সাম্প্রতিক সময়ে নিজ দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়ে সেখানকার দলে খেলার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন দেশের সুবিধাবঞ্চিত ও ঝরে পরা ক্রিকেটারদের মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশ থেকে টুকিয়ে নিয়ে আসা ক্রিকেটারদের নিয়ে সাজাচ্ছে তাদের জাতীয় দল।
২০২৪ সালের বিশ্বকাপের সহযোগী আয়োজক হিসেবে থাকছে যুক্তরাষ্ট্র। স্বাগতিক দল হিসেবে তারা প্রথমবারের মতো সরাসরি খেলার সুযোগ পাচ্ছে বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে। সেই সঙ্গে ক্রিকেটের পরাশক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চায় দেশটি।
আর সে কারণেই শক্তিধর দেশগুলোর মাঝ বয়সী ক্রিকেটারদের নিয়ে দল সাজাতে উঠে পরে লেগেছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড।
ভারত, শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ডের পর এবারে তারা নজর দিয়েছে বাংলাদেশের দিকে। দেশের ক্রিকেটে অথবা জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা নিভু নিভু করছে- এমন ক্রিকেটারদের সব সুযোগ-সুবিধা দিয়ে নিজ দেশে নিয়ে যেতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৪ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে সাজাতে থাকা জাতীয় দলে খেলাতে চায় তাদের।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে এমনই এক চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট বোর্ড। বাংলাদেশের জাতীয় দলে জায়গা করে নিতে পারছেন না, বা ঝরে পড়েছেন কোনো কারণে- এমন খেলোয়াড়দের নিয়ে যেতে চায় তারা। স্থানীয় ক্লাবে খেলার পাশাপাশি জাতীয় দলেও সুযোগ করে দিতে চায় তাদের।
সম্প্রতি কোরি অ্যান্ডারসন, উন্মুক্ত চান্দ, ড্যান পিয়েট, শিহান জয়সুরিয়ার মতো ক্রিকেটারদের দলে ভিড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কথা চলছে তাদের আসন্ন ২০২৪ বিশ্বকাপে জাতীয় দলের হয়ে খেলার।
প্রাথমিক অবস্থায় ১৯ থেকে ২৬ বছরের ক্রিকেটারদের নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
প্রথমে তরুণ ক্রিকেটার নিতে আগ্রহ প্রকাশ করলেও ক্রিকেটারদের ৩০ বছর পর্যন্ত বয়সী ক্রিকেটাররা তাদের নজরে রয়েছেন বলেও জানান যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আসা মুখপাত্র হাসান তারেক।
চুক্তি সম্পাদন শেষে তারেক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘অবশ্যই, এটাই আমাদের লক্ষ্য (বাংলাদেশ থেকে ক্রিকেটার নেয়া)। ১৯ থেকে ২৬ বছরের ক্রিকেটারদের নেয়া আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য। বাইরে থেকে ক্রিকেটার আনার পরে ৩০ মাস লাগবে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে খেলার অনুমতি পেতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘উন্মুখ চাঁদ, সামি আসলাম, কোরি অ্যান্ডারসন গেছে। আমরা প্রায় ৪০ জন ক্রিকেটার নিয়েছি যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থেকে। সেটা গত দেড় বছরে। উদাহরণ হিসেবে ধরুন উন্মুখ চাঁদ ভারতের জাতীয় দলে খেলতে পারছে না, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে সে অধিনায়ক ছিল। জাতীয় দলের বাইরে মানসম্পন্ন খেলোয়াড়দের আমরা স্পন্সর করছি।’
বাংলাদেশের জন্য বিষয়টি বেশ ভয়ংকর হতে পারে। কেননা কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থের প্রলোভনে সে সময় উঠতি ক্রিকেটাররা দেশের হয়ে না খেলে পাড়ি জমাবে যুক্তরাষ্ট্রে। সঙ্গে টোপ হিসেবে থাকছে ওয়ার্কিং ভিসা ও নাগরিকত্বের সুযোগ। ফলে সম্ভাবনা হারিয়ে যাবে দেশের ক্রিকেটে নতুন ক্রিকেটার উঠে আসার।
তারেক বলেন, ‘সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট এবং মেজর লিগ ঘোষণা দিয়েছে যে, অবকাঠামোগত উন্নয়নে ১ বিলিয়ন বিনিয়োগ করবে। স্থানীয় ভেন্যু, মানসম্মত ভেন্যু... খেলা শুরু করতে হবে মধ্য বয়সে। আমরা বাইরে থেকে তো আনছি, বাইরে থেকে আমরা ভিসা দিয়ে নিয়ে আসছি। যেমন- ও ওয়ান ভিসা, পি ওয়ান ভিসা যেটা বিশেষ।’