বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে একটা কথা বেশ প্রচলিত। সেটি হলো জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের নাকি মেজাজটাই নেই টেস্ট খেলার। আর এই কথার যথেষ্ট প্রমাণ টেস্ট ক্রিকেটে জাতীয় দলের যাত্রার শুরু থেকেই দিয়ে আসছিল।
তবে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন সেই চিন্তাধারা বদলে দিলেন মাহমুদুল হাসান জয়।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে খেলেছেন সবে তিন টেস্ট। যে কন্ডিশনে জাতীয় দলের বাকিরা খেলতে খাবি খাচ্ছিলেন বার বার, সেই ব্যাটিং বিরুদ্ধ কন্ডিশনে পারফর্ম করে ভিন্নভাবে নিজের আগমনী বার্তার জানান দেন এই ওপেনার।
উইকেটের এক প্রান্তে যখন বাকিরা আসা যাওয়ার মিশনে ব্যস্ত ঠিক সে সময় নিজের জাত চেনানোর মিশনে নামেন জয়। প্রতিপক্ষের বোলারদের বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না করেই খেলতে থাকেন সাবলীল ভঙ্গিতে।
সময়ের প্রয়োজনে কখনো হয়েছেন আগ্রাসী, কখনোবা রক্ষণাত্মক। ব্যাটিং ভেরিয়েশনে বারবার বিভ্রান্ত ও বিচলিত করতে দেখা গেছে তাকে প্রতিপক্ষের বোলারদের। প্রোটিয়া বোলারদের দুর্দান্ত সব ডেলিভারিগুলো ব্লক করার পর তার হাসি ছড়ায় মুখে, যেন জানান দিচ্ছিলেন তার চাপ নেয়ার ক্ষমতার কথা।
দেখেশুনে খেলতে খেলতে ডানহাতি এই ওপেনার নিজের নাম লেখান সাউথ আফ্রিকার মাটিতে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রানকারী বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে। সেখানেই থেমে থাকেননি জয়। নিজেকেই নিজে ছাড়িয়ে গেছেন। তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম শতক।
সাউথ আফ্রিকার মাটিতে তাদের বিপক্ষে এটি কোনো বাংলাদেশি ক্রিকেটারের প্রথম সেঞ্চুরি। ২৬৯ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি।
জয়ের ঝলক প্রথমবারের ক্রিকেট বিশ্ব দেখেছিল মাউন্ট মঙ্গাইনুতে। সেটি ছিল জয়ের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ও দেশের বাহিরের প্রথম টেস্ট। সেবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষের ঐতিহাসিক সেই জয়ের ম্যাচে জয় ব্যাটিং দৃঢ়তার পরিচয় দিয়ে খেলেছিলেন ৭৮ রানের ঝলমলে এক ইনিংস।
তৃতীয় দিনে ১০৭ ওভার খেলা শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৫৭ রান।