বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

খেলায় এত সম্মান আর কেউ আনেনি: প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ৩১ মার্চ, ২০২২ ১৯:৪৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ক্রীড়া ক্ষেত্রে বাজেটও আমরা বৃদ্ধি করেছি। প্রত্যেক বিভাগীয় শহরে একটি করে বিকেএসপি আমরা করে দিচ্ছি। শুধু রাজধানী কেন্দ্রিক না, আট বিভাগে আটটি বিকেএসপি হবে। সব উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম করে দিচ্ছি। এটা সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশে যত অর্জন রয়েছে তার বেশিরভাগ ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড খেলোয়াড়রা নিয়ে এসেছেন বলে তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু চারজাতি ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট টুর্নামেন্টের শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন। পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন সরকার প্রধান।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখন প্রথম সরকার গঠন করলাম ১৯৯৬ সালে, তখন আমার কাছে এসেছিলেন স্পেশাল অলিম্পিকে ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড যারা তারা অংশগ্রহন করবে। অনেকেই এটাকে গুরুত্ব দেয় নি। কিন্তু আমি গুরুত্ব দিয়েছিলাম। সম্ভবত ৯৭ বা ৯৮ সালে অনুষ্ঠানটা হয়। সে সময় বলেছিল যে আমেরিকায় যেতে আর অংশ গ্রহন করতে প্রায় ৪০ লাখ টাকা লাগবে। আমি বললাম এটা তো কিছুই না। আমি দেব টাকা।

‘সবচেয়ে বড় কথা হলো তারা ২১টা স্বর্ণ জয় করে নিয়ে আসে। এতো ট্রফি যারা সুস্থ তারা কিন্তু কখনও আনতে পারেনি। আজকে আপনারা শুনেছেন আমাদের এই ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড যারা তারাই কিন্তু সবচেয়ে বেশি স্বর্ণ জয় করেছে আমাদের জন্য। ২১৬ টা স্বর্ণ সহ অনেক ট্রফি তারা নিয়ে এসেছে। আমাদের সুস্থ যারা তারা কিন্তু এটা পারেনি।’

সরাসরি মাঠে গিয়ে খেলোয়াড়দের নিজ হাতে পুরস্কার তুলে দিতে না পারায় আক্ষেপও জানান সরকার প্রধান। তিনি বলেন, ‘আমার মনটা পড়ে আছে মাঠে। আমি গণভবনে বন্দি। এই বন্দিত্ব থেকে মুক্তি পেতেই হবে। আমার মনে হচ্ছে ওখানে যদি চলে যেতে পারতাম সবচেয়ে আনন্দিত হতাম। এটা হলো না সত্যিই দু:খজনক। এই টুর্নামেন্ট আয়োজন একটি অসাধারণ কাজ।

‘সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আজকে ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড যারা তারা বোঝা না। তাদের নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি। তাদেরকেও আমরা আমাদের একজন মনে করি। এটাই হলো সবচেয়ে বড় কথা।’

একই সাথে ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে নিজ পরিবারের সম্পর্কের স্মৃতিচারণও করেন বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা। তিনি বলেন, ‘আমার পরিবারের সবাই স্পোর্টসের সঙ্গে জড়িত ছিল ও আন্তরিক ছিল। আমার মা নিজে উৎসাহ দিতেন খেলাধুলায়। সেই সঙ্গে আমার ভাই মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, আরেক ভাই মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল দুজনই খেলাধুলায় সক্রিয় ছিল। আধুনিক ফুটবল খেলা এদেশে প্রবর্তণ করে শেখ কামাল।

‘শেখ কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল সেও স্পোর্টেসর সঙ্গে জড়িত ছিল। কাজেই আমাদের বাড়িতে আমরা তাকে অনেক সাদরে বউ করে নিয়ে এসেছিলাম। জামালের স্ত্রী পারভীন সেও খেলাধুলায় ছিলো। স্পোর্টসে অনেক ট্রফি পেয়েছিল। সে আমার নিজের ছোট ফুফুর মেয়ে। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে ১৫ আগস্ট আমরা সবাইকেই হারালাম।’

বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন খেলোয়াড়দের জন্য সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন সরকার প্রধান।তিনি বলেন, ‘প্রতিবন্ধিদের খেলাধুলার সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য আমরা ব্যপক ব্যবস্থা নিচ্ছি। সাভারে ১২ একরের উপর একটি ভালো ক্রীড়া কমপ্লেক্স করছি। এটা শুধুমাত্র ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জডদের জন্য। সেই সঙ্গে জাতীয় সংসদের পাশে একটি জায়গা ছিল। এখানে মুক ও বধির একটা স্কুল ছিল।

‘ছোটবেলায় আব্বা নিয়ে আসতেন এখানে। তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান আমরা দেখতাম। পরে আমি সংসদের আওতায় জায়গাটা নিয়ে আসি। এখন আবার দিয়েছি। এখানে শুধুমাত্র প্র্যাকটিসের জন্য যারা প্রতিবন্ধি বা স্পেশালি চ্যালেঞ্জডরা যাতে অনুশীলন করতে পারে তাদের জন্য তৈরি করা হচ্ছে।’

‘তারা আমাদের সমাজেরই একজন, দুরের কেউ না। এটাই আমরা প্রমান করতে চাই। এ জন্য এখন যতো প্রতিষ্ঠান তৈরি হচ্ছে তাদের চলাচলের সুবিধার সব ব্যবস্থা আমরা করছি। অনুশীলনের ভালো মাঠ পেলে তারা আরও ভালো করবে। তারা তো আমাদেরই সন্তান। এটা সবার মনে রাখতে হবে।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘তাদের চাকুরী ক্ষেত্রে এক ভাগ কোটা আছে। কোনো ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান যদি এদের চাকরি দেয় তারা কিন্তু আমাদের বিশেষ সুবিধা পাবে এ ব্যবস্থা আমরা করেছি। তাদের জন্য আলাদা সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। আমাদের গত বাজেটে এটা আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম। বেতন সহ অন্যন্য সুবিধার ব্যবস্থা ফিন্যান্স থেকে তারা করবে।

‘তাছাড়া তাদের চিকিৎসা, প্রশিক্ষণ, পুনর্বাসন ও আবাসিক ব্যবস্থা আমরা করে দেব। এর জন্য সুবর্ণ ভবন নামে আলাদা একটি কমপ্লেক্স করে দিচ্ছি। এখানে তাদের চিত্ত বিনোদনের ব্যবস্থাও থাকবে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সেন্টার ফর নিউরো ডেভেলপমেন্ট অটিজম ফর চিলড্রেন এটাও প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এদের জন্য আলাদা ব্যবস্থাও আমরা নিচ্ছি। এছাড়া দেশের প্রত্যেকটি মেডিকেলে আলাদা চিকিৎসা যেন তারা পায়, সেখানেও শিশু বিকাশ কেন্দ্রে চালু করা হয়েছে।’

দেশের সব জেলা স্টেডিয়ামগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে ত্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন তিনি।শেখ হাসিনা বলেন, ‘ক্রীড়া ক্ষেত্রে বাজেটও আমরা বৃদ্ধি করেছি। প্রত্যেক বিভাগীয় শহরে একটি করে বিকেএসপি আমরা করে দিচ্ছি। শুধু রাজধানী কেন্দ্রিক না, আট বিভাগে আটটি বিকেএসপি হবে। সব উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম করে দিচ্ছি। এটা সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

‘আমরা জেলায় যে স্টেডিয়ামগুলো করেছি, এটা শুধু ক্রিকেট স্টেডিয়াম বলে দিলে ব্যবহার হয় না। এটা সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে। প্রতিবন্ধিরাও যেন সেখানে গিয়ে অনুশীলন করতে পারে সে ব্যবস্থাটাও করে দিতে হবে। না হলে এগুলো পড়ে থাকে, খেলাধুলা হয় না।’

এ সময় টুর্নামেন্ট আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠান এনপিসিকে ক্রিকেটের উন্নয়নে ১০ কোটি টাকার ফান্ড দেয়ার ঘোষণা দেন সরকার প্রধান। পাশাপাশি টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জন্য ঘোষণা করেন ৫ লাখ করে টাকা পুরস্কার।

এ বিভাগের আরো খবর