এটাকে কী বলবেন- ডেডিকেশন না পাগলামি? ফুটবল সমর্থকরা যেকোনো অর্থই দাঁড় করাতে পারেন। তবে ইমন যা বললেন তা নিঃসন্দেহে অনেক ফুটবলারের জন্য দৃষ্টান্ত।
সদ্য সমাপ্ত ফেডারেশন কাপের ফাইনালের আগে ব্যথানাশক ইনজেকশন নেয়ার পাশাপাশি টেবলেটও খেতে হয়েছিল ঢাকা আবাহনীর ফুটবলার ইমন মাহমুদ বাবুকে।
ফাইনালের আগের দিন হাঁটতেই পারছিলেন না জাতীয় দলের সাবেক এ ফুটবলার!
তবে ইমনের সব ব্যথা যেন নিমিষেই নাই গেছে দলের শিরোপা বিজয়ে।
ফাইনাল শেষে নিউজবাংলাকে বিষয়গুলো খোলাসা করেন ইমন বাবু। তিনি বলেন, ‘আসলে ক্লাব যখন বিশ্বাস রাখে তখন আপনি আপনার সেরাটা দিয়েই খেলবেন। ইনজেকশন নিয়ে আর পেইনকিলার খেয়ে শেষ দুটি ম্যাচ খেলেছি। সততা নিয়ে বলব- গতকাল পর্যন্ত হাঁটতে পারছিলাম না। ভাবতেও পারিনি ৬০-৬৫ মিনিট খেলতে পারব।
‘আল্লাহ তায়ালার কাছে লাখো শুকরিয়া জানাই। আমার মনে হয় টিম ম্যানেজমেন্ট ও সতীর্থরা যে স্পিরিট দিয়েছেন এবং আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছেন, তা থেকেই মনে হয় এনার্জিটা পেয়েছি।’
আবাহনী থেকে ২০১৮ সালে বসুন্ধরা কিংসে নাম লেখান ইমন। সময় গড়ানোর পাশাপাশি ধীরে ধীরে একাদশে অনিয়মিত হয়ে পড়েন তিনি। পরে একাদশে নিয়মিত হওয়ার জন্য আবারও আবাহনীতে ফিরেছেন। দলে ফিরে নিজের জায়গা খুঁজে পেয়েছেন। স্বাধীনতা ও ফেডারেশন কাপে সবগুলো ম্যাচে নিয়মিত একাদশে ছিলেন।
তার দল আবাহনী ঘরোয়া ফুটবলের প্রথম দুই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়।
কিংস থেকে আবাহনীতে ফিরে আসার কারণ জানিয়ে ইমন বলেন, ‘যাতে ফুল টাইম খেলার সুযোগ পাই সেজন্যই আবাহনীতে আসা। ক্লাব আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছে। আমিও চেষ্টা করেছি যাতে সেই বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটাতে পারি।’
এর আগে ২০১২ সালে শেখ রাসেলের জার্সিতে প্রথমবার ট্রেবল জেতেন ইমন। এবার দুই শিরোপা ঘরে তুলে আবাহনীর জার্সিতে আরেকটি ট্রেবল জেতার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে ইমনের সামনে।
ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় ট্রেবল জেতার হাতছানির ব্যাপারে ইমন বলেন, ‘আশা করছি ট্রেবল জিতে বছরটা শেষ করতে পারব। এটা দারুণ হবে যদি ট্রেবল জিততে পারি।’
২০১৬ সালের পর জাতীয় দলে অনেকটাই অনিয়মিত ইমন। জেমির রাডারে থাকলেও খেলা হয়নি তার। জাতীয় দলের জার্সিকে মিস করছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় দলের টিম ম্যানেজমেন্টের যদি মনে হয় আমি দলের জন্য যোগ্য, তাহলে আমি খেলতে প্রস্তুত। আমি লাল-সবুজ জার্সিটা গায়ে জড়াতে মুখিয়ে আছি।’
২০০৯ সালে ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে অভিষেক। শেখ রাসেলের জার্সিতে ট্রেবল জেতার পর মোহামেডানে নাম লেখান, এরপর আবাহনীর জার্সিতে সফল ফুটবল শেষে বসুন্ধরা কিংসে নাম লেখান। দুই মৌসুম পর আবার আবাহনীতে ফিরে আসেন ইমন বাবু।
সবমিলিয়ে চারবার লিগ শিরোপা, তিনবার করে স্বাধীনতা ও ফেডারেশন কাপের শিরোপা জিতেছেন এ ফুটবলার।