দ্বীপরাষ্ট্র সেন্ট লুসিয়ার ক্যাস্ট্রিস ফেরি টার্মিনাল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় মার্টিনেকের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল পার্লে এক্সপ্রেসের ফেরি। সে ফেরিতে করেই বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দল যাত্রা শুরু করে ডমিনিকার উদ্দেশে।
সেন্ট লুসিয়া থেকে মার্টিনেক হয়ে ডমিনিকা যাত্রায় সময় লাগে ৫ ঘণ্টা। এক দ্বীপ থেকে আরেক দ্বীপে যেতে সাগর পার হতে হয় ফেরিতে করে।
সে যাত্রার শুরুতে ক্রিকেটাররা উপভোগ করেন। তবে বিপত্তি শুরু হয় মাঝসাগরে যাওয়ার পর।
সময় যত গড়াতে থাকে, ফেরিতে থাকা ক্রিকেটাররা অনুভব করতে থাকেন ঢেউ আর ফেরির দুলোনি। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ভয়।
ফেরিতে ভ্রমণের এক পর্যায়ে টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, বাঁহাতি পেইসার শরিফুল ইসলাম, উইকেটকিপার নুরুল হাসান সোহান, ম্যানেজার নাফিস ইকবাল এবং সাপোর্ট স্টাফের এক সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়েন।
ওই ক্রিকেটারদের অনেকে যাত্রার আগে ওষুধ খেয়ে নিয়েছিলেন। এরপরও তাদের মধ্য থেকে কয়েকজন বমি করেন। কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে শুয়ে পড়েন ফেরির মেঝেতে।
ঘণ্টা দেড়েক ভয়ানক এ অভিজ্ঞতার পর মার্টিনেক নামক দ্বীপে দেয়া হয় যাত্রাবিরতি। সে সময় কয়েকজন ক্রিকেটার অনুরোধ করেন, তাদের যেন ভ্রমণের বাকি পথটুকু বিমানে নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
যাত্রায় এ দ্বীপে বিরতি দিলেও বিমানের টিকিট জোগাড় করা সম্ভব হয়নি। এতে করে বাকি পথ যেতে হয় ফেরিতে করেই। তবে বিরতির পরের যাত্রায় সাগর কিছুটা শান্ত থাকায় ক্রিকেটাররাও স্বস্তি পান। মনের ভয় দূর না হলেও বিকল্প উপায় না থাকায় বিষয়টি মেনে নিতে হয় তাদের।
দলের এমন পরিস্থিতিতে কেউ কেউ ভ্রমণটা উপভোগ করেছেন। সবচেয়ে বেশি উপভোগ করেছেন সাকিব আল হাসান। এ ছাড়া ইবাদত হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন ও এনামুল হক উপভোগই করেছেন যাত্রাটা।
স্বস্তির খবর হচ্ছে এমন ভয়াবহ যাত্রা শেষে সেন্ট লুসিয়া থেকে ডোমিনিকায় পৌঁছেছেন দলের সদস্যরা। তারা এখন বিশ্রামে আছেন।
সবকিছু মোটামুটি স্বাভাবিক। সবাই সুস্থ আছেন। পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘ওরা ফেরিতে ভ্রমণ করার প্রস্তাব দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে যে আমরা রাজি হয়েছি, তা নয়। ওরা যখন জানাল আর বিকল্প নেই, তখন তাদের ওপর নির্ভর করতে হবে। এই ফেরিতে প্রায় ২৫০ জনের বহর গেছে।’
ডোমিনিকায় ৩ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে রোববার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই ভয়ংকর যাত্রার পর বড় বিরতি না নিয়েই শুরু হচ্ছে মাঠের লড়াই।