আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ২০২১-২৩ মৌসুমে খুব একটা ভালো অবস্থানে নেই বাংলাদেশ। ছয় টেস্টের ভেতর কেবল একটিতে জয়ের দেখা মেলায় টেবিলের আটে অবস্থান করছে বাংলাদেশ।
অন্যদিকে চার ম্যাচে দুই জয়, দুই হার নিয়ে টেবিলের পঞ্চম স্থানে রয়েছে শ্রীলঙ্কা।
চলতি বছর বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত খেলেছে দুটি টেস্ট সিরিজ। দুটিই বিদেশের মাটিতে। সেখানে তিন হারের বিপরীতে বাংলাদেশের অর্জন কেবলমাত্র একটি জয়। আর লঙ্কানরা ঘরের মাটিতে একটি সিরিজ জিতলেও তাদের হারতে হয়েছে বিদেশের মাটিতে।
সিরিজে জয় পেলে দুই দলেরই সামনে বড় সুযোগ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের টেবিলের উপরে উঠে আসার।
যদি সিরিজের দুটি ম্যাচেই জয়ের দেখা মেলে বাংলাদেশের তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টপকে টেবিলের সাতে উঠে আসবে বাংলাদেশ। একটিতে জয় পেলে থাকতে হবে বর্তমান অবস্থানেই। শুধু বাড়বে পয়েন্ট।
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা যদি সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয় পায়, তাহলে তাদের সামনে সম্ভাবনা আছে টেবিলে চারে উঠে আসার। আর বাংলাদেশকে ক্লিন সুইপ করলে ভারতকে টপকে তিনে উঠে আসবে লঙ্কানরা।
এমন অবস্থায় থেকে রোববার সিরিজের প্রথম টেস্টে মাঠে নামতে যাচ্ছে দুই দল। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সকাল ১০টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে এখন পর্যন্ত বিদেশের মাটিতে জয়ের দেখা পায়নি শ্রীলঙ্কা। তাই বাংলাদেশের মাটিতে ডেডলক ভাঙতে বদ্ধপরিকর তারা।
আর ঘরের মাঠে চলতি বছরের এটি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট। এখন পর্যন্ত ঘরের মাঠে লঙ্কানদের বিপক্ষে জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। তাই অধরা সেই জয়ের আশায় রোববার সকালে মাঠে নামবে মুমিনুল বাহিনী।
এদিকে বাংলাদেশের মাটিতে এখন পর্যন্ত খেলা আট ম্যাচের ভেতর ছয়টিতেই জয় তুলে নিয়ে মাঠ ছেড়েছে শ্রীলঙ্কা। দুটি টেস্টে আসেনি কোনো ফলাফল। জয়ের ধারা ধরে রাখার মিশনে সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে নামতে যাচ্ছে সফরকারীরা।
শেষ দুই টেস্টের কোনটিতেই জয়ের দেখা পায়নি দুই দলের একদলও। তাই দুই দলের সামনেই অবধারিতভাবে প্রধান লক্ষ্য থাকছে হারের বৃত্ত ভেঙে জয়ের ধারায় ফেরা।
ঘরের মাঠে প্রথম টেস্টের শুরুর দিন থেকেই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে দাপুট ধরে রেখে খেলার মনোভাব ব্যক্ত করেছেন টাইগার দলপতি মুমিনুল হক। একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনায় পুরো ম্যাচ না খেলে সময়ের সাথে সাথে পরিকল্পনা করে পাঁচ দিনই শ্রীলঙ্কাকে চাপে রাখতে চান তিনি।
ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মুমিনুল বলেন, ‘আমরা কীভাবে ৫ দিন ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি, দাপট দেখাতে পারি এটাই আমাদের চিন্তা। ওদের নিয়ে এত চিন্তা করছি না। একেবারে ৫ দিনের চিন্তা না করে একদিন একদিন করে চিন্তা করতে হবে।’
তবে বাংলাদেশের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা হিসেবে থাকছে শেষ সময়ে সাকিব আল হাসানের খেলার জন্য সবুজ সংকেত পাওয়া। ব্যাটিং বোলিং উভয় ইউনিটেই সাকিবের সার্ভিসটা প্রতিপক্ষের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে নিশ্চিতভাবেই।
সাকিবের সঙ্গে সিরিজের প্রথম টেস্টে স্পিন আক্রমণে থাকছেন তাইজুল ইসলামও, যার কিনা এই চট্টগ্রামে রয়েছে দুর্দান্ত বোলিংয়ের রেকর্ড।
ব্যাটিং ইউনিটের শুরুটা হতে যাচ্ছে তামিম ইকবালের হাত ধরে। প্রায় ১৫ মাস পর ঘরের মাঠে সাদা পোশাকে দেখা যাবে টাইগার এই ওপেনারকে। সেই সঙ্গে লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসানের মতো সিনিয়র খেলোয়াড়দের পাশপাশি দায়িত্ব সামলানোর গুরুভার পড়বে নাজমুল হাসান শান্ত, মাহমুদুল হাসান জয়ের মতো তরুণ ক্রিকেটারদের ওপর।
এদিকে লঙ্কান ওপেনার দিমুথ কারুনারাত্নে, ওসাদা ফার্নান্দো, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, দিনেশ চান্ডিমাল ভয়ের কারণ হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেন বাংলাদেশের বোলারদের কাছে।
আর বল হাতে কামিন্দু মেন্ডিস, লাসিথ এম্বুলদেনিয়া, আসিথা ফার্নান্দো বিপদে ফেলার সক্ষমতা রাখেন টাইগার ব্যাটারদের।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে কোন ফরমেশনে খেলতে যাচ্ছে দুই দল সেটি এখনও জানা যায়নি। ম্যাচের দিন সকালে উইকেট দেখে একাদশ সাজানো হবে বলে জানানো হয়েছে টাইগার শিবির থেকে।
অন্যদিকে সংবাদ সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে শ্রীলঙ্কার। তাই তাদের পক্ষ থেকে জানা যায়নি কেমন হতে যাচ্ছে তাদের একাদশ।
তবে ধারণা করা হচ্ছে, টাইগারদের বিপক্ষে স্পিন আক্রমণকে জোর দিয়ে একাদশ সাজাতে পারে লঙ্কানরা। আর টাইগারদের একাদশ হতে পারে তিন স্পিনার ও দুই পেইসার নিয়ে।