হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বৃহস্পতিবার দেখা গেল নির্লিপ্ত তাকিয়ে রয়েছেন দেশের জাতীয় ফুটবলাররা। চেহারায় খুশির লেশমাত্র নেই। মুখে মাস্ক থাকায় অভিব্যক্তি বোঝা মুশকিল। তবে চোখ বলে দিচ্ছে সব কথা। শোকে কাতর যেন পুরো দল।
দুই মাসের মধ্যে দুটি ফুটবল প্রতিযোগিতায় বড় ধাক্কা খেয়ে ফিরতে হয়েছে বাংলাদেশকে। অক্টোবরে সাফে ফাইনালের আগে বিদায় নেয়া ও এ মাসে শ্রীলঙ্কায় চার জাতি টুর্নামেন্ট থেকে একইভাবে হতাশজনক বিদায়।
এমন হতাশার গল্পই যেন দেশের ফুটবলের বিজ্ঞাপনে পরিণত হয়েছে। কষ্টের লঙ্কা সফর শেষে দেশে আসার পর গোমড়া মুখে যে যার গন্তব্যে ফিরেছেন জাতীয় দলের ফুটবলাররা।
নিজেদের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যেখানে ড্রয়ে ফাইনাল খেলার সমীকরণ ছিল, সেখানে ১০ জনের দলের সঙ্গে হেরে ফাইনালের আগে বিদায় নিতে হয় বাংলাদেশকে।
এমন হার হতাশজনক মানছেন দলের সাময়িক হেড কোচ মারিও লেমস। তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক কাছাকাছি ছিলাম। মূল লক্ষ্য ছিল ফাইনাল খেলার। যেভাবে হেরেছি তা হতাশাজনক। আমরা আরও ভালো করতে পারতাম। কিন্তু যা হওয়ার হয়ে গেছে।
‘এখানে থেমে থাকা যাবে না। খেলোয়াড়রা তাদের সেরাটা দিতে চেষ্টা করেছে। আমিও তাই করেছি। পরের টুর্নামেন্টে আশা করছি আরও ভালো খেলা হবে।’
টুর্নামেন্টে সেশেলসের কাছে বাংলাদেশ হোঁচট খায় শেষ মুহূর্তের গোলে। শ্রীলঙ্কার কাছেও শেষ মুহূর্তে এমন পরিণতি। মনোযোগের অভাবে দল প্রতিবার শেষ মুহূর্তে গোল হজম করছে বলে মনে করেন জাতীয় দলের ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু।
তিনি বলেন, ‘সেশেলসের বিপক্ষে শেষ তিন মিনিট আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ দুই মিনিটে ম্যাচ দুইটা হাতছাড়া হয়েছে। এ জায়গায় বলব যে, কিছুটা মনোযোগের অভাব। সেই সঙ্গে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করা ও আচমকা গোল হজম করার কারণে আমাদের এমন ফল মেনে নিতে হচ্ছে।’
পুরো টুর্নামেন্টে ছিল বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের গোল মিসের মহড়া। এ সমস্যা নতুন নয়। রোগের সমাধান ক্লাবে দেখছেন জাতীয় দলের স্ট্রাইকার সুমন রেজা।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যাশামতো ফল করতে পারি নাই। ফিনিশিংয়ের যে সমস্যাগুলো হয়েছে, ক্লাবে গিয়ে সেগুলো নিয়ে কাজ করব। আমাদের হাতে ম্যাচটা ছিল। ব্যর্থতার জন্য ফাইনালে খেলতে পারি নাই।’
আপাতত এ বছরে আর কোনো টুর্নামেন্ট বা ম্যাচ নেই জাতীয় দলের। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে ফিফা উইন্ডোতে ম্যাচ আয়োজনের চেষ্টা চালাবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।