দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতায় হেসেখেলে পাঁচ সেশন হাতে রেখেই জয় পেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বাংলাদেশের দেয়া ৮৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনের ২৭ মিনিটের মাথায় ৭ উইকেটের জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা।
চতুর্থ দিনে জয় বাগিয়ে নেয়ার জন্য ক্যারিবীয়দের প্রয়োজন ছিল ৩৫ রান। হাতে ছিল সাত উইকেট। এমন অবস্থানে আগের দিনের অপরাজিত দুই ক্যারিবীয় ব্যাটারের ভেতর দেখা যায় দ্রুত রান তুলে নেয়ার তোড়জোড়।
তৃতীয় দিনের শেষ সেশনে পরপর তিন উইন্ডিজ ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরত পাঠায় টাইগার বোলাররা। কিন্তু চতুর্থ দিনের শুরু থেকেই জন ক্যাম্পবেল ও জারমিন ব্ল্যাকউডের ব্যাটকে থামাতেই পারছিলেন না তারা।
ক্যাম্পবেল ও ব্ল্যাকউডের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত আর উইকেট হারায়নি স্বাগতিকরা। ৫৮ রানে ক্যাম্পবেল ও ২৬ রানে ব্ল্যাকউড অপরাজিত থেকে ৭ উইকেটের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। এই জয়ের ফলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে লিড নিল ক্যারিবীয়রা।
এর আগে অ্যান্টিগায় টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ১০ ব্যাটারের ভেতর মাত্র তিনজন সক্ষম হন দুই অঙ্কের রানের ঘরে পৌঁছতে। বাকি সাত ব্যাটারকে আটকে থাকতে হয় এক অঙ্কের ঘরে। যার ভেতর ছয়জনকেই সাজঘরে ফিরতে হয় রানের খাতা খোলার আগেই।
তবে দলপতি সাকিব আল হাসানের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দলীয় সংগ্রহ ১০০ পার করে বাংলাদেশ। সাকিবের ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৫১ রান।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ১০৩ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিকরাও ব্যাটিংয়ের সুবিধা করতে পারেনি। বাংলাদেশী বোলারদের বোলিং নৈপুণ্যে ২৬৫ রানেই গুটিয়ে যায় স্বাগতিকদের প্রথম ইনিংস। এর ফলে বাংলাদেশের সামনে দ্বিতীয় ইনিংসের লিড দাঁড়ায় ১৬২ রানের।
প্রথম ইনিংসের দৈন্যদশা বাংলাদেশের পিছু ছাড়েনি। দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাটারদের লাগাতার বাজে পারফরম্যান্সে তৃতীয় দিনেই ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কা জাগে বাংলাদেশের।
এবারও ত্রাতা হয়ে আসেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। নুরুল হাসান সোহানকে নিয়ে ১২৩ রানের জুটি গড়ে দলকে টেনে নেন খাদের কিনারা থেকে। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে দুই অর্ধশতকের ইনিংসে ভর করে ইনিংস পরাজয়ের চোখ রাঙ্গানি উপেক্ষা করে লিড নেয় বাংলাদেশ।
দুইজনের ব্যাটে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বড় লিড ছুড়ে দেয়ার স্বপ্নও দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ছয় রানের ব্যবধানে এই দুই ব্যাটারের বিদায়ের ফলে বড় লিডের আশা শেষ হয়ে যায়।
শেষ পর্যন্ত ক্যারিবীয়ানদের সামনে জয়ের জন্য ৮৪ রানের লক্ষ্য দাঁড় করাতে সক্ষম হয় সফরকারীরা।
তবে লক্ষ্যটা মামুলি হলেও সেই পথ মোটেও মসৃণ ছিল না স্বাগতিকদের জন্য। দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই স্বাগতিকদের ভয় ধরিয়ে দেয় টাইগার বোলাররা।
খালেদ হোসেনের বোলিং তোপ সামলাতে গিয়েই বিপাকে পড়তে হয় ক্যারিবীয় টপ অর্ডারকে। দলীয় ৯ রানেই খালেদ তিন উইকেট তুলে নিয়ে আরও একবার স্বপ্ন দেখান বাংলাদেশকে। তৃতীয় দিনের শেষ সেশনে তিন উইকেটের পতন ব্যাকফুটে ঠেলে দেয় স্বাগতিকদের।
তবে জন ক্যাম্পবেল ও জারমিন ব্ল্যাকউডের দায়িত্বশীল ও ধৈর্য্যশীল ব্যাটিংয়ের সুবাদে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪৯ রান তুলে দিন শেষ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
শেষ দিনে জয় বাগিয়ে নিতে বেশি দেরি করেননি এই দুই ব্যাটার। চতুর্থ দিন শুরুর ২৭ মিনিটের ভেতর ৩৫ রান তুলে ম্যাচের ইতি টানেন তারা। দলকে এনে দেন ৭ উইকেটের এক সহজ জয়।