টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় টেস্ট ক্রিকেটে ১০০তম হারের শঙ্কা নিয়ে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৭৪ রানের লিডের জবাবে ৬ উইকেট ১৩২ রান তুলে দিন শেষ করে সফরকারীরা।
দ্বিতীয় ইনিংসে ক্যারিবীয়দের থেকে এখনও ৪২ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। দিন শেষে ১৬ রানে অপরাজিত রয়েছেন নুরুল হাসান সোহান। রানের খাতা না খুলে তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
ক্যারিবীয়দের লিড অল্পতেই আটকে দিয়ে নিজেদের শুরুটা খুব একটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে দলীয় ও নিজের ৪ রানেই কিমার রোচের বলে উইকেটের পেছনে জশুয়া ডি সিলভার হাতে ধরা পড়ে সাজঘরের পথ ধরেন তামিম।
তার বিদায়ে দলকে এগিয়ে নেয়ার গুরুভার কাঁধে তুলে নেন মাহমুদুল হাসান জয়। দেখেশুনে খেলতে থাকলেও ইনিংসের সপ্তম ওভারে রোচের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। খেই হারিয়ে ব্ল্যাকউডের তালুবন্দি হয়ে ২১ বলে ১৩ করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি।
রোচের তৃতীয় শিকারে পরিণত হয়ে ব্যর্থতার খাতায় নাম ওঠান এনামুল হক বিজয়ও। এক ওভার বাদেই সরাসরি স্টাম্প হারিয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।
৩২ রানেই তিন টপ অর্ডারকে হারিয়ে পালছেঁড়া নৌকার মতো দিশেহারা হয়ে পড়া বাংলাদেশের শিবিরে ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন কুমার দাস। খাদের কিনারা থেকে দলকে টেনে তোলার মিশনে নামেন এ দুই ব্যাটার। সেই চেষ্টা পুরোপুরি বানচাল করে দেন জেইডেন সিলস।
এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে লিটন দাসকে ফেরান ১৯ রানে। এতে করে ৫৭ রানে পতন ঘটে বাংলাদেশের চতুর্থ উইকেটের।
উইকেটের এক প্রান্ত আগলে রেখে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস মেরামতে নামেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সাকিবের সঙ্গে গড়া তার ৪৭ রানের জুটিতে ছন্দ ফিরে পায় বাংলাদেশ।
দলীয় ১০৪ রানে শান্তকে সাজঘরে ফেরান জোসেফ। এর আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৪২ রান।
শান্তর বিদায়ের রেশ না কাটতেই ১৬ রানে জোসেফ মাঠছাড়া করেন সাকিবকেও। আর তাতেই আরও একবার বড় পরাজয় চোখ রাঙানি দেয় বাংলাদেশকে।
দিনের শেষ ভাগে এসে আর বিপদ হতে দেননি সোহান ও মিরাজ। অপরাজিত থেকে ১৩২ রানের পুঁজি তুলে দিন শেষ করেন এই দুই ব্যাটার।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ১০৬ রানের লিড নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলার শুরুতেই স্বাগতিকরা হারায় আগের দিনের অপরাজিত থাকা জশুয়া ডি সিলভাকে। দিনের দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে মেহেদী হাসান মিরাজের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।
উইকেটের এক প্রান্ত আগলে ধরে আলজারি জোসেফকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন কাইল মায়ার্স। নিজে উইকেটে থিতু হয়ে বসলেও সঙ্গী জোসেফকে ফিরতে হয় ৬ রান করেই।
উইকেটের পেছনে খালেদ আহমেদের বলে লিটনের হাতে ধরা দিয়ে দলীয় ৩৬৩ রানের মাথায় বিদায় নেন তিনি।
পরে মায়ার্সের সঙ্গী হন কিমার রোচ। দলকে বড় লিডের পথে টিকিয়ে রাখতে শুরু করেন লড়াই, কিন্তু বাদ সাধে বৃষ্টি।
দিনের দশম ওভারের পরপরই সেইন্ট লুসিয়ায় নেমে আসে বৃষ্টি। এতে বন্ধ করে দেয়া হয় দিনের খেলা।
বৃষ্টিবাধা কাটিয়ে দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে কাইল মায়ার্স ফেরেন খালেদের শিকার হয়ে। মাঠ ছাড়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৪৬ রান।
শেষের দিকে কিমার রোচের অপরাজিত ১৮, অ্যান্ডারসন ফিলিপের ৯ ও জেইডেন সিলসের ৫ রানে ভর করে ৪০০ রান পেরোয় উইন্ডিজ।
শেষ পর্যন্ত বেশি দূর যাওয়া হয়নি স্বাগতিকদের। ১৭৪ রানের লিড দিয়েই ইনিংসের ইতি টেনে দেন বাংলাদেশি বোলাররা।