ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই সব দৃশ্যপট পাল্টে গেল। এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে পাকিস্তানের পর হেরে গেছে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে হেভিওয়েট দল ভারতও।
মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিতে ভারতকে ৫-৩ ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে পা রাখল জাপান।
২০১৩ সালে নিজেদের মাঠে অনুষ্ঠিত তৃতীয় আসরের ফাইনাল খেলেছে জাপান। সেই খেলায় পাকিস্তানের কাছে ৩-১ গোলে হেরেছিল এশিয়ান ২০১৮ সালের গেমসের চ্যাম্পিয়নরা। ভারতের বিপক্ষে জাপানের সর্বশেষ জয় ছিল ২০১৩ সালের এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। সেই ম্যাচে স্বাগতিক জাপান ২-১ গোলে জেতে।
দুই দেশের সর্বশেষ লড়াইয়ে এই চলমান টুর্নামেন্টে জাপানকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল ভারত।
তবে গ্রুপ পর্বের জাপানের সঙ্গে সেমিফাইনালের জাপানকে মোটেও মেলানো যায়নি। গতি ও বল নিয়ন্ত্রণে সলিড শুরু করা জাপান দুটি পেনাল্টি কর্নার আদায় করে নেয়। তা প্রতিহত করতে গিয়ে ভারত প্রতিপক্ষকে পেনাল্টি স্ট্রোক দিতে বাধ্য হয়। প্রথম মিনিটে সুরাজ কেরকেরাকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে পাঠান শোতা ইয়ামাদা।
দ্বিতীয় মিনিটে টানা তিনটি পেনাল্টি কর্নার পাওয়া জাপান ব্যবধান দ্বিগুণ করে রাজকি ফুজুশিমার ফ্লিকে। প্রথম কোয়ার্টারে জাপানকে একবারের জন্যও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারেনি গ্রুপ পর্বের টপ টিম হিসেবে সেমিফাইনালে আসা ভারত। ১২ মিনিটে ভারত এ কোয়ার্টারের একমাত্র আক্রমণ গড়লেও জাপানের রক্ষণ আস্থার সঙ্গেই তা রুখে দেয়।
দ্বিতীয় কোয়ার্টারও জাপানের আধিপত্য দিয়ে শুরু হয়। ১৭ মিনিটে ধারার বিপরীতে দিলপ্রিত সিংয়ের ফিল্ড গোলে ব্যবধান কমায় ভারত। গোলের পর বল দখলের দিক থেকে ভারত ম্যাচে ফিরে আসে। ১৯ মিনিটে জাপানের গোলরক্ষক কিরিশিতা তাকুমি দারুণ দক্ষতায় ভারতের পেনাল্টি কর্নার রুখে দেন।
তার পাঁচ মিনিট পর জাপানের আক্রমণে ভারত গোলরক্ষক সুরাজ কেরকেরা পরাস্ত হন, গোলমুখ থেকে বল প্রতিহত করে ভারতকে ম্যাচে রাখেন বদলি গোলরক্ষক ক্রিশান পাথাক। ২৯ মিনিটে কেনতা তানাকাকে সার্কেলে ট্যাকল করেন ভারত গোলরক্ষক সুরাজ কেরকেরা। আম্পায়ার পেনাল্টির আবেদন নাকচ করে দেন।
রিভিউর সিদ্ধান্ত জাপানের পক্ষে যায়। স্ট্রোক থেকে স্কোর লাইন ৩-১ করেন ইউশিকি কিরিশিতা।
তৃতীয় কোয়ার্টারে ম্যাচটা নিজের করে নেয় জাপান। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে কোশেই কাওয়াবেই ফিল্ড গোল করে স্কোর লাইন ৪-১ করেন। ম্যাচে ফিরতে মরিয়া ভারত সর্বশক্তি দিয়ে আক্রমণে ঝাঁপায়। ৩৭ ও ৩৮ মিনিটে দুটি কাউন্টার অ্যাটাকে প্রতিপক্ষকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল জাপান। ৪১ মিনিটে তৃতীয় প্রচেষ্টায় সফল হয় দলটি। রায়োমা ওকার ফিল্ড গোল স্কোর লাইন ৫-১ করে।
ম্যাচের শেষ কোয়ার্টারে সান্ত্বনার কামব্যাক করে ভারত। ম্যাচের ৫৩ মিনিটে হারমানপ্রিত সিংয়ের পেনাল্টি কর্নার গোলে ব্যবধান কমায় তারা। ৫৮ মিনিটে ভারতের দুটি পেনাল্টি কর্নার রুখে দেয় জাপানের রক্ষণ। ৫৯ মিনিটে আরেকটি পেনাল্টি কর্ণার পায় ভারত, হারদিক সিং গোল করে ব্যবধান কমান।
চতুর্থ কোয়ার্টারে দুই গোলেও হার এড়ানোয় যথেষ্ট ছিল না ভারতের। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনাল নিশ্চিত করে জাপান।
ফাইনালে পাকিস্তানকে হারানো কোরিয়াকে পাচ্ছে জাপান। গ্রুপ পর্বে দুই দলের ম্যাচটি ৩-৩ ব্যবধানে ড্র হয়েছিল। তৃতীয় নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে ভারত-পাকিস্তান। বুধবার একই ভেন্যুতে দুটি ম্যাচ।