ):ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে এশিয়ার শেষ ২২টি অর্থাৎ এএফসি র্যাঙ্ক অনুযায়ী ২৬-৪৭ নম্বরে থাকা দলগুলো এই পর্বে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে খেলবে। এ পর্ব থেকে বিজয়ী ১১টি দল পরের রাউন্ডে যাবে। পরাজিত দলগুলো বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন এখানে শেষ হয়ে যাবে।প্রিলিমিনারি যৌথ বাছাইপর্ব : রাউন্ড টু (বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ):এ পর্বে এশিয়ান হেভিওয়েট দলগুলো খেলতে আসবে। এশিয়ান র্যাঙ্কিংয়ে থাকা ১-২৫ নম্বরে থাকা দলগুলো আগের রাউন্ডের বিজয়ী ১১ দলের সাথে এখানে যোগ দেবে। সর্বমোট ৩৬টি দলকে ৯টি গ্রুপে বিভক্ত করা হবে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে রাউন্ড রবিন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। গ্রুপ-এ থেকে গ্রুপ আই এই ৯টি গ্রুপের শীর্ষ দুটি করে দল মিলিয়ে মোট ১৮টি দল বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের পরবর্তী রাউন্ডে যাবে। আর এই ১৮টি দল সরাসরি ২০২৭ সালের এশিয়ান কাপের টিকিট পাবে। বাদ পড়া ১৮টি দলের বিশ্বকাপে খেলার জন্য আরো চার বছর অপেক্ষায় থাকতে হবে।এএফসি এশিয়ান বাছাইপর্ব (শুধুমাত্র বিশ্বকাপ):দ্বিতীয় রাউন্ডের বিজয়ী ১৮টি দলতে তিন গ্রুপে ভাগ করা হবে। আবার এখানে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে রাউন্ড রবিন লিগ অনুষ্ঠিত হবে। তিনটি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুটি করে দল অর্থাৎ মোট ৬টি দল ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে।গ্রুপের তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে থাকা দলগুলো যাবে প্লে-অফে। আর প্রতি গ্রুপের শেষ দুই দল বিশ্বকাপ স্বপ শেষ করে শুধুমাত্র এশিয়ান কাপ নিয়ে মনোযোগী হবে।এশিয়ান প্লে-অফ (শুধুমাত্র বিশ্বকাপ):আগের গ্রুপের তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে থাকা ৬টি দল আবারও দুই গ্রুপে হয়ে সিঙ্গেল রাউন্ড রবিন ফরম্যাটে একে অপরের মোকাবেলা করবে। এই পর্বে প্রতিটি দল মাত্র দুটি করে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। দুই গ্রুপের বিজয়ী দুটি দল ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট পাবে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা দুটি দল আন্ত:মহাদেশী প্লে-অফে খেলতে যাবে।আন্ত:মহাদেশীয় প্লে-অফ:এখানে খেলতে আসা দলগুলোর সামনে বিশ্বকাপে খেলার শেষ সুযোগ থাকবে। কিন্তু অন্য মহাদেশীয় দলগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে এশিয়ান প্রতিনিধিদের মূল পর্বেও টিকিট পাওয়া অনেকটাই কঠিন হয়ে যাবে। কোন মহাদেশীয় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে এশিয়া খেলবে সেটা এখনো নিশ্চিত হয়নি।এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের প্লে-অফ (শুধুমাত্র এশিয়ান কাপ):
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব যেহেতু বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সাথে সমান্তরাল ভাবে চলবে সে কারনে এখানে প্রতিটি ম্যাচের ফলাফলই গুরুত্বপূর্ণ। প্রিলিমিনারি যৌথ বাছাইপর্বে রাউন্ড ওয়ানে যে ১১টি দল পরাজিত হয়েছিল তার মধ্যে সর্বোচ্চ র্যাঙ্কধারী দলটি বাদে বাকি ১০টি দল পাঁচটি হোম অ্যান্ড এ্যাওয়ে ম্যাচে একে অপরের সাথে লড়বে। জয়ী পাঁচটি দল এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের চূড়ান্ত রাউন্ডে উত্তীর্ন হবে।এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের চূড়ান্ত রাউন্ড (শুধুমাত্র এশিয়ান কাপ:প্লে-অফের পাঁচ বিজয়ী ও সর্বোচ্চ র্যাঙ্কধীর দলটির সাথে বিশ্বকাপ প্রিলিমিনারি যৌথ বাছাইপর্বের রাউন্ড টুয়ে বাদ পড়া ১৮টি দল অর্থাৎ সর্বমোট ২৪টি দল এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের চূড়ান্ত রাউন্ডে খেলবে। ২৪টি দলকে ৬টি গ্রুপে বিভক্ত করা হবে। প্রতি গ্রুপের শীর্ষ দলগুলো ২০২৭ এশিয়ান কাপে খেলবে।